সিরিয়ার বিদ্রোহীরা ভেঙে দেবে নিরাপত্তা সংস্থা, পলাতকদের ফেরত দেয়ার আহ্বান
রোববার দিনের শুরুতে পালিয়ে রাশিয়া চলে যান বাশার আল আসাদ। সেখানে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়েছে। জোলানি আলাদা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, কারাগারে হত্যা ও নির্যাতনে যারা অংশ নিয়েছিল, তাদের কোনো ক্ষমা নেই। তার ভাষায়, আমরা তাদেরকে সিরিয়ায় ধরবোই। যারা পালিয়ে গেছে, তাদেরকে যাতে বিচার করা যায়- এ জন্য তাদেরকে যেন দেশে ফেরত পাঠায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলো।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের সঙ্গে সঙ্গে সিরিয়ানরা দ্রুত ছুটে যান কুখ্যাত ওই কারাগারে। হন্যে হয়ে তাদের প্রিয়জনকে খুঁজতে থাকেন। তুর্কিভিত্তিক এসোসিয়েশন অব ডিটেইনিজ অ্যান্ড দ্য মিসিং ইন সেদনিয়া প্রিজনস (এডিএমএসপি) ২০২২ সালে এক রিপোর্টে বলে যে, ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে কার্যত সেদনিয়া একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।
ওদিকে বাশার আল আসাদ সরকারের সময়কার সব নিরাপত্তা সংস্থাকে ভেঙে দেয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা দিয়েছেন জোলানি। তবে তা কবে নাগাদ সংস্কার করা হবে সে বিষয়ে পরিষ্কার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ওদিকে দেশের ভেতরে সামরিক স্থাপনাগুলোতে অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে সিরিয়াকে পঙ্গু করে দিচ্ছে ইসরাইল। এক বিবৃতিতে জোলানি বলেছেন, তার গ্রুপ তাদের রাসায়নিক অস্ত্রের স্থাপনাগুলোকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পেন্টাগনের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাব্রিনা সিং বলেছেন, জোলানির বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তারা কাজ দেখতে চায়। তিনি বলেন, আমাদের দৃষ্টি হলো ওইখানে যে, এসব রাসায়নিক অস্ত্র যাতে ভুল হাতে না যায়। সিরিয়া জুড়ে শত শত হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। জব্দ করেছে বহু সামরিক সম্পদ। স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদনের সঙ্গে সন্দেহজনক সম্পর্ক আছে এমন একটি গবেষণা কেন্দ্রকে টার্গেট করেছে সিরিয়া। তবে ইসরাইলের দাবি, ‘উগ্রপন্থিদের’ হাতে অস্ত্র যাওয়া থামাতে তারা পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতিসংঘের রাসায়নিক পর্যবেক্ষক সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল উইপনস রাসায়নিক অস্ত্রকে মানুষের মৃত্যু ও ক্ষতির কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে এসব অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ। তবে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সিরিয়ায় কমপক্ষে ৮৫ বার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার প্রামাণ্য আকারে উপস্থাপন করেছেন। এর বেশির ভাগের জন্য দায়ী করা হয় ক্ষমতাচ্যুত বাশার সরকারকে। তবে তার সরকার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ একেবারে অস্বীকার করেছে।
No comments