ভাবছি, আমিও একটা সালাম দিই by সাহস রতন
ভাই
ক্যামন আছেন? ‘বড়ভাই’ আপনাকে সালাম দিছেন। এরশাদীয় শাসনামলে এই সালাম
দেয়ার রেওয়াজ শুরু হয় জোরেশোরে। ‘বড়ভাই’-এর পক্ষে এই সালাম ডাকপিয়নের মতো
নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পৌঁছে দিতো তার কোন শিষ্য। শুরুতে বেছে বেছে
বিত্তশালীদেরকেই এই সালাম দেয়া হতো। ধীরে ধীরে তা সাধারণ মুদি দোকানি
পর্যন্ত গড়িয়েছে। তখন সালাম দিয়ে নীরবে চাঁদাবাজি করতো স্থানীয়
সন্ত্রাসীরা। সালাম- এর প্রতিউত্তর সময়মতো এবং পরিমিত আকারে বড়ভাইয়ের কাছে
না পৌঁছালে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো। অনেক সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতো।
এখন দিন বদলেছে। এখন সালাম আসে মোবাইল ফোনে। বাদবাকি সব আগের মতোই। এখন
দেশে যা চলছে তাতে সাধারণ মানুষের জীবনে চরম অশান্তি বিরাজ করছে। লাগাতার
হরতাল আর অবরোধ চলছে দুই মাস ধরে। প্রথমে অবরোধ দেয়া হলো। সাধারণ মানুষ
পেটের দায়ে অবরোধের মধ্যেও ঘর থেকে বের হচ্ছে দেখে, অবরোধের মধ্যেই হরতালের
ডাক দেয়া হলো। এখন চলছে লাগাতার অবরোধ, লাগাতার হরতাল। মনে হচ্ছে ভবিষ্যতে
যে রাজনৈতিক কর্মসূচি আসবে ওই কর্মসূচির মধ্যে ঘর থেকে বের হলেই গুলি।
এছাড়া আর কী ভাবতে পারি?
গত দুই মাস ধরে দেশব্যাপী যে অবস্থা চলছে এর সামান্যতম রেশও প্রভাবশালীদের ওপর পড়ে নি। যত মানুষ মারা পড়েছে কিংবা আগুনে ঝলসে গেছে এরা সবাই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। টিভি চ্যানেলে সরকারি দল কিংবা ২০দলীয় জোটের নেতাদের দেখে তো মনে হয় না তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে। চকচকে ঝকঝকে পোশাকে দিব্যি ইন্টারভিউ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিংবা এমনও হতে পারে, যাদের আমরা সচরাচর টিভিতে দেখি তারা সবাই খুব ভালো আছে। এর বাইরে আর সবার জীবন ম্যাড়ম্যাড়ে, অনিশ্চিত।
ইদানীং সরকারি দলের নেতারা এমনকি পুলিশ-র্যাবও বলছে, সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য। সেই পাকিস্তান আমল থেকে যত ধরনের রাজনৈতিক আন্দোলন হয়েছে তার সবক’টিতেই সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। ’৫২, ’৬২, ’৬৯, ’৭১, ’৯০, ’৯৬ সব আন্দোলনে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেছে বলেই সফলতা এসেছে। সব আন্দোলনে জয়ী হয়ে কোন একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় বসেছে। বসেই তারা ভোল পাল্টে ফেলেছে। নিজেদের আখের গুছিয়েছে। চেলাচামুণ্ডাদের পকেট ভারী করার সুযোগ দিয়েছে। আর যাদের উপর ভর করে তারা ক্ষমতার গদি দখল করেছে সেই সাধারণ মানুষকে চরম অবহেলা করেছে। এই করতে করতে এরা মানুষের মন থেকে উঠে গেছে। সাধারণ মানুষ ভাবছে, ‘কি ঠ্যাকা পড়ছে আমার রাস্তায় গিয়ে প্রতিবাদ করার?’
গত দুই মাস ধরে দেশব্যাপী যে অবস্থা চলছে এর সামান্যতম রেশও প্রভাবশালীদের ওপর পড়ে নি। যত মানুষ মারা পড়েছে কিংবা আগুনে ঝলসে গেছে এরা সবাই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। টিভি চ্যানেলে সরকারি দল কিংবা ২০দলীয় জোটের নেতাদের দেখে তো মনে হয় না তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে। চকচকে ঝকঝকে পোশাকে দিব্যি ইন্টারভিউ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিংবা এমনও হতে পারে, যাদের আমরা সচরাচর টিভিতে দেখি তারা সবাই খুব ভালো আছে। এর বাইরে আর সবার জীবন ম্যাড়ম্যাড়ে, অনিশ্চিত।
ইদানীং সরকারি দলের নেতারা এমনকি পুলিশ-র্যাবও বলছে, সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য। সেই পাকিস্তান আমল থেকে যত ধরনের রাজনৈতিক আন্দোলন হয়েছে তার সবক’টিতেই সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। ’৫২, ’৬২, ’৬৯, ’৭১, ’৯০, ’৯৬ সব আন্দোলনে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেছে বলেই সফলতা এসেছে। সব আন্দোলনে জয়ী হয়ে কোন একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় বসেছে। বসেই তারা ভোল পাল্টে ফেলেছে। নিজেদের আখের গুছিয়েছে। চেলাচামুণ্ডাদের পকেট ভারী করার সুযোগ দিয়েছে। আর যাদের উপর ভর করে তারা ক্ষমতার গদি দখল করেছে সেই সাধারণ মানুষকে চরম অবহেলা করেছে। এই করতে করতে এরা মানুষের মন থেকে উঠে গেছে। সাধারণ মানুষ ভাবছে, ‘কি ঠ্যাকা পড়ছে আমার রাস্তায় গিয়ে প্রতিবাদ করার?’
সাহস রতন |
জনগণের
ট্যাক্সের টাকা দিয়ে সরকারি কর্মচারী-আমলাদের ভোগবিলাসের সুযোগ বৃদ্ধি করা
হচ্ছে। জনগণের জন্য কী সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে? কই আমার বেতন তো গত একদশকে
একবারের জন্যও বাড়েনি। তাইলে বাড়তি বাড়ি ভাড়া, গাড়ি ভাড়া, নিত্যপ্রয়োজনীয়
খাদ্য সামগ্রীর বাড়তি দামটা আমি কোথা থেকে পাবো? এসব প্রশ্নের কোন জবাব
নেই। শুনেছি কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানী একবার পাকিস্তানিদের বলেছিলেন-
‘আসসালামালাইকুম।’ আমার পক্ষে অত বড় সালাম দেয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তাও
ভাবছি ছোট করে হলেও আমিও একটা সালাম দিই। তবে এটা চাঁদাবাজির জন্য নয়। এটা
ট্যাক্স এবং ভোট না দেয়ার সালাম। এই সালামটা সেই রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে,
যাদের কারণে আজ আমার মতো সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন।
ভাইসব, আপনাদেরকে আসসালামালাইকুম!
ভাইসব, আপনাদেরকে আসসালামালাইকুম!
No comments