জামায়াতের চেয়ে বিএনপি বেশি সক্রিয় by নুরুল ইসলাম বিএসসি
কাদের
মোল্লার ফাঁসির রায়ের পরই জামায়াতের হয়ে বিএনপি কর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে
রাস্তায় গাড়ি ভাঙতে নামে। শুধু গাড়ি নয়, তারা পুলিশকেও আক্রমণ করেছে। পুলিশ
কোনো সরকারি বাহিনী নয়, এরা রাষ্ট্রীয় বাহিনী। পুলিশ রাষ্ট্রের অন্যতম
একটি চালিকাশক্তি। পুলিশকে আক্রমণ করার অর্থই হল রাষ্ট্রকে আক্রমণ করা এবং
রাষ্ট্রীয় যন্ত্রকে বিকল করে দেয়া। যারা রাষ্ট্রীয় যন্ত্র বিকল করতে চায়,
তারা বাংলাদেশের নাগরিক কি-না সে প্রশ্ন থেকে যায়। প্রথমে তারা কেন ভাংচুর
করে, তা পর্যালোচনা করতে চাই। রাস্তায় গাড়ি তো কোনো অপরাধ করেনি বা গাড়ি
বিচার কার্যের সঙ্গে সম্পৃক্তও নয়। গাড়ি কাদের মোল্লাকে ফাঁসির আদেশও
দেয়নি। এ কথা আমরাও জানি, যারা গাড়ি ভাঙছে তারাও জানে। গাড়ি ভাঙার একমাত্র
উদ্দেশ্য আতংক সৃষ্টি করা এবং রাষ্ট্রের সম্পদ ধংস করা। গাড়ি দেশে উৎপাদিত
হয় না, বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে আমদানি করতে হয়। এই গাড়ি যারা পোড়ায়, যারা
ভাঙে, তারা কোনো সভ্য দেশের মানুষ বললে মহাভুল হবে। তারা মানুষের আদলে
প্রাণী মাত্র। এদের বিবেক নেই, তাই বিবেচনাও নেই। উর্দুতে একটা কথা আছে,
‘নজরা নেহি ত জলোয়া ক্যেসা’। অন্ধের সম্মুখে বিদ্যুৎ চমকালেও কী, না
চমকালেও কী? এদের জন্য রাত-দিন সমান, যারা গাড়ি ভাঙে তারা অন্ধ বিবেকের
শিকার।
পুলিশকে কেন আক্রমণের প্রথম শিকারে পরিণত করেছে, তা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সেই ব্রিটিশ আমলে স্বাধীনতাপন্থীরা পুলিশকে আক্রমণ করে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে ওই অস্ত্র দিয়েই রাষ্ট্রযন্ত্রকে আক্রমণ করত। ওই সময় ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধ। কিন্তু এখন তো দেশ স্বাধীন, তবুও কেন পুলিশের ওপর আক্রমণ? এক কথায়, যারা এখন পুলিশ মারছে তাদের ধারণা, এদেশ তাদের নয়। পাকিস্তানই তাদের স্বপ্ন পূরণের ভূমি। বাংলাদেশ তাদের কাছে পরদেশ, তাই যত পার ক্ষতি কর। এই থিউরির বশবর্তী হয়ে উগ্রপন্থীরা পুলিশকে আক্রমণ করে। পুলিশকে আক্রমণ করার দ্বিতীয় কারণ হল, আইন-শৃংখলা রক্ষায় পুলিশ সর্বাগ্রে যায়, ওই জায়গায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ গেলেও আক্রমণের শিকার হতো। দুর্ভাগ্য যে ছাত্রলীগ, যুবলীগের কর্মীরা পুলিশের সাহায্যে এগিয়ে আসে না বা পরবর্তী সময়ে তাদের ধরিয়ে দিতে সাহায্য করে না। ব্যতিক্রম যে নেই, বলা যাবে না। সত্য কথা বলতে কী, পুলিশেও যে জামায়াত-শিবিরের সমর্থক নেই এ কথা হলফ করে কেউ বলতে পারবে না।
যারা নতুন জন্ম, লোভে লাভে যারা শিবিরে নাম লিখিয়েছে, তারাও কিন্তু এখন জামায়াতকে কলংকমুক্ত দেখতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের জামায়াতের ক্রিয়াকর্মগুলো তাদেরও লজ্জা দেয়। কিন্তু লোভ আর লাভের কারণে তারা শিবির ত্যাগ করতে পারে না। ত্যাগ করতে গেলেও ভয়ের কারণ আছে। কিন্তু বাস্তব জীবনে এসে তারা আর জামায়াত করে না। যার যার ধান্ধায় নেমে পড়ে। সরকারি দল যেই থাকে, তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। প্রশ্ন হল, গাড়ি ভাঙে কারা? শিবিরের জিন্সের প্যান্ট পরা এত কর্মী হঠাৎ এলো কী করে? এরা কি আসলেই শিবির, নাকি শিবির নামধারী বিএনপির কর্মী? বিএনপি ঘোরতর আন্দোলনের কথা বলে। ওই মাইক পর্যন্তই। সময়ে সময়ে এরা হেফাজতিদের কাঁধে ভর করে, সুযোগমতো জামায়াতের কাঁধে। নিজেদের কোনো মুরদ নেই, পরের রান্না করা ফিরনি বিলানেই এখন এদের মুখ্য ভূমিকা। নষ্ট জমিতে কেউ চাষ করে না। যেখানে ফসলই জন্মাবে না, ওখানে চাষ করে কোনো লাভ হওয়ার নয়। বিএনপি কেন জামায়াত-হেফাজতিদের নিয়ে থাকতে চায়, তা দেশের মানুষ জানে। উদ্দেশ্য, এদের ভোট নিজেদের পক্ষে টানা। জামায়াত নিষিদ্ধ হলে বিএনপির লাভ। তাই কাদের মোল্লার ফাঁসির পরও কোনো প্রতিক্রিয়া বিএনপির নেই।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
পুলিশকে কেন আক্রমণের প্রথম শিকারে পরিণত করেছে, তা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সেই ব্রিটিশ আমলে স্বাধীনতাপন্থীরা পুলিশকে আক্রমণ করে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে ওই অস্ত্র দিয়েই রাষ্ট্রযন্ত্রকে আক্রমণ করত। ওই সময় ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধ। কিন্তু এখন তো দেশ স্বাধীন, তবুও কেন পুলিশের ওপর আক্রমণ? এক কথায়, যারা এখন পুলিশ মারছে তাদের ধারণা, এদেশ তাদের নয়। পাকিস্তানই তাদের স্বপ্ন পূরণের ভূমি। বাংলাদেশ তাদের কাছে পরদেশ, তাই যত পার ক্ষতি কর। এই থিউরির বশবর্তী হয়ে উগ্রপন্থীরা পুলিশকে আক্রমণ করে। পুলিশকে আক্রমণ করার দ্বিতীয় কারণ হল, আইন-শৃংখলা রক্ষায় পুলিশ সর্বাগ্রে যায়, ওই জায়গায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ গেলেও আক্রমণের শিকার হতো। দুর্ভাগ্য যে ছাত্রলীগ, যুবলীগের কর্মীরা পুলিশের সাহায্যে এগিয়ে আসে না বা পরবর্তী সময়ে তাদের ধরিয়ে দিতে সাহায্য করে না। ব্যতিক্রম যে নেই, বলা যাবে না। সত্য কথা বলতে কী, পুলিশেও যে জামায়াত-শিবিরের সমর্থক নেই এ কথা হলফ করে কেউ বলতে পারবে না।
যারা নতুন জন্ম, লোভে লাভে যারা শিবিরে নাম লিখিয়েছে, তারাও কিন্তু এখন জামায়াতকে কলংকমুক্ত দেখতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের জামায়াতের ক্রিয়াকর্মগুলো তাদেরও লজ্জা দেয়। কিন্তু লোভ আর লাভের কারণে তারা শিবির ত্যাগ করতে পারে না। ত্যাগ করতে গেলেও ভয়ের কারণ আছে। কিন্তু বাস্তব জীবনে এসে তারা আর জামায়াত করে না। যার যার ধান্ধায় নেমে পড়ে। সরকারি দল যেই থাকে, তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। প্রশ্ন হল, গাড়ি ভাঙে কারা? শিবিরের জিন্সের প্যান্ট পরা এত কর্মী হঠাৎ এলো কী করে? এরা কি আসলেই শিবির, নাকি শিবির নামধারী বিএনপির কর্মী? বিএনপি ঘোরতর আন্দোলনের কথা বলে। ওই মাইক পর্যন্তই। সময়ে সময়ে এরা হেফাজতিদের কাঁধে ভর করে, সুযোগমতো জামায়াতের কাঁধে। নিজেদের কোনো মুরদ নেই, পরের রান্না করা ফিরনি বিলানেই এখন এদের মুখ্য ভূমিকা। নষ্ট জমিতে কেউ চাষ করে না। যেখানে ফসলই জন্মাবে না, ওখানে চাষ করে কোনো লাভ হওয়ার নয়। বিএনপি কেন জামায়াত-হেফাজতিদের নিয়ে থাকতে চায়, তা দেশের মানুষ জানে। উদ্দেশ্য, এদের ভোট নিজেদের পক্ষে টানা। জামায়াত নিষিদ্ধ হলে বিএনপির লাভ। তাই কাদের মোল্লার ফাঁসির পরও কোনো প্রতিক্রিয়া বিএনপির নেই।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
No comments