কেন শুধু পুরুষ, কেন শুধু নারী? by আকারি সাসাকি
কেন শুধু নারী? |
টোকিওর
বিদেশবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানি শিক্ষার্থীর রচনাঃ >>> ‘এই
যে পুরুষ, টেবিলটা সরিয়ে দিন।’ ‘তুমি নারী, চা নিয়ে এসো।’ এই কথাগুলো আমাকে
সেদিন ভাবিয়েছিল। কেন? এটা ঠিক যে আমি নারী। কিন্তু কেন আমাকে চা নিয়ে
আসতে হবে? টেবিলটা তো আমিও সরাতে পারি, তাই না? বরং বৃদ্ধ যেসব পুরুষ এখানে
আছেন তাঁদের চেয়ে ভালো করে সেই কাজ আমি করতে পারি।
এটা আমার দাদির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময়ের কথা। আমার বয়স তখন ১৮ বছর। জাপানে আত্মীয়রা মিলিত হওয়ার সময় নারীকে সব সময় সবার জন্য চা পরিবেশন করতে হয়। আর ভারী জিনিস সরানো হচ্ছে পুরুষের কাজ। তবে আমি এটা সেদিন বুঝতে পারিনি। নারী আর পুরুষকে কেন আলাদা কাজ করতে হয়? সেই ঘটনা থেকে লিঙ্গ সমস্যা নিয়ে শেখার আগ্রহ আমি পেয়েছি।
আমি ছোটবেলা থেকে ভেবেছিলাম কেন শুধু মা রান্না করেন। আমার বাবা ও মা দুজনই চাকরি করেন। আমার মা রোজ কাজ থেকে বাড়িতে ফিরে এসে রাতের খাবার তৈরি করেন। আমার বাবা তা করেন না। সকালেও একই রকম। মা ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে নাশতা তৈরি করেন। আর এটা শুধু রান্না নিয়ে নয়। বাড়ির অনেক কাজ—যেমন কাপড় ধোয়া আর ঘর পরিষ্কারের কাজ, এর সবটাই মা করেন। টিভি নাটক বা সিনেমাতেও ঠিক এভাবেই নারী বাড়ির কাজ করেন। তবে কেন?
জাপানে অল্প কিছুদিন আগে পর্যন্ত প্রায় সব বাড়িতে বাবা বাইরে চাকরি করতেন আর মা করতেন বাড়ির কাজ। তবে মাও চাকরি করছেন তেমন বাড়িও জাপানে আজকাল অনেক আছে। আমার নিজের বাড়িও তাই। তাহলে বাবারও তো মায়ের মতোই বাড়ির কাজ করা দরকার। কিন্তু সেই যে আগে যখন শুধু বাবা বাইরে চাকরি করতেন, সেই সময়ের অভ্যাস মনে হয় এখনো থেকে গেছে।
শুধু বাড়ির কাজ নিয়েই অনেক আগে থেকে আমি ভাবিনি। আরও যে একটি প্রশ্ন আমার মনে দেখা দিয়েছিল তা হলো, কেন শুধু নারীকে মেকআপ নিতে হয়? আমি এটাও জানি, অনেক নারীর মেকআপ পছন্দ। তবে কেন ‘সব’ নারীকেই সেটা পরতে হয়? মেকআপ পছন্দ করে না সে রকম নারীও নিশ্চয় আছে। আমি যখন পার্টটাইম কাজ করতে শুরু করেছিলাম, তখন আমাকে সব সময় বলা হতো যে, ‘মেকআপ করে আসুন’ ‘মেকআপ না করে আসবেন না’।
জাপানে নারীর মেকআপ পরা হচ্ছে ভদ্রতার প্রতিফলন। সেটা হচ্ছে এমন কিছু নারীকে যা অবশ্যই করতে হয়। যে নারী মেকআপ করে না, সে কি নারী নয়? কেন শুধু নারীকেই মেকআপ নিতে হয়? আর যদি পুরুষ মেকআপ করে তাহলে মানুষ মনে করবে সেটা হচ্ছে অদ্ভুত। মেকআপ করা পুরুষের জন্য ভদ্রতা নয়। যে পুরুষ মেকআপ নিচ্ছে সে কি পুরুষ নয়? আজকাল জাপানে মেকআপ নেওয়া পুরুষও অনেক আছে। তবে এদের দেখা হয় লিঙ্গ নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে। এটা থেকেও আমরা দেখতে পাই, মেকআপ হচ্ছে শুধু নারীদের জিনিস, পুরুষদের নয়। তাই যে পুরুষ মেকআপ করছে সেই পুরুষ হচ্ছে ‘নারীর মতো’ পুরুষ।
