রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচার দাবি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে
রোহিঙ্গাদের
ওপর নির্যাতনকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তা তদন্তের
অধিকার চাইছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা। এ
জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যেভাবে মিয়ানমার থেকে
কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে তা মানবতার
বিরুদ্ধে অপরাধের পর্যায়ে। এ বিষয়ে বিচারিক সিদ্ধান্ত বা জুরিকডিকশন চাওয়া
হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি আদালত হ্যাঁ-সূচক সিদ্ধান্ত দেন তাহলে তাতে কয়েক লাখ
রোহিঙ্গা নির্যাতনের তদন্তের পথ উন্মুক্ত হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে
উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য গার্ডিয়ান। এতে বলা হয়েছে,
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এমন অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন প্রসিকিউটর ফাতু
বেনসুদা। তার এ আবেদনের বিষয়টি প্রকাশিত হয় সোমবার। এতে তিনি বলেছেন, এটা
কোনো বিমূর্ত প্রশ্ন নয়। এটা সুদৃঢ় একটি প্রশ্ন। আদালত কি বিচারিক
কার্যক্রমের জন্য তদন্ত করতে অনুমতি দেবেন কিনা এবং প্রয়োজনে বিচার করবেন
কিনা সে চর্চা আদালতকেই করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে জুরিকডিকশন নিয়ে প্রধান যে
সংশয় তা হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একটি সদস্য হলো বাংলাদেশ। মিয়ানমার
নয়। ফাতু বেনসুদা তার যুক্তিতে বলেন, যেভাবে অপরাধজনকভাবে (রোহিঙ্গাদের)
বের করে দেয়া হয়েছে তাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যদি জুরিকডিকশনের পক্ষে
রুলিং দেন তাহলে তাতে আইনের মূলনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে ফাতু
বেনসুদা স্বীকার করেন দেশছাড়া করার অপরাধের সংজ্ঞা এবং আদালতের বিচারিক
সীমাবদ্ধতা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারে গত ২৫শে আগস্ট থেকে
যেভাবে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস নির্যাতন হয়েছে তাতে সারাবিশ্বের বিবেকবোধ
সম্পন্ন মানুষ স্তম্ভিত। এর নিন্দা উঠেছে বিশ্ব দরবারে। কেড়ে নেয়া হয়েছে
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচিকে দেয়া সম্মাননা। অনেক দিন ধরেই শোনা
যাচ্ছিল এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের কথা। তবে সেক্ষেত্রে
প্রথম এমন আবেদন নিয়ে অগ্রসর হলেন ফাতু বেনসুদা। আদালতে তার ও এ বিষয়ে
অন্যদের যুক্তিকে বিবেচনা করা যায় কিনা সে বিষয়ে একটি শুনানির জন্য আবেদন
করেছেন তিনি। আবেদনটি গ্রহণ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট কঙ্গোর
বিচারক অ্যান্টনিও কেসিয়া-মবি মিন্ডুয়া সিদ্ধান্ত নেবেন এ আবেদন কি করা
যায়।
No comments