অযোধ্যা ইস্যুতে দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ
ভারতের অযোধ্যার ঐতিহাসিক বারবী মসজিদ ধ্বংসের দৃশ্য |
ভারতের
উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরী মসজিদ-রাম জন্মভূমি মামলায় হিন্দু মহাসভার
পক্ষ থেকে দ্রুত শুনানির যে আবেদন করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করে
দিয়েছে। সোমবার হিন্দু মহাসভার ওই আবেদন সুপ্রিম কোর্টে উঠলে প্রধান
বিচারপতি রঞ্জন গগৈ তা খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত
নেয়া হয়েছে, সেটাই বহাল থাকবে।’
ওই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির দাবিতে বিজেপি ও হিন্দু সংগঠনগুলো সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে গত ২৯ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ওই আবেদন নাকচ করে দিয়ে মামলার শুনানি কবে হবে, তা আগামী জানুয়ারিতে ঠিক হবে বলে জানিয়ে দেন।
এদিকে রাম মন্দির নির্মাণ নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত্ এরইমধ্যে আভাস দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষা না করে সরকারকে দ্রুত রাম মন্দির নির্মাণে আইন আনতে হবে। কিছুদিন আগেই আরএসএস সাধু-সন্তদের নিয়ে যে সম্মেলন করেছে তাতে রাম মন্দির নির্মাণের খসড়া তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের আগেই রাম মন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে তারা জোরালো আন্দোলনের কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ হওয়া প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ-এর পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি মুহাম্মদ নূরুদ্দিন রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘বাবরী মসজিদ-রাম মন্দির প্রসঙ্গে ভারতীয় মুসলিম বিশেষ করে বাবরী মসজিদ অ্যাকশন কমিটি সম্পূর্ণভাবে আদালতের বিচারের ওপরে আস্থা রেখেছে। সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে যে রায় দেবে তারা সেই রায় মেনে নেবে, তা শুরু থেকেই বলে আসছে। কিন্তু এখানে শাসকদল বিজেপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এমনকি আরএসএসের কোনও কোনও নেতারা গায়ের জোরে সেখানে রাম মন্দির নির্মাণ করতে চাচ্ছেন। এমনকি তারা আদালতের ওপরে চাপ তৈরি করে তাদের স্বপক্ষে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানাচ্ছেন যাতে সহজেই সেখানে রাম মন্দির নির্মাণ করা যায়। আমরা আদালতের ওপরে আস্থা রেখেছি এবং এ ব্যাপারে আমরা খুশি যে সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতি ওদের আবেদন খারিজ করেছেন। হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে দ্রুত শুনানির যে আবেদন করা হয়েছিল তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। সময়মতো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এজন্য সুপ্রিম কোর্টকে আমাদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমত, ২০১৯ সালে লোকসভার যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেই নির্বাচনের আগে বরাবরের ন্যায় সাম্প্রদায়িক দলগুলো মন্দির-মসজিদ ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এর মধ্য দিয়ে মেরুকরণের চেষ্টা করে ভোট বিভাজন করে তারা রাজনীতিতে জয়ী হতে চায়। ভারতের যে বড় বড় জাতীয় সমস্যা আছে সেদিকে তদের ভ্রুক্ষেপ নেই। অর্থনৈতিক সমস্যা, বেকারত্বের সমস্যা, চিকিৎসা ব্যবস্থা সঙ্কটের সমস্যা, মুদ্রাস্ফীতির সমস্যা, ডলারের তুলনায় ভারতীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ার সমস্যা, দুর্নীতির সমস্যার দিক থেকে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এজন্য তাঁরা অর্ডিন্যান্স জারি করে, গায়ের জোরে, হিন্দু ভাবাবেগের নামে মন্দির নির্মাণ করতে চাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচনের আগে তাদের এধরণের তৎপরতা থেকে প্রমাণ হচ্ছে তারা রাজনীতিই করতে চাচ্ছে, ধর্ম তাদের কাছে মুখ্য ইস্যু নয়। রাম মন্দির হবে কি, হবে না সেটা তাদের কাছে বড় বিষয় নয়। তারা মন্দির ইস্যু করে ভারতীয় রাজনীতিতে হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণের চেষ্টা করতে চায়। দিনের পর দিন গোটা বিশ্ববাসী তা দেখতে পাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ওই দলগুলোর ফ্যাসিস্ট চরিত্র ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তারা গণতন্ত্র মানে না, আদালতের রায় মানে না, আইনের শাসন মানে না। কেবল ধর্মীয় আবেগ ও ‘মিথ’কে বাস্তবায়িত করতে গায়ের জোরে কাজ করতে চাচ্ছে যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। এটা দেশের জন্য, মানবতার জন্য কোনোভাবেই কল্যাণকর নয়। সেজন্য ভারতীয় মুসলিমরা আদালতের ওপরে আস্থা রেখেছে, বিচার ব্যবস্থার ওপরে আস্থাশীল। তারা কখনোই আইন হাতে তুলে নেওয়ার কথা বলেনি এবং আগামীতেও বলবে না বলে আশা রাখি। আমরা সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান অবস্থানকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং আশা করছি যে, আদালত এই বিষয়ে যখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে সঠিক সিদ্ধান্তই গ্রহণ করবে।’ সূত্র: পার্স টুডে।
