বাংলাদেশের ইসলামি প্রকাশনায় রাষ্ট্র ও রাজনীতি: প্রকাশকরা বলছেন ‘চিন্তার বিস্তৃতি’ by শফিক রহমান
বাংলাদেশে
ইসলামি প্রকাশনা বলতে এক সময় শুধু সহজ আমল বা ইসলামী অনুশীলনভিত্তিক
শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। ষাটের দশকে এসে ওই ধারার
পরিবর্তন ঘটে। তখন থেকে ইসলামী সাহিত্যে রাষ্ট্র, রাজনীতি, সংবিধান, আইন,
মানবাধিকার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ধারনা, ইত্যাদি সম্পর্কে শরীয়তের নির্দেশ
এবং ধর্মের আসল উদ্দেশ্যগুলো যুক্ত হতে থাকে। সমকালীন ইসলামি চিন্তক, লেখক,
গবেষক ও অনুবাদকদের হাত ধরে ওই ধারা আরও সমৃদ্ধ হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে।
ব্রিটিশ শাসনোত্তর যুগে বাংলাদেশে ইসলামি সাহিত্য রচনা ও বিকাশের পথে নেতৃত্ব দিয়েছেন সমাজ-সংস্কারক ও ইসলামি চিন্তাবিদ আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী (১৮৯৬—১৯৬৯)। বর্তমান যুগে পশ্চিমা দুনিয়া যখন ‘সন্ত্রাসের’ সঙ্গে ‘জিহাদকে’ গুলিয়ে ফেলছে তারও প্রায় ৭০/৮০ বছর আগে আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী জিহাদকে সজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে: “জিহাদ অর্থ যুদ্ধ-বিগ্রহ, লুটতরাজ, জুলুম-অত্যাচার নয়। জিহাদ অর্থ যার যা আছে তা আল্লাহর উদ্দেশ্যে খরচ করা।…কিতাব লিখে, বক্তৃতা দিয়ে দুর্নীতি দমন করে সুনীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টাও জিহাদ।”
সহজ ইসলামী অনুশীলনের জন্য নেয়ামুল কোরআন, মুকসেদুল মুমেনিন, বেহেস্তি জেওর (অনুবাদ), আমপারার (আরবি ও কোরআন শিক্ষার প্রাথমিক পাঠ), ইত্যাদি প্রকাশনাগুলোর যে সীমাবদ্ধ ছিল তা অতিক্রম করে জিহাদের গুরুত্ব ও ফযিলত, ধর্ম ও রাজনীতি, ভোটারের দায়িত্ব ও ভোট সম্পর্কে শরীয়তের নির্দেশ এবং ধর্মের আসল উদ্দেশ্য কী, ইত্যাদি শিরোনামে বই লিখেছেন শামসুল হক ফিরিদপুরী। সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামি প্রকাশনা জগতে নিয়মিত যুক্ত হচ্ছে কোরআন-সুন্নাহর আলোকে পরিবার-সমাজ, ব্যবসা-অর্থনীতি এবং রাষ্ট্র ও রাজনীতি ঘনিষ্ট বই।
প্রকাশনা সংস্থা বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্সের দুই শতাধিক বইয়ের তালিকায় যুক্ত হওয়া তেমনই একটি বই ‘আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলাম’। বইটিতে লেখক আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া কোরআন ও হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন রাষ্ট্র, রাজনীতি, সংবিধান, আইন, মানবাধিকার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ধারনা। তুলে ধরেছেন পারস্য সাম্রাজ্য, গ্রীক সাম্রাজ্য, রোমান সাম্রাজ্য এবং মদীনার ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও রাষ্ট্র দর্শনের নানা দিক। এরই ধারাবাহিকতায় আধুনিক রাজনীতিতে প্রবর্তিত রাজনৈতিক দলের প্রকারভেদ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে রাজনৈতিক দলব্যবস্থায় জনগণের বহুদলে বিভক্তি, অন্ধভক্তি, ব্যক্তির স্বাধীন চিন্তার উন্মেষের পথে বাধাসহ মোট ছয়টি ক্ষতিকর দিকের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে এ প্রসঙ্গে তিনি যে বিষয়টির ওপর বেশি জোর দিয়েছেন সেটা হলো- দলীয় রাজনীতিতে দলীয় স্বার্থচিন্তা জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করতে অনুপ্রাণিত করে।
বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্স প্রকাশিত ইসলামী বিপ্লব: পথ ও পদ্ধতি, জিহাদ কি ও কেন, সভ্যতা-সংকট দিগ-দর্শন, আধুনিক যুগে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা, ইসলামী আন্দোলন: জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই, ধর্ম ও ধর্মনিরপেক্ষতা, রাজনীতিতে আলিমসমাজের প্রভাব (বাংলাদেশ ১৯৭২-২০০১) এবং ইসলামী আন্দোলন ও উলামাসমাজসহ নানা বইয়ের মধ্যে আরেকটি তাত্ত্বিক বই ‘পশুবাদ-পুঁজিবাদ-সমাজবাদ’। বইটিতে লেখক অধ্যাপক মাওলানা আবদুল্লাহ ফারূকের যুক্তিতে উঠে এসেছে পুঁজিবাদ ও পাশবতন্ত্রের অপর পিঠ থেকে কিভাবে জন্ম নিল সমাজবাদের ধারনা। তুলে ধরেছেন ‘দুর্বল খেয়ে সবল বাঁচে’ কিংবা ‘সবলকে নিপাত করে দুর্বল বাঁচে’ পারস্পরিক ধ্বংসকারী এই দ্বন্দ্বের বিশ্লেষণ।
প্রবীণ আলেম ও প্রবীণ পুস্তক বিক্রেতারা জানান, বাংলাদেশে ইসলামি পুস্তক প্রকাশনা গড়ে উঠেছিল পুরান ঢাকার চকবাজার শাহী মসজিদ মার্কেটকে ঘিরে। আর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে ছিল রহমানিয়া লাইব্রেরী, হামিদিয়া লাইব্রেরী এবং এমদাদিয়া লাইব্রেরী। এর মধ্যে রহমানিয়া লাইব্রেরীর বহুল প্রকাশিত বই ছিল নেয়ামুল কোরআন, মুকসেদুল মুমেনিন। এছাড়া সংস্থাটি প্রকাশ করতো নবী রাসুলসহ মুসলিম মনীষীদের জীবনী। এধরনের সহজ ও স্বাভাবিক আমল ভিত্তিক বইয়ের পাশাপাশি হামিদিয়া লাইব্রেরীর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা ছিল শায়খুলহাদীস মরহুম মাওলানা আজিজুল হকের বুখারি শরীফের অনুবাদ। আর এমদাদিয়া লাইব্রেরীর খ্যাতি ছিল ইমাম গাজ্জালির কিমিয়ায়ে সাহাদাত এর (সৌভাগ্যের পরশমনি) অনুবাদ নিয়ে। এছাড়া পাকিস্তান ভিত্তিক প্রকাশনা সংস্থা ‘তাজ কোম্পানির’ শাখাও ছিল ঢাকাতে। যাদের প্রকাশনায় ছিল মুলত কোরআন শরীফ, কাসাসুল আম্বিয়া (আম্বিয়াদের কিসসা কাহিনি), তাজকেরাতুল আউলিয়া (আউলিয়াদের জীবনী ও অলৌকিক ঘটনাভিত্তিক) ইত্যাদি। পাকিস্তানের মূল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ না থাকলেও ঢাকাতে এখনও তাজ লাইব্রেরী ও তাজ কোম্পানি নাম নিয়ে প্রকাশনা সংস্থা আছে। যাদের খ্যাতি ওজিফা ও দোয়া দুরূদের বই বই প্রকাশে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চকবাজারকেন্দ্রীক ইসলামি বইয়ের বাজার উঠে গেছে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম কেন্দ্রীক ইসলামি বইয়ের বাজারও ঝিমিয়ে পড়েছে। পাঠ্যবই, শিক্ষা সহায়ক বইসহ সৃজনশীল ও মননশীল বই বিক্রয়ের হাব হিসেবে পরিচিত বাংলাবাজার এখন ইসলামি বইয়েরও হাব। সেখানে ইসলামি প্রকাশনা সংস্থা ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি বহুতল মার্কেট গড়ে উঠেছে। যার নামও দেয়া হয়েছে ‘ইসলামী মার্কেট’। মার্কেটটির সভাপতি এবং ইসলামি বইয়ের আমদানিকারক মো. জালাল আহমেদ জানান, তাঁরও ব্যবসার সূচনা ছিল চকবাজারের শাহী মসজিদকেন্দ্রীক। যেখানে আরো দোকান ছিল গোটা পঞ্চাশেক। কিন্তু ২০০৮ সালের দিকে পুস্তক ব্যবসায়িরা চকবাজার ছাড়তে শুরু করেন। ২০১০ সালের মধ্যে সবাই বাংলাবাজারে স্থানান্তর হয়েছেন। তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাংলাবাজারে শুধু ইসলামি বইয়ের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শতাধিক। বই বিক্রেতা ও আমদানিকারকের সংখ্যা তারও দ্বিগুণ।
সম্প্রতি বাংলাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, আদি এমদাদিয়া লাইব্রেরী ভেঙ্গে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন এক সময় যে এমদাদিয়ার কর্মচারি ছিলেন তিনিও এমদাদিয়ার নাম নিয়ে প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। ফলে দেখা যাচ্ছে এমদাদিয়া পুস্তকালয়, এমদাদিয়া প্রকাশনী, এমদাদিয়া কুতুবখানাসহ নান নামের প্রতিষ্ঠান। এছাড়া নতুন প্রতিষ্ঠানে মধ্যে রয়েছে জাদীদ প্রকাশন, হুদহুদ প্রকাশন, মুস্তাখাব প্রকাশনী, আল-কাউসার প্রকাশনী, মাকতাবাতুল ইলম, মাকতাবাতুল আশরাফ, মাকতাবাতুল হেরা, মাকতাবাতুল আযহার ইত্যাদি। রাজধানীর মধ্যবাড্ডাকেন্দ্রীক মাকতাবাতুল আযহারের ১৫৩টি বইয়ের মধ্যে রয়েছে খেলাফত ও রাষ্ট্রনীতি: ইসলামী দৃষ্টিকোণ, ইসলামের রাজনৈতিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ, মুসলমানদের পতনে বিশ্বমানবতা কী হারালো, ডিজিটাল ছবি ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া সম্পর্কে ইসলামের বিধান, সাদ সাহেবের একটি বিতর্কিত তাফসির, ওয়াহাবী আন্দোলন ও উলামায়ে দেওবন্দ এবং আধুনিক লেনদেনের ইসলামী বিধান শিরোনামের নানা বই।
মাকতাবাতুল হেরার ১৪৬টি বইয়ের তালিকায় পাওয়া যাচ্ছে আরব বিশ্বে ইসলামি শাসনের পতন ও তার নেপথ্যকথা, সাংবাদিকতার শরয়ী নীতিমালা, ভোট ও নির্বাচনের শরয়ী বিধান, নাঙ্গা তলোয়ার, কোন পথে ইউরোপের ইসলাম, নাস্তিকতার স্বরূপ সন্ধানে, আমদানি-রপ্তানি: প্রচলিত রূপ ও শরয়ী রূপরেখা, বেচাকেনার জায়েয-নাজায়েয পদ্ধতিসহ নানা বই।
আর মাকতাবাতুল আশরাফের দুই শতাধিক বইয়ের মধ্যে ভিন্ন ধারার কয়েকটি হলো ইসলাম ও আধুনিকতা, খৃষ্টধর্মের স্বরূপ, খৃষ্টধর্ম না মৌলবাদ, শেয়ারবাজার, মাল্টিলেভেল মার্কেটিং, পারিবারিক কলহ ইত্যাদি।
এসব বইয়ের কোনোটি মৌলিক কোনোটি আবার অনুবাদ। আর অনুবাদ হয়ে বাংলাদেশে যাঁর বই সবচেয়ে বেশি ছাপা হচ্ছে তিনি হলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধান বিচারপতি মুফতী তক্বী উসমানী। রাষ্ট্র, অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবারসহ নানা জীবনঘনিষ্ঠ বই যেমন, ইসলাম আধুনিক অর্থনীতি ও ব্যবসানীতি, ইসলাম ও আধুনিক অর্থব্যবস্থা, মুসলিম পারিবারিক আইন ও ইসলাম, পারিবারিক কলহ, বিবাহ ও তালাক ইত্যাদি রয়েছে এই তালিকায়।
