কায়কোবাদের দেশে by রাশিম মোল্লা
ভ্রমণ
সবারই ভালো লাগে। সুযোগ পেলেই ঢাকার বাইরের দূর-দূরান্তে ছুটে যায় মানুষ।
অথচ ঢাকার কাছেই রয়েছে অনেক মনোমুগ্ধকর বিনোদন স্পট। এমন বেশ কয়েকটি বিনোদন
কেন্দ্র রয়েছে ঢাকার কাছে দোহার ও নবাবগঞ্জে। হৃদয়ের মানুষ কায়কোবাদের
দেশে।
মহাকবি কায়কোবাদের জন্মভূমি: নবাবগঞ্জের আগলা নামক স্থানে মহাকবি কায়কোবাদ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই স্থানটিও ঘুরে দেখার মতো। বিশেষ করে যারা মহাকবি সম্পর্কে জানতে চান তারা বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন আগলায় আসলে। তার বাড়ির পাশেই মহাকবি কায়কোবাদ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পাশেই রয়েছে পোস্ট অফিস। যেখানে তিনি পোস্ট মাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ভাঙা মসজিদ: নবাবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে নতুন বান্দুরায় অবস্থিত ভাঙা মসজিদ। প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি। তবে মূল ভবন রয়েছে মাত্র ২ শতাংশ জমির ওপর। মসজিদটিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও নামাজের আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে।
মসজিদটিতে এবাদত করতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজে নবাবগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি থানার কয়েক হাজার নারী-পুরুষ নামাজির সমাগম হয়।
ধারণা করা হয়, তিন গম্বুজবিশিষ্ট ‘ভাঙা মসজিদ’ সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে নির্মিত। সে হিসাবে প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো মসজিদটি নবাবগঞ্জের কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় ১৬৫ ফুট সুউচ্চ একটি মিনার। মিনারটি ঢাকা দক্ষিণের সবচেয়ে বড় মিনার বলে জানা গেছে।
লোকমুখে প্রচলিত, ১৬০০ শতকে দিল্লি থেকে নদীপথে ঢাকা যাতায়াত করতেন মোগল সুবেদার ইসলাম খান চিশতি। তিনি নৌবহর নিয়ে যমুনা নদী হয়ে পাবনা ও মানিকগঞ্জ অংশে পদ্মা পাড়ি দিয়ে ইছামতী নদী দিয়ে ঢাকা আসতেন। রাতযাপন ও ইবাদত করার জন্য আনুমানিক ১৬১৫ সালে নদীর পাশেই মসজিদটি নির্মাণ করেন তিনি। কালের পরিবর্তনে ইছামতী নদী ভাঙতে ভাঙতে উত্তরদিকে চলে যায়। উল্লেখ্য, ১৬১০ সালে দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের সুবেদার ছিলেন ইসলাম খান চিশতি।
নির্মাণের সময় মসজিদের পাশে কোনো বসতি ছিল না। পুরো এলাকা ছিল বনাঞ্চল। ১৮৮০ সালে হিন্দু জমিদাররা ওইসব বনাঞ্চল পত্তন নেন। তখন সেখানে বসতি স্থাপন করার জন্য বনাঞ্চল কাটা আরম্ভ করে হিন্দুরা। বন কাটতে গিয়ে নজরে আসে এই মসজিদটি। যার ওপরের কিছু অংশ ভাঙা ছিল। সেই থেকেই এই মসজিদের নাম হয় ‘ভাঙা মসজিদ’ বা ‘গায়েবি মসজিদ’।
