রাজধানীর গণপরিবহন ঠিক করবে ‘তাওবাদী’রা!
রাজধানীর গণপরিবহন নিয়ে লিখতে গিয়ে আয়ুব খান চলে এলেন। পৃথিবীর সব অবৈধ শাসকই তাদের ক্ষমতাকে প্রজাকুলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে উন্নয়ন ও সংস্কারে মেতে ওঠেন। আয়ুব খান যেমন। ধুত্তরি, আমার লেখা কেন জানি কেন্দ্রীভূত থাকতে পারে না, ছড়িয়ে যায়। একটু ছড়িয়ে নিই। ১৫৩ আসনের ব্যাপারে আদালতের রায়ের পর আমাদের বর্তমান সরকারটিকে কিন্তু অবৈধ বলা যাবে না। এটাকে আমি বলি অগ্রহণযোগ্য সরকার। বলা বাহুল্য, ‘অগ্রহণযোগ্য’ শব্দটি ‘অবৈধ’-এর চেয়ে শক্ত। তারপরও বিএনপিওয়ালারা গোঁ ধরেন, এই সরকারকে অবৈধই বলতে হবে। অথচ দেখুন, অবৈধকে কখনও কখনও গ্রহণ করা চলে; কিন্তু অগ্রহণযোগ্য বললে কথা শেষ হয়ে যায়। যেমন, নিজের ঔরসজাত নয় বুঝেও কেউ ‘অবৈধ’ নবজাতকটিকে গ্রহণ করে পিতৃস্নেহে বড় করতে পারেন; কিন্তু তিনিই যদি বলেন- বাচ্চাটা অগ্রহণযোগ্য- তাহলে মামলা ওখানেই ডিসমিস। তো মুসলিম পারিবারিক আইন ও সম্পত্তির উত্তরাধিকার সম্পর্কিত আয়ুব খানের সংস্কারগুলো আমাদের মুসলমান নারীসমাজকে যতটা এগিয়ে দিয়েছে, এদেশের নারী সংগঠনগুলো তাদের আন্দোলনের মাধ্যমে সেই জায়গা থেকে খুব বেশি এগোতে পারেনি। আর উন্নয়ন? পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণ করে তিনি পশ্চিম পাকিস্তান সাজিয়েছিলেন ঠিকই; কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তান তো বটেই, এমনকি ভারতেরও আগে তিনি ঢাকায় প্রথম স্থাপন করেছিলেন টেলিভিশন কেন্দ্র। আর আজ যে সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন ভবনটিতে বসে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা পারস্পরিক বিষোদ্গার করেন, সেই সংসদ ভবনটিও তারই কীর্তি।
আমি এই সেদিন আমার ছেলেকে বলছিলাম, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন আর যে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে তুমি তোমার দাদা-নানার বাড়ি রওনা হও, সেটিসহ এই মুহূর্তে এ দেশের যা কিছুই চোখে দেখছ, সেগুলোর ৯০ শতাংশই ব্রিটিশ, আয়ুব খান ও এরশাদের অবদান, বাকি ১০ শতাংশ শেখ হাসিনার। যাকগে। আয়ুব খান প্রবল আন্দোলনের মুখে ১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে পর্দার অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন। পদত্যাগের আগে ক্ষমতা ধরে রাখার শেষ চেষ্টায় একটি রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স আহ্বান করেছিলেন তিনি। তো নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি নসরুল্লাহ খানকে তিনি বলেছিলেন, আপনার পছন্দমতো বিরোধীদলীয় নেতাদের নিয়ে রাওয়ালপিন্ডি আসুন। নসরুল্লাহ বললেন, আমরা শেখ মুজিবুর রহমান (তিনি তখনও ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি পাননি) ছাড়া কনফারেন্সে যাব না, মুজিব তখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারাগারে। যে কথাটা বলার জন্য এত বড় গৌরচন্দ্রিকা, সেটাই বলছি এখন। আয়ুব খান তখন নসরুল্লাহকে বলেছিলেন, শেখ মুজিব যদি এতই অপরিহার্য হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাদের সবাইকে বাদ দিয়ে ও should better talk to that single person! আয়ুব খান বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং তিনি যোগ দিয়েছিলেন সেই কনফারেন্সে। ব্যর্থ হয়ে যাওয়া সেই রাউন্ড টেবিলের পরপরই আয়ুব খান সরে দাঁড়ান। আমরা দেখতে পাচ্ছি, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এদেশের জন্য এক অপরিহার্য ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। তো তিনি যদি এতই অপরিহার্য হয়ে থাকেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত অন্যসব মন্ত্রীকে বাদ দিয়ে এই রাষ্ট্রের সব বিষয়েই তার সঙ্গে কথা বলা। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে কাদের ভাইকে সরিয়ে দিয়ে শাজাহান খানকেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহনের মন্ত্রী বানাতে পারেন। সেক্ষেত্রে তার পদের সংখ্যা দাঁড়াবে চার। দলের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি, দুই মন্ত্রী ও পরিবহন শ্রমিকনেতা। বস্তুত খান সাহেব যেন এই রাষ্ট্রের সমগ্র জনগোষ্ঠী, এমনকি খোদ রাষ্ট্রটির চেয়েও শক্তিশালী! প্রধানমন্ত্রীর তাই চিন্তা কী! কওমি ভোট সামলাবেন আল্লামা শফী আর পরিবহন শ্রমিক শাজাহান খান। অর্ধেক ভোট তো হয়েই গেল। আন্তর্জাতিক জরিপে ঢাকা পৃথিবীর দ্বিতীয় অবসবাসযোগ্য শহর বিবেচিত হয়েছে। এই নিকৃষ্টতার দায় মূলত শহরটির পরিবহনব্যবস্থার। সরকারি লোকজন সম্ভবত জরিপটির সূচকগুলো উল্টিয়ে দেখেন। আর তাই দেখতে পান ঢাকা দ্বিতীয় বসবাসযোগ্য শহর। এ এক আজব নেতৃত্বের পাল্লায় পড়েছি আমরা। যদি বলি, বিশ্বের কোথাকার গণপরিবহন এত নিকৃষ্ট- তারা বলেন, আপনাদের কাজই শুধু ইউরোপ-আমেরিকার উদাহরণ টানা। এটা তো বাংলাদেশ! অথচ দেখুন, সড়ক দুর্ঘটনার কথা যখন বলি, তখন বলেন, আমেরিকার দুর্ঘটনা তো আমাদের চেয়ে বেশি!
সুবিধার উদাহরণ ব্যবহার করায় বিস্ময়করভাবে পারদর্শী তারা। অসুবিধার উদাহরণ গায়ে বিঁধে যে! একদিন এক কাঠমোল্লা আমাকে বলেছিলেন, ধনী-গরিব আল্লাহর সৃষ্টি, হাতের পাঁচ আঙুল কি সমান? আমি বললাম, আল্লাহ এত নিষ্ঠুর নন যে, তিনি ধনী-গরিব আলাদাভাবে সৃষ্টি করেছেন। মানুষই বানিয়েছে ধনী ও গরিব। হাতের পাঁচ আঙুল সমান না বুঝলাম, আল্লাহ তো দুই পা, দুই হাত, দুই কান, দুই চোখ সমান করে বানিয়েছেন। সেটা বলেন না কেন? শুধু শুধু মহান আল্লাহর ওপর দোষ না চাপালে হয় না? সরকারগুলো সম্ভবত পণ করেছে, রাজধানীর গণপরিবহনব্যবস্থা তারা কোনোদিনই ঠিক করবে না। পণ করেছে বলাটা বোধহয় ঠিক হল না। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, মানুষ পণ করে পণ ভাঙিয়া হাঁফ ছাড়িবার জন্য। কতকাল হয়ে গেল, কোনো সরকারই তো হাঁফ ছাড়ল না! হ্যাঁ, এটাকে পণ বলে না, এ হল জনগণের প্রতি চিরঅবজ্ঞা, এই অবজ্ঞার কোনো শেষ নেই। প্রথমে বাচ্চা গণপরিবহন সিএনজি অটোরিকশার ভাড়ার কথা বলি। সরকার কিলোমিটার প্রতি ১০০ টাকাও নির্ধারণ করে দেয় যদি, তারপরও চালক বলবে- ২০টা টাকা বাড়াইয়া দিয়েন। সে বলবেই, কারণ এটা তার আজন্মলালিত খাসলত। তো এই খাসলতের কথা সরকারগুলো কি জানে না? এই জানতে পারার বয়স কত? কিন্তু না, সরকারগুলো পরিচালিত হচ্ছে চৈনিক প্রাচীন ‘তাও’ দর্শন দ্বারা- ‘কোনোকিছুকেই প্রভাবিত করতে যেও না, প্রবাহের বিরুদ্ধে অবস্থান নিও না, নদীকে থাকতে দাও নদীর মতো।’ আমি একদিন এক সিএনজি চালকের অন্যায় দাবি প্রত্যাখ্যান করে ফিরে আসছি, এক লোক আমার হয়ে তাকে বললেন, হাসিনা-খালেদার দ্যাশ বইলাই পারতাছোস ব্যাটা, অন্য কোনো দেশ হইলে তরে রাস্তায় শোয়াইয়া পিটাইতাম। চাটুকার পরিবেষ্টিত দুই নেত্রী পাবলিকের এসব কথার খবর রাখবেন কীভাবে! ঢাকার গণপরিবহন ঠিক করার প্রয়াস যে নেয়া হয় না, তা নয়। তবে সেই প্রয়াস নিরর্থক অভিযানসর্বস্ব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একটা সামরিক কৌশলের উদ্ভব ঘটেছে। জার্মান ভাষায় এটাকে বলে- ব্লিৎসক্রিগ (Blitykrieg), এর মানে শত্রুর ওপর ঝটিকা আক্রমণ। গণপরিবহনের ওপর মাঝে মাঝে ব্লিৎসক্রিগ চলে, তারপর শুনসান নীরবতা। আরও একটা বিষয় দেখতে পাই আমরা, সেটা হল- ঘোষণা। এটা এখন ক্লিয়ার কনসেপশন সবার যে, এই রাষ্ট্রে কোনো বিষয়ে একটা কিছু ঘোষণা দেয়া হলে বুঝতে হবে সেটা হয় জটিল সমস্যার অবাস্তব ইজি সল্যুশন অথবা দিনের শেষে সেই ঘোষণার অঘোষিত ইতি। যেমন, এই সেদিন রাজধানীর গণপরিবহন সংকটের সমাধান দিতে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন, ঢাকায় আরও চার হাজার বাস নামানো হবে। কত ইজি এই সল্যুশন! যে শহরে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিকভাবে ২০০টি রুটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যে শহরে হাজার হাজার বাসের কোনো প্লে-গ্রাউন্ড নেই, সেই শহরে অতিরিক্ত চার হাজার বাস নামিয়ে তিনি সংকট দূর করবেন! এটা তো কানের পানি বের করার পদ্ধতি নয় যে, আরও পানি ঢুকিয়ে সব পানি বের করে আনা যাবে। ঠিক আছে, তিনি না হয় ঢাকাকে এমনভাবে সাজালেন যে, গরু যেমন পার হয়ে যায় ছোট নদী, জানে না সে ক্যামনে পার হয়, তেমন স্বচ্ছন্দেই গাড়িগুলো ছুটছে ঢাকার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত; কিন্তু ‘ভাড়া’ সাজাবেন কীভাবে? এটা তো ‘ভৌত’, ‘অব’ অথবা অন্য কোনো কাঠামো নয় যে, ঠিকঠাক মতো পেরেক ঠুকলেই মেরামত হয়ে যাবে। এ তো বড়লোকের মর্জি। মাসতুতো ভাই প্রভাবশালী বাস মালিকরা অর্থ-বিত্তে বড়লোক আর পরিবহন শ্রমিক মানে সংঘবদ্ধ শক্তি অর্থাৎ পেশিশক্তিতে সে বড়লোক। বড়লোক না হলে সামান্য কথা কাটাকাটির সময় যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিতে চাইতে পারে হেলপার? তার কাছে যাত্রী মানে গরিবের চেয়েও তুচ্ছ। হ্যাঁ, সিটিং-ননসিটিং, গেটলক-গেটওপেন, ১০ টাকা-২০ টাকা এসব সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে মন্ত্রীর অপেক্ষায় থাকে নাকি কেউ? প্রভাবশালী মালিক সিদ্ধান্ত নেয় আর তা কার্যকর করে সংঘবদ্ধ শ্রমিক। কার্ল মার্কস মালিক-শ্রমিকের যে দ্বন্দ্বের কথা বলেছিলেন, সেটা ভুল তত্ত্ব। বাংলাদেশে কখনও কখনও শ্রমিক তার নিজের স্বার্থ না দেখে মালিকের স্বার্থ হাসিল করে। আমি একবার ‘তুমি পারলে, আমি পারলাম না’ লাইনটি দিয়ে শুরু করে কবিতাটি আর শেষ করতে পারিনি। এখন করি- শ্রমিক সংঘবদ্ধ হতে পারল, পারল সংঘবদ্ধ হতে মালিক, পারল না শুধু ভদ্রলোকেরা!
