বিচারবর্হিভুত হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের বড় সমস্যা - মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদন

বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, ব্লগার হত্যা, গণমাধ্যমের ওপর কোন কোন ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণকে বাংলাদেশের মানবাধিকারের বড় সমস্যা বলে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাংলাদেশের মানবাধিকার, গণমাধ্যম পরিস্থিতি, আইনের শাসন ও শ্রম পরিস্থিতির চিত্র। বুধবার ২০১৫ সালের ওপর প্রণীত ওই রিপোর্ট প্রকাশ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মানবাধিকাারের অন্য সমস্যাগুলো হলো নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতন ও আইন লঙ্ঘন, খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তার, আটক, বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা দুর্বল, বিচারের আগেই দীর্ঘ সময় আটকে রাখা। নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয় অধিকার লংঘন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও আন্ত:দলীয় সহিংসতা গুরুতর সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি একটি সমস্যা এখনও। কর্মকা- পরিচালনার ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে আইনী ও অনানুষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি বেশ কিছু বেসরকারি সংগঠন। নারী ও মেয়েরা অসমতার শিকার। অনেক শিশু কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। প্রথম দিকে তারা নিয়মের বাইরে এমন ক্ষেত্রে কাজ করছে। এর কারণ, তাদের অর্থনৈতিক প্রয়োজন। কোন কোন ক্ষেত্রে তারা পাচারের শিকার। শিশুরা মাঝে মাঝেই সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার।
যুক্তরাষ্ট্র ৪০ বছর ধরে বৈশ্বিক এ মানবাধিকার রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছে। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে দেশটি ওইসব দেশে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ক নির্ধারণ করে থাকে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আইনের শাসনের তোয়াক্কা না করায় শুধু ব্যক্তিবিশেষই নয়, সেই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তারাও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন। তারা দায়মুক্তি ভোগ করেন। একই সঙ্গে নাগরিকদের তাদের অধিকার দাবি করা থেকে বিরত রাখা হয়। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত ও মামলার ক্ষেত্রে সরকার সীমিত পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক বেশির ভাগ পর্যটকই বিতর্কিত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তারা বলেছেন, এ নির্বাচন আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে পারেনি। এ নির্বাচনের প্রথম বার্র্ষিকীতে বিএনপি কয়েক মাস দেশব্যাপী পরিবহন ধর্মঘট ও সহিংস হরতাল পালন করে। ভোটে ব্যাপক কারচুপি ও হস্তক্ষেপের অসংখ্য অভিযোগের ভিতর অনুষ্ঠিত হয় সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এর মাঝপথে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। এ ছাড়া নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ রিপোর্টে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানে মানুষের জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার দেয়া হয়েছে। কিন্তু মিডিয়া, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো রিপোর্ট করেছে যে, সরকার ও এর বিভিন্ন এজেন্ট বিপুল পরিমাণ খেয়ালখুশি মতো ও আইন বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকের হাতে মোট কি পরিমাণ নিহত হয়েছেন তার কোন পরিসংখ্যান সরকার প্রকাশ করেনি। এমনকি এসব মামলা তদন্তে সমন্বিত কোন উদ্যোগও নেয় নি, যদিও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এর আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তারা নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা সব বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে শূণ্য সহনশীলতা প্রদর্শন করবেন এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবেন। সামান্য দু’একটি ক্ষেত্রে যাদের বিরুদ্ধে সরকার অভিযোগ এনেছে তাদেরকে শুধু প্রশাসনিক শাস্তি দেয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য কাজ করেছেন দায়মুক্তিতে। র‌্যারেব ভিতরে আভ্যন্তরীণ তদন্তের যে সেল গঠন করা হয়েছে সরকার তাতে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়েছে। এ সেল র‌্যাবের বিরুদ্ধে আনীত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো