ডাকাত সন্দেহে ৮ জনকে পিটিয়ে হত্যা by আসিফ হোসেন
আড়াইহাজার থানায় গিয়ে স্বামী রনির লাশ দেখে অচেতন হয়ে পড়েন নাজমা বেগম। এ সময় মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে মেয়ে সাদিয়া। আড়াইহাজারের পুরিন্দা বাজারে গতকাল ভোরে গণপিটুনিতে নিহত হন রনিসহ আটজন -প্রথম আলো |
প্রাণভয়ে
দৌড়াচ্ছেন জনা দশেক লোক। পেছনে শত শত উন্মত্ত মানুষ। তাঁদের ঘুম কেড়ে
নিয়েছে মসজিদ থেকে ‘বাজারে ডাকাত হানা দিয়েছে’ বলে দেওয়া ঘোষণা। কারও হাতে
লাঠি, কেউ খালি হাতে। দৌড়ের সঙ্গে ভেসে আসছে ‘ধর ধর’ গগনবিদারী আওয়াজ। আধা
কিলোমিটার পড়িমরি করে যাওয়ার পর সামনে থাকা লোকদের কেউ পড়েছে পানি-কাদায়,
কেউ কচুরিপানায় ভরা মজা পুকুরে। তবু শেষরক্ষা হয়নি। পেছনে ধেয়ে আসা জনতা
তাদের আটজনকে পিটিয়ে মেরেছে।
‘ডাকাত সন্দেহে’ আটজনকে পিটিয়ে মারার এই নৃশংস ঘটনার এমন বিবরণ দিয়েছেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পুরিন্দা বাজারে। এ সময় জনতার হাত থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন চারজন। এঁদের তিনজনকে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। একজনকে পুলিশ আটক করেছে। নিহত আটজনের মধ্যে চারজনের পরিচয় মিলেছে।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের একটি ছোট বাজার পুরিন্দা। কয়েকটি চালের আড়ত আছে বাজারে। মোতালেব ও মনিরুজ্জামান নামের দুজন নৈশপ্রহরী সেখানে পাহারায় থাকেন। ডাকাতির খবর গ্রামবাসীকে জানান তাঁরাই।
মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরবেলা একটি খালি ট্রাক নিয়ে ২০-২৫ জন লোক বাজারে আসে। তারা বাজারের ‘ভাই ভাই স্টোর’ নামের আড়ত থেকে চাল নিতে এসেছে বলে জানায়। কিন্তু ওই সব লোক আড়তের তালা না খুলে সেটি ভাঙতে শুরু করলে প্রহরীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা এর প্রতিবাদ করলে ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে রশি দিয়ে দুই প্রহরীর হাত এবং গলার মাফলার দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর আড়তের তালা ভেঙে চালের বস্তা ট্রাকে তুলতে থাকে। দুই প্রহরীর মধ্যে মনিরুজ্জামান হাতের বাঁধন খুলে গ্রামের ভেতরে দৌড়ে যান। পাশের মসজিদ থেকে এ সময় লোকজন নামাজ পড়ে বের হচ্ছিলেন। মনিরুজ্জামানের কথা শুনে মুসল্লিরা পুরিন্দা বাজার জামে মসজিদের মাইক থেকে ‘বাজারে ডাকাত হানা দিয়েছে’ বলে ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণা শুনে আশপাশের বাড়িঘর ও কারখানার শ্রমিকসহ শত শত লোক লাঠিসোঁটা হাতে বেরিয়ে আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, মাইকের ঘোষণা শুনে কথিত ডাকাতেরা দৌড়ে পালাতে শুরু করে। তাদের ধাওয়া করে শত শত মানুষ। ডাকাতদের কয়েকজন পুরিন্দা বাজার থেকে আধা কিলোমিটার দূরে এক পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কেউ কেউ মহাসড়কের পাশে নিচু জমি ও ডোবায় আশ্রয় নেয়। গ্রামবাসী তাদের ঘেরাও করে তুলে আনেন। এরপর শুরু হয় গণপিটুনি। এতে ঘটনাস্থলেই সাতজন মারা যান। আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে আরেকজন মারা যান। পুলিশ ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে একটি হাঁসুয়া, দুটি বড় ছোরা, একটি দা, তালা কাটার যন্ত্র উদ্ধার করে। একটি ট্রাকও বাজার থেকে উদ্ধার করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানানো হলেও তারা ঘটনাস্থলে আসে এক ঘণ্টা পরে। পুলিশ দ্রুত এলে এসব লোককে হয়তো জীবিত উদ্ধার করা যেত।
সাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অদুদ মাহমুদ বলেন, আনোয়ার মেম্বারের বাড়ির পুকুর থেকে তিনজন, রোকনউদ্দিন মোল্লার মাঠের দুটি ডোবা থেকে তিনজন, ঢাকা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সামনে একজন, পাঁঠাওয়ালার বাড়ির সামনে থেকে একজন, বাগবাড়ি বাজারের সামনে থেকে একজন, পুরিন্দা বাজারের পাশ থেকে একজনকে প্রায় মৃত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শী বিল্লাল হোসেন ও শহীদুল বলেন, কয়েক দিন আগে পুরিন্দা বাজারে হানিফ অ্যান্ড ব্রাদার্সের বাগবাড়ি গুদামে হানা দিয়ে ডাকাতেরা ২০০ বস্তা চাল লুট করে। এই ঘটনায় থানায় মামলা হলেও চাল উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ কারণে লোকজন ক্ষুব্ধ ছিল। তাই গ্রামবাসী নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছেন।
পুলিশ বলেছে, নিহত আটজনের মধ্যে চারজনের পরিচয় মিলেছে। তাঁরা হলেন ফেনীর সোনাগাজী থানার আলমপুর গ্রামের ওবায়দুল হকের ছেলে রনি ওরফে গঠন (৪০), ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার মধ্য বাড়েবা আকুয়া এলাকার রোবেল (২৫), টিটু (৩০) ও শওকত (৩২)।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার মিলন মিয়ার ছেলে সাব্বির (২৫), ছানা মিয়ার ছেলে সজীব (২৬), লতিফের ছেলে মানিক (৩২) এবং চাঁদপুর সদরের ওছমান মিয়ার ছেলে লোকমান (২৮)।
বেলা তিনটার দিকে আড়াইহাজার থানায় এসে রনির লাশ শনাক্ত করেন তাঁর স্ত্রী নাজমা বেগম। তিনি বলেন, তাঁরা ঢাকার শনির আখড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। তাঁর স্বামী বাসের কন্ডাক্টর হিসেবে কাজ করতেন। বুধবার রাতে কাজের কথা বলে তিনি বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। তাঁদের আট বছরের একটি মেয়ে আছে।
পুলিশ বলেছে, আটক লোকমান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তাঁরা রাত দুইটার দিকে ঢাকার তেজগাঁও থেকে ১৫-১৬ জন ও পরে যাত্রাবাড়ী থেকে আরও ১৪-১৫ জন মিলে একটি ট্রাক নিয়ে ভোরে পুরিন্দা বাজারে ডাকাতি করতে আসেন।
পুরিন্দা বাজারের ভাই ভাই স্টোর চালের আড়তের মালিক হাজি গফুর ভূঁইয়া বলেন, ডাকাতেরা তাঁর আড়ত থেকে ১৫০ বস্তা চাল ট্রাকে তুলে ফেলেছিল।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ১৫ থেকে ২০ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাত দল পুরিন্দা বাজারে একটি চালের আড়তে ডাকাতি করতে ট্রাক নিয়ে এসেছিল। তারা তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে ট্রাকটি ভাড়া করে।
এ ঘটনায় গতকাল রাতে আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে দায়ের করা হত্যা মামলায় কয়েক হাজার লোককে আসামি এবং চালের আড়তে ডাকাতির ঘটনায় ভাই ভাই ট্রেডার্সের মালিক এম এ গফুর বাদী হয়ে ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) মো. জহিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আসকের উদ্বেগ ও নিন্দা: ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে আটজন নিহত ও চারজন আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম সুষ্ঠু ও পরিণামদর্শিতার সঙ্গে পরিচালিত হলে জনগণের পক্ষে এমন সহিংস ও উন্মত্ত হওয়া সম্ভব হতো না। সংবাদপত্রের খবরের ভিত্তিতে আসকের তৈরি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর সাত বিভাগে ১২৩ জন গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছেন।
