যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন... by পলাশ কুমার রায়
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটি ইউনিটে ছয় হাজার ৬৬৮টি আসনের বিপরীতে দুই লাখ ৬২
হাজার ৯০৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে। অর্থাৎ
প্রতিটি আসনের জন্য ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। ১ নভেম্বর শুক্রবার ‘ঘ’ ইউনিটের
ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আইন-শৃংখলা
রক্ষাকারী বাহিনী ডিজিটাল জালিয়াতির ঝুঁকি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া
সত্ত্বেও মুঠোফোন এবং হাতঘড়িসহ নানা পদ্ধতির মাধ্যমে পরীক্ষায় উত্তরপত্র
লেখার ক্ষেত্রে বেশকিছু শিক্ষার্থী জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে। ১ নভেম্বরের
ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতি অর্থাৎ মুঠোফোনের সাহায্যে ক্ষুদেবার্তা
পাঠানো এবং প্রতিশ্র“ত টাকা না দেয়াকে কেন্দ্র করে অপহরণ ইত্যাদি কারণে বেশ
ক’জনকে আটক করা হয়। ডিজিটাল জালিয়াতি রোধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগে
থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় ৮৬টি কেন্দ্রে জালিয়াত চক্রের
সদস্যরা খুব বেশি অগ্রসর হতে পারেনি বলে অনুমেয়। অনেকে হয়তো চিন্তা করতে
পারেন, দেশে এতশত সমস্যা ও সংকট থাকার পরও আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কে লিখতে বসেছি কেন? এটা অবশ্যই স্বীকার্য
যে, আমরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নানা সংকটের মধ্য দিয়ে
দিন অতিবাহিত করছি। না চাইলেও হাজারও সমস্যার আবর্তে জড়িয়ে পড়ছি আমরা।
সমস্যা আর সমস্যা। অর্থনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিক সংকট, পারিবারিক কলহ, নানা
ধরনের রোগ-ব্যাধি, বেকারত্ব, মাদকের সহজলভ্যতা, নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধের
চরম অবক্ষয়, ব্যক্তিস্বার্থে আদর্শকে জলাঞ্জলি দেয়া, তোষামোদি করা,
ক্ষমতাশালীদের ক্ষমতার অপব্যবহার, ধর্মীয় শিক্ষার নামে ভিন্নমতাবলম্বীদের
ওপর আক্রমণাত্মক আচরণ প্রদর্শন করা ইত্যাদি হাজারও সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়
আমাদের। প্রতিনিয়ত যেন নিত্যনতুন সংকট আর সমস্যার বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পড়ছি
আমরা। উদ্ভূত সমস্যাগুলো প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ না করে
শুধু লোক দেখানো কিছু পরিকল্পনা প্রণয়ন করে হাত গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া
রাষ্ট্রের যেন আর কোনো দায়দায়িত্ব নেই, এমন করেই চলছে আমাদের বর্তমান ও
নিকট অতীতের দিনগুলো।
লাখ লাখ শিক্ষার্থী, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চ শিক্ষার জন্য এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে তারাই আগামী দিনে বাংলাদেশের যোগ্য উত্তরসূরি। তাদের মধ্যে কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, সরকারি আমলা হবে, রাজনীতিক হবে, চিকিৎসক হবে, বুদ্ধিজীবী হবে, সাংবাদিক হবে, আইনজীবী হবে, বিচারক হবে, প্রকৌশলী হবে। তারা নানা পেশায় নিজের যোগ্যতার পরিচয় দেবে। যেসব শিক্ষার্থী এসব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজগুলোতে পড়বে তারা কি জানে যে, তাদের পেছনে রাষ্ট্রকে মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হয় (যা দেশের জনগণের কষ্টার্জিত টাকা)। দেশের জনগণ এবং অভিভাবকদের টাকায় লেখাপড়া শেষে এসব শিক্ষার্থী যখন দেশের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পায় তখন তারা দেশের সাধারণ মানুষজনের কথা কতটা চিন্তা করে? তখন তাদের অনেকেই পদ-পদবি, পদমর্যাদা আর সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আকাক্সক্ষায় ব্যস্ত সময় কাটায়। দেশের মানুষের সেবা করার প্রবল আকাক্সক্ষা ও অনুভূতি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। অন্যের চেয়ে আরও ভালোভাবে জীবনযাপনের জন্য যা করার ঠিক তাই করে থাকে তারা। একটা অন্ধ প্রতিযোগিতার মতো চলতে থাকে তাদের। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য তারা কতকিছুই না করে! কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের চেয়ে ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধার প্রতি তাদের প্রবল আকর্ষণ থাকার কারণে ওইসব সরকারি আমলার কাছ থেকে তৃণমূল মানুষজন সেবা থেকে বঞ্চিত হন ।
