ব্রাজিলের কোপাকাবানায় অন্য দৃশ্য
সে
এক অন্য রকম দৃশ্য রিও ডি জেনিরোর কোপাকাবানা সমুদ্র সৈকতে। হাজার হাজার
মানুষ কিলবিল করছে। তারা সবাই সেখানে একত্রিত হয়েছিলেন ব্রাজিল বনাম চিলি
ম্যাচটি দেখতে। শেষ মুহূর্তে যে নাটকীয়তা জমে ওঠে তখন সেখানে হিমশীতল
নীরবতা। স্থির হয়ে সব চোখ তাকিয়ে থাকে সৈকতে খেলা উপভোগের জন্য বসানো এক
জায়ান্ট স্ক্রিনে। লুই ফিলিপ স্কলারির শিষ্যরা যখন বেলো হোরাইজোন্তে মাঠে
খেলছিল, তখন গোটা দেশ সেলেকাওদের খেলা দেখতে মগ্ন। যদিও স্বাগতিক ব্রাজিলের
হলুদ জার্সি পরিহিত ভক্ত-সমর্থকরাই ছিল বেশি, তবুও চিলির লালশার্টধারী
সমর্থক যে একেবারে ছিল না, তা নয়। কেউ কেউ এসেছিলেন ভিন্ন রূপে। ব্রাজিলের
ঐতিহ্যবাহী সাম্বা ডান্সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচছিলেন অনেকে। ডেভিড লুইজ
যখন চিলির জালে গোল দিলেন, তখন ভক্তদের উচ্ছ্বাস ছাপিয়ে উঠছিল সমুদ্রের
গর্জনকেও। তবে ম্যচের শেষের দিকে যখন তাবৎ ব্রাজিল সমর্থকরা হেরে যাওয়ার
শঙ্কায় ভুগছেন, তখন সৈকতের ব্রাজিল সমর্থকদের অনেকেই ছিলেন প্রার্থনায় রত।
পেনাল্টি শ্যুটআউটে জুলিও সিজার যখন ঠেকিয়ে দিচ্ছিলেন সানচেজদের শট, তখন
যেন অন্তরে কিছুটা স্বস্তি আসতে শুরু করে তাদের। চিলির শেষ শটটি যখন বারে
লেগে ফিরে যায়, তখন আনন্দ-উচ্ছ্বাস আর কান্নার এক অদ্ভুত ঢেউ দেখা যায়
সৈকতের বুকে। চিলির সমর্থকরা তখন বেদনায় আর শোকে মূহ্যমান, আর ব্রাজিল
সমর্থকদের চোখে তখন আনন্দ আর স্বস্তির অশ্রু। কেউ আর্তচিৎকারে গগন বিদীর্ণ
করেন। সাম্বার তালে তালে চলতে থাকে উন্মাতাল রাত। সে দৃশ্য যারা না দেখেছেন
তাদের তা বলে বোঝানো কষ্ট। মুহূর্তের মধ্যে যখন ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত হয়
তখন যেন সেখানে বিস্ফোরণ হয়ে ফেটে পড়ে এতটা সময়ের হিমশীতল নীরবতা।
No comments