ভাসানচর নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান by রুকনুজ্জামান অঞ্জন
দায়িত্বে নৌবাহিনী, অবকাঠামো উন্নয়ন নভেম্বরে, জুন-জুলাই থেকে রোহিঙ্গা স্থানান্তরঃ
বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) জন্য আশ্রয়স্থল
হিসেবে ‘ভাসানচর’কেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। দ্বীপটির প্রায় ১৩ হাজার একর জমির
অবকাঠামো উন্নয়নে একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করছে নৌবাহিনী, যার মধ্য দিয়ে
সেখানে ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থাসহ বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সুপেয় পানি,
পয়ঃব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি নিষ্কাশন, পুকুর খনন, স্কুল ও মসজিদ
নির্মাণ, অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন, সাইক্লোন শেল্টার স্টেশন, দুটি
হেলিপ্যাড নির্মাণসহ পুরো দ্বীপটিকে শরণার্থীদের বসবাসের উপযোগী করে তোলার
পরিকল্পনা রয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাসানচরের অবকাঠামো
উন্নয়নে নৌবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত জানিয়ে ভূমি
মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন। এরপর ওই চরের ভূমির উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো
গড়ে তোলার জন্য নৌবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেয় ভূমি
মন্ত্রণালয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্যাডে নীতিগত অনুমোদনে প্রধানমন্ত্রী
উল্লেখ করেন, ‘ভাসানচর দ্বীপের (পূর্বের ঠেঙ্গারচর) নিরাপত্তা বিধান,
বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও বনায়নের লক্ষ্যে
নৌবাহিনীকে দায়িত্ব প্রদানের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মতির প্রস্তাব
প্রেরণ করা যেতে পারে এবং সম্পূর্ণ চরটি বসবাসের উপযোগী সার্বিকভাবে
উন্নয়নের পর নৌবাহিনীর নৌফরোয়ার্ড বেইস স্থাপনের জন্য সুবিধামতো যে কোনো এক
পাশ থেকে উক্ত চরের প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দ/বন্দোবস্ত প্রদানের ব্যবস্থা
গ্রহণ করা যেতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের প্রস্তাবের পর সম্প্রতি ভূমি
মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শামসুর
রহমান শরীফ ভাসানচরের অবকাঠামো উন্নয়নে নৌবাহিনীকে এই দায়িত্ব দেওয়ার কথা
জানান। গত আগস্টে অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে
প্রধানমন্ত্রী নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন বিধায় সে মোতাবেক নৌবাহিনী দ্বীপটির
উন্নয়নের জন্য কাজ করবে। জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার ও অন্যান্য
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং সংস্থা নৌবাহিনীকে বিধিবলে সহায়তা প্রদান করবেন।’
তবে বাংলাদেশে জমির অপ্রতুলতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে যত্রতত্র স্থাপনা
নির্মাণ না করে পরিকল্পিতভাবে রেস্টহাউস, খেলার মাঠ, স্কুল প্রশিক্ষণ মাঠ,
জলাশয় ইত্যাদি নির্মাণ করতে হবে বলে মন্ত্রিসভায় অভিমত প্রকাশ করেন। ২৮
আগস্ট ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে এই সভার কার্যবিবরণী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে
পাঠানো হয় যাতে ভূমিমন্ত্রীর স্বাক্ষর রয়েছে। জানা গেছে, নীতিগত অনুমোদনের
পর গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা, নৌবাহিনী প্রধান,
প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার
(বর্তমানে সচিব) এক কর্মকর্তাসহ উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল ভাসানচর
পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ভাসানচরে কোনো স্থায়ী
জনবসতি নেই।
সেখানে আনুমানিক ৮ হাজার মহিষ প্রতিপালিত হচ্ছে। ১৫/২০ জন রাখাল অস্থায়ী সেন্টার নির্মাণ করে দ্বীপে বসবাস করছেন।
এ অবস্থায় ভাসানচর অবকাঠামো উন্নয়নে নৌবাহিনী প্রাথমিক কার্যক্রম শুরুর জন্য ৫০ কোটি টাকা চেয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়ে। গত ২ অক্টোবর পাঠানো চিঠিতে থোক বরাদ্দ হিসেবে এই অর্থ চাওয়া হয়।
প্রস্তাবে নৌবাহিনী জানায়, ভাসানচরকে সম্পূর্ণ বসবাস উপযোগী করে গড়ে তুলতে তারা একটি ‘মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন’ করছে এবং এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে সেটিকে প্রকল্প হিসেবে অনুমোদন নেওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ ছাড়া ওই পরিকল্পনা প্রণয়নে বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন হবে বিধায় তাতে প্রশাসনিক অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ন্যূনতম ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগবে। এ প্রেক্ষিতে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে শুরু করার জন্য আসন্ন নভেম্বর মাস থেকেই তারা কাজটি শুরু করতে চাইছেন। আর এজন্য থোক বরাদ্দ হিসেবে ৫০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।