এছাড়া অনুবাদ হচ্ছে তক্কী উসমানীর ছেলে ড. মাওলানা ইমরান আশরাফ উসমানী, ভারতের মুফতি সাঈদ আহমাদ পালনপুরী, উর্দূ সাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাওলানা মুহাম্মাদ তাহের নাক্কাশ, সিরিয়ার শায়খ আলী তানতাবী, সৌদি আরবের ড. আয়েয আল করনী, মিশরের শায়খ মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবিসহ সমকালীন আরও অনেক লেখকের বই।
তবে রহমানিয়া, হামিদিয়া ও এমদাদিয়ার ধারা ভেঙ্গে তাত্বিক ও দর্শনভিত্তিক ইসলামী প্রকাশনায় যিনি পাইওনিয়ার ছিলেন তিনি হলেন বহুল পঠিত ও প্রচারিত ইসলামিক সাময়িকী মাসিক মদিনার সাবেক সম্পাদক মরহুম মাওলানা মুহিউদ্দিন খান।
তাঁর প্রতিষ্ঠিত মদিনা পাবলিকেশন্সের ভূমিকা তুলে ধরতে গিয়ে আরেক ইসলামি সাময়িকী মাসিক পাথেয়র সম্পাদক মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, ‘আমাদের ছাত্রজীবনে বাংলায় ইসলামি লেখা ছিলই না বলা যায়। মাওলানা আকরাম খাঁন এবং কবি গোলাম মোস্তফার কিছু লেখা পড়েছি। আর ছিল কবি কাজী নজরুল ইসলামের ইসলামি গান। তবে বাংলায় ইসলামি লেখা প্রসারে মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের ভূমিকা অপরিসীম। তিনিই প্রথম মদিনা পাবলিকেশন্সের ব্যানারে নানা আঙ্গিকের ইসলামি বই অনুবাদ ও প্রকাশ করতে শুরু করলেন। তাঁর সম্পাদিত মাসিক মদিনাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
বর্তমানে মদিনা পাবলিকেশন্সের প্রকাশনা প্রায় তিন শতাধিক। মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের ছেলে মোস্তফা মঈন উদ্দিন খান যাঁর দায়িত্বে চলছে মদিনা পাবলিকেশন্স। তিনি বলেন, ইসলামি লেখক-গবেষক যাঁরাই বাবার কাছে আসতেন তাঁদেরকে তিনি বলতেন- বাংলাদেশের বাস্তবতায় লিখবেন কিন্তু প্রকাশক পাবেন না। তাই নিজের লেখা নিজেকেই প্রকাশ করতে হবে এই প্রস্তুতি হাতে রাখতে হবে। মূলত বাবা সেই কাজটিই করেছেন। নিজে লিখেছেন, অনুবাদ করেছেন আবার নিজেই প্রকাশ করেছেন।
মোস্তফা মঈন উদ্দিন খান জানান, বাংলাবাজারকেন্দ্রীক ‘ইসলামী মার্কেট’ প্রতিষ্ঠায়ও মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের অবদান ছিল।
ইরানী বিপ্লব ও তুরস্কের এরদোগান প্রসঙ্গ
চল্লিশ বছর আগে ১৯৭৯ সালে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্ব ইরানে যে বিপ্লব সংঘঠিত হয় তার ঢেউ এসে বাংলাদেশেও লাগতে শুরু করেছিল। ইরানের ওই বিপ্লবকে বলা হচ্ছিল ‘ইসলামি বিপ্লব’। কিন্তু মাওলানা মুহিউদ্দিন খান বললেন, ‘নির্ভেজাল শিয়া বিপ্লব’। এছাড়া অনুবাদ করে প্রকাশ করলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা মুহাম্মদ মনযুর নোমানীর বই ‘ইরানী ইনকিলাব: ইমাম খোমেনী ও শিয়া মতবাদ’।
সাম্প্রতিক সময়ে আবার ইসলামি প্রকাশ ও প্রকাশনায় গুরুত্ব পাচ্ছে তুরস্ক ও এরদোগান প্রসঙ্গ। প্রকাশনা সংস্থা গার্ডিয়ানের তালিকায় রয়েছে ‘আতাতুর্ক থেকে এরদোয়ান: বদলে যাওয়া তুরস্কের ১০০ বছর’, ‘এরদোয়ান: দ্যা চেঞ্জমেকার’, ‘আমার দেখা তুরস্ক: বিশ্বব্যবস্থায় নতুন শক্তি তূর্কি জাতির ভেতর-বাহির’। এছাড়া বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্সের তালিকায়ও রয়েছে ‘ঢাকা ইস্তাম্বুল আঙ্কারা’ শিরোনামের আরেকটি বই। যেখানে লেখক আতাতুর্ক থেকে এরদোগান পর্যন্ত রাজনৈতি পটপরিবর্তনের নানা দিক তুলে ধরেছেন।