আমার মনে আরও যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল তা হলো, রঙেও কেন লিঙ্গ আছে। নারীর মতো রং ও পুরুষের মতো রং কেন আছে? আমি ছোটবেলায় আকাশি রং পছন্দ করতাম। কিন্তু আমার বন্ধুরা এ রকম বলেছিল যে, মেয়েরা গোলাপি বা কমলা রং পছন্দ করে আর ছেলেদের পছন্দ নীল বা সবুজ রং। আমার তাই মনে হয়েছিল, আমি হয়তো নারীর মতো নই।
এটা আমার দাদির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময়ের কথা। আমার বয়স তখন ১৮ বছর। জাপানে আত্মীয়রা মিলিত হওয়ার সময় নারীকে সব সময় সবার জন্য চা পরিবেশন করতে হয়। আর ভারী জিনিস সরানো হচ্ছে পুরুষের কাজ। তবে আমি এটা সেদিন বুঝতে পারিনি। নারী আর পুরুষকে কেন আলাদা কাজ করতে হয়? সেই ঘটনা থেকে লিঙ্গ সমস্যা নিয়ে শেখার আগ্রহ আমি পেয়েছি।
আমি ছোটবেলা থেকে ভেবেছিলাম কেন শুধু মা রান্না করেন। আমার বাবা ও মা দুজনই চাকরি করেন। আমার মা রোজ কাজ থেকে বাড়িতে ফিরে এসে রাতের খাবার তৈরি করেন। আমার বাবা তা করেন না। সকালেও একই রকম। মা ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে নাশতা তৈরি করেন। আর এটা শুধু রান্না নিয়ে নয়। বাড়ির অনেক কাজ—যেমন কাপড় ধোয়া আর ঘর পরিষ্কারের কাজ, এর সবটাই মা করেন। টিভি নাটক বা সিনেমাতেও ঠিক এভাবেই নারী বাড়ির কাজ করেন। তবে কেন?
জাপানে অল্প কিছুদিন আগে পর্যন্ত প্রায় সব বাড়িতে বাবা বাইরে চাকরি করতেন আর মা করতেন বাড়ির কাজ। তবে মাও চাকরি করছেন তেমন বাড়িও জাপানে আজকাল অনেক আছে। আমার নিজের বাড়িও তাই। তাহলে বাবারও তো মায়ের মতোই বাড়ির কাজ করা দরকার। কিন্তু সেই যে আগে যখন শুধু বাবা বাইরে চাকরি করতেন, সেই সময়ের অভ্যাস মনে হয় এখনো থেকে গেছে।
শুধু বাড়ির কাজ নিয়েই অনেক আগে থেকে আমি ভাবিনি। আরও যে একটি প্রশ্ন আমার মনে দেখা দিয়েছিল তা হলো, কেন শুধু নারীকে মেকআপ নিতে হয়? আমি এটাও জানি, অনেক নারীর মেকআপ পছন্দ। তবে কেন ‘সব’ নারীকেই সেটা পরতে হয়? মেকআপ পছন্দ করে না সে রকম নারীও নিশ্চয় আছে। আমি যখন পার্টটাইম কাজ করতে শুরু করেছিলাম, তখন আমাকে সব সময় বলা হতো যে, ‘মেকআপ করে আসুন’ ‘মেকআপ না করে আসবেন না’।
জাপানে নারীর মেকআপ পরা হচ্ছে ভদ্রতার প্রতিফলন। সেটা হচ্ছে এমন কিছু নারীকে যা অবশ্যই করতে হয়। যে নারী মেকআপ করে না, সে কি নারী নয়? কেন শুধু নারীকেই মেকআপ নিতে হয়? আর যদি পুরুষ মেকআপ করে তাহলে মানুষ মনে করবে সেটা হচ্ছে অদ্ভুত। মেকআপ করা পুরুষের জন্য ভদ্রতা নয়। যে পুরুষ মেকআপ নিচ্ছে সে কি পুরুষ নয়? আজকাল জাপানে মেকআপ নেওয়া পুরুষও অনেক আছে। তবে এদের দেখা হয় লিঙ্গ নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে। এটা থেকেও আমরা দেখতে পাই, মেকআপ হচ্ছে শুধু নারীদের জিনিস, পুরুষদের নয়। তাই যে পুরুষ মেকআপ করছে সেই পুরুষ হচ্ছে ‘নারীর মতো’ পুরুষ।
আমার মনে আরও যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল তা হলো, রঙেও কেন লিঙ্গ আছে। নারীর মতো রং ও পুরুষের মতো রং কেন আছে? আমি ছোটবেলায় আকাশি রং পছন্দ করতাম। কিন্তু আমার বন্ধুরা এ রকম বলেছিল যে, মেয়েরা গোলাপি বা কমলা রং পছন্দ করে আর ছেলেদের পছন্দ নীল বা সবুজ রং। আমার তাই মনে হয়েছিল, আমি হয়তো নারীর মতো নই।
