সাঙ্গু নদীতে ভাসলো বিজুর ফুল! by নুরুল কবির
বান্দরবানে শুরু হলো চাকমা ও
তঞ্চঙ্গ্যাদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ফুল বিজু। বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবানের
সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা
সমপ্রদায়ের বর্ষবরণ বিজু ও বিষু শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে ভোর থেকে
তরুণ-তরুণীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নানা সাজে সেজে ফুল বিজুতে অংশ
নেয়। এ সময় তারা নানা রকমের ফুল নদীর জলে ভাসিয়ে দেয়। এদিকে পাড়ায় পাড়ায়
চলছে পিঠা-পুলি তৈরির আয়োজন ও নানা রকমের সবজি দিয়ে পাচন রান্নার কাজ।
চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের ফুল বিজু শুক্রবার মূল বিজু ও শনিবার গইজ্জা পইজ্জা।
তিনদিন তারা বর্ষবরণ উৎসব পালন করে।
স্থানীয় হিমেল চাকমা বলেন, প্রতিবছরই বর্ষবরণে চাকমারা নানা আয়োজন করে থাকে। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ঘুরে পাচন খাওয়া, পিঠা তৈরিসহ নানা আয়োজনে তারা সবাই অংশগ্রহণ করে। এদিকে তঞ্চঙ্গ্যা সমপ্রদায় বর্ষবরণে বালাঘাটায় ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলায় মেতে উঠেছে। তরুণ-তরুণীরা দল বেঁধে এই খেলা খেলছে। ঘিলা পাহাড়ি একটি গাছের ফল। এটিকে তারা পবিত্র মনে করে। তাই নতুন বছরের শুরুতে বর্ষবরণে তঞ্চঙ্গ্যারা পাহাড়ে পাহাড়ে ঘিলা খেলার আয়োজন করে। এবার শহরের বালাঘাটা বিলকিস বেগম স্কুল মাঠে বড় আকারে ঘিলা খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তঞ্চঙ্গ্যারা।এদিকে, সাংগ্রাই কমিটি সাধারণ সম্পাদক কো কো চিং জানান, মারমাদের বর্ষবরণ সাংগ্রাইয়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার সকাল শোভযাত্রার মাধ্যমে সাংগ্রাই উৎসব শুরু হবে বান্দরবানে। শনিবার সাঙ্গু নদীর তীরে চন্দনের পানিতে বৌদ্ধমূর্তিকে স্নান করানো হবে।
রোববার শহরের রাজার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সাংগ্রাইয়ের মৈত্রী পানি বর্ষণ বা জলকেলি উৎসব। মারমা তরুণ-তরুণীরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে বরণ করে নেবে নতুন বছরকে। স্বচ্ছ পানির ধারা ধুয়ে মুছে দিবে পুরনো বছরের যত দুঃখ গ্লানি। এছাড়া পাড়ায় পাড়ায় পিঠা তৈরির আয়োজনও থাকছে সাংগ্রাই উৎসবে। শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে ত্রিপুরা সমপ্রদায়ের বৈসু উৎসব। তারা নেচে-গেয়ে বৈসু পালন করে থাকে।
No comments