অনলাইনে প্রেম-প্রতারণার ভয়ঙ্কর ফাঁদ by রুদ্র মিজান
কান্নায়
ভেঙে পড়ছিলেন তরুণী। তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা বলতে গিয়ে বারবার থেমে
যাচ্ছিলেন। থানায় দায়ের করা একটি সাধারণ ডায়েরি নিয়ে ওই তরুণী এসেছেন
সিটিটিসি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিটে। হেল্পডেস্কের সামনে বসে নির্ধারিত ফরমে
নিজের অভিযোগ লিখে সাধারণ ডায়েরিটি সংযুক্ত করে দেন। সঙ্গে ফেসবুকে,
মেসেঞ্জারের কিছু স্ক্রিনশট। তরুণী একজন ইন্টার্নি ডাক্তার। মাথা নিচু করে
বলছিলেন, প্রতারণার এক ভয়ঙ্কর গল্প। অজানা শঙ্কায় তার কণ্ঠ কাঁপছিলো।
সাইবার ক্রাইম ইউনিটের কর্মকর্তারা তাকে সাহস দিচ্ছেন। আশ্বাস দিচ্ছেন যে
কোনোভাবেই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে। তরুণী বারবার অনুরোধ করছেন কোনোভাবেই
যেন বিষয়টি বাইরের কেউ না জানেন। চিকিৎসক তরুণীর মা পুরো বিষয়টি জানলেও
বাবাকে জানানো হয়নি। এমনকি পরিবারের আর কাউকেই তা জানানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তা সাহস দেন। ভয় নেই, কাউকে জানানো হবে না।
তরুণী জানান, তখন তিনি মেডিকেলে ভর্তির জন্য কোচিং করছেন ঢাকায়। গুলশানে এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে কোচিং করেন। এরমধ্যেই ফেসবুকে পরিচয় এক তরুণের সঙ্গে। পরিচয় থেকে বন্ধুতা। তারপর প্রেম। চুটিয়ে প্রেম করেছেন কয়েক মাস। সুযোগ পেলেই লং ড্রাইভে চলে যেতেন দু’জন। একসঙ্গে সময় কাটাতেন। ছবি তুলতেন। এমনকি মহাখালীর একটি বাসায় প্রায়ই মিলিত হতেন তারা। এরমধ্যেই ঢাকার বাইরে একটি মেডিকেলে ভর্তি হন ওই ছাত্রী। আগের চেয়ে খুব কম দেখা হয় দু’জনের।
কিন্তু ফোনে, ইমোতে, মেসেঞ্জারে কথা। দেখাদেখি হয় ভিডিও কলে। কখনও কখনও তরুণী নিজেই ছুটে আসেন ঢাকায়। সেদিন দু’জনে আগের মতো ঘুরে বেড়ান। এরমধ্যেই ঘটে ঘটনা। সারাদিনে ফোনে একবারও পাচ্ছিলেন না প্রেমিক ছেলেটিকে। বাধ্য হয়েই রাতে কল দেন। তখন গভীর রাত। কলটা রিসিভ হয়। কিন্তু চিকিৎসক তরুণীকে চমকে দিয়ে ওই প্রান্ত থেকে ভেসে আসে একটি নারী কণ্ঠ। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি তার স্ত্রী বলছি। আপনি কে, এতো রাতে কেন কল দিয়েছেন। তারপর আর সহ্য করা সম্ভব হয়নি। লাইন কেটে দেন চিকিৎসক তরুণী। যদিও তখনও বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মধ্যেই ছিলেন তিনি। বিষয়টি আরও যাচাই করতে পরদিন ওই তরুণের এক বন্ধুকে কল দেন। যার সঙ্গে এরআগে প্রেমিকের মাধ্যমেই পরিচয়। এমনকি একাধিকবার সাক্ষাতও হয়েছে। ফোন নম্বর ছিলো না। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে তা সংগ্রহ করেন। রাতের ঘটনার সত্যতা পান তরুণী। তার প্রেমিক বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। মিথ্যা পরিচয়েই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো তাদের।
চিকিৎসক তরুণী বেশ কয়েকদিন ফোন বন্ধ করে বাসায় বন্দি জীবন কাটান। ফোনটি খোলার পর প্রেমিকের ফোন। তিনি সম্পর্ক রাখতে চান। বিয়ের দরকার নেই। তরুণী জানিয়ে দেন, কোনোভাবেই তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখা সম্ভব না।
তারপর থেকেই হুমকি-ধমকি দিতে থাকে ছেলেটি। ফোনে, মেসেঞ্জারে একই হুমকি। সম্পর্ক না রাখলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি, ভিডিওগুলো ফেসবুকে, ইউটিউবে ছড়িয়ে দেয়া হবে। এ বিষয়ে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই মামলাটি প্রক্রিয়াধীন। আসামি গ্রেপ্তারের আগে তার নাম-ঠিকানা প্রকাশ করতে চাই না। তবে প্রাথমিক তদন্তে আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।
একইভাবে ইডেন মহিলা কলেজের এক ছাত্রীকে বারবার হুমকি-ধমকি দেয়া হয়। তারপর সমঝোতার নামে ডেকে নিয়ে একটি বাসায় ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
গত মাসে সিটিটিসি’র অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে দিদার মুন্সী নামক এক প্রতারক। মিথ্যা পরিচয়, প্রলোভন দিয়ে এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে দিদার। তারপর শারীরিক সম্পর্ক। মুখোশ উন্মোচন হলে মেয়েটি তার থেকে দূরে সরে যেতে চাইলেই দেয়া হয় হুমকি-ধমকি। একপর্যায়ে ফেসবুক, মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় তাদের অন্তরঙ্গ ছবি। এমনকি গোপনে ধারণ করা ভিডিও চিত্রও ছড়িয়ে দেয়া হয় বিভিন্ন জনের কাছে। দিদার মুন্সীকে গ্রেপ্তারের পর প্রাণ ফিরে পায় মেয়েটি।
