দেশে নতুন মোবাইল অপারেটর আসছে!
২০১৩
সাল থেকেই দেশে নতুন মোবাইল ফোন অপারেটর আসার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। ওই
বছর ৮ সেপ্টেম্বর থ্রিজি নিলামে নতুন অপারেটর আসার সুযোগ রাখা হলেও শেষ
পর্যন্ত কেউ আসেনি। এর পর ২০১৭ সালে রবি-এয়ারটেল দুই মোবাইল অপারেটর একীভূত
হওয়া এবং আরেক অপারেটর সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে নতুন
অপারেটর আসার বিষয়টি আরও বেশি আলোচনায় আসে। এ ছাড়া আগামী মার্চ মাসে
অনুষ্ঠিতব্য ফোরজি নিলাম প্রক্রিয়ায় নতুন অপারেটর আসার বিষয়ে এখনও আশাবাদী
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ফোরজির জন্য অনুমোদিত
গাইডলাইনে নতুন অপারেটর আসার সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এখনও সেখানে কেউ সাড়া
দেয়নি। রোববার বিটিআরসির প্রধান কার্যালয়ে ফোরজি নিলাম প্রক্রিয়া সম্পর্কে
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী শাহজাহান মাহমুদ বলেন,
শুরুতে ফোরজির জন্য দুই দেশের দুটি অপারেটর আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু
পরে এখন পর্যন্ত কাউকে আর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, বর্তমানে টেলিযোগাযোগ
বাজার একটি পর্যায়ে চলে গেছে। নতুন কেউ এলে হয়তো তেমন একটা সুবিধা করতে
পারবে না। এর পরও নতুন কারও জন্য দরজা বন্ধ করতে চায় না কমিশন। তিনি জানান,
মার্চের মধ্যেই ফোরজি সেবা চালু হবে। রোববার ছিল লাইসেন্সের জন্য আবেদনের
শেষ দিন। এদিন বন্ধ অপারেটর সিটিসেলসহ সেবায় থাকা চার অপারেটর টেলিটক,
গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক নতুন প্রজন্মের এ সেবা দিতে আবেদন করে।
তবে
নতুন অপারেটর আসার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের
শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বাংলাদেশে রেগুলেটর,
বিনিয়োগ ও ট্যাক্স ইস্যু খুব বেশি সুবিধাজনক নয়। ফলে এ দেশে নতুন মোবাইল
ফোন অপারেটর আসা সম্ভবপর হয়ে উঠবে বলে মনে হয় না। তবে নতুন অপারেটর এলে
অবশ্যই ওয়েলকাম জানাব।’ এর আগে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ফোরজি মোবাইল ফোন
সেবার লাইসেন্স এবং তরঙ্গ নিলামের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া
আদেশ স্থগিত করেন। ফলে ফোরজি লাইসেন্স আহ্বান করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ
নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) বিজ্ঞপ্তির সব বাধা কেটে যায়। এদিন আদালতে
বিটিআরসির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। মামলার বাদী
বাংলা লায়ন কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন
উদ্দিন মাহমুদ। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন
পাওয়ার পর টেলিযোগাযোগের ফোরজি সেবার লাইসেন্স ও তরঙ্গ নিলামের নীতিমালা ২৯
নভেম্বর হাতে পায় টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এর পর ৪ ডিসেম্বর বিটিআরসি ফোরজি
লাইসেন্সের আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে তরঙ্গ নিলামের জন্য ১৩
ফেব্রুয়ারি দিন রেখে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে আগ্রহীদের ফোরজি সেবার লাইসেন্সের
আবেদন জমা দিতে বলা হয়। অনুমোদিত নীতিমালায় বলা হয়, ফোরজির আবেদন করে
নির্দিষ্ট অর্থ জমা দিয়ে লাইসেন্স নেয়া যাবে। অপারেটরদের আবেদন ফি হিসেবে
পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। লাইসেন্স পেতে দিতে হবে ১০ কোটি টাকা। আর বার্ষিক
নবায়ন ফি হবে ৫ কোটি টাকা। এ লাইসেন্স নিতে অপারেটরদের ১৫০ কোটি টাকা
ব্যাংক গ্যারান্টিও দিতে হবে।
No comments