হাত হারানো রাজীব লাইফ সাপোর্টে
লাইফ
সাপোর্টে দুই বাসের রেষারেষিতে ডান হাত হারানো রাজীব হোসেন। রাজীবের
যেকোনো পরিস্থিতির জন্য পরিবারের সদস্যদের প্রস্তুত থাকতে বলেছেন কর্তব্যরত
চিকিৎসকরা। সোমবার ভোররাত থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
রাজিবের অবস্থার অবনতির খবর শুনে মঙ্গলবার বিকাল তাকে হাসপাতালে দেখতে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন।
ভিসি ডা. কনক কান্তি বলেন, ‘রাজিবের মাথায় যেখানে আঘাত ছিল সেখানে ফুলে গেছে। পুনরায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। এখন আর তার অপারেশন করার কোনো অবস্থা নেই।
অর্থোপেডিকস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান শাহীন জানিয়েছেন, মাথায় আঘাতের কারণে নিউরোলজিক্যাল অবস্থার অবনতি হওয়ায় ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার রাজিবকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। গতকাল সে নিজে উঠে বসে কথা বলেছে। আমি ওকে বলেছি, তুমি ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করো। আমাদের সহযোগিতা করো। আমরা তোমার কৃত্রিম হাত বানিয়ে দেয়ার কাজ ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছি।
শামসুজ্জামান বলেন, গতকালও রাজিবের সিটিস্ক্যান রিপোর্ট ভালো ছিল। ভোররাত চারটার দিকে রাজিবের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাকে প্রথমে অক্সিজেন দেয়া হয়। পরে নেবুলাইজেশন করার ফলে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে থাকেন। তখন সাপোর্ট তুলে নেয়া হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাজিবের শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। এছাড়া রাজিবের সর্বশেষ সিটিস্ক্যান রিপোর্ট খুবই উদ্বেগজনক। কোনো ব্যক্তির গ্লাসগো কমা স্কেল (জিসিএস) ১৪ থেকে ১৫ হলে তার মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করে বলে ধরে নেয়া হয়। তবে ৮ থেকে ৯ হলে বুঝতে হবে রোগীর অবস্থা সংকটজনক। এদিকে রাজিবের জিসিএস লেভেল এখন মাত্র ৩। যেটা খুবই খারাপ খবর।
ডা. শামসুজ্জামান শাহীন বলেন, অলৌকিকভাবে রাজিবের অবস্থার অবনতি হয়েছে। এখন তার ব্রেইনের কার্যকরি ক্ষমতা সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে এসেছে। এটাকে সারডেন নিউরোলজিক্যাল অ্যাসাল্ট বলা যেতে পারে। আমরা রাজিবের শরীরের ধীরগতিতে উন্নতি নিয়ে খুবই আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে তার শরীরের এই অবনতিতে আমরা সকল ডাক্তাররাই হতাশ হয়ে পড়েছি। এত দ্রুত তার ব্রেইন ফল্ট করার কথা ছিল না। তিনি বলেন, রাজিবের উন্নত চিকিৎসায় যে ৭ সদস্যর টিম গঠন করা হয়েছিল, তাদের নিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে মঙ্গলবার সকালে আমরা একটি বৈঠক করেছি। আমরা সকলেই তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন।
রাজিবের মামা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার রাত নয়টার দিকে রাজিব বলেছিল, আমাকে বাড়ি নিয়ে যাও, আমি বাড়ি যাব।
এদিকে রাজিবের মেজো খালা খাদিজা বেগম লিপি জানান, সোমবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে ছোট খালা হ্যাপি রাজিবের শরীর মোছাতে গিয়ে দেখে তার বুক আর পেট ছাড়া কিছু্ই নড়ছে না। এসময় রাজিবের শ্বাসকষ্ট শুরু হতে থাকে এবং মুখ দিয়ে সাদা ফেনা জাতীয় বের হয়। অন্যান্য সময় রাজিবের শরীর মোছাতে গেলে সে রেগে যায়, এমনকি বিরক্ত প্রকাশ করলেও তখন সে অনেকটা নিথর হয়ে পড়ে ছিল। হ্যাপি আমাদের জানালেও ডাক্তার তখন আমাদের তেমন কিছু বুঝতে দেননি। পরবর্তীকালে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে অবস্থার অবনতি হতে থাকলে সাড়ে ৮টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। রাজিবকে লাইফ সাপোর্টে নেয়ার পরপরই তার বড় খালা জাহানারা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় হাসপাতাল কক্ষের সামনে তার তিন খালা, দুই মামা, চাচা ও ছোট ভাইকে দেখা যায়।
