সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ দেয় মাত্র তিন ব্যাংক by গোলাম মওলা
বেসরকারি
ব্যাংকের মালিকরা ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে (এক অঙ্কে) নামিয়ে আনার
ঘোষণা দিয়ে বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। কিন্তু এই ব্যাংকগুলো এখনও ঋণের
বিপরীতে উচ্চ সুদারোপ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সরকারি-বেসরকারি
মিলে মাত্র তিনটি ব্যাংক ঋণের বিপরীতে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে এনেছে।
এর মধ্যে রয়েছে একটি বেসরকারি ব্যাংক, একটি বিশেষায়িত খাতের ব্যাংক ও একটি
বিদেশি খাতের ব্যাংক। যদিও ব্যাংক মালিকদের ঘোষণা অনুযায়ী, গত বছরের ১
জুলাই থেকে ঋণের সুদহার হবে ৯ শতাংশ। কিন্তু সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন করেছে
মাত্র তিনটি ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৫৪টিই এখন দুই অঙ্কে সুদ নিচ্ছে। এর মধ্যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে দেওয়া ঋণের বিপরীতে ১৫ শতাংশেরও বেশি হারে সুদারোপ করছে কোনও কোনও ব্যাংক।
২০১৯ সালের মার্চ মাসের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বেসরকারি খাতের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক তাদের বিতরণ করা ঋণে ৯ শতাংশ হারে সুদারোপ করেছে। সরকারি খাতের বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও বিদেশি খাতের সিটি ব্যাংক এনএ ৯ শতাংশ হারে সুদ নিচ্ছে। বাকি সব ব্যাংক গ্রাহকদের ডাবল ডিজিট (দুই অঙ্কে) সুদে ঋণ দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, খাতভিত্তিক যেমন– রফতানি খাতে ৭ শতাংশ ও কৃষিতে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করছে ব্যাংকগুলো। কয়েকটি ব্যাংক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে দীর্ঘমেয়াদি বৃহৎ ঋণও বিতরণ করছে। তবে অন্য খাতে যেমন– এসএমই ঋণ, ভোক্তা ঋণ, গৃহ ঋণ, ট্রেডিংসহ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করছে ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ হারে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এসএমই গ্রাহক গোলাম কিবরিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারিতে সাড়ে ১৪ শতাংশ হারে সুদারোপ করেছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। ১ মার্চ থেকে ব্যাংকটি দেড় শতাংশ সুদহার বাড়িয়ে ১৬ শতাংশ হারে সুদারোপের বিষয়ে চিঠি দিয়েছে। এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ব্যাংকের বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছরের ১ মার্চ থেকে ১৬ শতাংশ হারে সুদারোপ করা হয়েছে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৩১টি ব্যাংক তাদের ঋণের গড় সুদহার বাড়িয়েছে। আগের মাসে (জানুয়ারি) ঋণের সুদহার বাড়িয়েছিল ২৮টি ব্যাংক। আর ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ছিল ২৭টি। অর্থাৎ প্রতি মাসে ঋণের সুদহার বাড়ানো ব্যাংকের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে যেসব ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়িয়েছে তার মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকই রয়েছে ২১টি। এছাড়া, বিদেশি ছয়টি, রাষ্ট্রায়ত্ত দু’টি ও বিশেষায়িত একটি ব্যাংকও রয়েছে এই তালিকায়। আর যেসব ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবা দিচ্ছে, তারা এই সেবার বিপরীতে দুই অঙ্কের সুদারোপ করছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ক্রেডিট কার্ডে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে কোনোভাবেই নামবে না।
ব্যাংকের এমডিরা বলছেন, ডাবল ডিজিট সুদে আমানত সংগ্রহ করে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ বিতরণ করা মানেই ব্যাংককে লোকসানের দিকে নিয়ে যাওয়া। খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণে ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামানো সম্ভব হচ্ছে না বলেও তারা জানান।
নাম প্রকাশ না করে নতুন প্রজন্মের একটি ব্যাংকের এমডি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের ১০ শতাংশ হারে আমানত নিতে হচ্ছে। এমনকি ১০ শতাংশের কমে সরকারি আমানতও পাচ্ছি না। তাহলে কীভাবে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ দেবো।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘কম সুদে সরকারি আমানত যদি পাওয়া যায়, তাহলেই কেবল কম সুদে ঋণ দেওয়া সম্ভব।’
