ভারত কেন আফগানিস্তানে স্থিতিবস্থা চায়?
হোয়াইট
হাউসে ট্রাম্প-ইমরান বৈঠকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় উত্তপ্ত বিতর্ক
সৃষ্টি করার মধ্যে ভারত দৃশ্যত অনুভব করতে পারছে যে এই অঞ্চলে তার
স্বার্থগুলো সরিয়ে রাখা হয়েছে। ভারতীয় মিডিয়ায় দুটি বিষয় নিয়ে ব্যাপক
আলোচনা হচ্ছে। একটি হলো আফগানিস্তান, অপরটি হলো কে-বোমা (কাশ্মীর ইস্যুকে
ভারতীয় মিডিয়া এভাবেই অভিহিত করছে)।
গত দশকে আফগানিস্তানে ভারত অবকাঠামো, সামরিক বাহিনী, আমলাতন্ত্র, সংস্কৃতি ও তার প্রক্সি যুদ্ধে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ভারত চায় না, তার এই বিনিয়োগ বিফলে যাক। নয়া দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিগুলোতে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেছে। ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা সম্ভবত চায় না, আফগানিস্তানে শান্তিপ্রক্রিয়া শিগগিরই গতি লাভ করুক।
বর্তমানে আফগানিস্তানের সাথে সম্পর্কযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ সব পক্ষের চেয়ে ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেছে ভারত। গত মাসে আমেরিকা, রাশিয়া ও চীন বেইজিংয়ে মিলিত হয়েছিল। তারা ভারতকে বাদ দিয়ে আফগান যুদ্ধ সমাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে বলেছে পাকিস্তানকে। অথচ ভারত চেয়েছিল এই অঞ্চলে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে। ভারত এ নিয়ে অনেক কাজ করেছিল। কিন্তু তাতে কিছুই হয়নি।
চাহাবার-মিলাক-জারানজ-দিলারাম-কাবুল রুটের মাধ্যমে আফগান-পাকিস্তান অর্থনীতির প্রাণরেখা হিসেবে বিবেচিত করাচি-কান্দাহার ও করাচি-খাইবার-কাবুল রুট এড়ানোর জন্য ইরান ও আফগান সরকারের সাথে জোট বেঁধেছিল ভারত। তাছাড়া দিল্লি ও কাবুলের মধ্যে বিমানসেতুও প্রতিষ্ঠা করেছিল।
অধিকৃত কাশ্মীরে স্বাধীনতাকামীদের প্রতি পাকিস্তানের কথিত সমর্থনের পাল্টা জবাব হিসেবে ভারত ডুরান্ট লাইনকে উত্তপ্ত রাখতে আফগানিস্তানে প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানি আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বালাকোটে কথিত সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারত। তথাকথিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ভণ্ডুল করে দেয় পাকিস্তানি বিমান বাহিনী। পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে কাশ্মীরে দুটি ভারতীয় জঙ্গিবিমান ভূপাতিত হয়। পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের এই সঙ্ঘাতে কাশ্মীর নিয়ে পরমাণু যুদ্ধের শঙ্কার সৃষ্টি হয়। তবে পাকিস্তান সংযমের পরিচয় দেয়।
আফগানিস্তানবিষয়ক ভারতীয় নীতিটি অতীতের চানক্যনীতির আলোকেই প্রণীত। তাতে বলা হয়েছে, প্রতিবেশীর শত্রুর মিত্র হয়ে দুটি রণাঙ্গন সৃষ্টি করবে। ভারত হয়তো ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়টি বুঝতে পারেনি। আফগানিস্তানে বড় ধরনের সাফল্য ছাড়া ট্রাম্প তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করতে স্বস্তি পাচ্ছেন না। এ কারণে ট্রাম্প-ইমরান বৈঠকে আফগান শান্তিপ্রক্রিয়ার একটি উপায় বের করার দিকে নিবদ্ধ ছিল।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যে তার মিত্রদের আফগানিস্তান নিয়ে একটি মিনি মার্শাল পরিকল্পনা ছাড়া দেশটির যুদ্ধ-পরবর্তী শান্তি স্থায়িত্ব পাবে না। আর আফগানিস্তানে শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে পাকিস্তান একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় চীন ও রাশিয়ার ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। ডুরান্ট লাইন বরাবর শান্তি কামনা করে চীন। কারণ এতে করে তার ৫৬ বিলিয়ন ডলারের চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর নিরাপদ থাকবে। আর রাশিয়া চায় মধ্য এশিয়ায় যাতে আইএস প্রবেশ করতে না পারে আফগানিস্তান থেকে।
এমন প্রেক্ষাপটে ভারত কেন চায় বর্তমান অবস্থা বহাল থাকুক? বর্তমান অবস্থায় ভারতের নতুন আফগান কৌশল কী হতে পারে?
