যুদ্ধবিরতিতে বিলম্ব, গাজায় ঠাণ্ডায় মরছে নবজাতক

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরাইল ও হামাসের কালক্ষেপণের মধ্যে নবজাতকদের অবস্থা শোচনীয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় এখন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। এর ফলে তাদের মৃত্যু ঘটছে। একদিকে শিশুদের মৃত্যু, অন্যদিকে খাদ্যের জন্য হাহাকার। জাতিসংঘ এরই মধ্যে সতর্ক করেছে, গাজাবাসী দুর্ভিক্ষাবস্থার মুখোমুখি। তাদেরকে বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে আন্তর্জাতিক মহল থেকে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। একইভাবে ইসরাইল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে গাজাবাসীর ওপর। প্রতিদিন ঝরছে মানুষের প্রাণ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে শীতের তীব্রতা। প্রাপ্ত বয়স্করা কোনোমতে নিজেকে সামাল দিলেও নবজাতক ও শিশুদের অবস্থা নাজুক। ঠাণ্ডাজনিক বিভিন্ন রোগে ভুগছে তারা। তীব্র ঠাণ্ডায় জমে প্রাণ হারিয়েছে সদ্য জন্ম নেয়া এক  নবজাতক। অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ওই শিশু। খান ইউনিস হাসপাতালের শিশুবিভাগের প্রধান আহমেদ আল ফাররা জানান, ৪৮ ঘণ্টায় হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে আরও দুই শিশু।

২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় হামাস। এতে প্রাণ হারায় প্রায় ১১৬০ ইসরাইলি নাগরিক। হামাস জিম্মি করে ২৫০ জনকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল। তারপর থেকে টানা ১৪ মাস ধরে গাজায় অব্যাহত আছে ইসরাইলি আগ্রাসন। এই ১৪ মাসের যুদ্ধে মানবিক বিপর্যয় চলছে গাজা উপত্যকায়। ইসরাইলি আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন গাজার কমপক্ষে ৪৫ হাজার মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২৩ লাখ  গাজাবাসী। দেখা দিয়েছে খাবার, পানি ও চিকিৎসা উপকরণের তীব্র সংকট। হাসপাতালগুলোতেও চলছে মানবিক সংকট। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চললেও তাতে কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না । হামাস ও ইসরাইলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে বার বার বিলম্বিত হচ্ছে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব। ইসরাইলের বিরুদ্ধে  একের পর এক শর্ত জুড়ে দেয়ার অভিযোগ এনেছে হামাস। যা অগ্রহণযোগ্য বলে দাবি তাদের। ফলে বিলম্বিত হচ্ছে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছা। আর ক্ষীণ থেকে ক্ষীণ হচ্ছে হামাসের হাতে আটক থাকা জিম্মিদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা। এতেই ক্ষোভে ফুঁসছে জিম্মিদের পরিবারগুলো। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু’র পদত্যাগের দাবিতে করছেন বিক্ষোভ ও মানববন্ধন। তবে এবার হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২০ই জানুয়ারি পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের আগে যদি আটক জিম্মিদের মুক্ত না করা হয় তাহলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে হামাস’কে। 

mzamin

No comments

Powered by Blogger.