পাওয়ার প্লের রুবেল
চালচলনে, কথাবার্তায় ফাস্ট বোলারসুলভ কোনো ব্যাপারই নেই। এমনই মিনমিন করে কথা বলেন যে দুহাত দূরে দাঁড়িয়েও সেটি কান পেতে শুনতে হয়। শারীরিকভাবে খুব ডাকাবুকোও বলা যাবে না। একটু দীর্ঘ বিমানযাত্রার সফর হলে সেই ধকল কাটাতে দু-তিন দিন লেগে যায়। তবে রুবেল হোসেন বোলিংটা করতে জানেন!
দুঃস্বপ্নের এই জিম্বাবুয়ে সফর থেকে বাংলাদেশ যদি একটি সুখস্মৃতিও সঙ্গে নিয়ে যায়, সেটি হবে রুবেলের বোলিং। সব শেষ হয়ে যাওয়ার কাল চতুর্থ ওয়ানডেতে ভুলে যাওয়া জয়ের স্বাদ। টানা সাতটি ওয়ানডে হারার পর এই জয়, যাতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখলেন রুবেল হোসেন।
চার ম্যাচে দ্বিতীয়বার ৪ উইকেট। বুলাওয়ের ব্যাটিং উইকেটে জিম্বাবুয়ের হাতে প্রথমে ব্যাট তুলে দেওয়ার রক্ষণাত্মক সিদ্ধান্তটা বুমেরাং হয়নি তাঁর কল্যাণেই। ৪৪তম ওভারে জিম্বাবুয়ে যখন ব্যাটিং পাওয়ার প্লে নিল, সেই আশঙ্কা ছিলই। রান ৪ উইকেটে ১৮০। উইকেটে দুই সেট ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেলর ও এলটন চিগুম্বুরা। বাকি ৭ ওভারে ৬০-৭০ রান উঠে যাওয়াও অসম্ভব কিছু ছিল না।
অথচ অলআউট হওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে করতে পারল আর মাত্র ১৯ রান। মূলে সেই রুবেল। ওয়ানডের পাওয়ার প্লেতে বোলিং এখন বিশেষজ্ঞ বোলার দাবি করে। রুবেল এখন সেই স্বীকৃতি পেতেই পারেন। বিশেষ করে কালকের পারফরম্যান্সের পর। প্রথম ৬ ওভারে ২৫ রান দিয়ে কোনো উইকেট নেই। পাওয়ার প্লের প্রথম ওভারে ফিরেই ২ উইকেট। পরের ওভারে আরও দুটি।
চার বলের (মাঝখানে একটি ওয়াইড ছিল) মধ্যে চিগুম্বুরা ও টেলরকে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়েকে জোর ঝাঁকুনি দিয়েছিলেন। পরের ওভারে তিন বলের মধ্যেই ওয়ালার ও প্রাইসকে আউট করে মাটিতেই ফেলে দিলেন জিম্বাবুয়েকে। ওই দুই ওভার আলাদা করে নিলে ৫ রানে রুবেলের ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে তো ডাবল উইকেট মেডেন।
প্রথম ওয়ানডেতে যৎসামান্য পুঁজি নিয়েও বিনা প্রতিরোধে হার মানেননি রুবেল। সেদিনও ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। জেতাতে না পারলেও ম্যাচটাকে একেবারে একপেশে হতে দেননি। পুরোনো বলে রিভার্স সুইংয়ের জাদু দেখিয়েছিলেন সেদিন। দেখালেন কালও। জোরে বল করার সহজাত ক্ষমতাই তাঁকে পাদপ্রদীপের আলোয় এনেছিল। বন্ধুদের সঙ্গে মনের আনন্দে খেলে বেড়ানো তরুণের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হয়ে যাওয়া গ্রামীণফোন পেসার হান্ট প্রকল্পের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে দ্রুততম বোলারের স্বীকৃতিটা সম্ভবত তাঁরই প্রাপ্য। রুবেলকে আরও অনন্য করেছে পুরোনো বলে ওই রিভার্স সুইং করানোর ক্ষমতা। মোহাম্মদ শরীফের পর পুরোনো বলে এমন কার্যকর পেস বোলার আর পায়নি বাংলাদেশ।
এই সফরটা ছিল স্টুয়ার্ট ল-র জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের চেনা-জানার মিশন। এত দিনে অনেককেই চিনেছেন, অনেক কিছুই জেনেছেন। তবে রুবেলকে চিনতে একদমই সময় লাগেনি তাঁর। রুবেলকে কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে দেখার আগেই দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে ফেলেছিলেন, ‘বিধ্বংসী এক ফাস্ট বোলার হয়ে ওঠার মতো প্রতিভা।’ এই সিরিজ শেষে স্টুয়ার্ট ল-র নিজের ধারণার ওপর আরও বিশ্বাস জন্মাবে।
ক্যারিয়ারে চতুর্থ বারের মতো ৪ উইকেট নিলেন কাল। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে তাঁর চেয়ে বেশিবার ৪ উইকেট নিয়েছেন মাত্র দুজন। আবদুর রাজ্জাক ও মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে ৮ বার ম্যাচে ৪ উইকেট নিতে রাজ্জাককে যেখানে ১২৩ ম্যাচ খেলতে হয়েছে, ৬ বার ৪ উইকেট নিতে মাশরাফিকে ১১৮ ম্যাচ, রুবেলের ৪ বার হয়ে গেল মাত্র ৩২ ম্যাচেই।
