আলোচনা- ড. ইউনূস : প্রতিটি বাংলাদেশির গৌরব by ড. মোহাম্মদ আলী ভূইয়া
গত ২৬ বছর যাবৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যাপনা করার সুবাদে পৃথিবীর ছয়টি মহাদেশের বহু দেশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। আনন্দের বিষয় এই যে প্রতিটি দেশে গিয়েই যখন বলেছি, আমি বাংলাদেশি আমেরিকান। তখন সবাই বলে উঠেছে, 'ও, তুমি ড. ইউনূসের দেশের মানুষ' এবং সেই সঙ্গে তারা এটাও বলেছে, তারা ইউনূসের জন্য কতটা গর্বিত। অধ্যাপক ইউনূস 'ক্ষুদ্রঋণের পিতা' এবং বাংলাদেশি হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত।
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার তাঁকে এবং বাংলাদেশকে আরো অনেক বেশি করে সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত করে তুলেছে। অন্যান্য নোবেল শান্তি বিজয়ীর তুলনায় অধ্যাপক ইউনূস সারা বিশ্বে অনেক বেশি সমাদৃত। কারণ, তাঁর ক্ষুদ্রঋণের অবদান বিশ্বের শতাধিক দেশে এবং কোটি কোটি মানুষ এ থেকে উপকৃত হচ্ছে। অধ্যাপক ইউনূসকে প্রতিদিন বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারপ্রধানরা দাওয়াত পাঠান বা দেখা করতে চান। অনেকে দু-তিন বছর ধরে বিপুল অঙ্কের ডলার নিয়ে ঘুরেও প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। তাই নরওয়ের তথাকথিত সাংবাদিক (আমি বলব, দায়িত্বহীন সাংবাদিক) যখন অভিযোগ আনলেন যে তিনি ছয় মাস চেষ্টা করেও অধ্যাপক ইউনূসের দেখা পাননি, তাতে আমি মোটেই বিস্মিত হইনি। এখানে প্রাসঙ্গিকভাবেই বলা যায়, যখন কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের সহায়তার ১০ বছরের পুরনো একটি ঘটনা নিয়ে তার আংশিক চিত্র তুলে ধরে প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেন এবং সত্যকে গোপন করে অধ্যাপক ইউনূসের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেন, তাঁকে সমাজের কলঙ্ক বললেও ভুল হবে না। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকা ও রেডিও-টেলিভিশন বিভিন্ন ধরনের খবর ছেপেছে বা প্রচার করেছে। এই সুযোগে অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে হিংসাপরায়ণ, তাঁরাও বিভিন্ন ধরনের বিরূপ বিবৃতি দিয়েছেন। সুখের বিষয় এই যে নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুতভাবে এই মিথ্যা অভিযোগের উত্তর দেওয়া হয়েছে এবং অধ্যাপক ইউনূসকে সম্পূর্ণ নির্দোষ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অনেকে বলার চেষ্টা করেছেন, কোনো ব্যক্তি এককভাবে বাংলাদেশকে বিদেশে উপস্থাপন করে না। কথাটি হয়তো আংশিকভাবে সত্য। আমার মতো লাখ লাখ বাংলাদেশি বিদেশে বাংলাদেশকে তুলে ধরে। কিন্তু আমি মনে করি, বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য আমার ক্ষমতা ও অবস্থান অত্যন্ত নগণ্য। প্রসঙ্গত আরো বলা যায়, বাংলাদেশ যখন দুর্নীতির জন্য বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করে, চরমপন্থীদের কার্যকলাপের কথা ফলাও করে ছাপা হয়, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ধর্মঘটের কারণে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হয়, তখন অধ্যাপক ইউনূসের মতো মহান ব্যক্তিত্বই বাংলাদেশের সম্মান রক্ষা করেন। আমাদের সবার উচিত অধ্যাপক ইউনূসকে সম্মান করা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা।
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার তাঁকে এবং বাংলাদেশকে আরো অনেক বেশি করে সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত করে তুলেছে। অন্যান্য নোবেল শান্তি বিজয়ীর তুলনায় অধ্যাপক ইউনূস সারা বিশ্বে অনেক বেশি সমাদৃত। কারণ, তাঁর ক্ষুদ্রঋণের অবদান বিশ্বের শতাধিক দেশে এবং কোটি কোটি মানুষ এ থেকে উপকৃত হচ্ছে। অধ্যাপক ইউনূসকে প্রতিদিন বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারপ্রধানরা দাওয়াত পাঠান বা দেখা করতে চান। অনেকে দু-তিন বছর ধরে বিপুল অঙ্কের ডলার নিয়ে ঘুরেও প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। তাই নরওয়ের তথাকথিত সাংবাদিক (আমি বলব, দায়িত্বহীন সাংবাদিক) যখন অভিযোগ আনলেন যে তিনি ছয় মাস চেষ্টা করেও অধ্যাপক ইউনূসের দেখা পাননি, তাতে আমি মোটেই বিস্মিত হইনি। এখানে প্রাসঙ্গিকভাবেই বলা যায়, যখন কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের সহায়তার ১০ বছরের পুরনো একটি ঘটনা নিয়ে তার আংশিক চিত্র তুলে ধরে প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেন এবং সত্যকে গোপন করে অধ্যাপক ইউনূসের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেন, তাঁকে সমাজের কলঙ্ক বললেও ভুল হবে না। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকা ও রেডিও-টেলিভিশন বিভিন্ন ধরনের খবর ছেপেছে বা প্রচার করেছে। এই সুযোগে অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে হিংসাপরায়ণ, তাঁরাও বিভিন্ন ধরনের বিরূপ বিবৃতি দিয়েছেন। সুখের বিষয় এই যে নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুতভাবে এই মিথ্যা অভিযোগের উত্তর দেওয়া হয়েছে এবং অধ্যাপক ইউনূসকে সম্পূর্ণ নির্দোষ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অনেকে বলার চেষ্টা করেছেন, কোনো ব্যক্তি এককভাবে বাংলাদেশকে বিদেশে উপস্থাপন করে না। কথাটি হয়তো আংশিকভাবে সত্য। আমার মতো লাখ লাখ বাংলাদেশি বিদেশে বাংলাদেশকে তুলে ধরে। কিন্তু আমি মনে করি, বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য আমার ক্ষমতা ও অবস্থান অত্যন্ত নগণ্য। প্রসঙ্গত আরো বলা যায়, বাংলাদেশ যখন দুর্নীতির জন্য বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করে, চরমপন্থীদের কার্যকলাপের কথা ফলাও করে ছাপা হয়, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ধর্মঘটের কারণে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হয়, তখন অধ্যাপক ইউনূসের মতো মহান ব্যক্তিত্বই বাংলাদেশের সম্মান রক্ষা করেন। আমাদের সবার উচিত অধ্যাপক ইউনূসকে সম্মান করা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা।
আমি নিজেকে অত্যন্ত ভাগ্যবান মনে করি, আমি গত কয়েক বছর অধ্যাপক ইউনূসকে অত্যন্ত কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি এবং তাঁর কিছু কাজে সহায়তাও করতে পেরেছি। আমার মতে, অধ্যাপক ইউনূস একজন অত্যন্ত পারদর্শী, সৎ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব এবং যিনি সব সময়ই মানবজাতির কল্যাণের জন্য নতুন নতুন ধারণা নিয়ে আসেন। অনেক রাষ্ট্রপ্রধান অধ্যাপক ইউনূসের সাহায্য নিয়ে তাঁদের দেশের উন্নয়নের প্রসার ঘটাচ্ছেন। বিশ্বের শতাধিক দেশ ক্ষুদ্রঋণের সাহায্যে দারিদ্র্য ঘোচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অধ্যাপক ইউনূসের নতুন ধারণা 'সামাজিক ব্যবসা' এখন নতুন করে সারা বিশ্বে সাড়া জাগাচ্ছে। অথচ অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে বাংলাদেশের নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা অধ্যাপক ইউনূসের জ্ঞান ও সারা বিশ্বে তাঁর প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নকে তরান্বিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আমি এই বলেই শেষ করতে চাই যে সাম্প্রতিক ভিত্তিহীন খবর নিয়ে অধ্যাপক ইউনূসকে যেভাবে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে নরওয়ের সরকার যেভাবে এটাকে ভুল কাজ হিসেবে প্রমাণ করেছে, তা প্রতিটি বাংলাদেশিকে নতুন করে ভাবনার সুযোগ দিয়েছে_অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের জন্য কত বড় সম্পদ ও সম্মান। এখন এটা আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য, যাতে আমরা নিজেরাও বুঝি ও অন্যদের বুঝতে সাহায্য করি যে অধ্যাপক ইউনূসকে আক্রমণ করা আর বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আক্রমণ করার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
