খবর- মহাজোট আছে মহাজোট নেই!' by পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য্য
নামে মহাজোট সরকার। কিন্তু সরকার পরিচালনায় জোটভুক্ত দলগুলোর মতামতের কোনো ভূমিকা নেই। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর দুই বছরে তিনটি বৈঠক হলেও তা ছিল নিছক আনুষ্ঠানিকতা।
সরকার পরিচালনার কিংবা বিরোধী দলের আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলার কৌশল নিয়ে এ পর্যন্ত কোনো আলোচনা হয়নি জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে। বস্তুত নিষ্ক্রিয় মহাজোট। শরিকদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ পর্যন্ত নেই আওয়ামী লীগ নেতাদের।
এ পরিস্থিতিতে নিষ্ক্রিয় মহাজোটকে শক্তিশালী করার দাবি উঠছে শরিকদের পক্ষ থেকে।
দাবিটি যে যৌক্তিক, সেটা মনে করে মহাজোটের প্রধান আওয়ামী লীগও। ঈদের পর চলতি মাসে বৈঠক করে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণ করা হবে বলে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
দাবিটি যে যৌক্তিক, সেটা মনে করে মহাজোটের প্রধান আওয়ামী লীগও। ঈদের পর চলতি মাসে বৈঠক করে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণ করা হবে বলে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
অন্যদিকে শরিক দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত নির্বাচনের বিজয় ধরে রাখতে এবং নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মহাজোটকে সক্রিয় করার বিকল্প নেই। মহাজোট ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকারেরই ক্ষতি হবে।
এদিকে নামে ১৪ দলীয় জোট হলেও আসলে ৯ দলীয় জোট। আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলগুলো হচ্ছে_ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ (ইনু), সাম্যবাদী দল, ন্যাপ (মোজাফ্ফর), গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, গণ-আজাদী লীগ এবং গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি (জাকির)। এর মধ্যে শেষের তিনটি দলের কোনো অংশগ্রহণ নেই সরকারে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ। আওয়ামী লীগের পরে মহাজোটের সবচেয়ে বড় শরিক
এরশাদের জাতীয় পার্টির এবং সাম্যবাদী দলের একজন করে মন্ত্রী রয়েছেন শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারে।
ক্ষমতাসীন হওয়ার পর দুই বছরে এ পর্যন্ত ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে তিনটি। সরকারের এক বছরের মাথায় চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি হয় প্রথম বৈঠক। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি হয় দ্বিতীয় বৈঠক এবং ১ জুন গণভবনে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রথমবারের মতো মহাজোটভুক্ত দলগুলোর শরিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় সর্বশেষ বৈঠকটি।
কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন অভিযোগ করে বলেন, সরকার পরিচালনায় জোটভুক্ত দলগুলোর কাছ থেকে কোনো মতামত নেওয়া হয় না। মতামত না নিলেও সরকারের যেকোনো ব্যর্থতার দ্বায়ভার যেহেতু সব দলকেই নিতে হবে, তাই সবাই মিলে সরকার পরিচালনা ভবিষ্যতের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে বলে মনে করেন তিনি।
ওয়ার্কার্স পার্টির ওই নেতা বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে চললে ভুলের আশঙ্কা কম থাকে। আর জোটভুক্ত দলগুলোর ঐক্য বিঘি্নত হলে, আসল ক্ষতিটা হবে সরকারেরই।