হাসনাবাদ গির্জা: নবাবগঞ্জের হাসনাবাদে অনেক বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই গির্জাটি। গির্জার ভেতরের দিকটা বেশি আকর্ষণীয় এবং সামনে একটি বিশাল খোলা মাঠ রয়েছে। গির্জার পূর্ব পাশে রয়েছে দীঘি। চারপাশ সবুজ গাছগাছালি। পাখির কলতানি। এর সৌন্দর্য হাজারগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গির্জাটিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে কিছু খ্রিষ্টান মিশনারি ক্যাম্প।
খেলারামদাতার বাড়ি (আন্ধার কোঠা): এটি এক সময় সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। কিন্তু সংস্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এটি এখন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। এখনো মাটির উপর দুইতলা একটি জরাজীর্ণ ভবন দেখতে পাবেন। কথিত আছে এই পাঁচতলা ভবনটি এক রাতে তিনতলা পর্যন্ত মাটির নিচে চলে গিয়েছিল। ভবনটির উপরের তলায় একটি বড় চৌবাচ্চা আছে। কথিত আছে জমিদার খেলালামদা এর মা একদিন তার সন্তানের কাছে দুধ খেতে চাইলে সে তার মায়ের জন্য এই চৌবাচ্চা বানানোর নির্দেশ দেন। পরে সেই বিরাট চৌবাচ্চায় দুধ এবং কলা দিয়ে পূর্ণ করে তার মাকে সেই চৌবাচ্চায় নামিয়ে দেন। তার মা সাঁতার কেটে কেটে মনের সাধ মিটিয়ে দুধ খেয়েছিলেন। এই বাড়িটির পাশেও একটি বিরাট পুকুর আছে। কথিত আছে এই পুকুরের পাশে এসে কেউ কিছু চাইলে তার পর দিন তাই মিলে যেত। তবে এসব কাহিনীর সত্যতা কতটুকু তা নিয়ে কোনো সদুত্তর বা প্রমাণ নেই। এক সময় এই ভবনের নিচের তলাগুলোতে সিঁড়ি বেয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু সিড়িগুলো ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ায় এখন এর প্রবেশমুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই ভবনের ভেতরে অন্ধকার এতই ঘন যে অতি উজ্জ্বল আলোও এখানে পৌঁছাতে পারে না। এর জন্যই এই ভবনকে আন্ধার কোঠা বলা হয়।
কলাকোপা আনসার ক্যাম্প: জজ বাড়ির কাছেই কলাকোপা আনসার ক্যাম্প অবস্থিত। এটিও একটি দৃষ্টিনন্দন স্থান। ছায়া সুনিবিড় সুন্দর একটি পরিবেশ। পিকনিক স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আনসারদের বসবাসের জন্য অনেক বড় একটি এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই নয়নাভিরাম ক্যাম্পটি।
জজ বাড়ি: এটি নবাবগঞ্জের কলাকোপায় অবস্থিত। একটি সুন্দর বাগান ঘেরা এবং বিশালাকৃতির এই জমিদার বাড়িটি মূলত জজ বাড়ি নামে পরিচিত। বাড়ির পাশেই রয়েছে শাণ বাঁধানো পুকুর। রয়েছে পোষা হরিণের একটি খামার। বাগানের হাজারো রকমের ফুল দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। জমিদার বাড়িটি অতি প্রাচীনকালের ঐতিহ্যবাহী নকশায় তৈরি। যা কিছুক্ষণের জন্য হলেও পুরোনো দিনের কথা মনে করিয়ে দেবে। এই বাড়িটিতে প্রায়ই নাটক এবং চলচিত্রের শুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কোকিল প্যারি জমিদার বাড়ি: এই জমিদার বাড়িটি জজ বাড়ির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বলা যেতে পারে এটি জজ বাড়ির ওল্ড ভারসন। জজ বাড়ি বিভিন্ন সময়ে সংস্কার করা হলেও এটি রয়ে গেছে সেই আগে যেমনটি ছিল। এই জমিদার বাড়িতেও রয়েছে শত শত দৃষ্টিনন্দন ফুলের গাছ আর বাড়ির ঠিক সামনে রয়েছে বিশালাকৃতির স্বচ্ছ পানির পুকুর। রয়েছে বিশালাকৃতির পুকুর ঘাট।
