কারা কিনছে সঞ্চয়পত্র? by গোলাম মওলা
সমাজের
কোন শ্রেণির মানুষ সঞ্চয়পত্র কিনছেন তার কোনও পরিসংখ্যান নেই সঞ্চয়
অধিদফতরের কাছে। তবে অন্য কয়েকটি সূত্র বলছে, স্বল্প আয়ের মানুষ ও
পেনশনভোগীদের কাছে বিক্রি করার কথা থাকলেও বর্তমানে সঞ্চয়পত্র কিনছেন
বিত্তবানরাই। এই তালিকায় রয়েছেন রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে বড় পদের সরকারি
কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এমনকি, বেশ কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক
প্রতিষ্ঠানও সঞ্চয়পত্র কিনে রাখছে। ব্যাংকের চেয়ে সুদের হার বেশি ও নিরাপদ
হওয়ায় বিনিয়োগের বিকল্প জায়গা হিসেবে তারা সঞ্চয়পত্রকেই বেছে নিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রও এখন ধনীদের দখলে। সাধারণ বা স্বল্প আয়ের মানুষ ও পেনশনভোগীদের কথা বলা হলেও বাস্তবে ৯০ শতাংশ সঞ্চয়পত্র কিনছেন বড় পদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিবিদ ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘৮৫ শতাংশ সঞ্চয়পত্র মাত্র ১২ শতাংশ লোকের কাছে বিক্রি হচ্ছে। আর মাত্র ১৫ শতাংশ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে বাকি ৮৮ শতাংশ লোকের কাছে।’
মূলত সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার নিম্ন-মধ্যবিত্ত, সীমিত আয়ের মানুষ, বয়স্ক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্পগুলো চালু করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সুদের হার বেশি হওয়ায় সঞ্চয়পত্রে বেশ কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করছে।
এদিকে, সমাজের কোন কোন শ্রেণির ব্যক্তিরা সঞ্চয়পত্র কিনছেন –এ ব্যাপারে সঞ্চয় অধিদফতরের কাছে কোনও তথ্য নেই। এমনকি, বছরের পর বছর ধরে সঞ্চয়পত্র কারা কিনছে, সে ব্যাপারে তথ্যভাণ্ডার তৈরির চেষ্টাও নেই এই অধিদফতরের।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক শামসুন্নাহার বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোন শ্রেণির ব্যক্তিরা সঞ্চয়পত্র কিনছেন, সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সঞ্চয় অধিদফতর কোনও রিসার্চ করেনি। ফলে সমাজের কোন শ্রেণির ব্যক্তিরা সঞ্চয়পত্র বেশি কিনছেন, তারও হিসাব নেই।’ তিনি উল্লেখ করেন, ১৮ বছরের বেশি বয়সী বাংলাদেশের যে কোনও সুস্থ নাগরিক সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।
জানা গেছে, মূলত দু’টি কারণে সবাই সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকছে। প্রথমত, গ্রাহকদের কাছে অর্থের উৎস জানতে চাওয়া হয় না। দ্বিতীয়ত, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার যেকোনও আমানতের সুদের হারের চেয়ে অনেক বেশি। তবে সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক শামসুন্নাহার বেগম মনে করেন, ‘সঞ্চয়পত্র যারা কেনেন, তারা সুদের হার ছাড়াও এখানে টাকা রাখাকে নিরাপদ ভাবেন।’
এদিকে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো গত ১ জুলাই থেকে তিন মাস মেয়াদী আমানতের সর্বোচ্চ সুদের হার ৬ শতাংশ নির্ধারণ করার পর সঞ্চয়পত্রের প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বেড়েছে। অনেকেই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে সঞ্চয়পত্র কিনে রাখছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ২ কোটি।
এদিকে, প্রতিবছর সঞ্চয়পত্রের পেছনে বিপুল পরিমাণ সুদ গুণতে হচ্ছে সরকারকে, যা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আদায় করছে। আবার সরকারের বিপুল পরিমাণ সুদ গুণতে গিয়ে ঋণ ব্যবস্থাপনায় তৈরি হচ্ছে বড় ধরনের ঝুঁকি। এ ছাড়া, হিসেবি ও নির্ঝঞ্জাট মানুষেরা ব্যাংক থেকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) ভাঙিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনার কারণে একদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির রেকর্ড হচ্ছে, অন্যদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তহবিলেও টান পড়ছে।
এদিকে, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদ ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা নষ্ট করছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো একটি চিঠিতে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের কারণে সার্বিকভাবে আর্থিক খাত ও বন্ড বাজারের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। সঞ্চয়পত্রের সুদহার অর্থবাজারে বিদ্যমান সুদহারের চেয়ে বেশি হওয়ায় সরকারের দায় বেড়ে যাচ্ছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রতি মাসে গড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। দুই মাস আগে অর্থাৎ মে মাসে ১০ হাজার ৯৩০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। সব মিলে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের চালু করা চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এগুলো হলো– পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র এবং তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র। এগুলোর গড় সুদের হার ১১ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র দেশের যে কোনও নাগরিক কিনতে পারেন। এই দুই ধরনের সঞ্চয়পত্র ব্যক্তির ক্ষেত্রে একক নামে ৩০ লাখ ও যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকার পর্যন্ত কেনার সুযোগ আছে।
পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্র একক নামে সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকার পর্যন্ত কেনা যায়। তবে সবাই এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন না। কেবল ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী যে কোনও বয়সী নারী-পুরুষ এবং ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নারী ও পুরুষ এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।
পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্র একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকার পর্যন্ত কেনা যায়। এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন কেবল অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানেরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শাখা অফিস, সব বাণিজ্যিক ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের অধীনস্থ সারাদেশে ৭১টি সঞ্চয় ব্যুরো অফিস এবং পোস্ট অফিস থেকে এসব সঞ্চয়পত্র কেনা ও নগদায়ন করা যায়। সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এ ছাড়া, ডাকঘর সঞ্চয়পত্র নামে আরও একটি সঞ্চয়পত্র স্কিম রয়েছে, যা শুধু ডাকঘর থেকে লেনদেন করা হয়। তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বর্তমানে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। বাংলাদেশের যে কেউ এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রও এখন ধনীদের দখলে। সাধারণ বা স্বল্প আয়ের মানুষ ও পেনশনভোগীদের কথা বলা হলেও বাস্তবে ৯০ শতাংশ সঞ্চয়পত্র কিনছেন বড় পদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিবিদ ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘৮৫ শতাংশ সঞ্চয়পত্র মাত্র ১২ শতাংশ লোকের কাছে বিক্রি হচ্ছে। আর মাত্র ১৫ শতাংশ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে বাকি ৮৮ শতাংশ লোকের কাছে।’
মূলত সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার নিম্ন-মধ্যবিত্ত, সীমিত আয়ের মানুষ, বয়স্ক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্পগুলো চালু করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সুদের হার বেশি হওয়ায় সঞ্চয়পত্রে বেশ কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করছে।
এদিকে, সমাজের কোন কোন শ্রেণির ব্যক্তিরা সঞ্চয়পত্র কিনছেন –এ ব্যাপারে সঞ্চয় অধিদফতরের কাছে কোনও তথ্য নেই। এমনকি, বছরের পর বছর ধরে সঞ্চয়পত্র কারা কিনছে, সে ব্যাপারে তথ্যভাণ্ডার তৈরির চেষ্টাও নেই এই অধিদফতরের।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক শামসুন্নাহার বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোন শ্রেণির ব্যক্তিরা সঞ্চয়পত্র কিনছেন, সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সঞ্চয় অধিদফতর কোনও রিসার্চ করেনি। ফলে সমাজের কোন শ্রেণির ব্যক্তিরা সঞ্চয়পত্র বেশি কিনছেন, তারও হিসাব নেই।’ তিনি উল্লেখ করেন, ১৮ বছরের বেশি বয়সী বাংলাদেশের যে কোনও সুস্থ নাগরিক সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।
জানা গেছে, মূলত দু’টি কারণে সবাই সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকছে। প্রথমত, গ্রাহকদের কাছে অর্থের উৎস জানতে চাওয়া হয় না। দ্বিতীয়ত, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার যেকোনও আমানতের সুদের হারের চেয়ে অনেক বেশি। তবে সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক শামসুন্নাহার বেগম মনে করেন, ‘সঞ্চয়পত্র যারা কেনেন, তারা সুদের হার ছাড়াও এখানে টাকা রাখাকে নিরাপদ ভাবেন।’
এদিকে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো গত ১ জুলাই থেকে তিন মাস মেয়াদী আমানতের সর্বোচ্চ সুদের হার ৬ শতাংশ নির্ধারণ করার পর সঞ্চয়পত্রের প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বেড়েছে। অনেকেই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে সঞ্চয়পত্র কিনে রাখছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ২ কোটি।
এদিকে, প্রতিবছর সঞ্চয়পত্রের পেছনে বিপুল পরিমাণ সুদ গুণতে হচ্ছে সরকারকে, যা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আদায় করছে। আবার সরকারের বিপুল পরিমাণ সুদ গুণতে গিয়ে ঋণ ব্যবস্থাপনায় তৈরি হচ্ছে বড় ধরনের ঝুঁকি। এ ছাড়া, হিসেবি ও নির্ঝঞ্জাট মানুষেরা ব্যাংক থেকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) ভাঙিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনার কারণে একদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির রেকর্ড হচ্ছে, অন্যদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তহবিলেও টান পড়ছে।
এদিকে, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদ ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা নষ্ট করছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো একটি চিঠিতে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের কারণে সার্বিকভাবে আর্থিক খাত ও বন্ড বাজারের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। সঞ্চয়পত্রের সুদহার অর্থবাজারে বিদ্যমান সুদহারের চেয়ে বেশি হওয়ায় সরকারের দায় বেড়ে যাচ্ছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রতি মাসে গড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। দুই মাস আগে অর্থাৎ মে মাসে ১০ হাজার ৯৩০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। সব মিলে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের চালু করা চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এগুলো হলো– পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র এবং তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র। এগুলোর গড় সুদের হার ১১ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র দেশের যে কোনও নাগরিক কিনতে পারেন। এই দুই ধরনের সঞ্চয়পত্র ব্যক্তির ক্ষেত্রে একক নামে ৩০ লাখ ও যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকার পর্যন্ত কেনার সুযোগ আছে।
পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্র একক নামে সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকার পর্যন্ত কেনা যায়। তবে সবাই এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন না। কেবল ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী যে কোনও বয়সী নারী-পুরুষ এবং ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নারী ও পুরুষ এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।
পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্র একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকার পর্যন্ত কেনা যায়। এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন কেবল অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানেরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শাখা অফিস, সব বাণিজ্যিক ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের অধীনস্থ সারাদেশে ৭১টি সঞ্চয় ব্যুরো অফিস এবং পোস্ট অফিস থেকে এসব সঞ্চয়পত্র কেনা ও নগদায়ন করা যায়। সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এ ছাড়া, ডাকঘর সঞ্চয়পত্র নামে আরও একটি সঞ্চয়পত্র স্কিম রয়েছে, যা শুধু ডাকঘর থেকে লেনদেন করা হয়। তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বর্তমানে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। বাংলাদেশের যে কেউ এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।
No comments