ফলে ফজিলত নির্ভর প্রকাশনায় নয়, গবেষণা ভিত্তিক প্রকাশনার মাধ্যমে বাংলা ভাষায় তুলে ধরার চেষ্টা চলছে ইসলামের সৌন্দর্য।
ব্রিটিশ শাসনোত্তর যুগে বাংলাদেশে ইসলামি সাহিত্য রচনা ও বিকাশের পথে নেতৃত্ব দিয়েছেন সমাজ-সংস্কারক ও ইসলামি চিন্তাবিদ আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী (১৮৯৬—১৯৬৯)। বর্তমান যুগে পশ্চিমা দুনিয়া যখন ‘সন্ত্রাসের’ সঙ্গে ‘জিহাদকে’ গুলিয়ে ফেলছে তারও প্রায় ৭০/৮০ বছর আগে আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী জিহাদকে সজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে: “জিহাদ অর্থ যুদ্ধ-বিগ্রহ, লুটতরাজ, জুলুম-অত্যাচার নয়। জিহাদ অর্থ যার যা আছে তা আল্লাহর উদ্দেশ্যে খরচ করা।…কিতাব লিখে, বক্তৃতা দিয়ে দুর্নীতি দমন করে সুনীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টাও জিহাদ।”
সহজ ইসলামী অনুশীলনের জন্য নেয়ামুল কোরআন, মুকসেদুল মুমেনিন, বেহেস্তি জেওর (অনুবাদ), আমপারার (আরবি ও কোরআন শিক্ষার প্রাথমিক পাঠ), ইত্যাদি প্রকাশনাগুলোর যে সীমাবদ্ধ ছিল তা অতিক্রম করে জিহাদের গুরুত্ব ও ফযিলত, ধর্ম ও রাজনীতি, ভোটারের দায়িত্ব ও ভোট সম্পর্কে শরীয়তের নির্দেশ এবং ধর্মের আসল উদ্দেশ্য কী, ইত্যাদি শিরোনামে বই লিখেছেন শামসুল হক ফিরিদপুরী। সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামি প্রকাশনা জগতে নিয়মিত যুক্ত হচ্ছে কোরআন-সুন্নাহর আলোকে পরিবার-সমাজ, ব্যবসা-অর্থনীতি এবং রাষ্ট্র ও রাজনীতি ঘনিষ্ট বই।
প্রকাশনা সংস্থা বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্সের দুই শতাধিক বইয়ের তালিকায় যুক্ত হওয়া তেমনই একটি বই ‘আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলাম’। বইটিতে লেখক আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া কোরআন ও হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন রাষ্ট্র, রাজনীতি, সংবিধান, আইন, মানবাধিকার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ধারনা। তুলে ধরেছেন পারস্য সাম্রাজ্য, গ্রীক সাম্রাজ্য, রোমান সাম্রাজ্য এবং মদীনার ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও রাষ্ট্র দর্শনের নানা দিক। এরই ধারাবাহিকতায় আধুনিক রাজনীতিতে প্রবর্তিত রাজনৈতিক দলের প্রকারভেদ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে রাজনৈতিক দলব্যবস্থায় জনগণের বহুদলে বিভক্তি, অন্ধভক্তি, ব্যক্তির স্বাধীন চিন্তার উন্মেষের পথে বাধাসহ মোট ছয়টি ক্ষতিকর দিকের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে এ প্রসঙ্গে তিনি যে বিষয়টির ওপর বেশি জোর দিয়েছেন সেটা হলো- দলীয় রাজনীতিতে দলীয় স্বার্থচিন্তা জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করতে অনুপ্রাণিত করে।
বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্স প্রকাশিত ইসলামী বিপ্লব: পথ ও পদ্ধতি, জিহাদ কি ও কেন, সভ্যতা-সংকট দিগ-দর্শন, আধুনিক যুগে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা, ইসলামী আন্দোলন: জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই, ধর্ম ও ধর্মনিরপেক্ষতা, রাজনীতিতে আলিমসমাজের প্রভাব (বাংলাদেশ ১৯৭২-২০০১) এবং ইসলামী আন্দোলন ও উলামাসমাজসহ নানা বইয়ের মধ্যে আরেকটি তাত্ত্বিক বই ‘পশুবাদ-পুঁজিবাদ-সমাজবাদ’। বইটিতে লেখক অধ্যাপক মাওলানা আবদুল্লাহ ফারূকের যুক্তিতে উঠে এসেছে পুঁজিবাদ ও পাশবতন্ত্রের অপর পিঠ থেকে কিভাবে জন্ম নিল সমাজবাদের ধারনা। তুলে ধরেছেন ‘দুর্বল খেয়ে সবল বাঁচে’ কিংবা ‘সবলকে নিপাত করে দুর্বল বাঁচে’ পারস্পরিক ধ্বংসকারী এই দ্বন্দ্বের বিশ্লেষণ।
প্রবীণ আলেম ও প্রবীণ পুস্তক বিক্রেতারা জানান, বাংলাদেশে ইসলামি পুস্তক প্রকাশনা গড়ে উঠেছিল পুরান ঢাকার চকবাজার শাহী মসজিদ মার্কেটকে ঘিরে। আর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে ছিল রহমানিয়া লাইব্রেরী, হামিদিয়া লাইব্রেরী এবং এমদাদিয়া লাইব্রেরী। এর মধ্যে রহমানিয়া লাইব্রেরীর বহুল প্রকাশিত বই ছিল নেয়ামুল কোরআন, মুকসেদুল মুমেনিন। এছাড়া সংস্থাটি প্রকাশ করতো নবী রাসুলসহ মুসলিম মনীষীদের জীবনী। এধরনের সহজ ও স্বাভাবিক আমল ভিত্তিক বইয়ের পাশাপাশি হামিদিয়া লাইব্রেরীর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা ছিল শায়খুলহাদীস মরহুম মাওলানা আজিজুল হকের বুখারি শরীফের অনুবাদ। আর এমদাদিয়া লাইব্রেরীর খ্যাতি ছিল ইমাম গাজ্জালির কিমিয়ায়ে সাহাদাত এর (সৌভাগ্যের পরশমনি) অনুবাদ নিয়ে। এছাড়া পাকিস্তান ভিত্তিক প্রকাশনা সংস্থা ‘তাজ কোম্পানির’ শাখাও ছিল ঢাকাতে। যাদের প্রকাশনায় ছিল মুলত কোরআন শরীফ, কাসাসুল আম্বিয়া (আম্বিয়াদের কিসসা কাহিনি), তাজকেরাতুল আউলিয়া (আউলিয়াদের জীবনী ও অলৌকিক ঘটনাভিত্তিক) ইত্যাদি। পাকিস্তানের মূল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ না থাকলেও ঢাকাতে এখনও তাজ লাইব্রেরী ও তাজ কোম্পানি নাম নিয়ে প্রকাশনা সংস্থা আছে। যাদের খ্যাতি ওজিফা ও দোয়া দুরূদের বই বই প্রকাশে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চকবাজারকেন্দ্রীক ইসলামি বইয়ের বাজার উঠে গেছে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম কেন্দ্রীক ইসলামি বইয়ের বাজারও ঝিমিয়ে পড়েছে। পাঠ্যবই, শিক্ষা সহায়ক বইসহ সৃজনশীল ও মননশীল বই বিক্রয়ের হাব হিসেবে পরিচিত বাংলাবাজার এখন ইসলামি বইয়েরও হাব। সেখানে ইসলামি প্রকাশনা সংস্থা ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি বহুতল মার্কেট গড়ে উঠেছে। যার নামও দেয়া হয়েছে ‘ইসলামী মার্কেট’। মার্কেটটির সভাপতি এবং ইসলামি বইয়ের আমদানিকারক মো. জালাল আহমেদ জানান, তাঁরও ব্যবসার সূচনা ছিল চকবাজারের শাহী মসজিদকেন্দ্রীক। যেখানে আরো দোকান ছিল গোটা পঞ্চাশেক। কিন্তু ২০০৮ সালের দিকে পুস্তক ব্যবসায়িরা চকবাজার ছাড়তে শুরু করেন। ২০১০ সালের মধ্যে সবাই বাংলাবাজারে স্থানান্তর হয়েছেন। তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাংলাবাজারে শুধু ইসলামি বইয়ের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শতাধিক। বই বিক্রেতা ও আমদানিকারকের সংখ্যা তারও দ্বিগুণ।