রাজিবের ছোট ভাই মেহেদী জানায়, ভাইয়া সোমবার রাতে একটু জুস খেয়েছিল। এরপর রাত ৮টার দিকে বড় খালার সঙ্গে একটু আধটু কথাও বলেছিল। পরবর্তীকালে মেজো খালা সকলকে ডেকে জানতে চায় যে তাদের চিনতে পারছে কি না, জবাবে রাজিব ছোট খালাকে মেজো খালা ও মেজো খালাকে ছোট খালা বলে জানায়।
উল্লেখ্য, ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারানোর পর ছোট দুই ভাইকে নিয়ে বড় খালা জাহানারা বেগমের কাছে বড় হয়েছেন রাজিব। ছোট দুই ভাই যাত্রাবাড়ী তামিরুল মিল্লাত এতিমখানা মাদরাসায় বিনা খরচে পড়াশোনা করছে। রাজিব তিতুমীর কলেজে পড়ালেখার পাশাপাশি একটি কম্পিউটারের দোকানে কম্পোজের কাজ করে নিজের মেসভাড়া ও ভাইদের অর্থসহায়তা করতেন। গত ৩রা এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন তিতুমীর কলেজের স্নাতকের (বাণিজ্য) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাজিব হোসেন। ওই সময় পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে গা ঘেঁষে ওভারটেক করতে গেলে রাজিবের ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তীকালে রাজিবকে শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করার পর অবস্থার অবনতি হলে ঢামেকের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এরপর ঢামেকে গিয়ে রাজিব হোসেনের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ সরকার বহন করার ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এছাড়া সুস্থ হলে তাকে সরকারি চাকরি দেয়ার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
রাজিবের অবস্থার অবনতির খবর শুনে মঙ্গলবার বিকাল তাকে হাসপাতালে দেখতে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন।
ভিসি ডা. কনক কান্তি বলেন, ‘রাজিবের মাথায় যেখানে আঘাত ছিল সেখানে ফুলে গেছে। পুনরায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। এখন আর তার অপারেশন করার কোনো অবস্থা নেই।
অর্থোপেডিকস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান শাহীন জানিয়েছেন, মাথায় আঘাতের কারণে নিউরোলজিক্যাল অবস্থার অবনতি হওয়ায় ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার রাজিবকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। গতকাল সে নিজে উঠে বসে কথা বলেছে। আমি ওকে বলেছি, তুমি ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করো। আমাদের সহযোগিতা করো। আমরা তোমার কৃত্রিম হাত বানিয়ে দেয়ার কাজ ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছি।
শামসুজ্জামান বলেন, গতকালও রাজিবের সিটিস্ক্যান রিপোর্ট ভালো ছিল। ভোররাত চারটার দিকে রাজিবের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাকে প্রথমে অক্সিজেন দেয়া হয়। পরে নেবুলাইজেশন করার ফলে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে থাকেন। তখন সাপোর্ট তুলে নেয়া হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাজিবের শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। এছাড়া রাজিবের সর্বশেষ সিটিস্ক্যান রিপোর্ট খুবই উদ্বেগজনক। কোনো ব্যক্তির গ্লাসগো কমা স্কেল (জিসিএস) ১৪ থেকে ১৫ হলে তার মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করে বলে ধরে নেয়া হয়। তবে ৮ থেকে ৯ হলে বুঝতে হবে রোগীর অবস্থা সংকটজনক। এদিকে রাজিবের জিসিএস লেভেল এখন মাত্র ৩। যেটা খুবই খারাপ খবর।
