দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবী গড়ার স্বপ্নের নতুন পথ
দারিদ্র্য দূর করতে হলে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে হবে। সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে পৃথিবীর সব সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করা যাবে। স্বাস্থ্যসেবা, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ সব ক্ষেত্রে সামাজিক উদ্যোগে ব্যবসা করা সম্ভব। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে নরওয়ের অসলোতে নোবেল শান্তি পুরস্কার হাতে নিয়ে ওই মন্তব্য করেছিলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেই প্রথম বিশ্ববাসী শুনল সামাজিক ব্যবসার বিষয়টি। সেই থেকেই বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণের পর সামাজিক ব্যবসা নিয়ে আলোচনার শুরু।
ক্ষুদ্রঋণ থেকে সামাজিক ব্যবসা। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের দারিদ্র্য বিমোচনের নতুন স্বপ্ন। তাঁর দৃষ্টিতে সামাজিক ব্যবসা পুঁজিবাদের এক বিবর্তন, যা মানবতার জরুরি প্রয়োজন মেটাবে। বিশ্বের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে বিনিয়োগ করবে, কিন্তু লাভ নেবে না। মুহাম্মদ ইউনূসের এই যাত্রায় সঙ্গী হয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বের খ্যাতনামা অনেক প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করছে। ভবিষ্যতে আসছে অনেক প্রতিষ্ঠান। সামাজিক ব্যবসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিবেদনগুলো তৈরি করেছেন রাহীদ এজাজ ও ইফতেখার মাহমুদ
ক্ষুদ্রঋণ থেকে সামাজিক ব্যবসা। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের দারিদ্র্য বিমোচনের নতুন স্বপ্ন। তাঁর দৃষ্টিতে সামাজিক ব্যবসা পুঁজিবাদের এক বিবর্তন, যা মানবতার জরুরি প্রয়োজন মেটাবে। বিশ্বের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে বিনিয়োগ করবে, কিন্তু লাভ নেবে না। মুহাম্মদ ইউনূসের এই যাত্রায় সঙ্গী হয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বের খ্যাতনামা অনেক প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করছে। ভবিষ্যতে আসছে অনেক প্রতিষ্ঠান। সামাজিক ব্যবসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিবেদনগুলো তৈরি করেছেন রাহীদ এজাজ ও ইফতেখার মাহমুদ
ওই বক্তৃতায় ধ্রুপদি পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সমালোচনা করে মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেছিলেন, সামাজিক উদ্যোগের চেয়ে ব্যক্তিগত মুনাফাভিত্তিক উদ্যোগ বেশি সফলতা দেয় এমন কথা এত দিন বলা হতো, যার প্রধান লক্ষ্য মুনাফা সর্বোচ্চ করা। মুক্তবাজার অর্থনীতির এই আদর্শ অনুসরণ করে পৃথিবীর অর্ধেকেরও বেশি মানুষ দরিদ্র রয়েছে। কিন্তু উদ্যোক্তার ধরন বদলে ফেলতে পারলে পুঁজিবাদের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা যাবে। সবশেষে তিনি ফাউন্ডেশনের বাইরে সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার জন্য বিশ্বের বৃহৎ কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
মুহাম্মদ ইউনূসের সেই আহ্বানের পর পৃথিবীজুড়ে সামাজিক ব্যবসা নিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচনার সূত্রপাত। বিশ্বের বৃহৎ কোম্পানিগুলো সামাজিক ব্যবসায় আগ্রহ দেখাতে শুরু করে। সামাজিক ব্যবসার জন্য আলাদা পুঁজিবাজার গড়ে তোলা ও শিল্প এলাকা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ শুরু হয়। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক ব্যবসা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। গ্রামীণ ব্যাংকের ভবনে সামাজিক ব্যবসাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইউনূস সেন্টার স্থাপন করা হয়।
মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর লেখা নতুন বই বিল্ডিং সোশ্যাল বিজনেস এবং বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া বক্তৃতায় সামাজিক ব্যবসার বিষয়টি ধীরে ধীরে বিশ্ববাসীর কাছে পর্যায়ক্রমে তুলে ধরেছেন। সামাজিক ব্যবসার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, কোনো একটি সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্যে এই ব্যবসার সূত্রপাত। সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগকারী বা উদ্যোক্তা পর্যায়ক্রমে অর্থ ফেরত নিতে পারবেন, কিন্তু কোনো লভ্যাংশ নেবেন না। বিনিয়োগের প্রধান উদ্দেশ্য থাকবে এক বা একাধিক সামাজিক লক্ষ্য অর্জন করা। কোম্পানি বিনিয়োগ করবে ও মুনাফা নেবে এবং একই সঙ্গে এক বা একাধিক সামাজিক লক্ষ্য অর্জন করবে। যেমন, গরিবের জন্য আবাসন নিশ্চিত করা, পুষ্টির চাহিদা মেটানো, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের মতো সামাজিক চাহিদা পূরণের জন্য সামাজিক ব্যবসা হতে পারে।
সামাজিক ব্যবসায় যখন বিশ্বের প্রখ্যাত ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো এগিয়ে আসতে থাকে, তখন মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দেন, সামাজিক ব্যবসার শিল্পপ্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্যের দাম হবে তুলনামূলক কম। সমাজের নির্দিষ্ট একটি অংশের নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করা হবে এর উদ্দেশ্য। ফলে দামও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা হবে। এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সামাজিক সচেতনতা সম্পর্কে নতুন ধারণা হবে।
ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে সামাজিক ব্যবসা সম্পর্কে বলা হয়েছে, সামাজিক ব্যবসা বাজারের বিদ্যমান ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর পথ আটকে দেবে না, তৈরি করবে না নতুন কোনো একচেটিয়া ব্যবসা। বরং ব্যবসার নতুন ধরন তৈরি করে বিদ্যমান বাজারব্যবস্থার মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়াবে। ব্যবসায়ীরা কেন সামাজিক ব্যবসায় আসবেন, এর কারণ ব্যাখ্যা করে ইউনূস তাঁর ক্রিয়েটিং এ ওয়ার্ল্ড উইদাউট পোভার্টি বইতে বলেছেন, সমাজের মধ্যে যে সমস্যা রয়েছে, তা কারও জন্যই স্বস্তিদায়ক নয়। ব্যবসায়ীরা মুনাফার চশমা পরে দেখলে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবেন না। কিন্তু সামাজিক ব্যবসার চোখ দিয়ে দেখলে খুব সহজেই অনেক কঠিন সমস্যার সমাধান করা যাবে। পৃথিবীর সবার জন্য সমান ভবিষ্যতের রূপকথা শোনানো হয়েছিল, কিন্তু তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। পৃথিবীর বেশির ভাগ দরিদ্র মানুষ মনে করে, মুক্তবাজার তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। রাষ্ট্রকে এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিতে হবে। এযাবৎকালের অভিজ্ঞতার সারবস্তু হচ্ছে, রাষ্ট্র কিছু তীব্র সমস্যার সমাধান করতে পারে, কিন্তু এতে সমস্যার বড় অংশের কোনো কূলকিনারা হয় না।
ইউনূস বইটিতে আরও বলেন, দাতব্যের জনসেবা করার ধারাবাহিকতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সূত্রপাত হয়। দাতা সংস্থা ও ধনী রাষ্ট্রগুলো এ ধরনের সংস্থাগুলোকে সহায়তা দেওয়া শুরু করে। এই প্রক্রিয়া অনেক বেশি ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া। বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান মনে করে, দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে। দরিদ্র মানুষকে সহায়তা দিতে হবে। তবে এতে সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সমাধান হয়নি। ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে সামাজিক দায়িত্ব পালন (সিএসআর) করার মাধ্যমে সামাজিক সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা তাঁদের মূল ব্যবসাকে মুনাফার জন্য পরিচালনা করেছেন। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদের মতে, এই সবকিছু বিবেচনায় সামাজিক ব্যবসাই সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ।
যেমন, গ্রামের মানুষের পুষ্টিচাহিদা পূরণের জন্য ফ্রান্সের বিখ্যাত কোম্পানি ডানোনের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে গ্রামীণ ডানোনের তৈরি করা শক্তি দই, আরেক ফরাসি কোম্পানি ভিওলিয়া ওয়াটার লিমিটেডের সঙ্গে গ্রামীণ ভিওলিয়া লিমিটেড, গ্রামীণ ইনটেলের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি, গ্রামীণ অ্যাডিডাসের মাধ্যমে সস্তায় জুতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রতিটি ব্যবসার প্রধান লক্ষ্য মুনাফা নয়; সমাজের পুষ্টি, বিশুদ্ধ পানি, তথ্যপ্রযুক্তির সেবা ও জুতার চাহিদা মেটানো।