বৌদ্ধ মন্দির: এই বৌদ্ধ মন্দিরটি কোকিল প্যারি জমিদার বাড়ির ঠিক বাইরে। মন্দিরটির ভেতরে একটি ভাঙা মূর্তি আছে। কথিত আছে ১৯৭১ সালে পাক বাহিনী এই মূর্তিটি ভেঙে রেখে গিয়েছিল। সংস্কারের অভাবে মন্দিরটির দেয়াল খসে খসে পড়ছে।
সাত মাথার মূর্তি: নবাবগঞ্জের মাঝির কান্দা নামক স্থানে অবস্থিত এই সাত মাথার মূর্তি। একটি বিরাট বটগাছের নিচে এই মূর্তিটি নির্মাণ করা করেছে হিন্দু সমপ্রদায়ের লোকজন। প্রতি বছর এই মূর্তিকে ঘিরে পূজা এবং মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ সময় বিপুলসংখ্যক লোকজনের মিলন ঘটে।
যেভাবে যেতে হবে: রাজধানী গুলিস্তান থেকে এন মল্লিক পরিবহনে নবাবগঞ্জের বান্দুরায় যেতে হবে। প্রায় বিশ মিনিট পরপর বাস ছেড়ে যায়। জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৭০-৮০ টাকা। বাস ছেড়ে দেয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে নামিয়ে দেবে আগলা মহাকবি কায়কোবাদ স্কুলের সামনে। ঘন্টা খানিক সময় কবির বাড়িতে অতিবাহিত করে অটোগাড়িতে চলে যাবেন বান্দুরায়। নতুন বান্দুরা ভাঙ্গা মসজিদে ঘুরে হাসনাবাদ গির্জায় চলে আসুন। এরপর চলে আসুন কলাকোপায় । নবাবগঞ্জ কিংবা দোহারে কোনো আবাসিক হোটেল নেই। এখানে রাতযাপনের কোনো ব্যবস্থা নেই। সুতরাং, বর্তমানে এক দিনের ভ্রমণ পরিকল্পনাই এখানকার জন্য উপযুক্ত। তাছাড়া ঢাকা থেকে খুব সহজেই দিনে দিনে ঘুরে আসা সম্ভব।
মহাকবি কায়কোবাদের জন্মভূমি: নবাবগঞ্জের আগলা নামক স্থানে মহাকবি কায়কোবাদ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই স্থানটিও ঘুরে দেখার মতো। বিশেষ করে যারা মহাকবি সম্পর্কে জানতে চান তারা বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন আগলায় আসলে। তার বাড়ির পাশেই মহাকবি কায়কোবাদ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পাশেই রয়েছে পোস্ট অফিস। যেখানে তিনি পোস্ট মাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ভাঙা মসজিদ: নবাবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে নতুন বান্দুরায় অবস্থিত ভাঙা মসজিদ। প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি। তবে মূল ভবন রয়েছে মাত্র ২ শতাংশ জমির ওপর। মসজিদটিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও নামাজের আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে।
মসজিদটিতে এবাদত করতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজে নবাবগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি থানার কয়েক হাজার নারী-পুরুষ নামাজির সমাগম হয়।