নভেম্বর থেকেই কাজ শুরুর যৌক্তিকতা দেখিয়ে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘দ্বীপটি সমুদ্র তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল বিধায় ভরা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে এর অধিকাংশ এলাকা নিমজ্জিত থাকে। ফলে এ সময় ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায়, মৌসুমি বৃষ্টিপাত, সাইক্লোন সিগন্যাল ও সামগ্রিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে শুধু শীতকাল ব্যতীত বছরের অন্যান্য সময়ে বর্ণিত কার্যাদি বাস্তবায়ন সম্ভব না। সে ক্ষেত্রে বছরের শুধু নভেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত ওই অঞ্চলে উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হবে, যাতে জুন-জুলাই হতেই ওই এলাকায় শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়। অন্যথায় পরবর্তী শুষ্ক মৌসুম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলে শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যক্রম এক বছর বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
নৌবাহিনী আরও বলেছে, ‘দ্বীপটির ভূমি সুগঠিত হলেও সমুদ্র তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত বিধায় এপ্রিল হতে অক্টোবরের ভরা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে এর অধিকাংশ এলাকা নিমজ্জিত হয়। ইতিমধ্যে দ্বীপটিতে নৌবাহিনীর নিজস্ব তহবিল থেকে একটি হেলিপ্যাড নির্মাণসহ প্রাথমিক অবকাঠামো হিসেবে একটি কটেজ, ৪টি শেড ও বেশ কিছু টয়লেটসহ যাতায়াতের জন্য সীমিত পরিসরের ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। চরের পশ্চিম পাশ ভাঙনপ্রবণ এলাকা বিধায় ড্রামশিট, বাঁশ এবং বালুর বস্তা দিয়ে ১০০ মিটার দীর্ঘ একটি পরীক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণ, একটি পন্টুন, একটি মুরিং বয় স্থাপনসহ ছোটবড় বিভিন্ন প্রাথমিক কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন।’
নৌবাহিনীর এই প্রস্তাবটিতে স্বাক্ষর রয়েছে এমন একজন কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে ওই কর্মকর্তা জানান, তিনি শুধু মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবটি পাঠানোর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করার মতো দায়িত্বপ্রাপ্ত নন।
সেখানে আনুমানিক ৮ হাজার মহিষ প্রতিপালিত হচ্ছে। ১৫/২০ জন রাখাল অস্থায়ী সেন্টার নির্মাণ করে দ্বীপে বসবাস করছেন।
এ অবস্থায় ভাসানচর অবকাঠামো উন্নয়নে নৌবাহিনী প্রাথমিক কার্যক্রম শুরুর জন্য ৫০ কোটি টাকা চেয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়ে। গত ২ অক্টোবর পাঠানো চিঠিতে থোক বরাদ্দ হিসেবে এই অর্থ চাওয়া হয়।
প্রস্তাবে নৌবাহিনী জানায়, ভাসানচরকে সম্পূর্ণ বসবাস উপযোগী করে গড়ে তুলতে তারা একটি ‘মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন’ করছে এবং এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে সেটিকে প্রকল্প হিসেবে অনুমোদন নেওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ ছাড়া ওই পরিকল্পনা প্রণয়নে বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন হবে বিধায় তাতে প্রশাসনিক অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ন্যূনতম ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগবে। এ প্রেক্ষিতে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে শুরু করার জন্য আসন্ন নভেম্বর মাস থেকেই তারা কাজটি শুরু করতে চাইছেন। আর এজন্য থোক বরাদ্দ হিসেবে ৫০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।
নভেম্বর থেকেই কাজ শুরুর যৌক্তিকতা দেখিয়ে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘দ্বীপটি সমুদ্র তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল বিধায় ভরা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে এর অধিকাংশ এলাকা নিমজ্জিত থাকে। ফলে এ সময় ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায়, মৌসুমি বৃষ্টিপাত, সাইক্লোন সিগন্যাল ও সামগ্রিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে শুধু শীতকাল ব্যতীত বছরের অন্যান্য সময়ে বর্ণিত কার্যাদি বাস্তবায়ন সম্ভব না। সে ক্ষেত্রে বছরের শুধু নভেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত ওই অঞ্চলে উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হবে, যাতে জুন-জুলাই হতেই ওই এলাকায় শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়। অন্যথায় পরবর্তী শুষ্ক মৌসুম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলে শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যক্রম এক বছর বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
নৌবাহিনী আরও বলেছে, ‘দ্বীপটির ভূমি সুগঠিত হলেও সমুদ্র তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত বিধায় এপ্রিল হতে অক্টোবরের ভরা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে এর অধিকাংশ এলাকা নিমজ্জিত হয়। ইতিমধ্যে দ্বীপটিতে নৌবাহিনীর নিজস্ব তহবিল থেকে একটি হেলিপ্যাড নির্মাণসহ প্রাথমিক অবকাঠামো হিসেবে একটি কটেজ, ৪টি শেড ও বেশ কিছু টয়লেটসহ যাতায়াতের জন্য সীমিত পরিসরের ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। চরের পশ্চিম পাশ ভাঙনপ্রবণ এলাকা বিধায় ড্রামশিট, বাঁশ এবং বালুর বস্তা দিয়ে ১০০ মিটার দীর্ঘ একটি পরীক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণ, একটি পন্টুন, একটি মুরিং বয় স্থাপনসহ ছোটবড় বিভিন্ন প্রাথমিক কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন।’
নৌবাহিনীর এই প্রস্তাবটিতে স্বাক্ষর রয়েছে এমন একজন কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে ওই কর্মকর্তা জানান, তিনি শুধু মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবটি পাঠানোর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করার মতো দায়িত্বপ্রাপ্ত নন।
No comments