রাবি’র হল সভাপতি প্রার্থী হওয়াই কাল হলো রোস্তমের by আসলাম-উদ-দৌলা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ
সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী বর্তমান হল কমিটির যুগ্ম সম্পাদক
রোস্তম আলী আকন্দ এবার হল কমিটির সভাপতি প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থানে
ছিলেন। এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে নিজ কক্ষে প্রতিপক্ষের গুলিতে প্রাণ
হারালেন তিনি। পথের কাঁটা সরিয়ে দিতে পরিকল্পনা অনুয়ায়ী জুমার নামাজের আগে
তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ
হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় দুই ছাত্রলীগ নেতা- বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের
৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সেলিম রেজা ও নৃবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের আবদুল্লাহ আল
গালিব। সেলিম রেজা ১০-১৫ দিন ধরে রোস্তমের দুই রুম আগে সোহরাওয়ার্দী হলের
তৃতীয় ব্লকের পুব পাশের ২২৭ নম্বর কক্ষে থাকছিল। সে শহীদ জিয়া হলের আবাসিক
শিক্ষার্থী। রোস্তমের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী আইন ও বিচার
বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সেলিম হোসেন থাকতে ২২২ নম্বর কক্ষে।
সেলিম রেজা ছিল তার ঘনিষ্ঠ সহচর। অভিযোগ আছে, তার নির্দেশেই সেলিম রেজা
গুলি করে। তবে হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে আসছে
ছাত্রলীগ। তারা ঘটনার জন্য শিবিরকে দায়ী করছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের
সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিন বলেন, গাছ বেয়ে নতুবা সিঁড়ি দিয়ে যে কেউ
গিয়ে তার কক্ষের জানালার দিকে গুলি করতে পারে। গুলি করেই খুনিরা হলের ভেতরই
কোন কক্ষে আত্মগোপন করে থাকতে পারে। গালিব ও সেলিম ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।
তিনি আরও বলেন, রোস্তমসহ অন্যরা সভাপতি মিজানুর রহমান রানার অনুসারী।
সুতরাং নেতৃত্বের অন্তঃকোন্দলের কোন সুযোগই নেই। একটি মহল গুজব ছড়িয়ে
বিভ্রান্তির চেষ্টা করছে।
সূত্র মতে, আগামী ১০ই এপ্রিল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের কাউন্সিল হওয়ার কথা। ওই কমিটির সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের রোস্তম আলী আকন্দ, আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সেলিম হোসেন, আরেক নেতা ও মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কবির হোসেন। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই দিন জুমার নামাজের আগে তারা যখন গোসল করতে যাচ্ছিলেন সে সময় রোস্তম আলী আকন্দ ও তার এক বন্ধু রোস্তমের ২৩০ নম্বর পড়াশোনা করছিলেন। পরের দিন শনিবার তাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৪০৪ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা ছিল। এ সময় অনেকেই জানালা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সেলিম ও গালিবকে তাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখেছে। এর কিছু সময় পরেই সোয়া ১টায় ওই কক্ষ থেকে বিকট শব্দ আসে। কৌতূহলবশত বিষয়টি দেখতে জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখা যায় রোস্তম তার বিছানার পাশে পড়ে আছে আর সবাই মিলে তার বুকের রক্ত বন্ধ করার চেষ্ট করছে। ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি বলেন, রোস্তম খুন হওয়ার সময় তার কক্ষে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। কয়েক দিন আগে রোস্তমকে একটি পিস্তল দেয়া হয়েছিল। নিছক তর্কাতর্কি থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা উপস্থিত ওই নেতারা কেউ বুঝে উঠতে পারেননি। এদিকে ওই কক্ষ থেকে রোস্তমের লাশ বের করার পর দেড়টায় মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহজাহান আলী সম্রাট দেড়টায় রোস্তমের রুম থেকে এক ছাত্রলীগ নেতার মোবাইল নিয়ে আসেন এবং কক্ষটি তালাবদ্ধ করেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সেলিম রেজার এবং আবদুল্লাহ আল গালিবের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া য়ায়। তবে ছাত্রলীগ নেতা কবির হোসেন জানান, আমরা কয়েকজন শুক্রবার রাতেই রোস্তমকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুরে নিয়ে এসেছি। সেখানে গালিব ও সেলিমও গিয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, রোস্তম ভাই সভাপতি হতে চাওয়ায় আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। কাজেই আমাদের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব ছিল না। এমনকি বৃহস্পতিবার রাতেও আমরা একসঙ্গে সোহরাওয়ার্দী হলের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে শিবিরের ছেলেদের হল ছেড়ে যাওয়ার জন্য বলে এসেছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়েই হয়তো শিবির ক্যাডাররা ভাইকে খুন করেছে। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বি এম রেজাউল করিম বলেন, ‘রোস্তম হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে আবার বাইরে থেকেও কেউ হলে গিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।’ রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (পূর্ব) প্রলয় চিচিম বলেন, আমরা কাউকে সন্দেহের বাইরে রাখছি না। ছাত্রলীগের ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দল’ থেকেও ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আসলে পুলিশ সব কিছু বিবেচনা করে তদন্ত করছে। হত্যাকাণ্ডের পর সেখানে রক্ত ছাড়া কোন আলামত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে রোস্তম আলী আকন্দ খুনের প্রতিবাদে ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপাতি আশরাফুল আলম ইমনকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত ছাত্রলীগের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। ধর্মঘটের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আজ গণস্বাক্ষর ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটারিয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা। এসময় তিনি বলেন, রুস্তমের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে ছাত্রলীগের ডাকা ধর্মঘটে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও স্বতস্ফর্তভাবে অংশগ্রহণ করছেন। শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ঘোষিত এ ঘর্মঘট চলবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না রোস্তম হত্যার সঙ্গে জড়িত শিবির ক্যাডারদের গ্রেপ্তার করা না হবে। এদিকে গতকাল সকাল থেকে ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মঘট পালন করেছে ছাত্রলীগ। এ ধর্মঘটের কারণে ক্যাম্পাসে সকল বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। অন্যদিকে খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
সূত্র মতে, আগামী ১০ই এপ্রিল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের কাউন্সিল হওয়ার কথা। ওই কমিটির সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের রোস্তম আলী আকন্দ, আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সেলিম হোসেন, আরেক নেতা ও মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কবির হোসেন। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই দিন জুমার নামাজের আগে তারা যখন গোসল করতে যাচ্ছিলেন সে সময় রোস্তম আলী আকন্দ ও তার এক বন্ধু রোস্তমের ২৩০ নম্বর পড়াশোনা করছিলেন। পরের দিন শনিবার তাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৪০৪ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা ছিল। এ সময় অনেকেই জানালা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সেলিম ও গালিবকে তাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখেছে। এর কিছু সময় পরেই সোয়া ১টায় ওই কক্ষ থেকে বিকট শব্দ আসে। কৌতূহলবশত বিষয়টি দেখতে জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখা যায় রোস্তম তার বিছানার পাশে পড়ে আছে আর সবাই মিলে তার বুকের রক্ত বন্ধ করার চেষ্ট করছে। ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি বলেন, রোস্তম খুন হওয়ার সময় তার কক্ষে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। কয়েক দিন আগে রোস্তমকে একটি পিস্তল দেয়া হয়েছিল। নিছক তর্কাতর্কি থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা উপস্থিত ওই নেতারা কেউ বুঝে উঠতে পারেননি। এদিকে ওই কক্ষ থেকে রোস্তমের লাশ বের করার পর দেড়টায় মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহজাহান আলী সম্রাট দেড়টায় রোস্তমের রুম থেকে এক ছাত্রলীগ নেতার মোবাইল নিয়ে আসেন এবং কক্ষটি তালাবদ্ধ করেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সেলিম রেজার এবং আবদুল্লাহ আল গালিবের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া য়ায়। তবে ছাত্রলীগ নেতা কবির হোসেন জানান, আমরা কয়েকজন শুক্রবার রাতেই রোস্তমকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুরে নিয়ে এসেছি। সেখানে গালিব ও সেলিমও গিয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, রোস্তম ভাই সভাপতি হতে চাওয়ায় আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। কাজেই আমাদের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব ছিল না। এমনকি বৃহস্পতিবার রাতেও আমরা একসঙ্গে সোহরাওয়ার্দী হলের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে শিবিরের ছেলেদের হল ছেড়ে যাওয়ার জন্য বলে এসেছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়েই হয়তো শিবির ক্যাডাররা ভাইকে খুন করেছে। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বি এম রেজাউল করিম বলেন, ‘রোস্তম হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে আবার বাইরে থেকেও কেউ হলে গিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।’ রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (পূর্ব) প্রলয় চিচিম বলেন, আমরা কাউকে সন্দেহের বাইরে রাখছি না। ছাত্রলীগের ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দল’ থেকেও ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আসলে পুলিশ সব কিছু বিবেচনা করে তদন্ত করছে। হত্যাকাণ্ডের পর সেখানে রক্ত ছাড়া কোন আলামত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে রোস্তম আলী আকন্দ খুনের প্রতিবাদে ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপাতি আশরাফুল আলম ইমনকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত ছাত্রলীগের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। ধর্মঘটের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আজ গণস্বাক্ষর ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটারিয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা। এসময় তিনি বলেন, রুস্তমের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে ছাত্রলীগের ডাকা ধর্মঘটে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও স্বতস্ফর্তভাবে অংশগ্রহণ করছেন। শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ঘোষিত এ ঘর্মঘট চলবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না রোস্তম হত্যার সঙ্গে জড়িত শিবির ক্যাডারদের গ্রেপ্তার করা না হবে। এদিকে গতকাল সকাল থেকে ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মঘট পালন করেছে ছাত্রলীগ। এ ধর্মঘটের কারণে ক্যাম্পাসে সকল বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। অন্যদিকে খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
No comments