সম্প্রতি বাংলাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, আদি এমদাদিয়া লাইব্রেরী ভেঙ্গে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন এক সময় যে এমদাদিয়ার কর্মচারি ছিলেন তিনিও এমদাদিয়ার নাম নিয়ে প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। ফলে দেখা যাচ্ছে এমদাদিয়া পুস্তকালয়, এমদাদিয়া প্রকাশনী, এমদাদিয়া কুতুবখানাসহ নান নামের প্রতিষ্ঠান। এছাড়া নতুন প্রতিষ্ঠানে মধ্যে রয়েছে জাদীদ প্রকাশন, হুদহুদ প্রকাশন, মুস্তাখাব প্রকাশনী, আল-কাউসার প্রকাশনী, মাকতাবাতুল ইলম, মাকতাবাতুল আশরাফ, মাকতাবাতুল হেরা, মাকতাবাতুল আযহার ইত্যাদি। রাজধানীর মধ্যবাড্ডাকেন্দ্রীক মাকতাবাতুল আযহারের ১৫৩টি বইয়ের মধ্যে রয়েছে খেলাফত ও রাষ্ট্রনীতি: ইসলামী দৃষ্টিকোণ, ইসলামের রাজনৈতিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ, মুসলমানদের পতনে বিশ্বমানবতা কী হারালো, ডিজিটাল ছবি ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া সম্পর্কে ইসলামের বিধান, সাদ সাহেবের একটি বিতর্কিত তাফসির, ওয়াহাবী আন্দোলন ও উলামায়ে দেওবন্দ এবং আধুনিক লেনদেনের ইসলামী বিধান শিরোনামের নানা বই।
মাকতাবাতুল হেরার ১৪৬টি বইয়ের তালিকায় পাওয়া যাচ্ছে আরব বিশ্বে ইসলামি শাসনের পতন ও তার নেপথ্যকথা, সাংবাদিকতার শরয়ী নীতিমালা, ভোট ও নির্বাচনের শরয়ী বিধান, নাঙ্গা তলোয়ার, কোন পথে ইউরোপের ইসলাম, নাস্তিকতার স্বরূপ সন্ধানে, আমদানি-রপ্তানি: প্রচলিত রূপ ও শরয়ী রূপরেখা, বেচাকেনার জায়েয-নাজায়েয পদ্ধতিসহ নানা বই।
আর মাকতাবাতুল আশরাফের দুই শতাধিক বইয়ের মধ্যে ভিন্ন ধারার কয়েকটি হলো ইসলাম ও আধুনিকতা, খৃষ্টধর্মের স্বরূপ, খৃষ্টধর্ম না মৌলবাদ, শেয়ারবাজার, মাল্টিলেভেল মার্কেটিং, পারিবারিক কলহ ইত্যাদি।
এসব বইয়ের কোনোটি মৌলিক কোনোটি আবার অনুবাদ। আর অনুবাদ হয়ে বাংলাদেশে যাঁর বই সবচেয়ে বেশি ছাপা হচ্ছে তিনি হলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধান বিচারপতি মুফতী তক্বী উসমানী। রাষ্ট্র, অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবারসহ নানা জীবনঘনিষ্ঠ বই যেমন, ইসলাম আধুনিক অর্থনীতি ও ব্যবসানীতি, ইসলাম ও আধুনিক অর্থব্যবস্থা, মুসলিম পারিবারিক আইন ও ইসলাম, পারিবারিক কলহ, বিবাহ ও তালাক ইত্যাদি রয়েছে এই তালিকায়।
এছাড়া অনুবাদ হচ্ছে তক্কী উসমানীর ছেলে ড. মাওলানা ইমরান আশরাফ উসমানী, ভারতের মুফতি সাঈদ আহমাদ পালনপুরী, উর্দূ সাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাওলানা মুহাম্মাদ তাহের নাক্কাশ, সিরিয়ার শায়খ আলী তানতাবী, সৌদি আরবের ড. আয়েয আল করনী, মিশরের শায়খ মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবিসহ সমকালীন আরও অনেক লেখকের বই।
