সিলেটজুড়ে অন্যরকম নীরবতা by রুদ্র মিজান
সারা
দেশের মতো সিলেটজুড়ে এক মহাবিজয় পেলো মহাজোট। দুটি আসন ছাড়া প্রতিটি আসনে
তাদের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের
প্রার্থী ড. একে আবদুল মোমেন বিজয়ী হয়েছেন। এ বিজয়ে যে আনন্দ উপভোগ করার
কথা ছিল, সেরকম কোনো আনন্দ নেই সিলেটে।
আছে অন্যরকম নীরবতা। মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ড. একে মোমেন এবং বিএনপি প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদির সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য। দু-জনেই ভদ্রজন হিসেবে পরিচিত।
তাদের নিয়ে কথা নেই। কথা হচ্ছে ভোট নিয়ে। এ কেমন ভোট হলো। ভোট দিতে পারেননি অনেকেই। ভয়ে-শঙ্কায় কেন্দ্রে যাননি অনেকে। আবার শঙ্কা কাটিয়ে কেন্দ্রে গিয়েও ফিরে এসেছেন ভোটাররা। কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন না হলেও ভোট প্রয়োগ হয়েছে ধারণার চেয়ে বেশি। তবে এত শত অভিযোগের মধ্যেও উন্নয়নের জয় হয়েছে বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সিলেটের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ছিল। তাই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিজয় হয়েছে বলেই মনে করেন তারা।
আলোচনায় স্থান পাচ্ছে, ভোটের আগের রাতের নানা গুঞ্জন। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে নানা কাহিনী। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোরেই রহস্যময় ভোট প্রয়োগের পরিসংখ্যান। দুপুরে বুথে ঘটে যাওয়া ভুতুড়ে কাণ্ড। দুই তৃতীয়াংশ খালি থাকা বাক্সগুলো উধাও হয়ে যায়, ঘণ্টা-দেড়ঘণ্টা পরে রেখে যাওয়া হয় ব্যালট পরিপূর্ণ বাক্স। কোথাও কোথাও এজেন্টদের প্রতিবাদ। তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশ ও প্রভাবশালীদের কাছে পাত্তা পায়নি। নির্বাচনের আগে রাতের বেলা কেন্দ্রে কি ঘটেছিল। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা কি ছিল। কারা রাতের আঁধারে ব্যালটে সিল দিয়েছিল। এসব বিষয় আলোচনায় স্থান পাচ্ছে।
বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে কথা ছিল একটাই ‘ভোট গ্রহণ স্লো করুন। আরো স্লো।’ লাইনে দাঁড়ানো ভোটাররা অনেকেই বিরক্ত হয়ে ফিরে গেছেন। লাঞ্চের কথা বলে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয় বিভিন্ন কেন্দ্রে। ঠিক তখন ব্যালট বাক্স কারা, কোথায় নিয়ে গিয়েছিল এ সবই হচ্ছে আলোচনার বিষয়। মুক ও বধির স্কুল কেন্দ্রের এজেন্টরা জানান, হঠাৎ করেই দুপুরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিরাপত্তার নামে ব্যালট বাক্স দু’তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় প্রতিবাদ করলে জোর করে তাদের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। দেড় ঘণ্টা পরে ব্যালট পরিপূর্ণ বাক্স নামানো হয় নিচে। এটিকে একটি সাজানো নির্বাচন উল্লেখ করে বাসদের সিলেট জেলার সমন্বয়ক আবু জাফর বলেন, এটি ভোট কারচুপির নির্বাচন। সাজানো ও প্রহসনের নির্বাচন। আমরা দেখেছি, ব্যালট বাক্স সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভোটারদের লাইনে রেখে লাঞ্চের বিরতির নামে পরিকল্পিত ছক বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের সরাতে লাঠিচার্জ করা হয়েছে। এমনকি হিসেবেও গরমিল করা হয়েছে। এটি সাজানো একটি নির্বাচন। সরকারের লুটপাটের শাসনকে দীর্ঘ করতে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে এই নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। সাধারণ মানুষদের মধ্যে কাজলশাহ এলাকার আহমদ আলী জানান, তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থন করেন। কিন্তু এরকম প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন চাননি। তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন, আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতায় আসবে।
কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সহিংসতামুক্ত হয়েছে জানিয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম বলেন, এটি জামায়াত-জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল পক্ষের বিজয়। একই মন্তব্য করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে উন্নয়ন হয়েছে। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য বিস্তার লাভ করেনি। এ ছাড়া শেখ হাসিনা কথা দিয়ে কথা রাখেন, তার ইশতেহারে মানুষের আস্থা ছিল বলেই মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
মানুষ গণতন্ত্রের পক্ষে জানিয়ে ল কলেজের সাবেক ভিপি মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, কারচুপি বা ভোট ডাকাতি না হলে গণতন্ত্র, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে ধানের শীষ সারা দেশে বিজয়ী হতো।
গতকাল সারা দিন সিলেট শহর ঘুরে দেখা গেছে, লোকজনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্দীপনা নেই। বরং নিস্তব্ধ, নীরবতা সিলেটজুড়ে। অনেকেই নির্বাচন প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। দেখা মিলেনি বিএনপি নেতাদেরও। নাগরিক জোট সিলেটের সভাপতি হুমায়ূন চৌধুরী বলেন, ড. মোমেন ও মুক্তাদীর দু-জনই ভদ্র লোক। তাদের যে কেউ বিজয়ী হলে সিলেটবাসীর মঙ্গল হবে। কিন্তু এরকম নির্বাচন আমরা আশা করিনি। অনেকে ভোট দেয়া হয়ে গেছে জানিয়ে ভোটারদের ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এমনকি সংঘর্ষ, লাঠিচার্জ করা হয়েছে। অথচ বিপুল ভোট কাস্ট হয়েছে। এ সবই রহস্যময়। এই রহস্যময় নির্বাচন সিলেটবাসী চাননি বলে জানান তিনি।
সিলেট জেলায় মোট ভোটার ২২ লাখ ৫২ হাজার ৭৬৪। এর মধ্যে এই নির্বাচনে প্রয়োগ হয়েছে ১৭ লাখ ২৯ হাজার ৬৪। যা ৭৬.৭৫ ভাগ। সিলেট-আসনে নৌকার প্রার্থী একে মোমেন পেয়েছেন ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬৯৬ ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর পেয়েছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৫১ ভোট।
আছে অন্যরকম নীরবতা। মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ড. একে মোমেন এবং বিএনপি প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদির সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য। দু-জনেই ভদ্রজন হিসেবে পরিচিত।
তাদের নিয়ে কথা নেই। কথা হচ্ছে ভোট নিয়ে। এ কেমন ভোট হলো। ভোট দিতে পারেননি অনেকেই। ভয়ে-শঙ্কায় কেন্দ্রে যাননি অনেকে। আবার শঙ্কা কাটিয়ে কেন্দ্রে গিয়েও ফিরে এসেছেন ভোটাররা। কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন না হলেও ভোট প্রয়োগ হয়েছে ধারণার চেয়ে বেশি। তবে এত শত অভিযোগের মধ্যেও উন্নয়নের জয় হয়েছে বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সিলেটের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ছিল। তাই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিজয় হয়েছে বলেই মনে করেন তারা।
আলোচনায় স্থান পাচ্ছে, ভোটের আগের রাতের নানা গুঞ্জন। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে নানা কাহিনী। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোরেই রহস্যময় ভোট প্রয়োগের পরিসংখ্যান। দুপুরে বুথে ঘটে যাওয়া ভুতুড়ে কাণ্ড। দুই তৃতীয়াংশ খালি থাকা বাক্সগুলো উধাও হয়ে যায়, ঘণ্টা-দেড়ঘণ্টা পরে রেখে যাওয়া হয় ব্যালট পরিপূর্ণ বাক্স। কোথাও কোথাও এজেন্টদের প্রতিবাদ। তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশ ও প্রভাবশালীদের কাছে পাত্তা পায়নি। নির্বাচনের আগে রাতের বেলা কেন্দ্রে কি ঘটেছিল। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা কি ছিল। কারা রাতের আঁধারে ব্যালটে সিল দিয়েছিল। এসব বিষয় আলোচনায় স্থান পাচ্ছে।
বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে কথা ছিল একটাই ‘ভোট গ্রহণ স্লো করুন। আরো স্লো।’ লাইনে দাঁড়ানো ভোটাররা অনেকেই বিরক্ত হয়ে ফিরে গেছেন। লাঞ্চের কথা বলে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয় বিভিন্ন কেন্দ্রে। ঠিক তখন ব্যালট বাক্স কারা, কোথায় নিয়ে গিয়েছিল এ সবই হচ্ছে আলোচনার বিষয়। মুক ও বধির স্কুল কেন্দ্রের এজেন্টরা জানান, হঠাৎ করেই দুপুরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিরাপত্তার নামে ব্যালট বাক্স দু’তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় প্রতিবাদ করলে জোর করে তাদের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। দেড় ঘণ্টা পরে ব্যালট পরিপূর্ণ বাক্স নামানো হয় নিচে। এটিকে একটি সাজানো নির্বাচন উল্লেখ করে বাসদের সিলেট জেলার সমন্বয়ক আবু জাফর বলেন, এটি ভোট কারচুপির নির্বাচন। সাজানো ও প্রহসনের নির্বাচন। আমরা দেখেছি, ব্যালট বাক্স সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভোটারদের লাইনে রেখে লাঞ্চের বিরতির নামে পরিকল্পিত ছক বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের সরাতে লাঠিচার্জ করা হয়েছে। এমনকি হিসেবেও গরমিল করা হয়েছে। এটি সাজানো একটি নির্বাচন। সরকারের লুটপাটের শাসনকে দীর্ঘ করতে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে এই নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। সাধারণ মানুষদের মধ্যে কাজলশাহ এলাকার আহমদ আলী জানান, তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থন করেন। কিন্তু এরকম প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন চাননি। তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন, আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতায় আসবে।
কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সহিংসতামুক্ত হয়েছে জানিয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম বলেন, এটি জামায়াত-জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল পক্ষের বিজয়। একই মন্তব্য করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে উন্নয়ন হয়েছে। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য বিস্তার লাভ করেনি। এ ছাড়া শেখ হাসিনা কথা দিয়ে কথা রাখেন, তার ইশতেহারে মানুষের আস্থা ছিল বলেই মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
মানুষ গণতন্ত্রের পক্ষে জানিয়ে ল কলেজের সাবেক ভিপি মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, কারচুপি বা ভোট ডাকাতি না হলে গণতন্ত্র, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে ধানের শীষ সারা দেশে বিজয়ী হতো।
গতকাল সারা দিন সিলেট শহর ঘুরে দেখা গেছে, লোকজনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্দীপনা নেই। বরং নিস্তব্ধ, নীরবতা সিলেটজুড়ে। অনেকেই নির্বাচন প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। দেখা মিলেনি বিএনপি নেতাদেরও। নাগরিক জোট সিলেটের সভাপতি হুমায়ূন চৌধুরী বলেন, ড. মোমেন ও মুক্তাদীর দু-জনই ভদ্র লোক। তাদের যে কেউ বিজয়ী হলে সিলেটবাসীর মঙ্গল হবে। কিন্তু এরকম নির্বাচন আমরা আশা করিনি। অনেকে ভোট দেয়া হয়ে গেছে জানিয়ে ভোটারদের ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এমনকি সংঘর্ষ, লাঠিচার্জ করা হয়েছে। অথচ বিপুল ভোট কাস্ট হয়েছে। এ সবই রহস্যময়। এই রহস্যময় নির্বাচন সিলেটবাসী চাননি বলে জানান তিনি।
সিলেট জেলায় মোট ভোটার ২২ লাখ ৫২ হাজার ৭৬৪। এর মধ্যে এই নির্বাচনে প্রয়োগ হয়েছে ১৭ লাখ ২৯ হাজার ৬৪। যা ৭৬.৭৫ ভাগ। সিলেট-আসনে নৌকার প্রার্থী একে মোমেন পেয়েছেন ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬৯৬ ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর পেয়েছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৫১ ভোট।
No comments