ওয়ানডেতে চারবার ৪ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব আছে বাংলাদেশের আর একজন বোলারেরই। রাজ্জাকের মতো তিনিও ছিলেন কালকের ম্যাচে। শফিউল ইসলামের চারবার ৪ উইকেট ৩৬ ম্যাচে। এই দুজনের সঙ্গে মাশরাফি যোগ হলে বাংলাদেশের পেস আক্রমণটা ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেওয়ার মতোই হবে।
রুবেলের শুরুটাই হয়েছিল ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে। স্মরণীয় এক জয় দিয়েও। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেকেই ৩৩ রানে ৪ উইকেট। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে ৪ উইকেট আছে শুধু তাঁরই। মুদ্রার উল্টো পিঠটা দেখতে একটুও সময় লাগেনি। প্রথম ম্যাচের হিরো পরের ম্যাচেই হয়ে গেলেন ভিলেন। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে প্রতিপক্ষ সেই শ্রীলঙ্কাই। রুবেলের এক ওভারে ২০ রান তুলে নিয়ে মুরালিধরন কেড়ে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের মুখের গ্রাস। সেটি যদি পাওয়ার প্লেতে রুবেলের সবচেয়ে যন্ত্রণার স্মৃতি হয়, সবচেয়ে সুখস্মৃতি নিঃসন্দেহে কালকের বুলাওয়ে।
অভিষেক ম্যাচ আর এই সিরিজের মাঝখানে যে ৪ উইকেট, সেটিও বড় আনন্দের বার্তা বয়ে এনেছিল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫ রানে ৪ উইকেট এখনো রুবেলের ক্যারিয়ার-সেরা বোলিং। সেই অর্জন তাঁর ব্যক্তিগত আনন্দের সীমা ছাড়িয়ে উৎসবের রং ছড়িয়ে দিয়েছিল পুরো দেশেই। কাইল মিলসের স্টাম্প উপড়ে ফেলার মাধ্যমে রুবেলের হাতেই যে সম্পন্ন হয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে ‘বাংলাওয়াশ’।
সেই ম্যাচের পর কালই আবার প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ। দুই ম্যাচেই ‘হোয়াইটওয়াশ’ শব্দটা উড়ে বেড়াচ্ছিল বাতাসে। ঢাকায় রুবেল হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করেছিলেন। বুলাওয়েতে উড়িয়ে দিলেন হোয়াইটওয়াশের আশঙ্কা।
দুঃস্বপ্নের এই জিম্বাবুয়ে সফর থেকে বাংলাদেশ যদি একটি সুখস্মৃতিও সঙ্গে নিয়ে যায়, সেটি হবে রুবেলের বোলিং। সব শেষ হয়ে যাওয়ার কাল চতুর্থ ওয়ানডেতে ভুলে যাওয়া জয়ের স্বাদ। টানা সাতটি ওয়ানডে হারার পর এই জয়, যাতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখলেন রুবেল হোসেন।
চার ম্যাচে দ্বিতীয়বার ৪ উইকেট। বুলাওয়ের ব্যাটিং উইকেটে জিম্বাবুয়ের হাতে প্রথমে ব্যাট তুলে দেওয়ার রক্ষণাত্মক সিদ্ধান্তটা বুমেরাং হয়নি তাঁর কল্যাণেই। ৪৪তম ওভারে জিম্বাবুয়ে যখন ব্যাটিং পাওয়ার প্লে নিল, সেই আশঙ্কা ছিলই। রান ৪ উইকেটে ১৮০। উইকেটে দুই সেট ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেলর ও এলটন চিগুম্বুরা। বাকি ৭ ওভারে ৬০-৭০ রান উঠে যাওয়াও অসম্ভব কিছু ছিল না।
অথচ অলআউট হওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে করতে পারল আর মাত্র ১৯ রান। মূলে সেই রুবেল। ওয়ানডের পাওয়ার প্লেতে বোলিং এখন বিশেষজ্ঞ বোলার দাবি করে। রুবেল এখন সেই স্বীকৃতি পেতেই পারেন। বিশেষ করে কালকের পারফরম্যান্সের পর। প্রথম ৬ ওভারে ২৫ রান দিয়ে কোনো উইকেট নেই। পাওয়ার প্লের প্রথম ওভারে ফিরেই ২ উইকেট। পরের ওভারে আরও দুটি।
চার বলের (মাঝখানে একটি ওয়াইড ছিল) মধ্যে চিগুম্বুরা ও টেলরকে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়েকে জোর ঝাঁকুনি দিয়েছিলেন। পরের ওভারে তিন বলের মধ্যেই ওয়ালার ও প্রাইসকে আউট করে মাটিতেই ফেলে দিলেন জিম্বাবুয়েকে। ওই দুই ওভার আলাদা করে নিলে ৫ রানে রুবেলের ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে তো ডাবল উইকেট মেডেন।