=========================
প্রকৃতি- বাংলাদেশের ঝুঁকি বাড়ছে কমেনি কার্বন নিঃসরণ by ইফতেখার মাহমুদ প্রথম আলোর সাথে সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস 'সামাজিক ব্যবসা অনেক ক্ষেত্রেই বেশিকার্যকর' আলোচনা- 'তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে করণীয়' by by মোহাম্মদ জমির রাজনৈতিক আলোচনা- 'গণতন্ত্রের স্বার্থে পারস্পারিক সম্মানবোধ' by ড. আবু এন. এম. ওয়াহিদ শিল্প-অর্থনীতি 'চরম দরিদ্রদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে' by জাহাঙ্গীর শাহ বিশেষ রচনা- মেডির মিরাকল by মাসুদ রহমান ভ্রমণ- 'ঘুরি দেশে দেশে' by মাহফুজ রহমান প্রকৃতি- 'বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে হাঁক, দ্বিগুণ হবে বনের বাঘ' by খসরু চৌধুরী যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'সংসদীয় গণতন্ত্র, না ভানুমতির খেল' by সোহরাব হাসান গল্পালোচনা- 'এই দীনতা ক্ষমা করো প্রভু...' by মুস্তাফা জামান আব্বাসী ফিচার গল্প- ‘ইতালির রাস্তায় পুলিশ খুঁজতাম' by বাবুল আক্তার খবর- মৃত ভেবে মাছুমার নিথর দেহ ওরা ফেলে দেয় মহাসড়কে অদ্ভুত ফিচার- 'বাংলার বিস্ময়ঃ আশ্চর্য কুলাগিনা' by মেহরিন জাহান স্মরণ- 'ডা. মিলনকে যেন না ভুলি' by পলাশ আহসান রাজনৈতিক আলোচনা- 'যার যা কাজ' by আতাউস সামাদ নিবন্ধ- 'অবলা বলে কেন না-বলা থাকবে' by মোস্তফা হোসেইন ইতিহাস- সিপাহি বিদ্রোহঃ সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে আন্তর্জাতিক- 'কোরিয়া সীমান্তে তুলকালাম' by দাউদ ইসলাম আন্তর্জাতিক- 'চেচনিয়ার ‘যুদ্ধবাজ ইমাম’ by মিজান মল্লিক আন্তর্জাতিক- আমি স্বাধীনতা চাই না: রমজান কাদিরভ সাহিত্যালোচনা- 'মৃত্যুশতবার্ষিকীর তলস্তয়' by আন্দালিব রাশদী গল্পসল্প- 'দুঃখটাকে ভাগাভাগি করি' by মুহম্মদ জাফর ইকবাল গল্প- 'দাদার দোকানে শূন্য দশক' by সালাহউদ্দিন
দৈনিক প্রথম আলোর সৌজন্যে
প্রতিবেদনগুলো তৈরি করেছেন রাহীদ এজাজ ও ইফতেখার মাহমুদ
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
প্রকৃতি- বাংলাদেশের ঝুঁকি বাড়ছে কমেনি কার্বন নিঃসরণ by ইফতেখার মাহমুদ প্রথম আলোর সাথে সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস 'সামাজিক ব্যবসা অনেক ক্ষেত্রেই বেশিকার্যকর' আলোচনা- 'তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে করণীয়' by by মোহাম্মদ জমির রাজনৈতিক আলোচনা- 'গণতন্ত্রের স্বার্থে পারস্পারিক সম্মানবোধ' by ড. আবু এন. এম. ওয়াহিদ শিল্প-অর্থনীতি 'চরম দরিদ্রদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে' by জাহাঙ্গীর শাহ বিশেষ রচনা- মেডির মিরাকল by মাসুদ রহমান ভ্রমণ- 'ঘুরি দেশে দেশে' by মাহফুজ রহমান প্রকৃতি- 'বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে হাঁক, দ্বিগুণ হবে বনের বাঘ' by খসরু চৌধুরী যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'সংসদীয় গণতন্ত্র, না ভানুমতির খেল' by সোহরাব হাসান গল্পালোচনা- 'এই দীনতা ক্ষমা করো প্রভু...' by মুস্তাফা জামান আব্বাসী ফিচার গল্প- ‘ইতালির রাস্তায় পুলিশ খুঁজতাম' by বাবুল আক্তার খবর- মৃত ভেবে মাছুমার নিথর দেহ ওরা ফেলে দেয় মহাসড়কে অদ্ভুত ফিচার- 'বাংলার বিস্ময়ঃ আশ্চর্য কুলাগিনা' by মেহরিন জাহান স্মরণ- 'ডা. মিলনকে যেন না ভুলি' by পলাশ আহসান রাজনৈতিক আলোচনা- 'যার যা কাজ' by আতাউস সামাদ নিবন্ধ- 'অবলা বলে কেন না-বলা থাকবে' by মোস্তফা হোসেইন ইতিহাস- সিপাহি বিদ্রোহঃ সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে আন্তর্জাতিক- 'কোরিয়া সীমান্তে তুলকালাম' by দাউদ ইসলাম আন্তর্জাতিক- 'চেচনিয়ার ‘যুদ্ধবাজ ইমাম’ by মিজান মল্লিক আন্তর্জাতিক- আমি স্বাধীনতা চাই না: রমজান কাদিরভ সাহিত্যালোচনা- 'মৃত্যুশতবার্ষিকীর তলস্তয়' by আন্দালিব রাশদী গল্পসল্প- 'দুঃখটাকে ভাগাভাগি করি' by মুহম্মদ জাফর ইকবাল গল্প- 'দাদার দোকানে শূন্য দশক' by সালাহউদ্দিন
দৈনিক প্রথম আলোর সৌজন্যে
প্রতিবেদনগুলো তৈরি করেছেন রাহীদ এজাজ ও ইফতেখার মাহমুদ
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
No comments