বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সিভিকাস ও এএলআরসির ৩ সুপারিশ
বাংলাদেশে
চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার মধ্যে মৌলিক মানবাধিকার ও
গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গ্লোবাল সিভিল
সোসাইটি অ্যালায়েন্স (সিভিকাস) ও এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার
(এএলআরসি)। ‘বাংলাদেশ: গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনুন ও ভিন্ন
মতাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করুন’-শীর্ষক একটি বিবৃতিতে বাংলাদেশ
সরকারের প্রতি ৩ দফা সুপারিশও করেছে সংগঠন দুটি। মতপ্রকাশের অধিকার চর্চা ও
বিক্ষোভ সমাবেশ করার অভিযোগে বিধিবহির্ভূতভাবে আটক সব ব্যক্তিকে মুক্তি
দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠন দুটি। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের
বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ অবিলম্বে বন্ধ ও এসব ঘটনার
সুষ্ঠু তদন্ত পরিচালনার আহ্বান জানানো হয়েছে। সাংবাদিক ও গণমাধ্যমগুলোর
বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সব অভিযোগ তুলে নেয়ারও আহ্বান জানানো
হয় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি। নিচে সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিটি তুলে ধরা হলো:
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে মৌলিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্রিক অধিকারের ওপর অপ্রশমিতভাবে হামলা অব্যাহত থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গ্লোবাল সিভিল সোসাইটি অ্যালায়েন্স (সিভিকাস) ও এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার (এএলআরসি)।
সিভিকাসের কর্মপন্থা ও গবেষণা বিষয়ক প্রধান মানদ্বীপ তিওয়ানা বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশের অধিকারের ওপর দমনাভিযান চালানোর মধ্য দিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ গুরুতর সাংবিধানিক সঙ্কটের সম্মুখীন। তিনি বলেন, গত বছরগুলোতে বাংলাদেশের যে স্থিতিশীলতা ও সাফল্য অর্জিত হয়েছে, সেটাকে নষ্ট করছে মুক্ত সুশীল সমাজের ওপর রাজনৈতিক দমননীতি ও নির্যাতন।
২০১৫ সালের ৫ই জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় বিরোধী দলগুলোর সদস্যরা বড় আকারে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সাধারণ ধর্মঘট (সড়ক অবরোধ, হরতাল) পালনের মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের জানুয়ারির বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনের বর্ষপূর্তি পালন করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীসমূহ সভা-সমাবেশসমূহ ও অন্যান্য কর্মকা-ের মাধ্যমে আইন অমান্য করায় নিয়মিত ব্যবস্থা নিয়েছে। তা করতে তারা অতিরিক্ত ও কখনও কখনও মারাত্মক বলপ্রয়োগ, গণগ্রেপ্তার এবং সাংবাদিক ও মিডিয়া গ্রুপগুলোকে টার্গেট করে নির্যাতন চালিয়েছে।
গত ৫ই জানুয়ারি বিরোধী দলের ডাকা সভা-সমাবেশের জবাবে সরকার ঔপনিবেশিক যুগের ১৪৪ ধারা জারি করে রাজধানী ঢাকায় সব বিক্ষোভ সমাবেশ ও র্যালি নিষিদ্ধ করে। এ নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করায় বিধিবহির্ভূত গ্রেপ্তার ও বন্দি করা হয়েছে কমপক্ষে ১৪ হাজার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে। জাতীয় পর্যবেক্ষক সংগঠনগুলো বলছে, গ্রেপ্তারকৃত অধিকাংশ মানুষই এখনও কারাবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তার ওপর দেশজুড়ে বিরোধী দলসমূহ এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একের পর এক হামলায় প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও শত শত মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন।
