অবশেষে আফগান–মার্কিন নিরাপত্তা চুক্তি সই

আফগানিস্তানের নতুন সরকার গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘ বিলম্বিত একটি চুক্তি সম্পাদন করেছে। এর মাধ্যমে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর কিছু সেনা আগামী বছরও আফগানিস্তানে থাকার ব্যবস্থা হবে। খবর এএফপি ও বিবিসির। নতুন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি এই দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে পরিচিত হলেও ওই চুক্তিতে রাজি হননি। তিনি বলেছিলেন, চুক্তিটি সই করলে মার্কিন বোমায় আফগান নাগরিকের মৃত্যুর দায় তাঁর ওপরই পড়বে। কারজাইয়ের আপত্তির ফলে চুক্তিটি বিলম্বিত হয় এবং এতে আফগান-মার্কিন সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে চুক্তিতে আফগানিস্তানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হানিফ আতমার ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কাবুলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জিম কানিংহাম। মার্কিন রাষ্ট্রদূত জিম কানিংহাম বলেন, চুক্তিটি আফগানিস্তানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার অব্যাহত থাকার ইঙ্গিত দেয়।
নতুন এ চুক্তি অনুযায়ী বিশেষ বিদেশি সেনারা ‘সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতার’ জন্য আফগানিস্তানে রয়ে যাবে এবং বাকিরা স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেবে। আর ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ ওই সেনাদের সংখ্যা কমিয়ে অর্ধেকে নিয়ে আসা হবে। আর ২০১৬ সালের শেষ নাগাদ আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে। আফগানিস্তানে ২০০১ সালে মার্কিন সামরিক অভিযানে তালেবান সরকার উৎখাতের পর থেকে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী দেশটিতে অবস্থান নেয়। এক দশকের বেশি সময় পর ন্যাটোর অধিকাংশ সেনাকে চলতি বছরের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নয় হাজার ৮০০ এবং ইতালি ও জার্মানির কিছুসংখ্যক সেনাসহ আফগানিস্তানে আগামী বছরের শুরুতে থেকে যাওয়া বিদেশি সেনার সংখ্যা হবে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার। ন্যাটোর পৃথক একটি চুক্তি অনুযায়ী, জার্মানি, তুরস্ক ও ইতালি থেকে ন্যাটোর আরও তিন হাজার সেনা আফগানিস্তানে নিরাপত্তা কার্যক্রমে যোগ দেবে। কারজাইয়ের পদত্যাগের পর গত সোমবার আফগানিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন গনি। গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশটিতে ছয় মাসব্যাপী অচলাবস্থার অবসান হয়।

No comments

Powered by Blogger.