ভারত যেকোনো মূল্য চায় শান্তিপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হোক। এ কারণে সে আফগান এলিটদের বোঝাচ্ছে যে তালেবান-প্রাধান্যবিশিষ্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে তা তাদের জন্য বিপর্যয়ের কারণ হবে। তালেবানকে প্রতিরোধ করার জন্য সে উজবেক, হাজারা ও তাজিকদের মতো অপশতু সম্প্রদায়গুলোকে ব্যবহার করতে চায়।
আবার আফগান সীমান্তে পাকিস্তানকে ব্যস্ত রাখতে পারলে ভারতের পক্ষে কাশ্মীরে সহিংসতা বাড়ানো সহজ হবে।
ইমরান খানের যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরই ভারত তাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করল। ট্রাম্প কিন্তু কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে মধ্যস্ততা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এখন সম্ভবত কাশ্মীর ও আফগানিস্তান- উভয় স্থানেই ভারত সহিংসতা বাড়িয়ে দেবে।
শেষ পর্যন্ত কী ঘটে তা এখন দেখার বিষয়।
গত দশকে আফগানিস্তানে ভারত অবকাঠামো, সামরিক বাহিনী, আমলাতন্ত্র, সংস্কৃতি ও তার প্রক্সি যুদ্ধে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ভারত চায় না, তার এই বিনিয়োগ বিফলে যাক। নয়া দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিগুলোতে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেছে। ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা সম্ভবত চায় না, আফগানিস্তানে শান্তিপ্রক্রিয়া শিগগিরই গতি লাভ করুক।
বর্তমানে আফগানিস্তানের সাথে সম্পর্কযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ সব পক্ষের চেয়ে ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেছে ভারত। গত মাসে আমেরিকা, রাশিয়া ও চীন বেইজিংয়ে মিলিত হয়েছিল। তারা ভারতকে বাদ দিয়ে আফগান যুদ্ধ সমাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে বলেছে পাকিস্তানকে। অথচ ভারত চেয়েছিল এই অঞ্চলে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে। ভারত এ নিয়ে অনেক কাজ করেছিল। কিন্তু তাতে কিছুই হয়নি।
চাহাবার-মিলাক-জারানজ-দিলারাম-কাবুল রুটের মাধ্যমে আফগান-পাকিস্তান অর্থনীতির প্রাণরেখা হিসেবে বিবেচিত করাচি-কান্দাহার ও করাচি-খাইবার-কাবুল রুট এড়ানোর জন্য ইরান ও আফগান সরকারের সাথে জোট বেঁধেছিল ভারত। তাছাড়া দিল্লি ও কাবুলের মধ্যে বিমানসেতুও প্রতিষ্ঠা করেছিল।
অধিকৃত কাশ্মীরে স্বাধীনতাকামীদের প্রতি পাকিস্তানের কথিত সমর্থনের পাল্টা জবাব হিসেবে ভারত ডুরান্ট লাইনকে উত্তপ্ত রাখতে আফগানিস্তানে প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানি আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বালাকোটে কথিত সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারত। তথাকথিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ভণ্ডুল করে দেয় পাকিস্তানি বিমান বাহিনী। পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে কাশ্মীরে দুটি ভারতীয় জঙ্গিবিমান ভূপাতিত হয়। পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের এই সঙ্ঘাতে কাশ্মীর নিয়ে পরমাণু যুদ্ধের শঙ্কার সৃষ্টি হয়। তবে পাকিস্তান সংযমের পরিচয় দেয়।
আফগানিস্তানবিষয়ক ভারতীয় নীতিটি অতীতের চানক্যনীতির আলোকেই প্রণীত। তাতে বলা হয়েছে, প্রতিবেশীর শত্রুর মিত্র হয়ে দুটি রণাঙ্গন সৃষ্টি করবে। ভারত হয়তো ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়টি বুঝতে পারেনি। আফগানিস্তানে বড় ধরনের সাফল্য ছাড়া ট্রাম্প তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করতে স্বস্তি পাচ্ছেন না। এ কারণে ট্রাম্প-ইমরান বৈঠকে আফগান শান্তিপ্রক্রিয়ার একটি উপায় বের করার দিকে নিবদ্ধ ছিল।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যে তার মিত্রদের আফগানিস্তান নিয়ে একটি মিনি মার্শাল পরিকল্পনা ছাড়া দেশটির যুদ্ধ-পরবর্তী শান্তি স্থায়িত্ব পাবে না। আর আফগানিস্তানে শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে পাকিস্তান একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় চীন ও রাশিয়ার ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। ডুরান্ট লাইন বরাবর শান্তি কামনা করে চীন। কারণ এতে করে তার ৫৬ বিলিয়ন ডলারের চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর নিরাপদ থাকবে। আর রাশিয়া চায় মধ্য এশিয়ায় যাতে আইএস প্রবেশ করতে না পারে আফগানিস্তান থেকে।
এমন প্রেক্ষাপটে ভারত কেন চায় বর্তমান অবস্থা বহাল থাকুক? বর্তমান অবস্থায় ভারতের নতুন আফগান কৌশল কী হতে পারে?
ভারত যেকোনো মূল্য চায় শান্তিপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হোক। এ কারণে সে আফগান এলিটদের বোঝাচ্ছে যে তালেবান-প্রাধান্যবিশিষ্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে তা তাদের জন্য বিপর্যয়ের কারণ হবে। তালেবানকে প্রতিরোধ করার জন্য সে উজবেক, হাজারা ও তাজিকদের মতো অপশতু সম্প্রদায়গুলোকে ব্যবহার করতে চায়।
আবার আফগান সীমান্তে পাকিস্তানকে ব্যস্ত রাখতে পারলে ভারতের পক্ষে কাশ্মীরে সহিংসতা বাড়ানো সহজ হবে।
ইমরান খানের যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরই ভারত তাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করল। ট্রাম্প কিন্তু কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে মধ্যস্ততা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এখন সম্ভবত কাশ্মীর ও আফগানিস্তান- উভয় স্থানেই ভারত সহিংসতা বাড়িয়ে দেবে।
শেষ পর্যন্ত কী ঘটে তা এখন দেখার বিষয়।
No comments