মহাজোটের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ১৪ দলীয় জোট বর্তমানে নিষ্ক্রিয়। সরকার পরিচালনায় মতামত নেওয়ার জন্য কোনো বৈঠক জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে আজ পর্যন্ত হয়নি। যে দু-একটা বৈঠক হয়েছে, সেটা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। নীতিনির্ধারণী, নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন কিংবা সরকার পরিচালনার কলাকৌশল নিয়ে কোনো বৈঠক হয়নি।
সরকার পরিচালনায় মতামত না নেওয়া হলেও মহাজোট সরকারের ব্যর্থতার দায়ভার শরিক সব দলকেই নিতে হবে_এমন মন্তব্য করে জাসদ নেতা বলেন, সরকারকে সফল করতে ১৪ দলকে আবারও সক্রিয় করতে হবে। এ জন্য জাসদের পক্ষ থেকে সাজেদা চৌধুরীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, গত সাধারণ নির্বাচনের বিজয় ধরে রাখা এবং নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মহজোটকে সক্রিয় করার বিকল্প নেই।
কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বর্তমানে মহাজোটের নিষ্ক্রিয়তার কথা স্বীকার করে বলেন, অবিলম্বে তা সক্রিয় করা হবে। শেখ হাসিনার নির্দেশে ঈদের পর এ মাসেই মহাজোটকে নিয়ে বৈঠক করা হবে। তিনি বিরোধী দলের আন্দোলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, মহাজোট সক্রিয় করে ঐক্যবদ্ধভাবেই বিরোধী দলের আন্দোলন-সংগ্রামের জবাব দেওয়া হবে, রাজনৈতিকভাবেই তাদের মোকাবিলা করা হবে।
আওয়ামী লীগের পর মহাজোটের সবচেয়ে বড় শরিক জাতীয় পার্টি। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সরকার পরিচলনায় জাতীয় পার্টির ভূমিকা অতিনগণ্য। আওয়ামী লীগ একাই করছে সব কিছু। মহাজোটের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, 'মহাজোট আছে কি নেই, সেটাই তো বুঝি না।' মহাজোটকে শক্তিশালী করার জন্য কোনো উদ্যোগ আওয়ামী লীগের তরফ থেকে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জাতীয় পার্টির ওই নেতা বলেন, জোট হয়েছে দলের ওপরের সারির কিছু লোকের সঙ্গে এবং সেটা ছিল নির্বাচনী জোট। আসন ভাগাভাগির জোট। কর্মীদের সঙ্গে কোনো পর্যায়ে কোনো জোট হয়নি। সুতরাং মহাজোট আবার কোনো কর্মসূচি নিলে জাতীয় পার্টির কর্মীরা পথে নামবে কি না সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ফিরোজ রশীদ বলেন, যেহেতু সরকার পরিচালিত হয় আওয়ামী লীগের একক ইচ্ছায়, তাই সরকারের ব্যর্থতার দায়ভার তাদেরই নিতে হবে। দেন-দরবার, দেনা-পাওনার হিসাব বাদ দিয়ে, মহাজোটকে শক্তিশালী করতে সব দলকে নিয়ে একসঙ্গে বসার জন্য আওয়ামী লীগকে আহ্বান জানান তিনি।
মহাজোটের শরিক ন্যাপের (মোজাফ্ফর) সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় জোটভুক্ত দলগুলোকে পাত্তাই দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। পার্টিগতভাবেও তাদের দলের কোনো ভূমিকা বা অংশগ্রহণ নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জেলা বা থানা পর্যায়ে ১৪ দলীয় জোটের কোনো অস্তিত্ব নেই।
গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম বলেন, 'আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ছিলাম, কিন্তু সরকারে নেই। সরকারের কোনো কার্যক্রমে আমাদের অংশগ্রহণ নেই।' তিনি বলেন, যেহেতু সরকার পরিচালনায় কোনো ভূমিকা নেই, তাই সরকারের কোনো ব্যর্থতার দায়ভার নিতে রাজি নয় গণতন্ত্রী পার্টি। এমনকি জনগণের বিপক্ষে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিলে এর বিরোধিতা করবে দলটি।
গণ-আজাদী লীগের সভাপতি হাজি আবদুস সামাদ জানান, সরকার পরিচালনায় কোনো ভূমিকা নেই তাঁর দলের। তিনি শরিক দলগুলোকে নিয়ে বসে জোটকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রতি।
