ভারতের হাতে এ কোন নতুন অস্ত্র?
মহাকাশ
শক্তিতে আমেরিকা, রাশিয়া ও চীনের পরে এখন ভারতকেই সবচেয়ে শক্তিশালী বলে
মনে করা হচ্ছে। নিজেদের শক্তিমত্তার প্রমাণ গতকাল বুধবার দিয়েছে দেশটি।
মহাকাশে অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল নামে অতি উন্নত প্রযুক্তির একটি
অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে ভারত। খুব কম দেশের কাছেই এই
অভিনব অস্ত্র রয়েছে। কিন্তু এই অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল আসলে কী? কেন
এটি এত দুর্লভ? আসুন, জেনে নিই নতুন এই অস্ত্র সম্পর্কে।
অ্যান্টি স্যাটেলাইট মিসাইল কী?
আধুনিক সমরাস্ত্রের এই যুগে লড়াই কেবল যুদ্ধের ময়দানে চলে না, হয় প্রযুক্তিগত দিকেও। স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ দিয়ে এক পক্ষ ক্রমাগত নজর রাখে অন্য পক্ষের ওপর। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে যার কাছে বেশি তথ্য থাকে সেই এগিয়ে যায় অনেকটা। শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইট ধ্বংস করে দিতে পারলে তাই যুদ্ধের আগেই অনেকটা বাড়তি সুবিধা এনে দেয়। আর অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল ঠিক এই কাজটিই করে। শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইট ধ্বংস করে দেওয়া বা তাদের যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত করাই এই অস্ত্রের মূল উদ্দেশ্য। এ ছাড়া প্রতিপক্ষের ব্যালিস্টিক মিসাইল মাঝপথে আটকে দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে এই অস্ত্রের। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন বলছে, বুধবার সফলভাবে মিসাইল নিক্ষেপের মাধ্যমে অন্য দেশগুলোর স্যাটেলাইটকে একপ্রকার হুমকির মুখেই ফেলে দিয়েছে ভারত।
গত মাসেই পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছিল ভারত। চীনা ও রুশ রকেট ব্যবহার করে মহাকাশে বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপন করেছে পাকিস্তান। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে পাকিস্তান নয়, বরং ভারতের এই নতুন অস্ত্র নিয়ে বেশি চিন্তিত হবে চীন। কেবল ২০১৮ সালেই ১২টির মতো স্যাটেলাইট স্থাপন করেছে চীন।
ভারতের ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের জ্যেষ্ঠ সদস্য অজয় লেলে বলেছেন, ‘ভারতকে অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল তৈরি করতেই হতো। কারণ চীন আরও এক যুগ আগে ২০০৭ সালেই এই মিসাইল তৈরি করে ফেলেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই অস্ত্রের মাধ্যমে পুরো উপমহাদেশের কাছে একটি বার্তা পাঠাচ্ছে ভারত। ভারত জানাতে চাইছে, মহাকাশে যুদ্ধ করার মতো পর্যাপ্ত অস্ত্র আমাদের আছে।’
এই অস্ত্র কার কার হাতে আছে?