ডা. শামসুজ্জামান শাহীন বলেন, অলৌকিকভাবে রাজিবের অবস্থার অবনতি হয়েছে। এখন তার ব্রেইনের কার্যকরি ক্ষমতা সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে এসেছে। এটাকে সারডেন নিউরোলজিক্যাল অ্যাসাল্ট বলা যেতে পারে। আমরা রাজিবের শরীরের ধীরগতিতে উন্নতি নিয়ে খুবই আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে তার শরীরের এই অবনতিতে আমরা সকল ডাক্তাররাই হতাশ হয়ে পড়েছি। এত দ্রুত তার ব্রেইন ফল্ট করার কথা ছিল না। তিনি বলেন, রাজিবের উন্নত চিকিৎসায় যে ৭ সদস্যর টিম গঠন করা হয়েছিল, তাদের নিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে মঙ্গলবার সকালে আমরা একটি বৈঠক করেছি। আমরা সকলেই তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন।
রাজিবের মামা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার রাত নয়টার দিকে রাজিব বলেছিল, আমাকে বাড়ি নিয়ে যাও, আমি বাড়ি যাব।
এদিকে রাজিবের মেজো খালা খাদিজা বেগম লিপি জানান, সোমবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে ছোট খালা হ্যাপি রাজিবের শরীর মোছাতে গিয়ে দেখে তার বুক আর পেট ছাড়া কিছু্ই নড়ছে না। এসময় রাজিবের শ্বাসকষ্ট শুরু হতে থাকে এবং মুখ দিয়ে সাদা ফেনা জাতীয় বের হয়। অন্যান্য সময় রাজিবের শরীর মোছাতে গেলে সে রেগে যায়, এমনকি বিরক্ত প্রকাশ করলেও তখন সে অনেকটা নিথর হয়ে পড়ে ছিল। হ্যাপি আমাদের জানালেও ডাক্তার তখন আমাদের তেমন কিছু বুঝতে দেননি। পরবর্তীকালে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে অবস্থার অবনতি হতে থাকলে সাড়ে ৮টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। রাজিবকে লাইফ সাপোর্টে নেয়ার পরপরই তার বড় খালা জাহানারা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় হাসপাতাল কক্ষের সামনে তার তিন খালা, দুই মামা, চাচা ও ছোট ভাইকে দেখা যায়।
রাজিবের ছোট ভাই মেহেদী জানায়, ভাইয়া সোমবার রাতে একটু জুস খেয়েছিল। এরপর রাত ৮টার দিকে বড় খালার সঙ্গে একটু আধটু কথাও বলেছিল। পরবর্তীকালে মেজো খালা সকলকে ডেকে জানতে চায় যে তাদের চিনতে পারছে কি না, জবাবে রাজিব ছোট খালাকে মেজো খালা ও মেজো খালাকে ছোট খালা বলে জানায়।
উল্লেখ্য, ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারানোর পর ছোট দুই ভাইকে নিয়ে বড় খালা জাহানারা বেগমের কাছে বড় হয়েছেন রাজিব। ছোট দুই ভাই যাত্রাবাড়ী তামিরুল মিল্লাত এতিমখানা মাদরাসায় বিনা খরচে পড়াশোনা করছে। রাজিব তিতুমীর কলেজে পড়ালেখার পাশাপাশি একটি কম্পিউটারের দোকানে কম্পোজের কাজ করে নিজের মেসভাড়া ও ভাইদের অর্থসহায়তা করতেন। গত ৩রা এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন তিতুমীর কলেজের স্নাতকের (বাণিজ্য) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাজিব হোসেন। ওই সময় পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে গা ঘেঁষে ওভারটেক করতে গেলে রাজিবের ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তীকালে রাজিবকে শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করার পর অবস্থার অবনতি হলে ঢামেকের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এরপর ঢামেকে গিয়ে রাজিব হোসেনের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ সরকার বহন করার ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এছাড়া সুস্থ হলে তাকে সরকারি চাকরি দেয়ার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
No comments