ধারণা করা হয়, তিন গম্বুজবিশিষ্ট ‘ভাঙা মসজিদ’ সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে নির্মিত। সে হিসাবে প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো মসজিদটি নবাবগঞ্জের কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় ১৬৫ ফুট সুউচ্চ একটি মিনার। মিনারটি ঢাকা দক্ষিণের সবচেয়ে বড় মিনার বলে জানা গেছে।
লোকমুখে প্রচলিত, ১৬০০ শতকে দিল্লি থেকে নদীপথে ঢাকা যাতায়াত করতেন মোগল সুবেদার ইসলাম খান চিশতি। তিনি নৌবহর নিয়ে যমুনা নদী হয়ে পাবনা ও মানিকগঞ্জ অংশে পদ্মা পাড়ি দিয়ে ইছামতী নদী দিয়ে ঢাকা আসতেন। রাতযাপন ও ইবাদত করার জন্য আনুমানিক ১৬১৫ সালে নদীর পাশেই মসজিদটি নির্মাণ করেন তিনি। কালের পরিবর্তনে ইছামতী নদী ভাঙতে ভাঙতে উত্তরদিকে চলে যায়। উল্লেখ্য, ১৬১০ সালে দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের সুবেদার ছিলেন ইসলাম খান চিশতি।
নির্মাণের সময় মসজিদের পাশে কোনো বসতি ছিল না। পুরো এলাকা ছিল বনাঞ্চল। ১৮৮০ সালে হিন্দু জমিদাররা ওইসব বনাঞ্চল পত্তন নেন। তখন সেখানে বসতি স্থাপন করার জন্য বনাঞ্চল কাটা আরম্ভ করে হিন্দুরা। বন কাটতে গিয়ে নজরে আসে এই মসজিদটি। যার ওপরের কিছু অংশ ভাঙা ছিল। সেই থেকেই এই মসজিদের নাম হয় ‘ভাঙা মসজিদ’ বা ‘গায়েবি মসজিদ’।
হাসনাবাদ গির্জা: নবাবগঞ্জের হাসনাবাদে অনেক বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই গির্জাটি। গির্জার ভেতরের দিকটা বেশি আকর্ষণীয় এবং সামনে একটি বিশাল খোলা মাঠ রয়েছে। গির্জার পূর্ব পাশে রয়েছে দীঘি। চারপাশ সবুজ গাছগাছালি। পাখির কলতানি। এর সৌন্দর্য হাজারগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গির্জাটিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে কিছু খ্রিষ্টান মিশনারি ক্যাম্প।
খেলারামদাতার বাড়ি (আন্ধার কোঠা): এটি এক সময় সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। কিন্তু সংস্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এটি এখন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। এখনো মাটির উপর দুইতলা একটি জরাজীর্ণ ভবন দেখতে পাবেন। কথিত আছে এই পাঁচতলা ভবনটি এক রাতে তিনতলা পর্যন্ত মাটির নিচে চলে গিয়েছিল। ভবনটির উপরের তলায় একটি বড় চৌবাচ্চা আছে। কথিত আছে জমিদার খেলালামদা এর মা একদিন তার সন্তানের কাছে দুধ খেতে চাইলে সে তার মায়ের জন্য এই চৌবাচ্চা বানানোর নির্দেশ দেন। পরে সেই বিরাট চৌবাচ্চায় দুধ এবং কলা দিয়ে পূর্ণ করে তার মাকে সেই চৌবাচ্চায় নামিয়ে দেন। তার মা সাঁতার কেটে কেটে মনের সাধ মিটিয়ে দুধ খেয়েছিলেন। এই বাড়িটির পাশেও একটি বিরাট পুকুর আছে। কথিত আছে এই পুকুরের পাশে এসে কেউ কিছু চাইলে তার পর দিন তাই মিলে যেত। তবে এসব কাহিনীর সত্যতা কতটুকু তা নিয়ে কোনো সদুত্তর বা প্রমাণ নেই। এক সময় এই ভবনের নিচের তলাগুলোতে সিঁড়ি বেয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু সিড়িগুলো ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ায় এখন এর প্রবেশমুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই ভবনের ভেতরে অন্ধকার এতই ঘন যে অতি উজ্জ্বল আলোও এখানে পৌঁছাতে পারে না। এর জন্যই এই ভবনকে আন্ধার কোঠা বলা হয়।
