মালেক-পলক আজমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়েছে মঙ্গলবার। বুধবার শুধু দুই ঘণ্টা অফিস করেছেন তারা। তবে বৃহস্পতিবার দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনেই সাবেক তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত দিয়েছে ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের নেতৃত্বাধীন নয়া কমিশন। ক্ষমতা অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও তাদের পরিবারের সদস্যদের  বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করেছে সংস্থাটি।

দুদক সূত্র জানায়, মামলায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে ৬১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, তার ছেলে রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। সাবেক ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ  ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। আর সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলায় ৭২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ  সরকার পতনের পর তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছিল। অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দেশ-বিদেশে তাদের আরও সম্পদ রয়েছে কিনা মামলার তদন্তকালে তা খতিয়ে দেখা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাহিদ মালেক নিজ নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে ৩৪টি ব্যাংক হিসাব খুলে পরস্পর যোগসাজশে ১৪৩ কোটি ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৭ টাকা জমা ও ১১৫ কোটি ৮৫ লাখ ৬ হাজার ৪৬৫ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তর করেছেন। তিনি নিজের অবৈধ অর্জিত ১১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৪ হাজার ১৬১ টাকা তার পুত্র রাহাত মালিকের নামে অর্জন দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া জাহিদ মালেকের স্ত্রী শাবানা মালেক, মেয়ে সাদিয়া মালেক ও সিনথিয়া মালেক এবং পুত্রবধূ সাকিবা মালেক জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদের সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করা হয়েছে।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ২৪টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা ও ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা তুলে নিয়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজমের ৬০টি ব্যাংক হিসাবে ৭২৫ কোটি ৭০ লাখ ৪২ হাজার ২৩২ টাকা জমা ও ৭২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭১৫ টাকা তুলে নিয়েছেন।

এদিকে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম,  ভোলা-৩ আসনের সাবেক সদস্য নূর নবী চৌধুরী শাওন, হবিগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য আবু জাহির, নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের বিদেশযাত্রার নিষেধাজ্ঞার  দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। 

mzamin

No comments

Powered by Blogger.