কাকা-রবিনহোই তো এই ব্রাজিলের আলো
সেই প্রিসিলাকে আর খুঁজে পাওয়া গেল না। এলিস পার্ক স্টেডিয়ামের হলুদ-সবুজ অরণ্যে কোথায় আর খুঁজে পাওয়া যাবে কাকা-রবিনহো ভক্ত ব্রাজিল-কন্যাকে? অরণ্যটা আরও ঘন হলো দক্ষিণ আফ্রিকার বাফানা বাফানা সমর্থকদের সৌজন্যে। বাফানা বাফানাদের হলুদ-সবুজ জার্সিগুলোও এই রাতে মিলে গেল ব্রাজিলের সঙ্গে। বুকের কাছে যেখানে আগে লেখা ছিল বাফানা বাফানা, সেখানে এখন সেলেসাও। মার্কার কলমের কালিতে জার্সিগুলো বদলে ফেলেছে নাম।
প্রিসিলা হয়তো নিজের মতো করে কোথাও চিলির বিপক্ষে ব্রাজিলের বিধ্বংসী জয় উদ্যাপন করছে। হয়তো কাকা আর রবিনহোর জন্য নতমস্তকে বসে গেছে প্রার্থনায়, ‘হে ঈশ্বর, আর মাত্র তিনটি ম্যাচের জন্য এই জুটিকে সুস্থির রাখো।’
সত্যিকার অর্থে কাকা-রবিনহো জুটিটা স্ফুলিঙ্গ ছড়াল একটাই মাত্র মুহূর্তে। একটা জাদুকরি সাম্বা ছন্দে রবিনহো একটু আড়াআড়ি পাসে বলটা দিলেন কাকাকে। কাকা তা বাড়িয়ে দিলেন লুইস ফ্যাবিয়ানোকে। আর ফ্যাবিয়ানো গোলরক্ষককে নিমেষে হকচকিত করে বল জড়িয়ে দিলেন জালে। খেলার তখন মাত্রই ৩৮ মিনিট, ব্রাজিল চিলির যাবতীয় হুমকিকে কফিনবন্দী করে এগিয়ে গেল ২-০ ব্যবধানে। ম্যাচটা তখনই মুঠোবন্দী হয়ে পড়ল ব্রাজিলের। রামিরেসের পাস থেকে রবিনহোর গোলে বাকি সব প্রত্যাশাও আশা করা যায় পূরণ হয়ে গেল ৫৯ মিনিটে।
এই ব্রাজিল উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়ানো দল। এই ব্রাজিলের গায়ে এখন চ্যাম্পিয়নের রূপের ঝলকানি। তার পরও ব্রাজিলের মধ্যে কিসের যেন অভাব ঠেকছে অনেকের কাছে। মিডিয়া সেন্টারে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আসা সাংবাদিকেরা দ্বিধাবিভক্ত। ‘জোগো বনিতো’ প্রত্যাশী অনেক ব্রাজিল সমর্থকও অকুণ্ঠ মনে আনন্দে ভাসছে না। অজস্র আনন্দবিন্দু দিয়ে গাঁথা ব্রাজিলের ঠাসবুনোন ফুটবল কোথায়? হেক্সা এলে আসবে মরণোত্তর ব্রাজিলের হাতে।
ব্রাজিল কোচ কার্লোস দুঙ্গার এসব কথায় কান দেওয়ার দরকার নেই। তিনি বলে দিয়েছেন, ‘প্রতিটা ম্যাচেই উন্নতির চিহ্ন দেখিয়ে এ ম্যাচে আমার দল প্রায় প্রত্যাশিত রূপে ফিরেছে। আমার দল দেখিয়ে দিয়েছে, কতটা ভারসাম্য আছে সবখানে।’ একেবারে খাঁটি কথা। এই দলটির রক্ষণ যেন সুই ফোটানো যায় না এমন। মাঝমাঠ প্রতিপক্ষের সামনে যেন কাপালিক, বল কেড়ে নিতে এলেই রক্ত লাল চোখে তেড়ে যায়। এই দলটি বিশ্বের তাবৎ ফুটবল-শক্তির একটু একটু করে তুলে নিয়েছে তাদের রেসিপিতে। এরা প্রতিপক্ষকে আহ্বান জানায়, এসো আমাদের সীমানায়। তারপর তাদের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে ঝড়ের বেগে যায় পাল্টা আক্রমণে। তারা যেন নীল জার্সির ইতালি! এরা প্রথম গোল পাওয়ার জন্য বিরতিহীনভাবে শট নিতে থাকে প্রতিপক্ষের পোস্ট লক্ষ্য করে। বাঁ প্রান্ত, ডান প্রান্ত, যেকোনো জায়গা থেকে। এরা তখন জার্মানির চেহারায়। এই ব্রাজিল কর্নার কিক থেকে গোল