প্রথম ওয়ানডেতে যৎসামান্য পুঁজি নিয়েও বিনা প্রতিরোধে হার মানেননি রুবেল। সেদিনও ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। জেতাতে না পারলেও ম্যাচটাকে একেবারে একপেশে হতে দেননি। পুরোনো বলে রিভার্স সুইংয়ের জাদু দেখিয়েছিলেন সেদিন। দেখালেন কালও। জোরে বল করার সহজাত ক্ষমতাই তাঁকে পাদপ্রদীপের আলোয় এনেছিল। বন্ধুদের সঙ্গে মনের আনন্দে খেলে বেড়ানো তরুণের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হয়ে যাওয়া গ্রামীণফোন পেসার হান্ট প্রকল্পের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে দ্রুততম বোলারের স্বীকৃতিটা সম্ভবত তাঁরই প্রাপ্য। রুবেলকে আরও অনন্য করেছে পুরোনো বলে ওই রিভার্স সুইং করানোর ক্ষমতা। মোহাম্মদ শরীফের পর পুরোনো বলে এমন কার্যকর পেস বোলার আর পায়নি বাংলাদেশ।
এই সফরটা ছিল স্টুয়ার্ট ল-র জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের চেনা-জানার মিশন। এত দিনে অনেককেই চিনেছেন, অনেক কিছুই জেনেছেন। তবে রুবেলকে চিনতে একদমই সময় লাগেনি তাঁর। রুবেলকে কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে দেখার আগেই দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে ফেলেছিলেন, ‘বিধ্বংসী এক ফাস্ট বোলার হয়ে ওঠার মতো প্রতিভা।’ এই সিরিজ শেষে স্টুয়ার্ট ল-র নিজের ধারণার ওপর আরও বিশ্বাস জন্মাবে।
ক্যারিয়ারে চতুর্থ বারের মতো ৪ উইকেট নিলেন কাল। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে তাঁর চেয়ে বেশিবার ৪ উইকেট নিয়েছেন মাত্র দুজন। আবদুর রাজ্জাক ও মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে ৮ বার ম্যাচে ৪ উইকেট নিতে রাজ্জাককে যেখানে ১২৩ ম্যাচ খেলতে হয়েছে, ৬ বার ৪ উইকেট নিতে মাশরাফিকে ১১৮ ম্যাচ, রুবেলের ৪ বার হয়ে গেল মাত্র ৩২ ম্যাচেই।
ওয়ানডেতে চারবার ৪ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব আছে বাংলাদেশের আর একজন বোলারেরই। রাজ্জাকের মতো তিনিও ছিলেন কালকের ম্যাচে। শফিউল ইসলামের চারবার ৪ উইকেট ৩৬ ম্যাচে। এই দুজনের সঙ্গে মাশরাফি যোগ হলে বাংলাদেশের পেস আক্রমণটা ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেওয়ার মতোই হবে।
রুবেলের শুরুটাই হয়েছিল ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে। স্মরণীয় এক জয় দিয়েও। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেকেই ৩৩ রানে ৪ উইকেট। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে ৪ উইকেট আছে শুধু তাঁরই। মুদ্রার উল্টো পিঠটা দেখতে একটুও সময় লাগেনি। প্রথম ম্যাচের হিরো পরের ম্যাচেই হয়ে গেলেন ভিলেন। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে প্রতিপক্ষ সেই শ্রীলঙ্কাই। রুবেলের এক ওভারে ২০ রান তুলে নিয়ে মুরালিধরন কেড়ে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের মুখের গ্রাস। সেটি যদি পাওয়ার প্লেতে রুবেলের সবচেয়ে যন্ত্রণার স্মৃতি হয়, সবচেয়ে সুখস্মৃতি নিঃসন্দেহে কালকের বুলাওয়ে।
অভিষেক ম্যাচ আর এই সিরিজের মাঝখানে যে ৪ উইকেট, সেটিও বড় আনন্দের বার্তা বয়ে এনেছিল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫ রানে ৪ উইকেট এখনো রুবেলের ক্যারিয়ার-সেরা বোলিং। সেই অর্জন তাঁর ব্যক্তিগত আনন্দের সীমা ছাড়িয়ে উৎসবের রং ছড়িয়ে দিয়েছিল পুরো দেশেই। কাইল মিলসের স্টাম্প উপড়ে ফেলার মাধ্যমে রুবেলের হাতেই যে সম্পন্ন হয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে ‘বাংলাওয়াশ’।
সেই ম্যাচের পর কালই আবার প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ। দুই ম্যাচেই ‘হোয়াইটওয়াশ’ শব্দটা উড়ে বেড়াচ্ছিল বাতাসে। ঢাকায় রুবেল হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করেছিলেন। বুলাওয়েতে উড়িয়ে দিলেন হোয়াইটওয়াশের আশঙ্কা।
No comments