===========================
জলাভূমিবাসীদের দুনিয়ায় আবার.. আসুন, আমরা গর্বিত নাগরিক হই স্মৃতির শহীদ মির্জা লেন ইয়াংওয়ান গ্রুপের পোশাক কারখানা বন্ধ ট্রানজিটে ১১ খাতের লাভ-ক্ষতির হিসাব শুরু চট্টগ্রামের বনাঞ্চল ছাড়ছে হাতি ট্রেন স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের বিচার মানবাধিকার লঙ্ঘন দেশে দেশে ক্ষমতা যেভাবে মানবাধিকার আর ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ করে চাক্কু মারা 'মশা' কাহিনী উল্কির ভেলকি এইচআইভি/এইডস্ উইকিলিকসঃ জুলিয়ান চে গুয়েভারা! তিন কালের সাক্ষী বাবর আলীর ইশকুল এ মাটির মায়ায় মধ্যবিত্তের উত্থান, না ভোক্তাশ্রেণীর উদ্ভব হিমালয়ের পায়ের কাছেঃ গোধূলির ছায়াপথে পতিত স্বৈরাচারের আস্ফালন ও আওয়ামী লীগের নীরবতা ৪০ বছর পড়ে থাকা লাশটার সৎকার করতে চাই এই কি আমাদের মানবাধিকার? ঐতিহ্যের মধ্যে সমকাল কেমন দেখতে চাইঃ ঢাকা আন্তর্জাতিক বইমেলা দ্রীপ প্রতিভার দ্যুতিময় স্মারক গল্প- বৃষ্টি শহীদুল্লা কায়সারঃ রাজনৈতিক সৃষ্টিশীলতা আনোয়ার পাশাঃ জাতিরাষ্ট্রের অংশ ও প্রেরণা মুনীর চৌধুরীঃ তাঁর নাটক জেগে ওঠার গল্প এখন শুনবেন বিশ্ব-সংবাদ বাঘ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০১০ তাঁরা সমালোচিত, আমরা বিব্রত মুজিবকে নিয়ে সিরাজের একমাত্র লেখা ঢাকা সিটি করপোরেশন বিভক্তির উদ্যোগ মহাস্থানগড়ের ধ্বংস-পরিস্থিতিঃ পর্যবেক্ষণ
দৈনিক কালের কন্ঠ এর সৌজন্যে
লেখকঃ ড. মোহাম্মদ আলী ভূইয়া
এনডাউড অধ্যাপক, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর কেরোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
জলাভূমিবাসীদের দুনিয়ায় আবার.. আসুন, আমরা গর্বিত নাগরিক হই স্মৃতির শহীদ মির্জা লেন ইয়াংওয়ান গ্রুপের পোশাক কারখানা বন্ধ ট্রানজিটে ১১ খাতের লাভ-ক্ষতির হিসাব শুরু চট্টগ্রামের বনাঞ্চল ছাড়ছে হাতি ট্রেন স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের বিচার মানবাধিকার লঙ্ঘন দেশে দেশে ক্ষমতা যেভাবে মানবাধিকার আর ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ করে চাক্কু মারা 'মশা' কাহিনী উল্কির ভেলকি এইচআইভি/এইডস্ উইকিলিকসঃ জুলিয়ান চে গুয়েভারা! তিন কালের সাক্ষী বাবর আলীর ইশকুল এ মাটির মায়ায় মধ্যবিত্তের উত্থান, না ভোক্তাশ্রেণীর উদ্ভব হিমালয়ের পায়ের কাছেঃ গোধূলির ছায়াপথে পতিত স্বৈরাচারের আস্ফালন ও আওয়ামী লীগের নীরবতা ৪০ বছর পড়ে থাকা লাশটার সৎকার করতে চাই এই কি আমাদের মানবাধিকার? ঐতিহ্যের মধ্যে সমকাল কেমন দেখতে চাইঃ ঢাকা আন্তর্জাতিক বইমেলা দ্রীপ প্রতিভার দ্যুতিময় স্মারক গল্প- বৃষ্টি শহীদুল্লা কায়সারঃ রাজনৈতিক সৃষ্টিশীলতা আনোয়ার পাশাঃ জাতিরাষ্ট্রের অংশ ও প্রেরণা মুনীর চৌধুরীঃ তাঁর নাটক জেগে ওঠার গল্প এখন শুনবেন বিশ্ব-সংবাদ বাঘ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০১০ তাঁরা সমালোচিত, আমরা বিব্রত মুজিবকে নিয়ে সিরাজের একমাত্র লেখা ঢাকা সিটি করপোরেশন বিভক্তির উদ্যোগ মহাস্থানগড়ের ধ্বংস-পরিস্থিতিঃ পর্যবেক্ষণ
দৈনিক কালের কন্ঠ এর সৌজন্যে
লেখকঃ ড. মোহাম্মদ আলী ভূইয়া
এনডাউড অধ্যাপক, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর কেরোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
No comments