নিষিদ্ধ আদম ও শয়তানের বিপদ! by শায়ের খান
হনহনিয়ে হেঁটে যাচ্ছি কাফি ভাই আর আমি।
মেম আন্টির বিরাশি সিক্কার ধমক খেয়ে পাশের সুপার শপটায় হাঁটা দিয়েছি দু’জন।
দোষটা আমার না, মেইনলি কাফি ভাইয়ের। ৫ কেজি চিনিগুঁড়া চাল আনতে বলেছিলেন।
কাফি ভাই নিয়ে এসেছেন ৫ কেজি চিনি। চিনি ফেরত দিয়ে চিনিগুঁড়া আনতে যাচ্ছি।
পথে দেখা পাড়ার চটপটে ছেলে আবদালের সঙ্গে। আমাদের আবদাল মিশুক, রসিক ও
ধার্মিক গোছের। পথ আগলে দাঁড়ায়। হেসে বলে, ‘আস্সালামু আলাইকুম। কোথায়
যাইতেছেন রাগ রাগ হয়ে?’ দু’জনে দাঁড়াই। গ্রিল্্ড চিকেনের মতো মুখ করে
বলেন কাফি ভাই, ‘আচ্ছা আবদাল, তোমাকে পেয়ে ভালোই হলো। তুমি আমাকে বলতে
পারো, পিতা আদম কেন গন্দম খেতে গিয়েছিলেন? না খেলে হয়তো এখন পৃথিবীতে এসে
আমাদের চিনি আর চিনিগুঁড়া নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হতো না।’ হেসে দেয় আবদাল।
বলেন, ‘বসেন। সব উপরওয়ালার খেলা। গরুর দুধের চা খান। খুব টেস্ট। ঠা-া হবেন।
অ-ই। ৩ টা ভাল করে চা দাও।’ নিজের পছন্দের সাবজেক্ট পেয়েই হয়তো আমাদের
বসায় ও। বলে, ‘আদম-হাওয়া ইচ্ছা করে গন্দম খান নাই, শয়তানটা চালাকি করে
খাওয়ায় দিয়েছে। মহা ধুরন্ধর এই শয়তান। আমরা বলি শয়তানের হাড্ডি। আসলে ওর
কোন হাড্ডি-মাংসই নাই।’ নড়েচড়ে বসি। শয়তান সম্পর্কে আমার আগ্রহ ছোটকাল
থেকে। বলি, ‘এই শয়তানটা নাকি আগে ভাল ছিল? পরে শয়তান হয়েছে?’ ‘শুধু ভাল?’
বলে আবেগতাড়িত আবদাল। ‘এত ভাল ছিল যে আল্লাহপাক তাকে ফেরেশতাদের লিডার
বানিয়ে দিয়েছিলেন। আসমান-জমিনে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে সে আল্লাহকে সেজদা
করে নাই।’
‘তো? সে শয়তান হয়ে গেল কিভাবে?’ বলি আমি।
‘অহঙ্কার’, বলে আবদাল। ‘আল্লাহ পাকের দেয়া সম্মান রাখতে পারে নাই। বেয়াদবি করে বসলো। আল্লাহর আদেশ অমান্য করলো।’
‘কেমন?’ চায়ে চুমুক দিয়ে বলেন কাফি ভাই। ইতিমধ্যে চমৎকার টেস্টি গরুর দুধের চা চলে এসেছে। উৎসাহিত হয় আবদাল। বলে, ‘আল্লাহ পাক সকল ফেরেশতাদের বললেন আদমকে সেজদা করতে। সবাই করলো। সে করলো না। বললো, সে নাকি ফেরেশতাদের সর্দার, মাটির মানুষকে সেজদা করবে না!’
‘কত বড় বেয়াদব’, চায়ের কাপ হাতে বলেন কাফি ভাই। ‘তারপর?’
‘তারপর আর কি? আল্লাহ সাথে সাথে তার কাছ থেকে ফেরেশতাদের লিডারশিপ কেড়ে নিলেন। দিলেন বেহেশত থেকে বের করে শয়তানটাকে।’
‘রিয়েলি?‘ খুশি খুশি হয়ে বলি আমি।
‘জ্বি রিয়েলি’, বলে আবদাল। ‘তবে এরপরও বেয়াদ্দপটা যায় নাই। খোদার সাথে দেন-দরবার করেছে।’
আমি: কি রকম?
আবদাল: বলেছে, সে যে এতদিন খোদার ইবাদত বন্দেগী করেছিল তার পুরস্কার চায়। খোদা মহা দয়ালু। শয়তানটা যা যা চাইলো তাই মঞ্জুর করলেন তার ভাল কাজের পুরস্কার হিসেবে।
আমি: যেমন? দু’ তিনটা বলো তো?