অতি সম্প্রতি গত ১৭ই মার্চ কুড়িগ্রাম জেলায় পুলিশ ও হরতালের সমর্থক বিরোধীপন্থী কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশ বিক্ষোভ-সমাবেশকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গোলাবারুদ ও টিয়ার শেল ব্যবহার করেছে। সংঘর্ষের ঘটনার ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করায় টার্গেট করে কয়েকজন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। সরকার সম্প্রতি বিধিবহির্ভূতভাবে বহু ইলেক্ট্রনিক গণমাদ্যম ও সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও দৈনিক সংবাদপত্র আমার দেশ। বিরোধী দলের আন্দোলনে সহানুভূতিশীল মনে করায় কয়েকজন সাংবাদিককে মিথ্যা অভিযোগে অল্প সময়ের জন্য আটক রাখা হয়েছে। ২০১৫ সালের ৬ই জানুয়ারি থেকে আটক রয়েছেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) সভাপতি আবদুস সালাম ও প্রধান নির্বাহী আবদুস সালাম। তার বিরুদ্ধে বিরোধী দলের বিশিষ্ট এক নেতার বক্তৃতা টেলিভিশনে প্রচারের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪ সালের ৬ই জানুয়ারি দৈনিক ইনকিলাবের ৩ সাংবাদিক রবিউল্লাহ রবি, রফিক মোহাম্মদ ও আহমেদ আতিককে তাদের অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিতর্কিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (২০০৯ ও ২০১৩ সালে সংশোধিত)-এর আওতায় তাদের আটক করা হয়। ‘মিথ্যা ও বানেয়ায়াট’ খবর প্রচার করার অভিযোগে যে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তর করা হয়েছিল, তাদের জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
এএলআরসি’র নির্বাহী পরিচালক বিজো ফ্রান্সিস বলেছেন, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান স্বেচ্ছাচারিতা মৌলিক অধিকার ও গণতন্ত্রীকরণের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। তিনি বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করা, সম্পৃক্ততা ও সভা-সমাবেশ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের ওপর নির্যাতন বাংলাদেশকে একটি পরিবর্তনশীল ও অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে দাঁড় করিয়েছে। এতে মৌলবাদী সংগঠনগুলোর বিস্তারে অবদান রাখতে পারে ও আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, নাগরিকদের আইনসম্মত উদ্বেগ ও গণতান্ত্রিক অধিকারের পূর্ণ উপলব্ধি নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানায় সিভিকাস ও এএলআরসি। একই সঙ্গে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়:
১) মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার চর্চা, সম্পৃক্ততা ও সভা-সমাবেশ করার অভিযোগে বিধিবহির্ভূতভাবে আটক সব ব্যক্তিকে মুক্তি দেয়া।
২) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-সমাবেশ ব্যাহত করতে অতিরিক্ত ও মারাত্মক বলপ্রয়োগ অবিলম্বে থামানো এবং এসব ঘটনায় তদন্ত করা।
৩) স্বতন্ত্র সাংবাদিক ও গণমাধ্যমসমূহের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সব অভিযোগ প্রত্যাহার করা।
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে মৌলিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্রিক অধিকারের ওপর অপ্রশমিতভাবে হামলা অব্যাহত থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গ্লোবাল সিভিল সোসাইটি অ্যালায়েন্স (সিভিকাস) ও এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার (এএলআরসি)।
সিভিকাসের কর্মপন্থা ও গবেষণা বিষয়ক প্রধান মানদ্বীপ তিওয়ানা বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশের অধিকারের ওপর দমনাভিযান চালানোর মধ্য দিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ গুরুতর সাংবিধানিক সঙ্কটের সম্মুখীন। তিনি বলেন, গত বছরগুলোতে বাংলাদেশের যে স্থিতিশীলতা ও সাফল্য অর্জিত হয়েছে, সেটাকে নষ্ট করছে মুক্ত সুশীল সমাজের ওপর রাজনৈতিক দমননীতি ও নির্যাতন।
২০১৫ সালের ৫ই জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় বিরোধী দলগুলোর সদস্যরা বড় আকারে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সাধারণ ধর্মঘট (সড়ক অবরোধ, হরতাল) পালনের মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের জানুয়ারির বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনের বর্ষপূর্তি পালন করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীসমূহ সভা-সমাবেশসমূহ ও অন্যান্য কর্মকা-ের মাধ্যমে আইন অমান্য করায় নিয়মিত ব্যবস্থা নিয়েছে। তা করতে তারা অতিরিক্ত ও কখনও কখনও মারাত্মক বলপ্রয়োগ, গণগ্রেপ্তার এবং সাংবাদিক ও মিডিয়া গ্রুপগুলোকে টার্গেট করে নির্যাতন চালিয়েছে।