তদন্ত করে। তদন্তকারীদের অব্যাহত প্রশিক্ষণ সত্ত্বেও এই তদন্ত সেল মাত্র ১৬টি মামলা তদন্ত করেছে। ঘেরাও, গ্রেপ্তার ও আইন প্রয়োগকারীদের অপারেশনের সময়ে সন্দেহজনক মৃত্যুর ঘটনাতো আছেই। মাঝে মাঝেই নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী দাবি করে থাকে যে, তারা সন্দেহজনক ব্যক্তিকে অপরাধের স্থানে অথবা লুকিয়ে থাকার স্থানে অস্ত্র উদ্ধারে অথবা অপরাধীদের সনাক্ত করতে নিয়ে যায় রাতের আঁধারে। কিন্তু ওই সন্দেহজনক ব্যক্তির সহযোগীরা পুলিশের দিকে গুলি ছোড়ার সময় সে মারা গেছে। সরকার যথানিয়মে এই মৃত্যুকে ‘ক্রসফায়ারে মৃত্যু’ ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অথবা ‘এনকাউন্টারে মৃত্যু’ বলে বর্ণনা করে। র‌্যাব ও পুলিশ ইউনিটের সঙ্গে অপরাধীদের গোলাগুলিকে বর্ণনা করতে এ টার্মগুরো ব্যবহহার করা হয়, যদিও মিডিয়া এসব ঘটনাকে পুলিশের কর্মকা-কে বৈধতা দেয়া হিসেবে বর্ণনা করে থাকে।
২০১৪ সালের এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জে সাত ব্যক্তিকে অপহরণ করে হত্যা করে কয়েকজন র‌্যাব কর্মকর্তা। জনক্ষোভের মুখে সরকার ওইসব কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করে বিচারের মুখোমুখি করে। এ হত্যাকাণ্ডে র‌্যাব কর্মকর্তাদের চুক্তিভিত্তিতে নিয়োগের অভিযোগে অভিযুক্ত নূর হোসেনকে ভারত সরকার বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে ১২ই নভেম্বর। বছর শেষ পর্যন্ত এ মামলা চলছিলই। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রথম বার্ষিকীর পরে রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি পায় বাংলাদেশে। প্রায় তিন মাস দেশব্যাপী অবরোধ ও হরতাল পালিত হয়। বাস পোড়ানো ও অন্যান্য ঘটনায় কমপক্ষে একশ মানুষ নিহত হন। আহত হন কয়েক শত। আটক করা হয় বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে। অভিযোগ রয়েছে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, পায়ে পুলিশের গুলি করার। রাজনৈতিক দলগুলোর ছাত্র ও যুব শাখাগুরোর সহিংসতা একটি সমস্যা ছিল বাংলাদেশে। এপ্রিলে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে কুমিল্লায় সংঘর্ষ হয়। এতে স্থানীয় ছাত্রলীগের সভাপতি চুরিকাঘাত ও বুলেটের আঘাতে নিহত হন। আহত হন কমপক্ষে ১০ জন। আগস্টে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন যুবলীগের নেতাকর্মীরা চাঁদপুরে একটি মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। ওই ছাত্ররা একজন শিক্ষককে অবমাননায় বাধা দিচ্ছিল। যুবলীগের ওই হামলায় কমপক্ষে ২০ ছাত্রকে আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মানবাধিকার গ্রুপগুলো ও মিডিয়ার রিপোর্ট বলছে, অনেক গুম ও অপহরণ অব্যাহত ছিল ওই বছরে। এর অনেকগুলোর জন্য দায়ী করা হয় নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের। বিশেষ করে এ ঘটনা ঘটে জাতীয় নির্বাচনের বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সময়ে। এসব ঘটনা প্রতিরোধে বা তদন্তে সরকার সীমিত পর্যায়ের উদ্যোগ নিয়েছে।
এতে বলা হয়, সংবিধান ও আইনে নির্যাতন, নিষ্ঠুরতা, অবমানবিকতা, মর্যাদা হানীকর শাস্তি নিষিদ্ধ থাকলেও স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো, মিডিয়া রিপোর্ট করেছে যে, র‌্যাব ও পুলিশ সহ নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী বার বার হুমকি, প্রহার, বৈদ্যুতিক শক ব্যবহার করে।
স্থানীয় মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অধিকার-এর মতে, বছরের প্রথম সাত মাসে নির্যাতন করে তিন জন ব্যক্তিকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকেরা। এসব কর্মকা-ের জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা, অভিযোগ গঠন করে শাস্তি দেয়ার ঘটনা বিরল। ২০১৪ সালে থানার ভিতরে এক ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের অভিযোগে এপ্রিলে সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি আতাউর রহমান ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আত্ম সমর্পণ করেন। তাকে জেল দেয়া হয়েছে। আইনের অধীনে একজন ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড দিতে পারেন। এ জিজ্ঞাসাবাদে আইনজীবী উপস্থিত থাকেন না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ১৬তম সংশোধনীর অধীনে ২০১৪ হাই কোর্টের কোন বিচারককে অভিশংসনের ক্ষমতা পায় পার্লামেন্ট। কিন্তু অক্টোবর পর্যন্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এমন কোন আইন লিখিতভাবে পাওয়া যায় নি। দুর্নীতি ও মামলাগুলোর পশ্চাৎপদতার কারণে আদালতের কর্মকা- বিলম্বিত হচ্ছে। এ জন্য অনেক সাক্ষীর মন ঘুরে যাচ্ছে, ভীতি প্রদর্শনের শিকার হচ্ছেন, বিবাদী প্রমাণ হারিয়ে ফেলছেন। মানবাধিকার বিষয়ক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অনেক মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট, এটর্নি, কোর্টের বিভিন্ন কর্মকর্তা বিবাদীদের কাছে ঘুষ দাবি করেন। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিটি) ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিচার অব্যাহত রেখেছে। এপ্রিলে ফাঁসি কার্যকর করা হয় জামায়াতে ইসলামির সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের। এক্ষেত্রে বিচারের সুষ্ঠুতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। নভেম্বরে সরকার একই রকম অপরাধে ফাঁসি কার্যকর করে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবিরা বলেছেন, আদালত তাদেরকে প্রমাণ হাজির করার অনুমতি দেন নি। তাদের দাবি, অপরাধের সময় দেশের বাইরে ছিলেন সালাউদ্দিন।
মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো অভযোগ করেছে যে, পুলিশের স্পেশাল শাখা, জাতীয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সরকারেরর সমালোচনা করে এমন ব্যক্তিদের ওপর নজরদারীর করতে ও তাদের কর্মকা-ের রিপোর্ট করার জন্য ইনফর্মার বা সোর্স মোতায়েন করেছে। এ ছাড়াও নিয়মিতভাবে বিরোধী রাজনীতিকদের ওপর নজরদারি করে যাচ্ছে সরকার। মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো ও বিভিন্ন নিউজ মিডিয়া বলছে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই নাগরিকদের প্রাইভেট হোমগুলোতে প্রবেশ করছে পুলিশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানে মুক্ত মত প্রকাশ ও মিডিয়ার স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার মাঝে মধ্যেই এসব অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে। মত প্রকাশের ক্ষেত্রে রয়েছে সীমাবদ্ধ স্বাধীনতা। হয়রানি ও প্রতিশোধ নেয়ার ভয়ে সরকারের সমালোচনার ক্ষেত্রে কিছু সাংবাদিক নিজেরাই সেলফ সেন্সরশিপ আরোপ করেছেন। সংবিধানের সমালোচনাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সমান বলে বিবেচিত হয়। রাষ্ট্রদ্রোহিতার শাস্তি তিন বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদ-। কিন্তু আদালত এখনও ২০১৫ সালে এ আইনের অধীনে কাউকে শাস্তি দেয় নি। এ আইনে ঘৃণামুলক বক্তব্য সীমাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে, যদিও ঘৃণামুলক বক্তব্য বা হেট স্পিচ বলতে কি বোঝায় তা পরিষ্কারভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় নি। এক্ষেত্রে সরকার বিপুল ক্ষমতা পেয়েছে।
নিরপেক্ষ সাংবাদিকরা বলছেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মিডিয়ার ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে। তারা সরকারি বিজ্ঞাপন ও বেসরকারি বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখার অংশ হিসেবে এসব করেছে। মোবাইল ফোন কোম্পানি গ্রামীণ ফোন মিডিয়াকে বলেছে যে, সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে ও অন্যান্য করপোরেশনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন, তারা দুটি শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দেয়। সরকার একটি রেডিও স্টেশন ও একটি টেলিভিশনের মালিক। আইনের অধীনে বাংলাদেশের সরকারি টেলিভিশন বিটিভি এখনও দেশটির একমাত্র টেরেস্ট্রিয়াল চ্যানেল। দেশের শতকরা ৬০ ভাগ মানুষ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সুবিধা পায় না। জরিপে দেখা গেছে শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ তাদের তথ্য সংগ্রহ করে টেলিভিশন থেকে। এক্ষেত্রে সংসদের অধিবেশন ও সরকারি কর্মসূচি প্রচার করে থাকে বিটিভি। কিন্তু তাতে বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারের ঘটনা বিরল। সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া ক্যাবল অপারেটররা কাজ করতে পারেন না। সরকার চায়, সব টেলিভিশন স্টেশন থেকে সরকারের নির্বাচিত খবর বিষয়ক কর্মসূচি ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রচার করা হোক। গোয়েন্দা বিভাগসহ সরকারের হাতে সাংবাদিকরা মাঝেমধ্যেই শারীরিক হামলা, হয়রানি ও ভয়ভিতির মুখে পড়েন। বিরোধী দল বিএনপির এক নেতার ৫০ মিনিটের এক বক্তব্য সম্প্রচারের পর একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান আবদুল সালামকে জানুয়ারিতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুুদ্ধে পর্নোগ্রাফির অভিযোগ আনা হয়। পরে আনা হয় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ।

No comments

Powered by Blogger.