কলাকোপা আনসার ক্যাম্প: জজ বাড়ির কাছেই কলাকোপা আনসার ক্যাম্প অবস্থিত। এটিও একটি দৃষ্টিনন্দন স্থান। ছায়া সুনিবিড় সুন্দর একটি পরিবেশ। পিকনিক স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আনসারদের বসবাসের জন্য অনেক বড় একটি এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই নয়নাভিরাম ক্যাম্পটি।
জজ বাড়ি: এটি নবাবগঞ্জের কলাকোপায় অবস্থিত। একটি সুন্দর বাগান ঘেরা এবং বিশালাকৃতির এই জমিদার বাড়িটি মূলত জজ বাড়ি নামে পরিচিত। বাড়ির পাশেই রয়েছে শাণ বাঁধানো পুকুর। রয়েছে পোষা হরিণের একটি খামার। বাগানের হাজারো রকমের ফুল দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। জমিদার বাড়িটি অতি প্রাচীনকালের ঐতিহ্যবাহী নকশায় তৈরি। যা কিছুক্ষণের জন্য হলেও পুরোনো দিনের কথা মনে করিয়ে দেবে। এই বাড়িটিতে প্রায়ই নাটক এবং চলচিত্রের শুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কোকিল প্যারি জমিদার বাড়ি: এই জমিদার বাড়িটি জজ বাড়ির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বলা যেতে পারে এটি জজ বাড়ির ওল্ড ভারসন। জজ বাড়ি বিভিন্ন সময়ে সংস্কার করা হলেও এটি রয়ে গেছে সেই আগে যেমনটি ছিল। এই জমিদার বাড়িতেও রয়েছে শত শত দৃষ্টিনন্দন ফুলের গাছ আর বাড়ির ঠিক সামনে রয়েছে বিশালাকৃতির স্বচ্ছ পানির পুকুর। রয়েছে বিশালাকৃতির পুকুর ঘাট।
বৌদ্ধ মন্দির: এই বৌদ্ধ মন্দিরটি কোকিল প্যারি জমিদার বাড়ির ঠিক বাইরে। মন্দিরটির ভেতরে একটি ভাঙা মূর্তি আছে। কথিত আছে ১৯৭১ সালে পাক বাহিনী এই মূর্তিটি ভেঙে রেখে গিয়েছিল। সংস্কারের অভাবে মন্দিরটির দেয়াল খসে খসে পড়ছে।
সাত মাথার মূর্তি: নবাবগঞ্জের মাঝির কান্দা নামক স্থানে অবস্থিত এই সাত মাথার মূর্তি। একটি বিরাট বটগাছের নিচে এই মূর্তিটি নির্মাণ করা করেছে হিন্দু সমপ্রদায়ের লোকজন। প্রতি বছর এই মূর্তিকে ঘিরে পূজা এবং মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ সময় বিপুলসংখ্যক লোকজনের মিলন ঘটে।
যেভাবে যেতে হবে: রাজধানী গুলিস্তান থেকে এন মল্লিক পরিবহনে নবাবগঞ্জের বান্দুরায় যেতে হবে। প্রায় বিশ মিনিট পরপর বাস ছেড়ে যায়। জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৭০-৮০ টাকা। বাস ছেড়ে দেয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে নামিয়ে দেবে আগলা মহাকবি কায়কোবাদ স্কুলের সামনে। ঘন্টা খানিক সময় কবির বাড়িতে অতিবাহিত করে অটোগাড়িতে চলে যাবেন বান্দুরায়। নতুন বান্দুরা ভাঙ্গা মসজিদে ঘুরে হাসনাবাদ গির্জায় চলে আসুন। এরপর চলে আসুন কলাকোপায় । নবাবগঞ্জ কিংবা দোহারে কোনো আবাসিক হোটেল নেই। এখানে রাতযাপনের কোনো ব্যবস্থা নেই। সুতরাং, বর্তমানে এক দিনের ভ্রমণ পরিকল্পনাই এখানকার জন্য উপযুক্ত। তাছাড়া ঢাকা থেকে খুব সহজেই দিনে দিনে ঘুরে আসা সম্ভব।
No comments