করতে ইংলিশদের মতো দক্ষ। এই ব্রাজিল সৃষ্টিশীল আনন্দদায়ী মুহূর্তও উপহার দিতে পারে। নেই নেই হাহাকারের মধ্যেও কাকা-রবিনহো জুটি যেমন কিছু মুহূর্ত সৃষ্টি করল। এই সেলেসাও সবকিছুর জন্য প্রস্তুত। এরা গতি দিয়ে গতিকে সামাল দেওয়ার জন্য কুণ্ঠাবোধ করে না। চিলি গতিসম্পন্ন দল জেনেই তাই দুঙ্গা নামিয়ে দিয়েছিলেন রামিরেস ও দানি আলভেজকে। জোগো বনিতোর দরকার তো নেই, দরকার আছে সৃষ্টিশীল দুই খেলোয়াড়কে—যাঁরা তাঁদের পায়ের ছন্দে ম্যাচের রূপ বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। কাকা ও রবিনহো সেই দুজন।
সংবাদ সম্মেলনে দুঙ্গার গম্ভীর মুখে আনন্দ জেগে উঠল ব্রাজিল তাঁর প্রত্যাশামতো খেলল বলেই। তবে আনন্দের পাশে একটা উদ্বেগও আছে ব্রাজিল কোচের। কাকা যে হলুদ কার্ডের হ্যাটট্রিক করে বসলেন! ম্যাচের ৩০ মিনিটে আর্তুরো ভিদালকে ফাউল করে হলুদ কার্ড পেয়েছেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ফুটবলারটি। আইভরিকোস্টের সঙ্গে দুই হলুদ কার্ড পাওয়া কাকা আবার কেন রেফারির খাতায় কালো দাগ পাবেন? তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন কাকাকে। মোটেই বকুনি দেওয়ার মতো করে নয়, ‘এটা একটা সমস্যা। কাকাকে বুঝতে হবে ব্রাজিলের জন্য তাকে কতটা দরকার।’
কাকা কেন এমন করছেন? বুকের গভীরের যন্ত্রণা থেকে! ‘রবিনহো মাঠ আলো করছে, গোলও পেয়ে গেল, আর আমি এখনো কিছুই দেখাতে পারলাম না’—এমন উপলব্ধির যন্ত্রণা? তবে এই অপ্রকাশিত কাকার পেছনেই দেখা যাচ্ছে লম্বা সমর্থনের মিছিল। রবিনহোর পাশে কাকার খণ্ডিত উপস্থিতিই নাকি হলুদ-সবুজ অরণ্যে অনেক প্রাপ্তি! সামনে নিশ্চয়ই ডানা মেলে ওড়ার বড় আকাশটা তিনি খুঁজে নেবেন।
প্রিসিলা হয়তো নিজের মতো করে কোথাও চিলির বিপক্ষে ব্রাজিলের বিধ্বংসী জয় উদ্যাপন করছে। হয়তো কাকা আর রবিনহোর জন্য নতমস্তকে বসে গেছে প্রার্থনায়, ‘হে ঈশ্বর, আর মাত্র তিনটি ম্যাচের জন্য এই জুটিকে সুস্থির রাখো।’
সত্যিকার অর্থে কাকা-রবিনহো জুটিটা স্ফুলিঙ্গ ছড়াল একটাই মাত্র মুহূর্তে। একটা জাদুকরি সাম্বা ছন্দে রবিনহো একটু আড়াআড়ি পাসে বলটা দিলেন কাকাকে। কাকা তা বাড়িয়ে দিলেন লুইস ফ্যাবিয়ানোকে। আর ফ্যাবিয়ানো গোলরক্ষককে নিমেষে হকচকিত করে বল জড়িয়ে দিলেন জালে। খেলার তখন মাত্রই ৩৮ মিনিট, ব্রাজিল চিলির যাবতীয় হুমকিকে কফিনবন্দী করে এগিয়ে গেল ২-০ ব্যবধানে। ম্যাচটা তখনই মুঠোবন্দী হয়ে পড়ল ব্রাজিলের। রামিরেসের পাস থেকে রবিনহোর গোলে বাকি সব প্রত্যাশাও আশা করা যায় পূরণ হয়ে গেল ৫৯ মিনিটে।
এই ব্রাজিল উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়ানো দল। এই ব্রাজিলের গায়ে এখন চ্যাম্পিয়নের রূপের ঝলকানি। তার পরও ব্রাজিলের মধ্যে কিসের যেন অভাব ঠেকছে অনেকের কাছে। মিডিয়া সেন্টারে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আসা সাংবাদিকেরা দ্বিধাবিভক্ত। ‘জোগো বনিতো’ প্রত্যাশী অনেক ব্রাজিল সমর্থকও অকুণ্ঠ মনে আনন্দে ভাসছে না। অজস্র আনন্দবিন্দু দিয়ে গাঁথা ব্রাজিলের ঠাসবুনোন ফুটবল কোথায়? হেক্সা এলে আসবে মরণোত্তর ব্রাজিলের হাতে।