আমরা একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছি। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতিতে ক্রমশই সহিষ্ণুতা এবং প্রেম উঠে যাচ্ছে। এর স্থানে হিংসা, বিদ্বেষ, রোষ, কলহ, পরনিন্দা, ক্রোধ, পরশ্রীকাতরতা, অসহিষ্ণুতা স্থান করে নিয়েছে। খুব দ্রুত ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতা তো রয়েছেই। পরিবারে এবং সমাজে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য যে প্রক্রিয়াতেই হোক ক্ষমতায়িত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করার প্রতিযোগিতাও বেশ লক্ষণীয়। সাধারণ ও নিরীহ মানুষজনকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের হয়রানি করার মহোৎসবও চলে। একদিকে ক্ষমতার লড়াই অন্যদিকে দায়িত্বে গাফিলতির মানসিকতা এসবই দেখতে হচ্ছে আমাদের।
একটা আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য যা যা করার প্রয়োজন, তা না করে আমরা শিশুকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এবং চাকরি পাওয়া পর্যন্ত পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রে শুধুই প্রতিযোগিতা দেখছি। প্রতিযোগিতা থাকা অবশ্যই ভালো, যদি সেখানে মানবীয় মূল্যবোধের সংমিশ্রণ থাকে। কিন্তু আমাদের প্রতিযোগিতায় একজনকে হেয় করে, একজনকে খাটো করে, একজনকে অপমানিত করে উপরে ওঠার পরিকল্পনা থাকে বলে আমরা একজন অপরজনকে সহ্য করতে পারি না। হিংসা-বিদ্বেষ আর চাতুরিতাপূর্ণ সমাজে আমরা পরস্পর দলাদলি করে বেঁচে আছি আর কী!
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া লাখ লাখ শিক্ষার্থীর কাছে আমাদের প্রত্যাশা- তারা আগামী দিনে বাংলাদেশে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য যোগ্যতার পরিচয় দেবে। তাদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা থাকবে কিন্তু সেটা মানবীয় মূল্যবোধসম্পন্ন। তারা অন্যের দিকে তাকিয়ে পরশ্রীকাতরতায় ভুগবে না বরং তারা কর্মময় জীবনে মেধা-বুদ্ধি, যোগ্যতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের উপরে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। জনগণের তথা রাষ্ট্রের টাকায় চিকিৎসক হয়ে, প্রকৌশলী হয়ে, বিজ্ঞানী হয়ে, বিচারক হয়ে জনগণের সেবা করার মনোভাব যেন উঠে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা সম্মিলিতভাবে দেশটাকে এগিয়ে নিতে চাই। এ জন্য অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে দায়িত্বশীল মনোভাব বজায় রাখতে হবে। আজকের যুবকরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। তারাই দেশের নেতৃত্ব দেবে। তারাই আমাদের সঠিক পথের ঠিকানা জানাবে। তারা যেন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার প্রতিযোগিতার মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ না রাখে বরং আমরা সাধারণ নাগরিকেরা তাদের কাছে আরও বেশি কিছু আশা করি। আমরা অজানা গন্তব্যে চলছি, এখন প্রয়োজন আদর্শিক নেতার নেতৃত্ব। এবারের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যেই হয়তো সেই নেতা লুকিয়ে রয়েছে, আমরা তার অপেক্ষায় প্রহর গুনছি। আমরা এ অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে সুস্থ-সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য যোগ্য নেতার নির্দেশনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মানসিকভাবে দৃঢ় ও প্রতিশ্র“তিশীল বন্ধুদের সালাম এবং স্যালুট জানাই। তাদের কর্মময় জীবনের পরীক্ষাগুলোয় উত্তীর্ণ হওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। চাটুকারিতা, তদবির করে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো অথবা তোষামোদি তাদের চিন্তাভাবনা ও জীবনধারায় যেন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে। এর পরিবর্তে নীতি-নিষ্ঠা বজায় রেখে সব প্রতিবন্ধকতা জয় করার সদিচ্ছা ও সংকল্প নিতে হবে; তবেই আমরা সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারব।
পলাশ কুমার রায়, আইনজীবী; আহ্বায়ক, সুশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন (সুপ্রা)
লাখ লাখ শিক্ষার্থী, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চ শিক্ষার জন্য এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে তারাই আগামী দিনে বাংলাদেশের যোগ্য উত্তরসূরি। তাদের মধ্যে কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, সরকারি আমলা হবে, রাজনীতিক হবে, চিকিৎসক হবে, বুদ্ধিজীবী হবে, সাংবাদিক হবে, আইনজীবী হবে, বিচারক হবে, প্রকৌশলী হবে। তারা নানা পেশায় নিজের যোগ্যতার পরিচয় দেবে। যেসব শিক্ষার্থী এসব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজগুলোতে পড়বে তারা কি জানে যে, তাদের পেছনে রাষ্ট্রকে মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হয় (যা দেশের জনগণের কষ্টার্জিত টাকা)। দেশের জনগণ এবং অভিভাবকদের টাকায় লেখাপড়া শেষে এসব শিক্ষার্থী যখন দেশের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পায় তখন তারা দেশের সাধারণ মানুষজনের কথা কতটা চিন্তা করে? তখন তাদের অনেকেই পদ-পদবি, পদমর্যাদা আর সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আকাক্সক্ষায় ব্যস্ত সময় কাটায়। দেশের মানুষের সেবা করার প্রবল আকাক্সক্ষা ও অনুভূতি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। অন্যের চেয়ে আরও ভালোভাবে জীবনযাপনের জন্য যা করার ঠিক তাই করে থাকে তারা। একটা অন্ধ প্রতিযোগিতার মতো চলতে থাকে তাদের। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য তারা কতকিছুই না করে! কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের চেয়ে ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধার প্রতি তাদের প্রবল আকর্ষণ থাকার কারণে ওইসব সরকারি আমলার কাছ থেকে তৃণমূল মানুষজন সেবা থেকে বঞ্চিত হন ।
