তেলে-জলে-অ্যাক্রেলিকে শাশ্বত ছবি
শীতাতপনিয়ন্ত্রিত
গ্যালারিতে কুয়াশার ছবিকে ছবি নাও মনে হতে পারে। হয়তো মনে হবে জানালার
বাইরে কুয়াশা অধ্যুষিত সত্যিকারের এক টুকরো শীত-সকাল। জানালার বাইরে
অপেক্ষা করছে শিশুটি। বাবা খেজুরগাছে উঠে নামিয়ে আনবেন রসের হাঁড়ি। সবুজাভ
এই কুয়াশায় রসবতী খেজুরগাছকে এঁকেছেন চিত্রকর শেখ আফজাল। গত শনিবার বিকেলে
রাজধানীর প্রগতি সরণির অ্যাথেনা গ্যালারিতে শুরু হয়েছে তাঁর ২৬তম একক চিত্র
প্রদর্শনী ‘এটারনাল অ্যাফেকশন’। সেটি উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী
আসাদুজ্জামান নূর। অ্যাথেনা গ্যালারি অব ফাইন আর্টসের চেয়ারম্যান নিলু রওশন
মোরশেদের সভাপতিত্ব সেদিন অতিথি ছিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর,
রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম প্রমুখ। সুবিন্যস্ত গ্রাম শেখ আফজালের ভেতরটা
অধিকার করে আছে। ক্যানভাসে হাত রাখলেই তাই জায়গাটায় এসে পড়ে সবুজ ঘাস,
কালো মহিষ ও তারও চেয়ে কালো এক কৃষাণের শরীর। শিল্পী শুধু গভীর মমতায়
আপনজনের মতো করে মহিষের পিঠে বসিয়ে দেন কৃষাণকে। মিশ্র মাধ্যম, অর্থাৎ
তেলে-জলে-অ্যাক্রেলিকে গ্রাম, সরল সেসব মানুষের ছবিই তিনি বেশি এঁকেছেন।
চিত্রকর্মগুলো সেখানে চিত্রকর্ম না থেকে শিল্পীর শৈশবের নস্টালজিয়া হয়ে
যায়। শিল্পী বলেন, ‘এটা একটা মডার্ন অ্যাপ্রোচ। কম্পোজিশনের স্বার্থে
রিয়েলিস্টিকের নিয়ম অমান্য করা হয়েছে কিছু কিছু ছবিতে।’ শেখ আফজালকে
শিল্পের পথের এই দিশা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৯ সালে
চতুর্থ শ্রেণির আফজাল শেখ মুজিবকে ছবি এঁকে দেখিয়েছিলেন। দেখে দুটো দশ
টাকার নোট উপহার দিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ম্যাট্রিক পাস করে ঢাকায় এসো,
তোমাকে আর্ট কলেজে ভর্তি করে দেব।’ এই প্রদর্শনীর জন্য তাই তিনি
বঙ্গবন্ধুকে এঁকেছেন। সেই ক্যানভাসে স্মৃতি হয়ে এসেছেন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া
আফজালও। প্রদর্শনীটি শেষ হবে ৭ মে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা
পর্যন্ত ঘুরে আসা যাবে প্রদর্শনী।
No comments