প্রথম দেশ হিসেবে অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেটি ১৯৫৯ সালের ঘটনা। ওই সময় এই প্রযুক্তি ছিল একেবারেই নতুন ও দুর্লভ। ‘বোল্ড ওরিয়ন’ নামের সেই মিসাইলটি একটি বোমা থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এক্সপ্লোরার–৬ নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহের একদম কাছ ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছিল ক্ষেপণাস্ত্রটি। বলা হয়ে থাকে, ‘এক্সপ্লোরার–৬’কে লক্ষ্য করে নিখুঁতভাবে মিসাইলটি নিক্ষেপ করা হলে স্যাটেলাইটটি নিশ্চিতভাবেই ধ্বংস হয়ে যেত।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নও আমেরিকার চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে ছিল না। গত শতাব্দীর ষাট ও সত্তরের দশকে এমন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এরপর ১৯৮৫ সালে এফ-১৫ যুদ্ধবিমান থেকে এএসএম-১৩৫ নামে একটি অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল উৎক্ষেপণ করে আমেরিকা। মিসাইলটি আমেরিকারই ‘সোলউইন্ড পি৭৮-১’ নামের একটি স্যাটেলাইট ধ্বংস করেছিল।
এরপর প্রায় দুই দশক আর কোনো অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল উৎক্ষেপণের ঘটনা ঘটেনি। ২০০৭ সালে আমেরিকা ও রাশিয়ার পাশে নাম লেখায় চীন। বিশ্বের মাত্র তৃতীয় দেশ হিসেবে মহাকাশে অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল ছোড়ে দেশটি। একটি পুরোনো আবহাওয়া স্যাটেলাইট ধ্বংস করে নিজেদের মহাকাশ শক্তিমত্তার জানান দেয় বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটি। মহাকাশের টেকসই ও শান্তিপ্রিয় ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কাজ করা একটি সংস্থা সিকিউর ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের মতে, চীনের এই অস্ত্র পরীক্ষা মহাকাশে পৃথিবীর কক্ষপথে সবচেয়ে বেশি বর্জ্য উৎপন্ন করেছে। চীনের এই অস্ত্র নিক্ষেপের পরে পৃথিবীর চারপাশে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি আবর্জনা পাওয়া গিয়েছিল।
চীনের অস্ত্র নিক্ষেপের পরের বছর যুক্তরাষ্ট্র ফের আরেকটি মিসাইল নিক্ষেপ করে। ওই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য ছিল গুপ্তচরবৃত্তির কাজে নিয়োজিত একটি কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করা।
মিশন শক্তি কী?
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে তা মহাকাশে ৩০০ কিলোমিটার দূরে থাকা একটি স্যাটেলাইট ধ্বংস করেছে। এমনটাই দাবি করছে ভারত।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে ভারত। যে স্যাটেলাইট ধ্বংস করা হয়েছে সেটির অবস্থান ছিল ‘লো আর্থ অরবিটে’। সাধারণত দুই হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় স্থাপন করা হয় এমন কৃত্রিম উপগ্রহ। এগুলো ভূমিতে চলা কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এই কৃত্রিম উপগ্রহ দিয়ে গুপ্তচরবৃত্তির কাজ করা যায়। অর্থাৎ অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল দিয়ে গুপ্তচরবৃত্তিতে ব্যবহার করা শত্রুপক্ষের এ ধরনের যেকোনো কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করার সক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে ভারত।
অবশ্য এখনো পর্যন্ত কোনো দেশ অন্যের বিরুদ্ধে এই অস্ত্র ব্যবহার করেনি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইলের পরীক্ষা করে মূলত অন্যান্য দেশকে সাবধান করে দিতে চায় শক্তিধর দেশগুলো। নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দেওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য।
অ্যান্টি স্যাটেলাইট মিসাইল কী?
আধুনিক সমরাস্ত্রের এই যুগে লড়াই কেবল যুদ্ধের ময়দানে চলে না, হয় প্রযুক্তিগত দিকেও। স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ দিয়ে এক পক্ষ ক্রমাগত নজর রাখে অন্য পক্ষের ওপর। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে যার কাছে বেশি তথ্য থাকে সেই এগিয়ে যায় অনেকটা। শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইট ধ্বংস করে দিতে পারলে তাই যুদ্ধের আগেই অনেকটা বাড়তি সুবিধা এনে দেয়। আর অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল ঠিক এই কাজটিই করে। শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইট ধ্বংস করে দেওয়া বা তাদের যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত করাই এই অস্ত্রের মূল উদ্দেশ্য। এ ছাড়া প্রতিপক্ষের ব্যালিস্টিক মিসাইল মাঝপথে আটকে দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে এই অস্ত্রের। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন বলছে, বুধবার সফলভাবে মিসাইল নিক্ষেপের মাধ্যমে অন্য দেশগুলোর স্যাটেলাইটকে একপ্রকার হুমকির মুখেই ফেলে দিয়েছে ভারত।
গত মাসেই পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছিল ভারত। চীনা ও রুশ রকেট ব্যবহার করে মহাকাশে বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপন করেছে পাকিস্তান। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে পাকিস্তান নয়, বরং ভারতের এই নতুন অস্ত্র নিয়ে বেশি চিন্তিত হবে চীন। কেবল ২০১৮ সালেই ১২টির মতো স্যাটেলাইট স্থাপন করেছে চীন।
ভারতের ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের জ্যেষ্ঠ সদস্য অজয় লেলে বলেছেন, ‘ভারতকে অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল তৈরি করতেই হতো। কারণ চীন আরও এক যুগ আগে ২০০৭ সালেই এই মিসাইল তৈরি করে ফেলেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই অস্ত্রের মাধ্যমে পুরো উপমহাদেশের কাছে একটি বার্তা পাঠাচ্ছে ভারত। ভারত জানাতে চাইছে, মহাকাশে যুদ্ধ করার মতো পর্যাপ্ত অস্ত্র আমাদের আছে।’
এই অস্ত্র কার কার হাতে আছে?
