ত্রাণে ধীরগতি ক্ষোভ বাড়ছে
ফিলিপিন্সে সুপার স্টর্ম হাইয়ান আঘাত হানার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। এখনও চলছে উদ্ধার কাজ, উদ্ধার করা হচ্ছে মৃতদেহ। বিভিন্ন দেশ ত্রাণ পাঠালেও তা বিতরণে দেরি হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে দুর্গতদের মাঝে। রাস্তায় রাস্তায় ছড়িয়ে আছে মৃতদেহ। টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, নেই বিদ্যুৎ। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ত্রাণ বিতরণও ব্যাহত হচ্ছে। হাইয়ান আঘাত হানার এক সপ্তাহ পরেও ত্যাকলোবানের অবস্থা এখন এমনটাই।
ত্রাণ কাজে ধীরগতি এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে শরণার্থীদের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র নাইকা আলেকজান্ডার ফিলিপিন্স সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে মৃতদেহ উদ্ধারের চেয়ে শরণার্থীদের প্রতি বেশি নজর দেয়া হয়। তাই ফিলিপিন্স দুর্গতদের যারাই সাহায্য করতে চাচ্ছেন, চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। হংকংয়ের মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানের এক কর্মী জানালেন, অনেক চেষ্টা করেও টেলিফোনে সংযোগ স্থাপন করতে পারেননি তিনি। হংকংয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার ফিলিপিনো অধিবাসীর বসবাস। তাই তারা উদগ্রীব স্বজনদের খবর জানতে এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। এদিকে ফিলিপিন্স সরকার নিহতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করছে না এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ৬২১। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের প্রধান এদুয়ার্দো দেল রোসারিও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েই তারা এই সংখ্যা প্রকাশ করছেন। এমনকি ত্যাকলোবানের ৯৫ ভাগ মানুষ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে-এই তথ্য অস্বীকার করে প্রেসিডেন্ট বেনিগনো একুইনো অভিযোগ করেছেন, কর্মকর্তারা বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করছেন। এদিকে ত্রাণ কাজে সরকারি সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ডে হতাশ জনগণ। ত্রাণ কাজে ধীরগতির কারণে স্থানীয় গণমাধ্যম একুইনোর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফিলিপিন্সের ডেইলি ইনকুইরার পত্রিকার শিরোনাম- ‘হু ইজ ইনচার্জ হিয়ার?’
বিশ্লেষকরাও বলছেন, এই ঝড়ে একুইনোর কর্মকাণ্ড পরবর্তী নির্বাচনে বেশ প্রভাব ফেলবে। হাইয়ানের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে ফিলিপিন্সের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও। জাতীয় অর্থনীতি ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০১৩ সালে দেশটির গড় উৎপাদন ০.৩ শতাংশ থেকে ০.৮ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। যার ফলে প্রবৃব্ধি কমবে ৬.৫ ভাগ থেকে ৭ ভাগ।
No comments