৬৬ বছর পর মুখ দেখাদেখি
ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে আলাদা হয়ে যাওয়ার ৬৬ বছর পর মুখ দেখাদেখি হচ্ছে চীন-তাইওয়ানের। প্রথমবারের মতো আলোচনার টেবিলে বসতে যাচ্ছে বৈরী এ দেশ দুটি। সবকিছু ঠিক থাকলে শনিবার সিঙ্গাপুরে মা ইং জিউ এবং শি জিনপিং মুখোমুখি টেবিলে বসবেন। মঙ্গলবার তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট মা ইং জিউর কার্যালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। এরই মধ্যে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বৈঠকের বিরুদ্ধে তাইপেতে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের একটি দল। খবর এএফপি, সিএনএনের। এ বৈঠককে ঐতিহাসিক বলে এরই মধ্যে আখ্যা দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। চলছে আলোচ্যবিষয় নিয়ে জল্পনা-কল্পনা। গণমাধ্যমগুলো বলতে শুরু করে, ৬৬ বছর পর এই বুঝি গলতে শুরু করেছে বৈরী এ দু’দেশের মধ্যকার বরফ। তাইপে সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পুরো তাইওয়ান প্রণালীজুড়ে শান্তি স্থাপন করার জন্য উভয় দেশ আলোচনায় বসতে যাচ্ছে। বেইজিংও এ খবর নিশ্চিত করেছে। এ আলোচনা দু’দেশের বৈরী সম্পর্ক উন্নয়নে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র এলিজাবেথ ট্রুডো বলেন, ‘আমরা আশা করছি দুই দেশ তাদের সম্পর্ক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে এ আলোচনার মাধ্যমে।’ এদিকে বৈঠকের ঘোষণা প্রচারিত হওয়ার পরই তাইপের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছে সেখানকার সাধারণ নাগরিকরা। তারা বলছে চীন তাদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণœ করে চলেছে, তাই চীনের সঙ্গে বৈঠকে বসা অনর্থক। ১৯৩৫ সালে মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে চীনে কমিউনিস্ট পার্টির লং মার্চ শুরু হলে চিয়াং কাই শেকের নেতৃত্বে ক্ষমতায় থাকা জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্টদের বিজয়ের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে চীনের সেই গৃহযুদ্ধের। সেই সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাইওয়ান। জাতীয়তাবাদীরা সদলে আশ্রয় নেয় চীনের এককালের প্রদেশ ফরমোজায়। এ ফরমোজাই পরে তাইওয়ান নামে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। এ বিচ্ছিন্নতা কখনও মেনে নেয়নি চীন। তাইওয়ানকে নিজেদের একটি প্রদেশ বলেই দাবি করে আসছে তারা। অন্যদিকে তাইওয়ান ৬৬ বছর ধরেই নিজেদের দাবি করে আসছে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে চেষ্টা শুরু করেন মা ইং। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ আলোচনায় বসার কথা জানাল তাইওয়ান। তাইওয়ানের কালকথা তাইওয়ান। দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগরের মাঝামাঝি অবস্থিত চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের একটি দ্বীপ। ১৬২০ থেকে ১৬৬২ সালের ডাচ শাসনামলে দ্বীপটি মূল ভূখণ্ডের স্বীকৃতি পায়। ১৮৯৫ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপানের নিয়ন্ত্রণে ছিল তাইওয়ান। ১৯৪৯ সালে চিয়াংকাই তাইওয়ানকে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করে এবং সামরিক শাসন জারি করে।
* ১৯৭৮ সালে চিয়াংয়ের পুত্র চিং কুও দ্বীপটির শাসনভার গ্রহণ এবং ১৯৮৭ সালে সামরিক শাসন প্রত্যাহার করে।
* ১৯৮৮ সালে চিং কুওয়ের সহকারী লিটেং হুই দ্বীপটি দখলে নেয় এবং ১৯৯৬ সালে প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
* স্বাধীনতাকামী ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির প্রধান চেন-ছুই-বিয়ান ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
* দুর্নীতির অভিযোগে ডিপিপি অভিযুক্ত হয় এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে ম্যা উন জিউ নির্বাচিত হন।
* বিতর্কিত বাণিজ্যিক চুক্তির কারণে ম্যা উন সমালোচিত হন এবং ২০১৪ সালের সান ফ্লাওয়ার মুভমেন্টে ২০০ ছাত্র পার্লামেন্ট দখল করে।
* মাত্র ২৩টি স্বাধীন দেশ তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়।
* ১৯৭৮ সালে চিয়াংয়ের পুত্র চিং কুও দ্বীপটির শাসনভার গ্রহণ এবং ১৯৮৭ সালে সামরিক শাসন প্রত্যাহার করে।
* ১৯৮৮ সালে চিং কুওয়ের সহকারী লিটেং হুই দ্বীপটি দখলে নেয় এবং ১৯৯৬ সালে প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
* স্বাধীনতাকামী ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির প্রধান চেন-ছুই-বিয়ান ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
* দুর্নীতির অভিযোগে ডিপিপি অভিযুক্ত হয় এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে ম্যা উন জিউ নির্বাচিত হন।
* বিতর্কিত বাণিজ্যিক চুক্তির কারণে ম্যা উন সমালোচিত হন এবং ২০১৪ সালের সান ফ্লাওয়ার মুভমেন্টে ২০০ ছাত্র পার্লামেন্ট দখল করে।
* মাত্র ২৩টি স্বাধীন দেশ তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়।
No comments