নীল ছবি
কোকিল ডাকা নিঝুম দুপুর। মাধ্যমিকের ঢেকুর তখনও জ্যান্ত। বাপিদার সিডির দোকানে চিরকুট সমেত পাঠিয়েছিলাম ভাইকে। দাবড়ানি সহ ফিরে এসেই ব্ল্যাকমেলিং শুরু। মা’কে বলে দেব। শেষমেশ রফা হল নেক্সট সাতদিন গোল্লাদার আলুর চপ রোজ দুটো করে।কিন্তু নিম্নগামী ব্যাথারা যে অবুঝ। তাই বাধ্য হয়ে হাজির হলাম সদলবলে। অনিন্দিতা চিরকালই গেছো টাইপ। ওই আমাদের মুখপাত্রী। গোটা আষ্টেক কুঁড়ি এসে নীল ছবির সিডি চাইছে দেখে বাপিদাও বাড়িতে বলে দেওযার ভয় দেখিয়ে ভাগিয়ে দিচ্ছিল। কিন্তু আমরা নাছোড়। পয়সা গুনে সিডি ভাড়া নেব। তাতে আবার অত জ্যাঠামি কিসের? অতঃপর জিন্সে সিডি গুঁজে বাড়ি ফিরে দরজায় ছিটকিনি।
তারপর কেউ বেসিনে দুপুরের ভাত ওল্টালো, তো কোনও নেকু বলে উঠল ছি!সেই শুরু। এরপর নীল ছবি দেখা হয়েছে বহুবার বহুভাবে। কিন্তু সম্প্রতি বিজেপির দুই বিধায়কের কপি করতে গিয়ে একঝটকায় সামনে এল প্রথম দুপুর। সেইদিনের নেকুর ‘ছি!’ অনায়াসে বেরিয়ে এল মুখ থেকে। আন্তরিক ভাবে। নরেন্দ্র মোদির রাজ্যে বিধানসভায় বসে অশ্লীল ছবি দেখছিলেন ওই দুই বিজেপি বিধায়ক। এক সাংবাদিকের ক্যামেরায় ধরা পড়ে এই ঘটনাটি। ওই সাংবাদিক জানিয়েছেন, বিধানসভার কার্যক্রম চলাকালীন এক বিধায়ক তাঁর ‘ট্যাবলেটে’ ছবি দেখাচ্ছিলেন অন্য বিধায়ককে। প্রথমে দু’জনে দেখছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের ছবি, তারপর কার্টুনের ছবি, সবশেষে তার দেখতে শুরু করেন নগ্ন মডেলের ছবি। বিজেপির বিধায়করা যে অশ্লীল ছবি দেখছেন সেই ছবি ধরা পড়ে সাংবাদিকের ক্যামেরায়। অভিযুক্ত দুই বিজেপি বিধায়ক অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সর্বোপরি ফরেন্সিক দফতর থেকে ক্লিনচিট পেয়েছেন তাঁরা।
দেশের দশের মাথাদের কীর্তি নিয়ে কি প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলাম বিভিন্ন মানুষের কাছে। জনগণের করের টাকায় বিধানসভায় আসীন এই বিধায়করা ক্রিমিনাল। এককথায় জানালেন লেখিকা জয়া মিত্র। তিনি জানালেন, সামাজিকভাবে এদের ধিক্কার প্রাপ্য। ভারতীয় সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে এই বয়সে যৌনতা সম্পর্কে বিকৃত আগ্রহ থাকার কথা তাঁদের নয়। বলা যায় তাঁরা চূড়ান্ত অ্যাডিক্টেড। এর থেকে ভয়ঙ্কর অবস্থায় সমাজ আর যেতে পারে না। এর থেকে বেরোতে গেলে সবার আগে দরকার মানসিকতার পরিবর্তন। একই সুরে কথা বললেন লেখিকা সুচিত্রা ভট্টাচার্য। এই ধরণের ঘটনা অসভ্যতা, অত্যন্ত নক্কারজনক কাজ বলে দাবি তাঁর। মেয়েদের খাদকের চোখে দেখে যারা, তারাই এই ধরণের বিকৃত যৌন মানসিকতার শিকার।