ছেলের মতো রং? মেয়ের মতো রং? |
স্টেশনারি
থেকে পোশাক পর্যন্ত ছেলেদের জিনিস ও মেয়েদের জিনিস বেশির ভাগ সময় আলাদা
রঙের হয়ে থাকে। ছেলের জিনিসগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নীল রঙের আর মেয়ের
জিনিসে গোলাপি রং বেশি। আর জাপানের স্কুলব্যাগও ছেলেদের ও মেয়েদের আলাদা
রঙের হয়। যখন আমি প্রাথমিক স্কুলে যেতাম তখন প্রায় সব ছেলের ব্যাগ ছিল কালো
বা নীল রঙের আর মেয়েদের ব্যাগের রং ছিল লাল বা গোলাপি। আজকাল এটা একটু
বদলে যাওয়ায় বাদামি বা বেগুনি রংও দেখা যায়। এ রকম করে ছোটবেলা থেকে ছেলের
মতো বা নারীর মতো রং ঠিক করে দেওয়া আছে। বাচ্চাদের জন্য এর প্রভাব ভালো নয়
বলে আমার মনে হয়। কারণ, বাচ্চারা মনে করে নেবে যে ছেলে বা মেয়ের মতো করে
তাদের থাকতে হবে।
এবার আমার নিজের অভিজ্ঞতার বাইরের একটি উপাত্ত থেকে জাপানের লিঙ্গ সমস্যা নিয়ে আমি বলব। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ২০১৮ সালের লিঙ্গবৈষম্য সূচকে জাপানের অবস্থান হচ্ছে ১৪৯ দেশের মধ্যে ১১০। অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর রাজনীতির ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে কতটা বৈষম্য বিরাজমান, সেই উপাত্ত থেকে এই সূচক ঠিক করে নেওয়া হয়। এই চারটি ক্ষেত্রের মধ্যে রাজনীতিতে জাপানের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এর কারণ হলো জাপানে কখনো কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী হয়নি এবং জাতীয় সংসদে নারী সদস্যের সংখ্যা খুব কম। আর অর্থনীতির ক্ষেত্রেও জাপান খুব খারাপ অবস্থায় আছে। জাপানে এখনো নারী-পুরুষের মধ্যে আয়ের ব্যবধান বেশ বড় আর ব্যবস্থাপনার কাজ, অন্য কাজের চেয়ে বেতন যেখানে বেশি, সেই কাজে নারীর আনুপাতিক হার যথেষ্ট কম।
জাপানের বিপরীতে লিঙ্গবৈষম্য সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৮তম। এটা হচ্ছে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান। এই ফলাফল অর্জনে রাজনীতির ক্ষেত্রে ভালো উপাত্ত বড় প্রভাব রেখেছে। বাংলাদেশ রাজনীতির ক্ষেত্রে সব দেশগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থানে। এর কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারী। আর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩৫০টি আসনের মধ্যে ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এসব কারণে রাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক উঁচুতে। রাজনীতির সূচকে জাপানের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের অবস্থা তাই জাপানের জন্য মডেল হবে বলে মনে হয়।
এ পর্যন্ত যা আমি বললাম তা হলো, আমার দেখা জাপানে লিঙ্গের অবস্থা। আমি রোজ লিঙ্গ নিয়ে অনেক কিছু ভাবি। এই সেপ্টেম্বর থেকে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যাচ্ছি। উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার লিঙ্গ সমস্যা নিয়ে লেখাপড়া করা। আমি বলেছি, বাংলাদেশে লিঙ্গ সমতা জাপানের জন্য মডেল হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে আমি এখন জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। দিল্লি গিয়ে আরও বেশি লেখাপড়া করলে জাপানের লিঙ্গ সমস্যা নিয়েও নতুন কিছু হয়তো আমি দেখতে পারব। এরপর জাপানের লিঙ্গ পরিস্থিতির মধ্যে যেগুলো আমি এখনো বুঝতে পারি না, সেগুলো যেন ধীরে দূর হয়ে যায়, সেই আশা আমি করছি।
