মাগুরায় খুনোখুনির পেছনে শিখর–বীরেনের দ্বন্দ্ব by রোজিনা ইসলাম
মাগুরায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গর্ভের সন্তানসহ নাজমা খাতুন গুলিবিদ্ধ |
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস-২) সাইফুজ্জামান শিখর এবং যুব ও
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারের মধ্যে বিরোধ আর দুই পক্ষের আধিপত্য
বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাগুরায় সংঘাত ও খুনোখুনির ঘটনা ঘটছে। পুলিশের
বিশেষ শাখার সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে গর্ভের সন্তানসহ নাজমা বেগম গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের বিশেষ শাখা এ গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনটি ৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতার বিরোধের জের ধরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইদানীং গ্রাম, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ ধরনের গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘এলাকার পুলিশ প্রশাসনও এ বিষয়ে আমাদের জানিয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশের বিশেষ শাখার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর গ্রুপ এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। ফলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবং গত ২১ জুলাই অনুষ্ঠিত মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অন্তঃকোন্দল ও সংঘর্ষ প্রকট আকার ধারণ করেছে। ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য স্থানীয় নেতা-কর্মীরা প্রায়ই গ্রুপ পরিবর্তন করে স্বার্থসিদ্ধির সুযোগ নিচ্ছেন। জ্যেষ্ঠ নেতাদের উসকানিতে জেলার রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এসব বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য শনিবার রাতে ও গতকাল দিনভর সাইফুজ্জামান শিখরের মুঠোফোনে অনেকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাঁর মুঠোফোনে কয়েক দফা খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠিয়ে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাইফুজ্জামান শিখরের গ্রুপে আছেন মাগুরা-১ আসনের সাংসদ আবদুল ওয়াহহাব, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু, মাগুরা সদর উপজেলার চেয়ারম্যান রুস্তম আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানজেল হোসেন খান, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী গোলাম মওলা, সাবেক সহদপ্তর সম্পাদক আবদুল মান্নান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।
অপর দিকে বীরেন শিকদার গ্রুপে আছেন সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু নাসির (বাবলু), জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রানা ওসমান, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাকি ইমাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শরীফ, মাগুরা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিরুল ও নাজমুল।
এ বিরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার প্রথম আলোর কাছে স্বীকার করেছেন যে সাইফুজ্জামান শিখরের সঙ্গে তাঁর ‘সম্পর্ক খারাপ’। তিনি বলেন, ‘শিখরের বাবা যে নির্বাচনী এলাকার সাংসদ ছিলেন, আমি সেখানকার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছি। আর এটাই ওদের বিদ্বেষ। কিন্তু ওরা এলাকায় যেসব অপকর্ম করে চলেছে, তা সবাই জানেন।’
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৩ জুলাই মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ভূঁইয়া ও ছাত্রলীগের কর্মী আজিবর শেখ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাকি ইমামের চাচা মোমিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই ঘটনায় আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগম গুলিবিদ্ধ হন। মাগুরা সদর হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর একটি কন্যাসন্তান হয়। মায়ের পেটে থাকা শিশুটির পিঠে গুলি লেগে বুক দিয়ে বেরিয়ে যায়। ওই ঘটনায় মাগুরা সদর থানায় মামলা হয়েছে। ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
একই দিন মাগুরা থানার রূপদাহ গ্রামে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী-সমর্থিত মোস্তফা মেম্বার, মোক্তার ও নান্নু গ্রুপের সঙ্গে সাইফুজ্জামান শিখর-সমর্থিত জহুর মিয়া ও লালন গ্রুপের সংঘর্ষে নান্নু শেখ নামের একজন নিহত হন। আহত হন ১৬-১৭ জন। একই সময়ে একই থানার ডহরসিংড়া গ্রামে শফিকুল ও রাজা গ্রুপের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তাঁর গর্ভজাত সন্তান আহত হওয়ার ঘটনা ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমে আসায় আওয়ামী লীগ ও তার ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার বিরোধ মীমাংসা করা প্রয়োজন। না হলে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অবশ্য স্থানীয় সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার বলেন, কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষ নয়, দরপত্র নিয়ে টাকা ভাগাভাগির সময় ওই মারামারি হয়। তখন নিজের ঘরের বারান্দায় ওই মা ও গর্ভজাত সন্তান গুলিবিদ্ধ হয়। তিনি দাবি করেন, শিখরের দুই ভাই এর সঙ্গে জড়িত।