প্রতিদিনই এ রকম অভিযোগ আসছে সিটিটিসি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের কাছে। সামাজিকতার কারণে নির্যাতিতা তার পরিচয় গোপন রাখতে চান। এমনকি বিষয়টি বাইরের কেউ জানুক তা চান না। সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা মামলা ছাড়াও অনেককে সহযোগিতা করি। অভিযোগকারীদের মধ্যে মামলা করতে চান খুবই কম। তাদের হার ৩০ ভাগের বেশি না।
তরুণী জানান, তখন তিনি মেডিকেলে ভর্তির জন্য কোচিং করছেন ঢাকায়। গুলশানে এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে কোচিং করেন। এরমধ্যেই ফেসবুকে পরিচয় এক তরুণের সঙ্গে। পরিচয় থেকে বন্ধুতা। তারপর প্রেম। চুটিয়ে প্রেম করেছেন কয়েক মাস। সুযোগ পেলেই লং ড্রাইভে চলে যেতেন দু’জন। একসঙ্গে সময় কাটাতেন। ছবি তুলতেন। এমনকি মহাখালীর একটি বাসায় প্রায়ই মিলিত হতেন তারা। এরমধ্যেই ঢাকার বাইরে একটি মেডিকেলে ভর্তি হন ওই ছাত্রী। আগের চেয়ে খুব কম দেখা হয় দু’জনের।
কিন্তু ফোনে, ইমোতে, মেসেঞ্জারে কথা। দেখাদেখি হয় ভিডিও কলে। কখনও কখনও তরুণী নিজেই ছুটে আসেন ঢাকায়। সেদিন দু’জনে আগের মতো ঘুরে বেড়ান। এরমধ্যেই ঘটে ঘটনা। সারাদিনে ফোনে একবারও পাচ্ছিলেন না প্রেমিক ছেলেটিকে। বাধ্য হয়েই রাতে কল দেন। তখন গভীর রাত। কলটা রিসিভ হয়। কিন্তু চিকিৎসক তরুণীকে চমকে দিয়ে ওই প্রান্ত থেকে ভেসে আসে একটি নারী কণ্ঠ। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি তার স্ত্রী বলছি। আপনি কে, এতো রাতে কেন কল দিয়েছেন। তারপর আর সহ্য করা সম্ভব হয়নি। লাইন কেটে দেন চিকিৎসক তরুণী। যদিও তখনও বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মধ্যেই ছিলেন তিনি। বিষয়টি আরও যাচাই করতে পরদিন ওই তরুণের এক বন্ধুকে কল দেন। যার সঙ্গে এরআগে প্রেমিকের মাধ্যমেই পরিচয়। এমনকি একাধিকবার সাক্ষাতও হয়েছে। ফোন নম্বর ছিলো না। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে তা সংগ্রহ করেন। রাতের ঘটনার সত্যতা পান তরুণী। তার প্রেমিক বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। মিথ্যা পরিচয়েই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো তাদের।
চিকিৎসক তরুণী বেশ কয়েকদিন ফোন বন্ধ করে বাসায় বন্দি জীবন কাটান। ফোনটি খোলার পর প্রেমিকের ফোন। তিনি সম্পর্ক রাখতে চান। বিয়ের দরকার নেই। তরুণী জানিয়ে দেন, কোনোভাবেই তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখা সম্ভব না।
তারপর থেকেই হুমকি-ধমকি দিতে থাকে ছেলেটি। ফোনে, মেসেঞ্জারে একই হুমকি। সম্পর্ক না রাখলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি, ভিডিওগুলো ফেসবুকে, ইউটিউবে ছড়িয়ে দেয়া হবে। এ বিষয়ে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই মামলাটি প্রক্রিয়াধীন। আসামি গ্রেপ্তারের আগে তার নাম-ঠিকানা প্রকাশ করতে চাই না। তবে প্রাথমিক তদন্তে আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।
একইভাবে ইডেন মহিলা কলেজের এক ছাত্রীকে বারবার হুমকি-ধমকি দেয়া হয়। তারপর সমঝোতার নামে ডেকে নিয়ে একটি বাসায় ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
গত মাসে সিটিটিসি’র অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে দিদার মুন্সী নামক এক প্রতারক। মিথ্যা পরিচয়, প্রলোভন দিয়ে এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে দিদার। তারপর শারীরিক সম্পর্ক। মুখোশ উন্মোচন হলে মেয়েটি তার থেকে দূরে সরে যেতে চাইলেই দেয়া হয় হুমকি-ধমকি। একপর্যায়ে ফেসবুক, মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় তাদের অন্তরঙ্গ ছবি। এমনকি গোপনে ধারণ করা ভিডিও চিত্রও ছড়িয়ে দেয়া হয় বিভিন্ন জনের কাছে। দিদার মুন্সীকে গ্রেপ্তারের পর প্রাণ ফিরে পায় মেয়েটি।
প্রতিদিনই এ রকম অভিযোগ আসছে সিটিটিসি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের কাছে। সামাজিকতার কারণে নির্যাতিতা তার পরিচয় গোপন রাখতে চান। এমনকি বিষয়টি বাইরের কেউ জানুক তা চান না। সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা মামলা ছাড়াও অনেককে সহযোগিতা করি। অভিযোগকারীদের মধ্যে মামলা করতে চান খুবই কম। তাদের হার ৩০ ভাগের বেশি না।
No comments