আমরা একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছি। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতিতে ক্রমশই সহিষ্ণুতা এবং প্রেম উঠে যাচ্ছে। এর স্থানে হিংসা, বিদ্বেষ, রোষ, কলহ, পরনিন্দা, ক্রোধ, পরশ্রীকাতরতা, অসহিষ্ণুতা স্থান করে নিয়েছে। খুব দ্রুত ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতা তো রয়েছেই। পরিবারে এবং সমাজে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য যে প্রক্রিয়াতেই হোক ক্ষমতায়িত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করার প্রতিযোগিতাও বেশ লক্ষণীয়। সাধারণ ও নিরীহ মানুষজনকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের হয়রানি করার মহোৎসবও চলে। একদিকে ক্ষমতার লড়াই অন্যদিকে দায়িত্বে গাফিলতির মানসিকতা এসবই দেখতে হচ্ছে আমাদের।
একটা আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য যা যা করার প্রয়োজন, তা না করে আমরা শিশুকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এবং চাকরি পাওয়া পর্যন্ত পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রে শুধুই প্রতিযোগিতা দেখছি। প্রতিযোগিতা থাকা অবশ্যই ভালো, যদি সেখানে মানবীয় মূল্যবোধের সংমিশ্রণ থাকে। কিন্তু আমাদের প্রতিযোগিতায় একজনকে হেয় করে, একজনকে খাটো করে, একজনকে অপমানিত করে উপরে ওঠার পরিকল্পনা থাকে বলে আমরা একজন অপরজনকে সহ্য করতে পারি না। হিংসা-বিদ্বেষ আর চাতুরিতাপূর্ণ সমাজে আমরা পরস্পর দলাদলি করে বেঁচে আছি আর কী!
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া লাখ লাখ শিক্ষার্থীর কাছে আমাদের প্রত্যাশা- তারা আগামী দিনে বাংলাদেশে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য যোগ্যতার পরিচয় দেবে। তাদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা থাকবে কিন্তু সেটা মানবীয় মূল্যবোধসম্পন্ন। তারা অন্যের দিকে তাকিয়ে পরশ্রীকাতরতায় ভুগবে না বরং তারা কর্মময় জীবনে মেধা-বুদ্ধি, যোগ্যতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের উপরে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। জনগণের তথা রাষ্ট্রের টাকায় চিকিৎসক হয়ে, প্রকৌশলী হয়ে, বিজ্ঞানী হয়ে, বিচারক হয়ে জনগণের সেবা করার মনোভাব যেন উঠে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা সম্মিলিতভাবে দেশটাকে এগিয়ে নিতে চাই। এ জন্য অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে দায়িত্বশীল মনোভাব বজায় রাখতে হবে। আজকের যুবকরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। তারাই দেশের নেতৃত্ব দেবে। তারাই আমাদের সঠিক পথের ঠিকানা জানাবে। তারা যেন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার প্রতিযোগিতার মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ না রাখে বরং আমরা সাধারণ নাগরিকেরা তাদের কাছে আরও বেশি কিছু আশা করি। আমরা অজানা গন্তব্যে চলছি, এখন প্রয়োজন আদর্শিক নেতার নেতৃত্ব। এবারের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যেই হয়তো সেই নেতা লুকিয়ে রয়েছে, আমরা তার অপেক্ষায় প্রহর গুনছি। আমরা এ অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে সুস্থ-সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য যোগ্য নেতার নির্দেশনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মানসিকভাবে দৃঢ় ও প্রতিশ্র“তিশীল বন্ধুদের সালাম এবং স্যালুট জানাই। তাদের কর্মময় জীবনের পরীক্ষাগুলোয় উত্তীর্ণ হওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। চাটুকারিতা, তদবির করে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো অথবা তোষামোদি তাদের চিন্তাভাবনা ও জীবনধারায় যেন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে। এর পরিবর্তে নীতি-নিষ্ঠা বজায় রেখে সব প্রতিবন্ধকতা জয় করার সদিচ্ছা ও সংকল্প নিতে হবে; তবেই আমরা সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারব।
পলাশ কুমার রায়, আইনজীবী; আহ্বায়ক, সুশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন (সুপ্রা)
No comments