দেশের ইতিহাসে খেলাপি ঋণের রেকর্ড

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণের রেকর্ড হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ২০.২ শতাংশ।

আলোচ্য সময় শেষে ব্যাংক খাতের ঋণস্থিতি ছিল ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

গত ৫ই আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের পর খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করেছে। সাবেক সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে প্রভাবশালীদের বড় অঙ্কের ঋণ দিতে নানা সুবিধা দেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ কাগজে-কলমে কম দেখাতে নেয়া হয়েছিল একের পর এক নীতি। সরকার পরিবর্তনের পর সেই নীতি থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য বলছে, মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ২০.২ শতাংশ খেলাপি। এ সময়ের শেষে ব্যাংকিং খাতের ঋণস্থিতি ছিল ১৭ লাখ ৭৭৭ হাজার কোটি টাকা। এর আগে ব্যাংক খাতে সর্বোচ্চ খেলাপি রেকর্ড ছিল সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে। সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশ। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা।

২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। আর সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ কোটি টাকা।
গত (২০২৩) ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতের ঋণস্থিতি ছিল ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয় ৯ শতাংশ। আর বছরের সেপ্টেম্বর (২০২৪) শেষে ব্যাংক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছিল ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২২ কোটি টাকা। যার মধ্যে খেলাপি ঋণ ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১৬.৯৩ শতাংশ খেলাপি।

সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, আমাদের কাছে যতই নতুন তথ্য আসছে ততই বাড়ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। আগামীতে হয়তো আরও বাড়বে। তবে কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, আমরা সে চেষ্টা করছি। তবে এখনো খেলাপি ঋণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়নি।’ তিনি আশ্বস্ত করেন, ব্যাংক থেকে আমানতকারীদের টাকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না।
বিভিন্ন আইন কঠোর করার চেষ্টা চলছে। আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠন করতে চাই। যেসব ব্যাংক একীভূত করার দরকার, সেগুলো একীভূত করবো অথবা নতুন বিনিয়োগকারী নিয়ে এসে পুনর্গঠন করা হবে। তা ছাড়া আইনগত সংস্কার হচ্ছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন রিভিউ হচ্ছে। এসব শেষ হলে ব্যাংক খাত আইন অনুযায়ী পুনর্গঠন করা হবে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.