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে গর্ভের সন্তানসহ নাজমা বেগম গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের বিশেষ শাখা এ গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনটি ৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতার বিরোধের জের ধরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইদানীং গ্রাম, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ ধরনের গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘এলাকার পুলিশ প্রশাসনও এ বিষয়ে আমাদের জানিয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশের বিশেষ শাখার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর গ্রুপ এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। ফলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবং গত ২১ জুলাই অনুষ্ঠিত মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অন্তঃকোন্দল ও সংঘর্ষ প্রকট আকার ধারণ করেছে। ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য স্থানীয় নেতা-কর্মীরা প্রায়ই গ্রুপ পরিবর্তন করে স্বার্থসিদ্ধির সুযোগ নিচ্ছেন। জ্যেষ্ঠ নেতাদের উসকানিতে জেলার রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এসব বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য শনিবার রাতে ও গতকাল দিনভর সাইফুজ্জামান শিখরের মুঠোফোনে অনেকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাঁর মুঠোফোনে কয়েক দফা খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠিয়ে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাইফুজ্জামান শিখরের গ্রুপে আছেন মাগুরা-১ আসনের সাংসদ আবদুল ওয়াহহাব, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু, মাগুরা সদর উপজেলার চেয়ারম্যান রুস্তম আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানজেল হোসেন খান, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী গোলাম মওলা, সাবেক সহদপ্তর সম্পাদক আবদুল মান্নান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।
অপর দিকে বীরেন শিকদার গ্রুপে আছেন সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু নাসির (বাবলু), জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রানা ওসমান, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাকি ইমাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শরীফ, মাগুরা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিরুল ও নাজমুল।
এ বিরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার প্রথম আলোর কাছে স্বীকার করেছেন যে সাইফুজ্জামান শিখরের সঙ্গে তাঁর ‘সম্পর্ক খারাপ’। তিনি বলেন, ‘শিখরের বাবা যে নির্বাচনী এলাকার সাংসদ ছিলেন, আমি সেখানকার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছি। আর এটাই ওদের বিদ্বেষ। কিন্তু ওরা এলাকায় যেসব অপকর্ম করে চলেছে, তা সবাই জানেন।’
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৩ জুলাই মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ভূঁইয়া ও ছাত্রলীগের কর্মী আজিবর শেখ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাকি ইমামের চাচা মোমিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই ঘটনায় আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগম গুলিবিদ্ধ হন। মাগুরা সদর হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর একটি কন্যাসন্তান হয়। মায়ের পেটে থাকা শিশুটির পিঠে গুলি লেগে বুক দিয়ে বেরিয়ে যায়। ওই ঘটনায় মাগুরা সদর থানায় মামলা হয়েছে। ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
একই দিন মাগুরা থানার রূপদাহ গ্রামে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী-সমর্থিত মোস্তফা মেম্বার, মোক্তার ও নান্নু গ্রুপের সঙ্গে সাইফুজ্জামান শিখর-সমর্থিত জহুর মিয়া ও লালন গ্রুপের সংঘর্ষে নান্নু শেখ নামের একজন নিহত হন। আহত হন ১৬-১৭ জন। একই সময়ে একই থানার ডহরসিংড়া গ্রামে শফিকুল ও রাজা গ্রুপের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তাঁর গর্ভজাত সন্তান আহত হওয়ার ঘটনা ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমে আসায় আওয়ামী লীগ ও তার ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার বিরোধ মীমাংসা করা প্রয়োজন। না হলে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অবশ্য স্থানীয় সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার বলেন, কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষ নয়, দরপত্র নিয়ে টাকা ভাগাভাগির সময় ওই মারামারি হয়। তখন নিজের ঘরের বারান্দায় ওই মা ও গর্ভজাত সন্তান গুলিবিদ্ধ হয়। তিনি দাবি করেন, শিখরের দুই ভাই এর সঙ্গে জড়িত।
No comments