তবে রহমানিয়া, হামিদিয়া ও এমদাদিয়ার ধারা ভেঙ্গে তাত্বিক ও দর্শনভিত্তিক ইসলামী প্রকাশনায় যিনি পাইওনিয়ার ছিলেন তিনি হলেন বহুল পঠিত ও প্রচারিত ইসলামিক সাময়িকী মাসিক মদিনার সাবেক সম্পাদক মরহুম মাওলানা মুহিউদ্দিন খান।
তাঁর প্রতিষ্ঠিত মদিনা পাবলিকেশন্সের ভূমিকা তুলে ধরতে গিয়ে আরেক ইসলামি সাময়িকী মাসিক পাথেয়র সম্পাদক মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, ‘আমাদের ছাত্রজীবনে বাংলায় ইসলামি লেখা ছিলই না বলা যায়। মাওলানা আকরাম খাঁন এবং কবি গোলাম মোস্তফার কিছু লেখা পড়েছি। আর ছিল কবি কাজী নজরুল ইসলামের ইসলামি গান। তবে বাংলায় ইসলামি লেখা প্রসারে মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের ভূমিকা অপরিসীম। তিনিই প্রথম মদিনা পাবলিকেশন্সের ব্যানারে নানা আঙ্গিকের ইসলামি বই অনুবাদ ও প্রকাশ করতে শুরু করলেন। তাঁর সম্পাদিত মাসিক মদিনাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
বর্তমানে মদিনা পাবলিকেশন্সের প্রকাশনা প্রায় তিন শতাধিক। মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের ছেলে মোস্তফা মঈন উদ্দিন খান যাঁর দায়িত্বে চলছে মদিনা পাবলিকেশন্স। তিনি বলেন, ইসলামি লেখক-গবেষক যাঁরাই বাবার কাছে আসতেন তাঁদেরকে তিনি বলতেন- বাংলাদেশের বাস্তবতায় লিখবেন কিন্তু প্রকাশক পাবেন না। তাই নিজের লেখা নিজেকেই প্রকাশ করতে হবে এই প্রস্তুতি হাতে রাখতে হবে। মূলত বাবা সেই কাজটিই করেছেন। নিজে লিখেছেন, অনুবাদ করেছেন আবার নিজেই প্রকাশ করেছেন।
মোস্তফা মঈন উদ্দিন খান জানান, বাংলাবাজারকেন্দ্রীক ‘ইসলামী মার্কেট’ প্রতিষ্ঠায়ও মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের অবদান ছিল।
ইরানী বিপ্লব ও তুরস্কের এরদোগান প্রসঙ্গ
চল্লিশ বছর আগে ১৯৭৯ সালে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্ব ইরানে যে বিপ্লব সংঘঠিত হয় তার ঢেউ এসে বাংলাদেশেও লাগতে শুরু করেছিল। ইরানের ওই বিপ্লবকে বলা হচ্ছিল ‘ইসলামি বিপ্লব’। কিন্তু মাওলানা মুহিউদ্দিন খান বললেন, ‘নির্ভেজাল শিয়া বিপ্লব’। এছাড়া অনুবাদ করে প্রকাশ করলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা মুহাম্মদ মনযুর নোমানীর বই ‘ইরানী ইনকিলাব: ইমাম খোমেনী ও শিয়া মতবাদ’।
সাম্প্রতিক সময়ে আবার ইসলামি প্রকাশ ও প্রকাশনায় গুরুত্ব পাচ্ছে তুরস্ক ও এরদোগান প্রসঙ্গ। প্রকাশনা সংস্থা গার্ডিয়ানের তালিকায় রয়েছে ‘আতাতুর্ক থেকে এরদোয়ান: বদলে যাওয়া তুরস্কের ১০০ বছর’, ‘এরদোয়ান: দ্যা চেঞ্জমেকার’, ‘আমার দেখা তুরস্ক: বিশ্বব্যবস্থায় নতুন শক্তি তূর্কি জাতির ভেতর-বাহির’। এছাড়া বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্সের তালিকায়ও রয়েছে ‘ঢাকা ইস্তাম্বুল আঙ্কারা’ শিরোনামের আরেকটি বই। যেখানে লেখক আতাতুর্ক থেকে এরদোগান পর্যন্ত রাজনৈতি পটপরিবর্তনের নানা দিক তুলে ধরেছেন।
ফলে ফজিলত নির্ভর প্রকাশনায় নয়, গবেষণা ভিত্তিক প্রকাশনার মাধ্যমে বাংলা ভাষায় তুলে ধরার চেষ্টা চলছে ইসলামের সৌন্দর্য।
No comments