আসক আড়াইহাজারের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও গণপিটুনির ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে।
‘ডাকাত সন্দেহে’ আটজনকে পিটিয়ে মারার এই নৃশংস ঘটনার এমন বিবরণ দিয়েছেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পুরিন্দা বাজারে। এ সময় জনতার হাত থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন চারজন। এঁদের তিনজনকে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। একজনকে পুলিশ আটক করেছে। নিহত আটজনের মধ্যে চারজনের পরিচয় মিলেছে।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের একটি ছোট বাজার পুরিন্দা। কয়েকটি চালের আড়ত আছে বাজারে। মোতালেব ও মনিরুজ্জামান নামের দুজন নৈশপ্রহরী সেখানে পাহারায় থাকেন। ডাকাতির খবর গ্রামবাসীকে জানান তাঁরাই।
মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরবেলা একটি খালি ট্রাক নিয়ে ২০-২৫ জন লোক বাজারে আসে। তারা বাজারের ‘ভাই ভাই স্টোর’ নামের আড়ত থেকে চাল নিতে এসেছে বলে জানায়। কিন্তু ওই সব লোক আড়তের তালা না খুলে সেটি ভাঙতে শুরু করলে প্রহরীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা এর প্রতিবাদ করলে ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে রশি দিয়ে দুই প্রহরীর হাত এবং গলার মাফলার দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর আড়তের তালা ভেঙে চালের বস্তা ট্রাকে তুলতে থাকে। দুই প্রহরীর মধ্যে মনিরুজ্জামান হাতের বাঁধন খুলে গ্রামের ভেতরে দৌড়ে যান। পাশের মসজিদ থেকে এ সময় লোকজন নামাজ পড়ে বের হচ্ছিলেন। মনিরুজ্জামানের কথা শুনে মুসল্লিরা পুরিন্দা বাজার জামে মসজিদের মাইক থেকে ‘বাজারে ডাকাত হানা দিয়েছে’ বলে ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণা শুনে আশপাশের বাড়িঘর ও কারখানার শ্রমিকসহ শত শত লোক লাঠিসোঁটা হাতে বেরিয়ে আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, মাইকের ঘোষণা শুনে কথিত ডাকাতেরা দৌড়ে পালাতে শুরু করে। তাদের ধাওয়া করে শত শত মানুষ। ডাকাতদের কয়েকজন পুরিন্দা বাজার থেকে আধা কিলোমিটার দূরে এক পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কেউ কেউ মহাসড়কের পাশে নিচু জমি ও ডোবায় আশ্রয় নেয়। গ্রামবাসী তাদের ঘেরাও করে তুলে আনেন। এরপর শুরু হয় গণপিটুনি। এতে ঘটনাস্থলেই সাতজন মারা যান। আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে আরেকজন মারা যান। পুলিশ ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে একটি হাঁসুয়া, দুটি বড় ছোরা, একটি দা, তালা কাটার যন্ত্র উদ্ধার করে। একটি ট্রাকও বাজার থেকে উদ্ধার করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানানো হলেও তারা ঘটনাস্থলে আসে এক ঘণ্টা পরে। পুলিশ দ্রুত এলে এসব লোককে হয়তো জীবিত উদ্ধার করা যেত।
সাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অদুদ মাহমুদ বলেন, আনোয়ার মেম্বারের বাড়ির পুকুর থেকে তিনজন, রোকনউদ্দিন মোল্লার মাঠের দুটি ডোবা থেকে তিনজন, ঢাকা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সামনে একজন, পাঁঠাওয়ালার বাড়ির সামনে থেকে একজন, বাগবাড়ি বাজারের সামনে থেকে একজন, পুরিন্দা বাজারের পাশ থেকে একজনকে প্রায় মৃত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শী বিল্লাল হোসেন ও শহীদুল বলেন, কয়েক দিন আগে পুরিন্দা বাজারে হানিফ অ্যান্ড ব্রাদার্সের বাগবাড়ি গুদামে হানা দিয়ে ডাকাতেরা ২০০ বস্তা চাল লুট করে। এই ঘটনায় থানায় মামলা হলেও চাল উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ কারণে লোকজন ক্ষুব্ধ ছিল। তাই গ্রামবাসী নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছেন।
পুলিশ বলেছে, নিহত আটজনের মধ্যে চারজনের পরিচয় মিলেছে। তাঁরা হলেন ফেনীর সোনাগাজী থানার আলমপুর গ্রামের ওবায়দুল হকের ছেলে রনি ওরফে গঠন (৪০), ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার মধ্য বাড়েবা আকুয়া এলাকার রোবেল (২৫), টিটু (৩০) ও শওকত (৩২)।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার মিলন মিয়ার ছেলে সাব্বির (২৫), ছানা মিয়ার ছেলে সজীব (২৬), লতিফের ছেলে মানিক (৩২) এবং চাঁদপুর সদরের ওছমান মিয়ার ছেলে লোকমান (২৮)।
বেলা তিনটার দিকে আড়াইহাজার থানায় এসে রনির লাশ শনাক্ত করেন তাঁর স্ত্রী নাজমা বেগম। তিনি বলেন, তাঁরা ঢাকার শনির আখড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। তাঁর স্বামী বাসের কন্ডাক্টর হিসেবে কাজ করতেন। বুধবার রাতে কাজের কথা বলে তিনি বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। তাঁদের আট বছরের একটি মেয়ে আছে।
পুলিশ বলেছে, আটক লোকমান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তাঁরা রাত দুইটার দিকে ঢাকার তেজগাঁও থেকে ১৫-১৬ জন ও পরে যাত্রাবাড়ী থেকে আরও ১৪-১৫ জন মিলে একটি ট্রাক নিয়ে ভোরে পুরিন্দা বাজারে ডাকাতি করতে আসেন।
পুরিন্দা বাজারের ভাই ভাই স্টোর চালের আড়তের মালিক হাজি গফুর ভূঁইয়া বলেন, ডাকাতেরা তাঁর আড়ত থেকে ১৫০ বস্তা চাল ট্রাকে তুলে ফেলেছিল।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ১৫ থেকে ২০ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাত দল পুরিন্দা বাজারে একটি চালের আড়তে ডাকাতি করতে ট্রাক নিয়ে এসেছিল। তারা তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে ট্রাকটি ভাড়া করে।
এ ঘটনায় গতকাল রাতে আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে দায়ের করা হত্যা মামলায় কয়েক হাজার লোককে আসামি এবং চালের আড়তে ডাকাতির ঘটনায় ভাই ভাই ট্রেডার্সের মালিক এম এ গফুর বাদী হয়ে ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) মো. জহিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আসকের উদ্বেগ ও নিন্দা: ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে আটজন নিহত ও চারজন আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম সুষ্ঠু ও পরিণামদর্শিতার সঙ্গে পরিচালিত হলে জনগণের পক্ষে এমন সহিংস ও উন্মত্ত হওয়া সম্ভব হতো না। সংবাদপত্রের খবরের ভিত্তিতে আসকের তৈরি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর সাত বিভাগে ১২৩ জন গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছেন।
আসক আড়াইহাজারের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও গণপিটুনির ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে।
No comments