কমিউনিস্ট কেন্দ্রের নেতা অসিত বরণ রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ১৪ দলীয় জোটের অনেক দলের কিছু প্রতিনিধি সরকারে থাকলেও তাঁর দলের অংশগ্রহণ নেই সরকারের কোনো পর্যায়েই।
তবে ওই নেতা জানান, অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়েই যেহেতু ১৪ দলীয় জোটের সৃষ্টি হয়েছিল, তাই সরকার মতামত না নিলেও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সরকারকে সহযোগিতা করবে তাঁর দল।
=======================
আলোচনা- 'বাঙ্গালির বদলে যাওয়া' by সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম খবর- আফগানিস্তান শান্তি কত দূর?' by তৌহিদ আজিজ গল্প- 'ঝল্সে ওঠে জরিণ ফিতা' by রফিকুর রশীদ ফিচার- ‘আক্রান্ত' by জাফর তালুকদার স্মরণ- 'একজন বিস্মৃতপ্রায় বুদ্ধিজীবী' by আহমাদ মাযহার গল্প- 'অলৌকিক উপাখ্যান' by হাসান মোস্তাফিজুর রহমান গল্প- 'জয়মন্টপের জায়াজননী' by জামাল উদ্দীন আলোচনা- 'তুর্গিয়েনেফ প্রসাদাৎ' by হায়াৎ মামুদ গল্প- 'একটাই জীবন' by হাজেরা নজরুল ফিচার- 'এটি একটি সংখ্যামাত্র' by রণজিৎ বিশ্বাস গল্প- 'সোনালি চিল' by সৈয়দ মোফাজ্জেল হোসেন গল্প- 'বোবা ইশারা' by মণীশ রায় গল্প- 'চিরদিনের' by মঈনুল আহসান সাবের স্মরণ- 'আবদুল মান্নান সৈয়দ সাহিত্যের এক সর্বসত্তা আলোচনা- 'বাংলা চর্চা পরিচর্যা ও ইংরেজি শেখা' আলোচনা- 'আমার ছেলেবেলার ঈদ আর বুড়োবেলার ঈদ' আলোচনা- 'নৈতিক চেতনা : ধর্ম ও মতাদর্শ' by আবুল কাসেম ফজলুল হক খবর- গণতান্ত্রিক সব শক্তির সঙ্গে কাজ করতে চাই: সু চি ফিচার- ‘নিজের কথা : বেঁচে আছি' by হুমায়ূন আহমেদ কবিতা- সাম্প্রতিক সময়ের কিছু কবিতা আলোচনা- 'মোস্লেম ভারত' পত্রিকায় চর্চিত মুসলিম ধর্ম- দর্শনের স্বরূপ ইতিহাস- 'চারশ' বছরের ঢাকা লোক ঐতিহ্যের দশ-দিগন্ত' by আনিস আহমেদ গল্পালোচনা- 'মৃত্যুর মুশায়রা' by সেলিনা হোসেন
কালের কণ্ঠ এর সৌজন্য
লেখকঃ পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য্য
এই খবর'টি পড়া হয়েছে...
আলোচনা- 'বাঙ্গালির বদলে যাওয়া' by সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম খবর- আফগানিস্তান শান্তি কত দূর?' by তৌহিদ আজিজ গল্প- 'ঝল্সে ওঠে জরিণ ফিতা' by রফিকুর রশীদ ফিচার- ‘আক্রান্ত' by জাফর তালুকদার স্মরণ- 'একজন বিস্মৃতপ্রায় বুদ্ধিজীবী' by আহমাদ মাযহার গল্প- 'অলৌকিক উপাখ্যান' by হাসান মোস্তাফিজুর রহমান গল্প- 'জয়মন্টপের জায়াজননী' by জামাল উদ্দীন আলোচনা- 'তুর্গিয়েনেফ প্রসাদাৎ' by হায়াৎ মামুদ গল্প- 'একটাই জীবন' by হাজেরা নজরুল ফিচার- 'এটি একটি সংখ্যামাত্র' by রণজিৎ বিশ্বাস গল্প- 'সোনালি চিল' by সৈয়দ মোফাজ্জেল হোসেন গল্প- 'বোবা ইশারা' by মণীশ রায় গল্প- 'চিরদিনের' by মঈনুল আহসান সাবের স্মরণ- 'আবদুল মান্নান সৈয়দ সাহিত্যের এক সর্বসত্তা আলোচনা- 'বাংলা চর্চা পরিচর্যা ও ইংরেজি শেখা' আলোচনা- 'আমার ছেলেবেলার ঈদ আর বুড়োবেলার ঈদ' আলোচনা- 'নৈতিক চেতনা : ধর্ম ও মতাদর্শ' by আবুল কাসেম ফজলুল হক খবর- গণতান্ত্রিক সব শক্তির সঙ্গে কাজ করতে চাই: সু চি ফিচার- ‘নিজের কথা : বেঁচে আছি' by হুমায়ূন আহমেদ কবিতা- সাম্প্রতিক সময়ের কিছু কবিতা আলোচনা- 'মোস্লেম ভারত' পত্রিকায় চর্চিত মুসলিম ধর্ম- দর্শনের স্বরূপ ইতিহাস- 'চারশ' বছরের ঢাকা লোক ঐতিহ্যের দশ-দিগন্ত' by আনিস আহমেদ গল্পালোচনা- 'মৃত্যুর মুশায়রা' by সেলিনা হোসেন
কালের কণ্ঠ এর সৌজন্য
লেখকঃ পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য্য
এই খবর'টি পড়া হয়েছে...
No comments