গত ৫ই জানুয়ারি বিরোধী দলের ডাকা সভা-সমাবেশের জবাবে সরকার ঔপনিবেশিক যুগের ১৪৪ ধারা জারি করে রাজধানী ঢাকায় সব বিক্ষোভ সমাবেশ ও র্যালি নিষিদ্ধ করে। এ নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করায় বিধিবহির্ভূত গ্রেপ্তার ও বন্দি করা হয়েছে কমপক্ষে ১৪ হাজার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে। জাতীয় পর্যবেক্ষক সংগঠনগুলো বলছে, গ্রেপ্তারকৃত অধিকাংশ মানুষই এখনও কারাবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তার ওপর দেশজুড়ে বিরোধী দলসমূহ এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একের পর এক হামলায় প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও শত শত মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন।
অতি সম্প্রতি গত ১৭ই মার্চ কুড়িগ্রাম জেলায় পুলিশ ও হরতালের সমর্থক বিরোধীপন্থী কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশ বিক্ষোভ-সমাবেশকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গোলাবারুদ ও টিয়ার শেল ব্যবহার করেছে। সংঘর্ষের ঘটনার ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করায় টার্গেট করে কয়েকজন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। সরকার সম্প্রতি বিধিবহির্ভূতভাবে বহু ইলেক্ট্রনিক গণমাদ্যম ও সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও দৈনিক সংবাদপত্র আমার দেশ। বিরোধী দলের আন্দোলনে সহানুভূতিশীল মনে করায় কয়েকজন সাংবাদিককে মিথ্যা অভিযোগে অল্প সময়ের জন্য আটক রাখা হয়েছে। ২০১৫ সালের ৬ই জানুয়ারি থেকে আটক রয়েছেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) সভাপতি আবদুস সালাম ও প্রধান নির্বাহী আবদুস সালাম। তার বিরুদ্ধে বিরোধী দলের বিশিষ্ট এক নেতার বক্তৃতা টেলিভিশনে প্রচারের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪ সালের ৬ই জানুয়ারি দৈনিক ইনকিলাবের ৩ সাংবাদিক রবিউল্লাহ রবি, রফিক মোহাম্মদ ও আহমেদ আতিককে তাদের অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিতর্কিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (২০০৯ ও ২০১৩ সালে সংশোধিত)-এর আওতায় তাদের আটক করা হয়। ‘মিথ্যা ও বানেয়ায়াট’ খবর প্রচার করার অভিযোগে যে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তর করা হয়েছিল, তাদের জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
এএলআরসি’র নির্বাহী পরিচালক বিজো ফ্রান্সিস বলেছেন, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান স্বেচ্ছাচারিতা মৌলিক অধিকার ও গণতন্ত্রীকরণের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। তিনি বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করা, সম্পৃক্ততা ও সভা-সমাবেশ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের ওপর নির্যাতন বাংলাদেশকে একটি পরিবর্তনশীল ও অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে দাঁড় করিয়েছে। এতে মৌলবাদী সংগঠনগুলোর বিস্তারে অবদান রাখতে পারে ও আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, নাগরিকদের আইনসম্মত উদ্বেগ ও গণতান্ত্রিক অধিকারের পূর্ণ উপলব্ধি নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানায় সিভিকাস ও এএলআরসি। একই সঙ্গে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়:
১) মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার চর্চা, সম্পৃক্ততা ও সভা-সমাবেশ করার অভিযোগে বিধিবহির্ভূতভাবে আটক সব ব্যক্তিকে মুক্তি দেয়া।
২) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-সমাবেশ ব্যাহত করতে অতিরিক্ত ও মারাত্মক বলপ্রয়োগ অবিলম্বে থামানো এবং এসব ঘটনায় তদন্ত করা।
৩) স্বতন্ত্র সাংবাদিক ও গণমাধ্যমসমূহের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সব অভিযোগ প্রত্যাহার করা।
No comments