প্রথম দেশ হিসেবে অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেটি ১৯৫৯ সালের ঘটনা। ওই সময় এই প্রযুক্তি ছিল একেবারেই নতুন ও দুর্লভ। ‘বোল্ড ওরিয়ন’ নামের সেই মিসাইলটি একটি বোমা থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এক্সপ্লোরার–৬ নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহের একদম কাছ ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছিল ক্ষেপণাস্ত্রটি। বলা হয়ে থাকে, ‘এক্সপ্লোরার–৬’কে লক্ষ্য করে নিখুঁতভাবে মিসাইলটি নিক্ষেপ করা হলে স্যাটেলাইটটি নিশ্চিতভাবেই ধ্বংস হয়ে যেত।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নও আমেরিকার চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে ছিল না। গত শতাব্দীর ষাট ও সত্তরের দশকে এমন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এরপর ১৯৮৫ সালে এফ-১৫ যুদ্ধবিমান থেকে এএসএম-১৩৫ নামে একটি অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল উৎক্ষেপণ করে আমেরিকা। মিসাইলটি আমেরিকারই ‘সোলউইন্ড পি৭৮-১’ নামের একটি স্যাটেলাইট ধ্বংস করেছিল।
এরপর প্রায় দুই দশক আর কোনো অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল উৎক্ষেপণের ঘটনা ঘটেনি। ২০০৭ সালে আমেরিকা ও রাশিয়ার পাশে নাম লেখায় চীন। বিশ্বের মাত্র তৃতীয় দেশ হিসেবে মহাকাশে অ্যান্টি–স্যাটেলাইট মিসাইল ছোড়ে দেশটি। একটি পুরোনো আবহাওয়া স্যাটেলাইট ধ্বংস করে নিজেদের মহাকাশ শক্তিমত্তার জানান দেয় বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটি। মহাকাশের টেকসই ও শান্তিপ্রিয় ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কাজ করা একটি সংস্থা সিকিউর ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের মতে, চীনের এই অস্ত্র পরীক্ষা মহাকাশে পৃথিবীর কক্ষপথে সবচেয়ে বেশি বর্জ্য উৎপন্ন করেছে। চীনের এই অস্ত্র নিক্ষেপের পরে পৃথিবীর চারপাশে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি আবর্জনা পাওয়া গিয়েছিল।
চীনের অস্ত্র নিক্ষেপের পরের বছর যুক্তরাষ্ট্র ফের আরেকটি মিসাইল নিক্ষেপ করে। ওই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য ছিল গুপ্তচরবৃত্তির কাজে নিয়োজিত একটি কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করা।
মিশন শক্তি কী?
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে তা মহাকাশে ৩০০ কিলোমিটার দূরে থাকা একটি স্যাটেলাইট ধ্বংস করেছে। এমনটাই দাবি করছে ভারত।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে ভারত। যে স্যাটেলাইট ধ্বংস করা হয়েছে সেটির অবস্থান ছিল ‘লো আর্থ অরবিটে’। সাধারণত দুই হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় স্থাপন করা হয় এমন কৃত্রিম উপগ্রহ। এগুলো ভূমিতে চলা কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এই কৃত্রিম উপগ্রহ দিয়ে গুপ্তচরবৃত্তির কাজ করা যায়। অর্থাৎ অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল দিয়ে গুপ্তচরবৃত্তিতে ব্যবহার করা শত্রুপক্ষের এ ধরনের যেকোনো কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করার সক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে ভারত।
অবশ্য এখনো পর্যন্ত কোনো দেশ অন্যের বিরুদ্ধে এই অস্ত্র ব্যবহার করেনি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইলের পরীক্ষা করে মূলত অন্যান্য দেশকে সাবধান করে দিতে চায় শক্তিধর দেশগুলো। নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দেওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য।
No comments