বিরোধপূর্ণ সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু ভারত-চীনের
ভারত ও চীন গতকাল সোমবার হিমালয় এলাকার বিরোধপূর্ণ সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে। সম্প্রতি ওই সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিলে দুই দেশের সম্পর্ক হুমকিতে পড়ে। বিরোধনিষ্পত্তির মাধ্যমে সেনা প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে ভারতের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তিন সপ্তাহের বেশি সময় আগে চীনের সেনারা সীমান্তের এমন একটি এলাকায় শিবির স্থাপন করে, যেটা নিজেদের বলে দাবি করে ভারত। এ নিয়ে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারত ওই সীমান্ত এলাকায় শক্তি বৃদ্ধি করে। তবে সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ব্যাপারে উভয় পক্ষের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছেন। ভারতের সেনাবাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গত রোববার রাতে উভয় পক্ষের সীমান্ত কমান্ডারদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে উভয় পক্ষ একটি চুক্তিতে উপনীত হয়। আমরা আমাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেব। চীনও একই কাজ করবে।’ সেনাবাহিনীর আরেকটি সূত্র জানায়, বিরোধপূর্ণ ওই সীমান্তের প্রত্যন্ত লাদাখ এলাকা থেকে ৫০ জন চীনা সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে এবং ভারতীয় একটি সামরিক বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রের কাছ থেকে তাঁবু সরিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রও সেনা প্রত্যাহারের খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছে, এ বিষয়ে পার্লামেন্টে একটি বিবৃতি দেওয়া হবে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ওই সীমান্তবিরোধের কোনো নিষ্পত্তি না হলে চলতি সপ্তাহের পূর্বঘোষিত বেইজিং সফর তিনি বাতিল করতে পারেন। তাঁর ওই মন্তব্যের পর সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের এই খবর এল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র গতকাল নিশ্চিত করেছে, মন্ত্রী খুরশিদ ৯ মের ওই সফরে যাচ্ছেন এবং সেখানে তিনি ‘দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যু ও উদ্বেগ’ নিয়ে চীনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এ ছাড়া চলতি মাসের শেষের দিকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের নয়াদিল্লি সফরের কথা রয়েছে। সীমান্তবিরোধকে কেন্দ্র করে তাঁর সফর নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। হিমালয় এলাকার সীমান্ত নিয়ে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছে। সীমান্ত নিয়ে ১৯৬২ সালে দুই পক্ষের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত যুদ্ধও সংঘটিত হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশ দুটির সম্পর্ক বেশ উষ্ণ হয়। কিন্তু লাদাখ এলাকার সীমান্ত নিয়ে সাম্প্রতিক ঘটনায় সম্পর্কে অবনতি ঘটার আশঙ্কা দেখা দেয়।
No comments