আবদাল: যেমন, সে মানুষের প্রত্যেকটা রক্তের কণায় কণায় চলতে চেয়েছে। পারমিশন পেয়েছে। সে কেয়ামত পর্যন্ত বাঁচার পারমিশন নিয়েছে। সে যে কোন কিছুর রূপ ধরতে পারারও পারমিশন নিয়েছে। আর সব পারমিশন নেয়ার পর পিতা আদম আর তার বংশ মানে আমাদেরকে দেইখা নেয়ার হুমকি-ধামকি দিয়েছে।
কাফি ভাই: হোয়াট? এত্তো বড় সাহস? সামনে পেলে তুলে এক আছাড় মারতাম।
আবদাল: সামনে নাই বললো কে আপনাকে? হয়তো দেখেন আপনার বকাঝকা শুইনা আপনার কোলে বইসাই হাসতেছে। শয়তানের হাসি। ধুরন্ধর বদমাইশ।
চমকে উঠে অবচেতনভাবেই নিজ কোলের দিকে তাকান কাফি ভাই। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে আবদাল।
আবদাল: প্রতিশোধ নিয়েছিল ইবলিশের বাচ্চাটা। ভুলিয়ে ভালিয়ে আদম-হাওয়াকে নিষিদ্ধ গন্দম খাইয়ে দিয়েছিল। আর আল্লাহ পাক তেনাদেরও বেহেশত থেকে পৃথিবীতে পাঠায় দেন। সেই থেকে আমাদের সাথে শয়তানটার এই দুনিয়ায় লাগাতার ফাইট চলতেছে।
আমি: কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, ওকে তো দেখা যায় না। মাঝে মাঝে ভিন্ন ভিন্ন রূপে উঁকি মারে শয়তানের হাড্ডিটা।
আবদাল: দেখা যাওয়ার প্রয়োজন কি? আমরা নিজেরা ভাল থাকলে সে দৌড়ায় পালাবে। তবে একটা মজার জিনিস কি জানেন? আমি জিনিসটা চিন্তা করেছি।
কাফি ভাই: কি?
আবদাল: আল্লাহ মাইর দুনিয়ার বাইর। শয়তানটা নিজের অজান্তেই এমন গ্যাঁড়াকলে পড়েছে যে, সে নিজেও জানে না।
আমি: কি রকম?
আবদাল: এই যে দুনিয়ায় আইসা আমরা আল্লাহর কত নেয়ামত উপভোগ করতেছি, সে করতেছে না। এই যে সুন্দর খাঁটি গরুর দুধের চা খেলাম, সে খাইতে পারে নাই। আমরা রাতে শান্তির ঘুম দেই, সে ঘুমায় না। কেয়ামত পর্যন্ত সে দৌড়ানির উপর থাকবে। খাওয়া নাই, নাওয়া নাই, ঘুম নাই। কাজ একটাই- শয়তানি।
কাফি ভাই: এর শেষ কবে?
আবদাল: কেয়ামতের দিন। সেইদিন শয়তানটা শয়তানি করতে করতে ভুলেই যাবে যে তার শেষ দিন চলে এসেছে। আজরাইল সামনে এসে দাঁড়ানোর সাথে সাথে দিবে সে দৌড়। গ্রহ-নক্ষত্র সব জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করেও কোন লাভ হবে না- আজরাইল তাকে থাবা মেরে ধরবে। আসমান-জমিন ফাটাইয়া দিবে সে এক মরণ চিৎকার! কিন্তু লাভ হবে না।
কাফি ভাই: আ-হ্! সেদিনের অপেক্ষায় রইলাম। শয়তানের বাচ্চাটা আবার আমার ঘাড়ের উপর এখন বসে আছে কিনা কে জানে? চল্ কল্লোল।
দাঁড়িয়ে ৫ কেজি চিনি হাতে হাঁটা দেই দু’জন।
আবদাল চিৎকার করে বলে।
আবদাল: খালাম্মাকে বইলেন চিনিগুঁড়া দিয়ে পোলাও রাঁন্ধেন আর পায়েশই রাঁন্ধেন- আমাকে যেন এক বাটি পাঠায় দেন।
এর মধ্যে কাফি ভাই কখন যেন ‘চিনি-চিনিগুঁড়া’ কাহিনী বলে দিয়েছেন।
‘তো? সে শয়তান হয়ে গেল কিভাবে?’ বলি আমি।
‘অহঙ্কার’, বলে আবদাল। ‘আল্লাহ পাকের দেয়া সম্মান রাখতে পারে নাই। বেয়াদবি করে বসলো। আল্লাহর আদেশ অমান্য করলো।’
‘কেমন?’ চায়ে চুমুক দিয়ে বলেন কাফি ভাই। ইতিমধ্যে চমৎকার টেস্টি গরুর দুধের চা চলে এসেছে। উৎসাহিত হয় আবদাল। বলে, ‘আল্লাহ পাক সকল ফেরেশতাদের বললেন আদমকে সেজদা করতে। সবাই করলো। সে করলো না। বললো, সে নাকি ফেরেশতাদের সর্দার, মাটির মানুষকে সেজদা করবে না!’
‘কত বড় বেয়াদব’, চায়ের কাপ হাতে বলেন কাফি ভাই। ‘তারপর?’