অন্যদিকে, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদোক্তারা বলছেন, ঋণের সুদহার বাড়ায় তাদের সমস্যা হচ্ছে। এতে শিল্প-কারখানা চালু রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। উচ্চ সুদের কারণে নতুন শিল্প বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যাংকের মালিকরা বেশ কয়েকটি সুবিধা নিয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংক পরিচালকদের মেয়াদ ও সংখ্যা দুটোই বাড়িয়েছেন। ব্যাংকের করপোরেট কর আগের চেয়ে আড়াই শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিএবি’র চাহিদা অনুযায়ী সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা, ঋণ আমানতের হার (এডিআর) সমন্বয়সীমার সময় বাড়ানো এবং রেপো রেট ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখা ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর) এক শতাংশ কমিয়ে সাড়ে পাঁচ শতাংশ করা এবং এডিআর সমন্বয়ের সময়সীমা কয়েকবার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৫৪টিই এখন দুই অঙ্কে সুদ নিচ্ছে। এর মধ্যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে দেওয়া ঋণের বিপরীতে ১৫ শতাংশেরও বেশি হারে সুদারোপ করছে কোনও কোনও ব্যাংক।
২০১৯ সালের মার্চ মাসের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বেসরকারি খাতের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক তাদের বিতরণ করা ঋণে ৯ শতাংশ হারে সুদারোপ করেছে। সরকারি খাতের বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও বিদেশি খাতের সিটি ব্যাংক এনএ ৯ শতাংশ হারে সুদ নিচ্ছে। বাকি সব ব্যাংক গ্রাহকদের ডাবল ডিজিট (দুই অঙ্কে) সুদে ঋণ দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, খাতভিত্তিক যেমন– রফতানি খাতে ৭ শতাংশ ও কৃষিতে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করছে ব্যাংকগুলো। কয়েকটি ব্যাংক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে দীর্ঘমেয়াদি বৃহৎ ঋণও বিতরণ করছে। তবে অন্য খাতে যেমন– এসএমই ঋণ, ভোক্তা ঋণ, গৃহ ঋণ, ট্রেডিংসহ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করছে ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ হারে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এসএমই গ্রাহক গোলাম কিবরিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারিতে সাড়ে ১৪ শতাংশ হারে সুদারোপ করেছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। ১ মার্চ থেকে ব্যাংকটি দেড় শতাংশ সুদহার বাড়িয়ে ১৬ শতাংশ হারে সুদারোপের বিষয়ে চিঠি দিয়েছে। এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ব্যাংকের বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছরের ১ মার্চ থেকে ১৬ শতাংশ হারে সুদারোপ করা হয়েছে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৩১টি ব্যাংক তাদের ঋণের গড় সুদহার বাড়িয়েছে। আগের মাসে (জানুয়ারি) ঋণের সুদহার বাড়িয়েছিল ২৮টি ব্যাংক। আর ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ছিল ২৭টি। অর্থাৎ প্রতি মাসে ঋণের সুদহার বাড়ানো ব্যাংকের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে যেসব ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়িয়েছে তার মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকই রয়েছে ২১টি। এছাড়া, বিদেশি ছয়টি, রাষ্ট্রায়ত্ত দু’টি ও বিশেষায়িত একটি ব্যাংকও রয়েছে এই তালিকায়। আর যেসব ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবা দিচ্ছে, তারা এই সেবার বিপরীতে দুই অঙ্কের সুদারোপ করছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ক্রেডিট কার্ডে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে কোনোভাবেই নামবে না।
ব্যাংকের এমডিরা বলছেন, ডাবল ডিজিট সুদে আমানত সংগ্রহ করে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ বিতরণ করা মানেই ব্যাংককে লোকসানের দিকে নিয়ে যাওয়া। খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণে ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামানো সম্ভব হচ্ছে না বলেও তারা জানান।
নাম প্রকাশ না করে নতুন প্রজন্মের একটি ব্যাংকের এমডি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের ১০ শতাংশ হারে আমানত নিতে হচ্ছে। এমনকি ১০ শতাংশের কমে সরকারি আমানতও পাচ্ছি না। তাহলে কীভাবে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ দেবো।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘কম সুদে সরকারি আমানত যদি পাওয়া যায়, তাহলেই কেবল কম সুদে ঋণ দেওয়া সম্ভব।’
অন্যদিকে, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদোক্তারা বলছেন, ঋণের সুদহার বাড়ায় তাদের সমস্যা হচ্ছে। এতে শিল্প-কারখানা চালু রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। উচ্চ সুদের কারণে নতুন শিল্প বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যাংকের মালিকরা বেশ কয়েকটি সুবিধা নিয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংক পরিচালকদের মেয়াদ ও সংখ্যা দুটোই বাড়িয়েছেন। ব্যাংকের করপোরেট কর আগের চেয়ে আড়াই শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিএবি’র চাহিদা অনুযায়ী সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা, ঋণ আমানতের হার (এডিআর) সমন্বয়সীমার সময় বাড়ানো এবং রেপো রেট ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখা ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর) এক শতাংশ কমিয়ে সাড়ে পাঁচ শতাংশ করা এবং এডিআর সমন্বয়ের সময়সীমা কয়েকবার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
No comments