এবার আমার নিজের অভিজ্ঞতার বাইরের একটি উপাত্ত থেকে জাপানের লিঙ্গ সমস্যা নিয়ে আমি বলব। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ২০১৮ সালের লিঙ্গবৈষম্য সূচকে জাপানের অবস্থান হচ্ছে ১৪৯ দেশের মধ্যে ১১০। অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর রাজনীতির ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে কতটা বৈষম্য বিরাজমান, সেই উপাত্ত থেকে এই সূচক ঠিক করে নেওয়া হয়। এই চারটি ক্ষেত্রের মধ্যে রাজনীতিতে জাপানের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এর কারণ হলো জাপানে কখনো কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী হয়নি এবং জাতীয় সংসদে নারী সদস্যের সংখ্যা খুব কম। আর অর্থনীতির ক্ষেত্রেও জাপান খুব খারাপ অবস্থায় আছে। জাপানে এখনো নারী-পুরুষের মধ্যে আয়ের ব্যবধান বেশ বড় আর ব্যবস্থাপনার কাজ, অন্য কাজের চেয়ে বেতন যেখানে বেশি, সেই কাজে নারীর আনুপাতিক হার যথেষ্ট কম।
জাপানের বিপরীতে লিঙ্গবৈষম্য সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৮তম। এটা হচ্ছে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান। এই ফলাফল অর্জনে রাজনীতির ক্ষেত্রে ভালো উপাত্ত বড় প্রভাব রেখেছে। বাংলাদেশ রাজনীতির ক্ষেত্রে সব দেশগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থানে। এর কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারী। আর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩৫০টি আসনের মধ্যে ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এসব কারণে রাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক উঁচুতে। রাজনীতির সূচকে জাপানের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের অবস্থা তাই জাপানের জন্য মডেল হবে বলে মনে হয়।
এ পর্যন্ত যা আমি বললাম তা হলো, আমার দেখা জাপানে লিঙ্গের অবস্থা। আমি রোজ লিঙ্গ নিয়ে অনেক কিছু ভাবি। এই সেপ্টেম্বর থেকে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যাচ্ছি। উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার লিঙ্গ সমস্যা নিয়ে লেখাপড়া করা। আমি বলেছি, বাংলাদেশে লিঙ্গ সমতা জাপানের জন্য মডেল হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে আমি এখন জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। দিল্লি গিয়ে আরও বেশি লেখাপড়া করলে জাপানের লিঙ্গ সমস্যা নিয়েও নতুন কিছু হয়তো আমি দেখতে পারব। এরপর জাপানের লিঙ্গ পরিস্থিতির মধ্যে যেগুলো আমি এখনো বুঝতে পারি না, সেগুলো যেন ধীরে দূর হয়ে যায়, সেই আশা আমি করছি।
আমার বাবা-মা। তাঁদের দেখে আমি লিঙ্গ সমস্যা নিয়ে অনেক উপলব্ধি করেছি |
No comments