ব্রাজিল কোচ কার্লোস দুঙ্গার এসব কথায় কান দেওয়ার দরকার নেই। তিনি বলে দিয়েছেন, ‘প্রতিটা ম্যাচেই উন্নতির চিহ্ন দেখিয়ে এ ম্যাচে আমার দল প্রায় প্রত্যাশিত রূপে ফিরেছে। আমার দল দেখিয়ে দিয়েছে, কতটা ভারসাম্য আছে সবখানে।’ একেবারে খাঁটি কথা। এই দলটির রক্ষণ যেন সুই ফোটানো যায় না এমন। মাঝমাঠ প্রতিপক্ষের সামনে যেন কাপালিক, বল কেড়ে নিতে এলেই রক্ত লাল চোখে তেড়ে যায়। এই দলটি বিশ্বের তাবৎ ফুটবল-শক্তির একটু একটু করে তুলে নিয়েছে তাদের রেসিপিতে। এরা প্রতিপক্ষকে আহ্বান জানায়, এসো আমাদের সীমানায়। তারপর তাদের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে ঝড়ের বেগে যায় পাল্টা আক্রমণে। তারা যেন নীল জার্সির ইতালি! এরা প্রথম গোল পাওয়ার জন্য বিরতিহীনভাবে শট নিতে থাকে প্রতিপক্ষের পোস্ট লক্ষ্য করে। বাঁ প্রান্ত, ডান প্রান্ত, যেকোনো জায়গা থেকে। এরা তখন জার্মানির চেহারায়। এই ব্রাজিল কর্নার কিক থেকে গোল করতে ইংলিশদের মতো দক্ষ। এই ব্রাজিল সৃষ্টিশীল আনন্দদায়ী মুহূর্তও উপহার দিতে পারে। নেই নেই হাহাকারের মধ্যেও কাকা-রবিনহো জুটি যেমন কিছু মুহূর্ত সৃষ্টি করল। এই সেলেসাও সবকিছুর জন্য প্রস্তুত। এরা গতি দিয়ে গতিকে সামাল দেওয়ার জন্য কুণ্ঠাবোধ করে না। চিলি গতিসম্পন্ন দল জেনেই তাই দুঙ্গা নামিয়ে দিয়েছিলেন রামিরেস ও দানি আলভেজকে। জোগো বনিতোর দরকার তো নেই, দরকার আছে সৃষ্টিশীল দুই খেলোয়াড়কে—যাঁরা তাঁদের পায়ের ছন্দে ম্যাচের রূপ বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। কাকা ও রবিনহো সেই দুজন।
সংবাদ সম্মেলনে দুঙ্গার গম্ভীর মুখে আনন্দ জেগে উঠল ব্রাজিল তাঁর প্রত্যাশামতো খেলল বলেই। তবে আনন্দের পাশে একটা উদ্বেগও আছে ব্রাজিল কোচের। কাকা যে হলুদ কার্ডের হ্যাটট্রিক করে বসলেন! ম্যাচের ৩০ মিনিটে আর্তুরো ভিদালকে ফাউল করে হলুদ কার্ড পেয়েছেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ফুটবলারটি। আইভরিকোস্টের সঙ্গে দুই হলুদ কার্ড পাওয়া কাকা আবার কেন রেফারির খাতায় কালো দাগ পাবেন? তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন কাকাকে। মোটেই বকুনি দেওয়ার মতো করে নয়, ‘এটা একটা সমস্যা। কাকাকে বুঝতে হবে ব্রাজিলের জন্য তাকে কতটা দরকার।’
কাকা কেন এমন করছেন? বুকের গভীরের যন্ত্রণা থেকে! ‘রবিনহো মাঠ আলো করছে, গোলও পেয়ে গেল, আর আমি এখনো কিছুই দেখাতে পারলাম না’—এমন উপলব্ধির যন্ত্রণা? তবে এই অপ্রকাশিত কাকার পেছনেই দেখা যাচ্ছে লম্বা সমর্থনের মিছিল। রবিনহোর পাশে কাকার খণ্ডিত উপস্থিতিই নাকি হলুদ-সবুজ অরণ্যে অনেক প্রাপ্তি! সামনে নিশ্চয়ই ডানা মেলে ওড়ার বড় আকাশটা তিনি খুঁজে নেবেন।
No comments