কারো কাছে মহানায়ক, কেউ বলে স্বৈরশাসক
ফিদেল কাস্ত্রোর সমসাময়িক ও পরবর্তী প্রজন্মের বিশ্বনেতা, সতীর্থ ও সাহিত্যিকেরা নানাভাবে তাঁর মূল্যায়ন করেছেন। কেউ তাঁকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। কারও মুখে তাঁর জন্য শুধুই সমালোচনা। নেলসন ম্যান্ডেলা: দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা ১৯৯১ সালের জুলাইতে এক ভাষণে বলেছিলেন, ‘প্রথম দিনগুলো থেকেই কাস্ত্রো ছিলেন স্বাধীনতাকামী মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস। বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী ও পরিকল্পিত চাপ সত্ত্বেও স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কিউবার জনগণের ত্যাগ স্বীকারকে আমরা শ্রদ্ধা জানাই।
কিউবার বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক। ফিদেল কাস্ত্রো দীর্ঘজীবী হোন।’ জন এফ কেনেডি: কিউবার কড়া সমালোচক যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির অভিমত ছিল, কাস্ত্রো কেবলই আরেকজন লাতিন আমেরিকান স্বৈরশাসক। তিনি ব্যক্তিগত ক্ষমতা ও অর্জনের জন্য সুচারুভাবে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার দিকে ঝুঁকেছেন। তিনি উচ্চাভিলাষী, নিজের গণ্ডির বাইরে যেতে চান। হুগো চাভেজ: ভেনেজুয়েলার সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রয়াত হুগো চাভেজ বলেছিলেন, তাঁর কাছে কাস্ত্রো একজন ‘গ্র্যান্ডমাস্টার’। ২০০৭ সালে এক ভাষণে চাভেজ বলেন, ‘একজন বিজ্ঞ ব্যক্তি কখনো মারা যেতে পারেন না। ফিদেলের মতো একজন ব্যক্তিত্ব কখনো মারা যাবেন না। কেননা, তিনি চিরদিন মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।’ চে গুয়েভারা: কাস্ত্রোর বিপ্লবের সঙ্গী চে গুয়েভারা ১৯৫৫ সালে নিজের মা-বাবার কাছে লেখা চিঠিতে তাঁর সম্পর্কে বলেন, ‘ফিদেল কাস্ত্রোকে আমার একজন অসাধারণ মানুষ মনে হয়েছে। যখন আমরা বিপ্লবের জন্য মেক্সিকো থেকে কিউবা যাই,
তখন তাঁর মনে অসাধারণ বিশ্বাস ছিল। কাস্ত্রো মনে করতেন, “যেহেতু আমরা কিউবা এসেছি, তাই আমরা লড়াই করবই। এবং লড়াই করলে জিতবই”।’ গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ: কাস্ত্রোর ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে এক লেখায় সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ মন্তব্য করেন, ‘ফিদেল কাস্ত্রো বিজয়ী হওয়ার জন্য এসেছেন। পরাজয়ের মুখেও, এমনকি প্রাত্যহিক জীবনের ক্ষুদ্রতম একটি কাজেও তিনি নিজের যুক্তির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেন। পরাজয়কে বিজয়ে রূপান্তরিত না করা পর্যন্ত তিনি এক মিনিটের জন্য ক্ষান্ত হন না।’ অগাস্তো পিনোশে: চিলির সাবেক সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল অগাস্তো পিনোশের মতে, কাস্ত্রো ছিলেন একজন কঠোর শাসক। সাহসী। সর্বদা দৃঢ় থাকেন। প্রয়োজনে নিজের বন্ধুদেরও ফায়ারিং স্কোয়াডে পাঠাতে দ্বিধাবোধ করেন না।
No comments