ইদানিং যিনি কলকাতাকে একাই দায়িত্ব নিয়ে গভীরে যেতে বাধ্য করেছেন সেই রূপঙ্কর এই ঘটনায় কোনওভাবেই আশ্চর্য হননি। তাঁর সাফ জবাব অশিক্ষিত লোকেরাই নির্বাচিত হয়ে সংসদে গিয়ে বসেন। ব্যক্তিগতভাবে পর্ণোগ্রাফি যে কেউ দেখতেই পারেন। তবে কাজের জায়গায় তার প্রয়োগ উচিত নয়। এমনকি বিধানসভায় বসে বিধায়ক পর্ণোগ্রাফির বদলে টিনটিন দেখলেও তা তাঁর কাছে সমান অপরাধের।
অন্যদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচিত্র বিভাগের অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় মনে করছেন, যে সমাজে সব কিছুই খারাপ বলা হচ্ছে সেখানে এ ধরণের ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই ঘটছে। সৌন্দর্য দেখার মুক্ত মন এদের নেই। এই অকর্মণ্য, দায়িত্বজ্ঞানহীন বিধায়কদের নিজেদের এই বিধান হলে দেশ তো অধঃপতিত হবেই।
ঘটনাটিকে সামাজিক অবক্ষয় হিসাবে ব্যাখ্যা করলেন সাইক্রিয়াটিস্ট তীর্থঙ্কর দাশগুপ্ত। যা ওই দুই বিধায়কের মানসিক সমস্যারও পরিচয়বাহী। এই জঘন্য আচরণের জন্য তাঁদের বিধায়ক পদই কেড়ে নেওয়া উচিত বলে দাবি তাঁর। তবে এই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ফ্রি মিক্সিং, সেক্স এডুকেশনের পাশাপাশি দরকার সঠিক অভিভাবকত্ব। যেখানে স্কুল, কলেজও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় বলে জানালেন তিনি।
ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে কথাটা পাড়তেই ঝাঁঝিয়ে উঠল অরিন্দম, পিয়ালি, শৌনকরা। দেখ বস্ এসব দেখে সবাই। তবে তার তো একটা জায়গা থাকবে। আমাদেরই ট্যাক্সের টাকায় লাল হয়ে গেল শালারা। এতটা ইরেন্সপন্সিবিল ভাবা যায় না। বছর ৪০ এর তপতীদি মেট্রোর সহযাত্রী। আইটি সেক্টরে খুঁটে খাওয়া তপতীদি জানালেন, ওদের বেঁধে পেটানো উচিত। মুদির দোকান চালিয়ে সংসার চালানো বিকাশকাকু প্রথমে তো এসব বিষয়ে জবাব দিতেই চান না। চেপে ধরতেই জানা গেল তাঁর ওসব দেখার অভ্যেস এখনো আছে। তাঁর যুক্তি কাজের সময় তো দেখি না। আর দেখি নিজের পয়সায়। আর নেতারা তো তোমার আমার পয়সাতে ফুটানি করছে।
তাহলে? পর্নোগ্রাফির দেখার যে অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু করেছিলাম তা আলাদা আলাদা হয়ত আপনাদের ক্ষেত্রেও। কিন্তু দেশ ও দশের ভার যাদের কাঁধে তাদের এ হেন আচরণ কতটা সমর্থন করেন? লাল চোখের প্রশ্নটা যখন রয়েই গেল না ভেবে, মনের কথা লিখে ফেলুন! জানান আমাদের।সূত্র: হ্যালো-টুডে ডটকম।
দেশের দশের মাথাদের কীর্তি নিয়ে কি প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলাম বিভিন্ন মানুষের কাছে। জনগণের করের টাকায় বিধানসভায় আসীন এই বিধায়করা ক্রিমিনাল। এককথায় জানালেন লেখিকা জয়া মিত্র। তিনি জানালেন, সামাজিকভাবে এদের ধিক্কার প্রাপ্য। ভারতীয় সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে এই বয়সে যৌনতা সম্পর্কে বিকৃত আগ্রহ থাকার কথা তাঁদের নয়। বলা যায় তাঁরা চূড়ান্ত অ্যাডিক্টেড। এর থেকে ভয়ঙ্কর অবস্থায় সমাজ আর যেতে পারে না। এর থেকে বেরোতে গেলে সবার আগে দরকার মানসিকতার পরিবর্তন। একই সুরে কথা বললেন লেখিকা সুচিত্রা ভট্টাচার্য। এই ধরণের ঘটনা অসভ্যতা, অত্যন্ত নক্কারজনক কাজ বলে দাবি তাঁর। মেয়েদের খাদকের চোখে দেখে যারা, তারাই এই ধরণের বিকৃত যৌন মানসিকতার শিকার।