ওই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির দাবিতে বিজেপি ও হিন্দু সংগঠনগুলো সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে গত ২৯ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ওই আবেদন নাকচ করে দিয়ে মামলার শুনানি কবে হবে, তা আগামী জানুয়ারিতে ঠিক হবে বলে জানিয়ে দেন।
এদিকে রাম মন্দির নির্মাণ নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত্ এরইমধ্যে আভাস দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষা না করে সরকারকে দ্রুত রাম মন্দির নির্মাণে আইন আনতে হবে। কিছুদিন আগেই আরএসএস সাধু-সন্তদের নিয়ে যে সম্মেলন করেছে তাতে রাম মন্দির নির্মাণের খসড়া তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের আগেই রাম মন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে তারা জোরালো আন্দোলনের কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ হওয়া প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ-এর পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি মুহাম্মদ নূরুদ্দিন রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘বাবরী মসজিদ-রাম মন্দির প্রসঙ্গে ভারতীয় মুসলিম বিশেষ করে বাবরী মসজিদ অ্যাকশন কমিটি সম্পূর্ণভাবে আদালতের বিচারের ওপরে আস্থা রেখেছে। সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে যে রায় দেবে তারা সেই রায় মেনে নেবে, তা শুরু থেকেই বলে আসছে। কিন্তু এখানে শাসকদল বিজেপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এমনকি আরএসএসের কোনও কোনও নেতারা গায়ের জোরে সেখানে রাম মন্দির নির্মাণ করতে চাচ্ছেন। এমনকি তারা আদালতের ওপরে চাপ তৈরি করে তাদের স্বপক্ষে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানাচ্ছেন যাতে সহজেই সেখানে রাম মন্দির নির্মাণ করা যায়। আমরা আদালতের ওপরে আস্থা রেখেছি এবং এ ব্যাপারে আমরা খুশি যে সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতি ওদের আবেদন খারিজ করেছেন। হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে দ্রুত শুনানির যে আবেদন করা হয়েছিল তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। সময়মতো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এজন্য সুপ্রিম কোর্টকে আমাদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমত, ২০১৯ সালে লোকসভার যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেই নির্বাচনের আগে বরাবরের ন্যায় সাম্প্রদায়িক দলগুলো মন্দির-মসজিদ ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এর মধ্য দিয়ে মেরুকরণের চেষ্টা করে ভোট বিভাজন করে তারা রাজনীতিতে জয়ী হতে চায়। ভারতের যে বড় বড় জাতীয় সমস্যা আছে সেদিকে তদের ভ্রুক্ষেপ নেই। অর্থনৈতিক সমস্যা, বেকারত্বের সমস্যা, চিকিৎসা ব্যবস্থা সঙ্কটের সমস্যা, মুদ্রাস্ফীতির সমস্যা, ডলারের তুলনায় ভারতীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ার সমস্যা, দুর্নীতির সমস্যার দিক থেকে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এজন্য তাঁরা অর্ডিন্যান্স জারি করে, গায়ের জোরে, হিন্দু ভাবাবেগের নামে মন্দির নির্মাণ করতে চাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচনের আগে তাদের এধরণের তৎপরতা থেকে প্রমাণ হচ্ছে তারা রাজনীতিই করতে চাচ্ছে, ধর্ম তাদের কাছে মুখ্য ইস্যু নয়। রাম মন্দির হবে কি, হবে না সেটা তাদের কাছে বড় বিষয় নয়। তারা মন্দির ইস্যু করে ভারতীয় রাজনীতিতে হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণের চেষ্টা করতে চায়। দিনের পর দিন গোটা বিশ্ববাসী তা দেখতে পাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ওই দলগুলোর ফ্যাসিস্ট চরিত্র ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তারা গণতন্ত্র মানে না, আদালতের রায় মানে না, আইনের শাসন মানে না। কেবল ধর্মীয় আবেগ ও ‘মিথ’কে বাস্তবায়িত করতে গায়ের জোরে কাজ করতে চাচ্ছে যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। এটা দেশের জন্য, মানবতার জন্য কোনোভাবেই কল্যাণকর নয়। সেজন্য ভারতীয় মুসলিমরা আদালতের ওপরে আস্থা রেখেছে, বিচার ব্যবস্থার ওপরে আস্থাশীল। তারা কখনোই আইন হাতে তুলে নেওয়ার কথা বলেনি এবং আগামীতেও বলবে না বলে আশা রাখি। আমরা সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান অবস্থানকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং আশা করছি যে, আদালত এই বিষয়ে যখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে সঠিক সিদ্ধান্তই গ্রহণ করবে।’ সূত্র: পার্স টুডে।
No comments