‘তারপর আর কি? আল্লাহ সাথে সাথে তার কাছ থেকে ফেরেশতাদের লিডারশিপ কেড়ে নিলেন। দিলেন বেহেশত থেকে বের করে শয়তানটাকে।’
‘রিয়েলি?‘ খুশি খুশি হয়ে বলি আমি।
‘জ্বি রিয়েলি’, বলে আবদাল। ‘তবে এরপরও বেয়াদ্দপটা যায় নাই। খোদার সাথে দেন-দরবার করেছে।’
আমি: কি রকম?
আবদাল: বলেছে, সে যে এতদিন খোদার ইবাদত বন্দেগী করেছিল তার পুরস্কার চায়। খোদা মহা দয়ালু। শয়তানটা যা যা চাইলো তাই মঞ্জুর করলেন তার ভাল কাজের পুরস্কার হিসেবে।
আমি: যেমন? দু’ তিনটা বলো তো?
আবদাল: যেমন, সে মানুষের প্রত্যেকটা রক্তের কণায় কণায় চলতে চেয়েছে। পারমিশন পেয়েছে। সে কেয়ামত পর্যন্ত বাঁচার পারমিশন নিয়েছে। সে যে কোন কিছুর রূপ ধরতে পারারও পারমিশন নিয়েছে। আর সব পারমিশন নেয়ার পর পিতা আদম আর তার বংশ মানে আমাদেরকে দেইখা নেয়ার হুমকি-ধামকি দিয়েছে।
কাফি ভাই: হোয়াট? এত্তো বড় সাহস? সামনে পেলে তুলে এক আছাড় মারতাম।
আবদাল: সামনে নাই বললো কে আপনাকে? হয়তো দেখেন আপনার বকাঝকা শুইনা আপনার কোলে বইসাই হাসতেছে। শয়তানের হাসি। ধুরন্ধর বদমাইশ।
চমকে উঠে অবচেতনভাবেই নিজ কোলের দিকে তাকান কাফি ভাই। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে আবদাল।
আবদাল: প্রতিশোধ নিয়েছিল ইবলিশের বাচ্চাটা। ভুলিয়ে ভালিয়ে আদম-হাওয়াকে নিষিদ্ধ গন্দম খাইয়ে দিয়েছিল। আর আল্লাহ পাক তেনাদেরও বেহেশত থেকে পৃথিবীতে পাঠায় দেন। সেই থেকে আমাদের সাথে শয়তানটার এই দুনিয়ায় লাগাতার ফাইট চলতেছে।
আমি: কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, ওকে তো দেখা যায় না। মাঝে মাঝে ভিন্ন ভিন্ন রূপে উঁকি মারে শয়তানের হাড্ডিটা।
আবদাল: দেখা যাওয়ার প্রয়োজন কি? আমরা নিজেরা ভাল থাকলে সে দৌড়ায় পালাবে। তবে একটা মজার জিনিস কি জানেন? আমি জিনিসটা চিন্তা করেছি।
কাফি ভাই: কি?
আবদাল: আল্লাহ মাইর দুনিয়ার বাইর। শয়তানটা নিজের অজান্তেই এমন গ্যাঁড়াকলে পড়েছে যে, সে নিজেও জানে না।
আমি: কি রকম?
আবদাল: এই যে দুনিয়ায় আইসা আমরা আল্লাহর কত নেয়ামত উপভোগ করতেছি, সে করতেছে না। এই যে সুন্দর খাঁটি গরুর দুধের চা খেলাম, সে খাইতে পারে নাই। আমরা রাতে শান্তির ঘুম দেই, সে ঘুমায় না। কেয়ামত পর্যন্ত সে দৌড়ানির উপর থাকবে। খাওয়া নাই, নাওয়া নাই, ঘুম নাই। কাজ একটাই- শয়তানি।
কাফি ভাই: এর শেষ কবে?
আবদাল: কেয়ামতের দিন। সেইদিন শয়তানটা শয়তানি করতে করতে ভুলেই যাবে যে তার শেষ দিন চলে এসেছে। আজরাইল সামনে এসে দাঁড়ানোর সাথে সাথে দিবে সে দৌড়। গ্রহ-নক্ষত্র সব জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করেও কোন লাভ হবে না- আজরাইল তাকে থাবা মেরে ধরবে। আসমান-জমিন ফাটাইয়া দিবে সে এক মরণ চিৎকার! কিন্তু লাভ হবে না।
কাফি ভাই: আ-হ্! সেদিনের অপেক্ষায় রইলাম। শয়তানের বাচ্চাটা আবার আমার ঘাড়ের উপর এখন বসে আছে কিনা কে জানে? চল্ কল্লোল।
দাঁড়িয়ে ৫ কেজি চিনি হাতে হাঁটা দেই দু’জন।
আবদাল চিৎকার করে বলে।
আবদাল: খালাম্মাকে বইলেন চিনিগুঁড়া দিয়ে পোলাও রাঁন্ধেন আর পায়েশই রাঁন্ধেন- আমাকে যেন এক বাটি পাঠায় দেন।
এর মধ্যে কাফি ভাই কখন যেন ‘চিনি-চিনিগুঁড়া’ কাহিনী বলে দিয়েছেন।
No comments