ইদানিং যিনি কলকাতাকে একাই দায়িত্ব নিয়ে গভীরে যেতে বাধ্য করেছেন সেই রূপঙ্কর এই ঘটনায় কোনওভাবেই আশ্চর্য হননি। তাঁর সাফ জবাব অশিক্ষিত লোকেরাই নির্বাচিত হয়ে সংসদে গিয়ে বসেন। ব্যক্তিগতভাবে পর্ণোগ্রাফি যে কেউ দেখতেই পারেন। তবে কাজের জায়গায় তার প্রয়োগ উচিত নয়। এমনকি বিধানসভায় বসে বিধায়ক পর্ণোগ্রাফির বদলে টিনটিন দেখলেও তা তাঁর কাছে সমান অপরাধের।
অন্যদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচিত্র বিভাগের অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় মনে করছেন, যে সমাজে সব কিছুই খারাপ বলা হচ্ছে সেখানে এ ধরণের ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই ঘটছে। সৌন্দর্য দেখার মুক্ত মন এদের নেই। এই অকর্মণ্য, দায়িত্বজ্ঞানহীন বিধায়কদের নিজেদের এই বিধান হলে দেশ তো অধঃপতিত হবেই।
ঘটনাটিকে সামাজিক অবক্ষয় হিসাবে ব্যাখ্যা করলেন সাইক্রিয়াটিস্ট তীর্থঙ্কর দাশগুপ্ত। যা ওই দুই বিধায়কের মানসিক সমস্যারও পরিচয়বাহী। এই জঘন্য আচরণের জন্য তাঁদের বিধায়ক পদই কেড়ে নেওয়া উচিত বলে দাবি তাঁর। তবে এই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ফ্রি মিক্সিং, সেক্স এডুকেশনের পাশাপাশি দরকার সঠিক অভিভাবকত্ব। যেখানে স্কুল, কলেজও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় বলে জানালেন তিনি।
ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে কথাটা পাড়তেই ঝাঁঝিয়ে উঠল অরিন্দম, পিয়ালি, শৌনকরা। দেখ বস্ এসব দেখে সবাই। তবে তার তো একটা জায়গা থাকবে। আমাদেরই ট্যাক্সের টাকায় লাল হয়ে গেল শালারা। এতটা ইরেন্সপন্সিবিল ভাবা যায় না। বছর ৪০ এর তপতীদি মেট্রোর সহযাত্রী। আইটি সেক্টরে খুঁটে খাওয়া তপতীদি জানালেন, ওদের বেঁধে পেটানো উচিত। মুদির দোকান চালিয়ে সংসার চালানো বিকাশকাকু প্রথমে তো এসব বিষয়ে জবাব দিতেই চান না। চেপে ধরতেই জানা গেল তাঁর ওসব দেখার অভ্যেস এখনো আছে। তাঁর যুক্তি কাজের সময় তো দেখি না। আর দেখি নিজের পয়সায়। আর নেতারা তো তোমার আমার পয়সাতে ফুটানি করছে।
তাহলে? পর্নোগ্রাফির দেখার যে অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু করেছিলাম তা আলাদা আলাদা হয়ত আপনাদের ক্ষেত্রেও। কিন্তু দেশ ও দশের ভার যাদের কাঁধে তাদের এ হেন আচরণ কতটা সমর্থন করেন? লাল চোখের প্রশ্নটা যখন রয়েই গেল না ভেবে, মনের কথা লিখে ফেলুন! জানান আমাদের।সূত্র: হ্যালো-টুডে ডটকম।
No comments