আমরা যদি কখনও এমন ভাবতে শিখি যে, একটা সময় ঢাকার কোনো রাস্তায়ই আর থাকবে না খানাখন্দ, শোনা যাবে না গাড়ির হর্ন, হাঁকবে না কেউ অতিরিক্ত ভাড়া, শরৎচন্দ্রের রামের মতো ড্রাইভারকুল ফিরে পাবে সুমতি- তবে সেই শেখা হবে ভুল শেখা। আর কল্পনার সেই ঢাকা হবে প্লেটোর ‘কল্পিত রাজ্য’। কেন? বলি। প্রেসক্রিপশনে ওষুধ, পথ্য ও অন্যান্য নিয়ম লেখা থাকার পরও যদি তা কেউ মানতে না চায়, তাহলে বুঝতে হবে রোগটা শারীরিক নয়, মানসিক। অথবা ডাক্তারের শিল্পিত হাতের লেখা সে বুঝতে পারছে না। দেখুন, পরিবহন ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কৌশলগত ধারণাপত্র (এসটিপি) তৈরি করা হয়েছিল ২০০৪ সালে। তখন মিসেস জিয়া ক্ষমতায়। আবার ২০১২ সালে কোটি কোটি টাকা খরচ করে একটি স্প্যানিশ কোম্পানিকে দিয়ে গণপরিবহনের বাস রুট যৌক্তিকীকরণের ওপর একটি সমীক্ষা করানো হয়েছিল। এই দুই সমীক্ষা-রিপোর্ট রাজধানীর গণপরিবহন ঠিক করার জন্য যথেষ্ট শুধু নয়, বলা যায়- মোর দ্যান এনাফ। A to Z সব বলা আছে এই দুই সমীক্ষায়। অথচ মুরগির পাখনার নিচে হীরকখণ্ড থাকলেও সে যেমন সেটাকে ইটখণ্ড ভেবে ঝাঁটায়, সমীক্ষা দুটিকে সেভাবে অবজ্ঞা করা হয়েছে, করা হচ্ছে। কী কারণ এর? টাকার অভাব? রাজধানীকে অচল রেখে, এর দেড় কোটি মানুষের প্রতিদিন লাখ লাখ শ্রমঘণ্টা নষ্ট করে এখানে-সেখানে যে হাজার হাজার কোটি টাকা ঢালা হচ্ছে, সেটা কোন্ যুক্তিতে? যুক্তি একটা আছে। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে রাষ্ট্রের মনস্তত্ত্ব (state psychology) বলে একটা কথা আছে। আমরা যখন বলি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র অথবা স্বৈরতান্ত্রিক (tyrannous) কিংবা ধর্মতাত্ত্বিক (theological) রাষ্ট্র, তখন সেটা রাষ্ট্রটির মনস্তত্ত্বই। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মনস্তত্ত্ব বিশৃঙ্খলায় সুশোভিত, শৃঙ্খলা এর ভালো লাগে না। ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থার কত যে সমস্যার দিক! বসন্ত রোগীর মতো এর সারা শরীরে ফুসকুনি আর ফুসকুনি। আবার কিছু গুটি এমন আকার ধারণ করেছে যে, সেগুলো শুকালেও তার দাগ হয়তো কোনোদিনই মুছে ফেলা যাবে না। সমস্যাগুলো নতুন করে চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান বাতলানোর পণ্ডিতি করব না। আমরা নেহায়েতই অ্যামেচার ক্রিটিক। পরিবহন ও গণপরিবহনের আপাদমস্তক চিত্র এবং সুখকর বিপরীত প্রতিচিত্র রয়েছে উপরের দুই সমীক্ষা প্রতিবেদনে। দয়া করে পড়ুন এবং বসন্ত রোগ যে কষ্টকর, ডেডিকেটেড শ্রম দিয়ে নির্মূল করা গেছে, তেমন কষ্টকে ভালোবাসতে শিখুন।
লেখক: সাংবাদিক
mahbubkamal08@yahoo.com
লেখক: সাংবাদিক
mahbubkamal08@yahoo.com
No comments