সন্ত্রাস বিঘ্নিত পাক-ভারত সম্পর্ক by সৈয়দ রশীদ মুনির
বিদায়ী বছরটি শেষ হয়েছে পাক-ভারত
পরিস্থিতির ক্ষেত্রে একটি তুলনামূলক ইতিবাচক ঘটনার মধ্য দিয়ে। দু’দেশের
পররাষ্ট্র সচিব ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরাজমান কাশ্মীর ও অন্যান্য
সমস্যা নিরসনে আলোচনা শুরু করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। উন্নয়নের আনন্দে
অবগাহন করে পাকিস্তান ও ভারতের সরকার ভবিষ্যতের বিষয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছে
এবং কয়েক দিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাকিস্তান সফর
শান্তির ভবিষ্যৎ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দিয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রটি পরিবর্তনশীল, যেখানে কয়েক বছরের অগ্রগতি কয়েক ঘণ্টায় অপূর্ণতায় পর্যবসিত হতে পারে। প্রতিটি পদক্ষেপ সঠিক পথে নেয়ার পরও আমরা উল্টো পথে বহু পদক্ষেপ পিছিয়ে যেতে পারি। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে অত্যন্ত ধীরগতির শান্তি প্রক্রিয়া- যা তার অনিশ্চয়তা ও ভঙ্গুরতার জন্য কুখ্যাত- সামনের দিনগুলোতে আরও একবার পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। এবং তা হবে এমনসব ঘটনার আলোকে, যেখানে শান্তিপ্রত্যাশীরা অসন্তোষ এবং যুদ্ধবাজরা উল্লাস প্রকাশ করছে।
এ মুহূর্তে উদ্বেগের কারণ হল ভারতীয় সীমান্তের ওপারে হামলা, যে জন্য রাষ্ট্রবহির্ভূত অনুঘটক ও জঙ্গিদের দায়ী করা হচ্ছে। এসব ঘটনার প্রকৃত সত্য খুঁজে বের করা কঠিন। তবে এখন পর্যন্ত যেসব রিপোর্টকে বিশ্বাস করতে হচ্ছে সেগুলো বলছে, পাক-ভারত সীমান্তের কাছে পাঠানকোটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঘাঁটির ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে জঙ্গি হামলাটি চালানো হয়েছে। হামলার ঘটনার পর এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বলছে, এ হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জৈশ-এ-মোহাম্মদ। এ দাবি যদি সত্য হয় তাহলে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কোনো শান্তির প্রত্যাশাকে নিশ্চিতভাবেই বিদায় জানাতে হবে।
পরিস্থিতির এমন হতাশাজনক মূল্যায়নের দুটি কারণ রয়েছে। যদি ওই হামলায় উল্লিখিত জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সত্য হয়, তাহলে ভারত সরকারের উদ্বেগের কারণটি হবে প্রথমত. পাকিস্তানের নিজ ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে জঙ্গিবাদী অবকাঠামো ভেঙে দিতে দেশটির রাষ্ট্রীয় সামর্থ্যরে প্রশ্নে। দ্বিতীয়ত. এবং সম্ভবত যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক তা হল, এ হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ইস্টাবলিশমেন্টের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনগুলোর সম্পর্কের বিষয়ে ভারত সরকারের অবিশ্বাস আরও বাড়াবে। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ইস্টাবলিশমেন্ট জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে কিছু বিষয়ে সহমত পোষণ করে বলে মনে করা হয়।
এ ধরনের পরিবেশে হামলার প্রকৃত উৎস ও উদ্দেশ্য খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো খুব বেশি উদ্যোগ নেবে না। পাশাপাশি আফগানিস্তানে ভারতীয় কনস্যুলেটে হামলার ঘটনাও দু’দেশের মধ্যে বিদ্বেষ ও বৈরিতা বৃদ্ধির আশংকা বাড়িয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় প্রতিরক্ষা স্থাপনায় হামলা পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর স্বার্থের একটি বড় চালিকাশক্তি- অতীতে বিভিন্ন যুদ্ধ এবং অন্য নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে যার প্রকাশ ঘটেছে। এ বাস্তবতায় সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংশ্লিষ্টতা ছিল না- পাকিস্তানি মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষে ভারতীয়দের এটা বোঝানো বেশ কঠিন হবে।
আস্থা ও সহযোগিতার পথই একটি আপসরফায় পৌঁছানোর সম্ভাব্য উপায়। কিন্তু যখন অতীত বর্তমানকে তাড়া করে ফেরে, তখন পাকিস্তান ও ভারত তাদের দীর্ঘদিনের পুরনো সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবে, এমন সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। অতীতের বহু ঘটনার মতো সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোও পাক-ভারত শান্তি প্রক্রিয়াকে সিঁকেয় তুলে রাখবে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শুধু রাষ্ট্রীয় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের কারণে নয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশটির অক্ষমতার কারণেও যে বৈরিতার উপস্থিতি থেকে যাবে, তাতে শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়ার আশা অতি সামান্যই।
ফলে দু’দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের প্রকৃত উদ্যোগও ব্যর্থ হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে হামলা চালিয়েছে একটি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন- এ দাবির সত্যতা যদিওবা নিরূপণ করা যায় তবুও এ হামলা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে। শান্তি প্রক্রিয়া ব্যর্থতার কিনারে পৌঁছে গেছে এটিই এখন বাস্তবতা। পাঠানকোটে যারাই হামলা চালিয়ে থাকুক না কেন, তাদের পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে আলোচনাকে লাইনচ্যুত করার উদ্দেশ্যটি সফল হয়েছে। দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্প্রতি যে নমনীয়তা লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তার আর কোনো মূল্য নেই।
অবশ্যই শান্তি প্রক্রিয়ার ওপর আসা আঘাত এবং পারস্পরিক বৈরী মনোভাব উপেক্ষা করার খুবই ক্ষীণ একটি সুযোগ দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের রয়েছে। তবে ইতিহাসকে বিশ্বাস করলে প্রভাবশালীদের মনে এ ধরনের ইচ্ছা জাগ্রত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে পাকিস্তানের বেসামরিক-সামরিক ইস্টাবলিশমেন্টের মধ্যে যে মতভিন্নতা রয়েছে, মনে হয় আগামীতে তা আরও স্পষ্ট হবে।
একইভাবে এ হামলার পর পাকিস্তানের প্রতি নরেন্দ্র মোদির প্রতিশ্রুতির বিশ্বাসযোগ্যতা আরও ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এখন পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আইনসভা ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা তার সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের লড়াই একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ অবস্থায় যখন কোনো পরিকল্পিত উদ্যোগের লক্ষ্য হয় সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা, তখন একটি অবিশ্বস্ত প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ব্যর্থ হয়ে যাক- এটা নিশ্চিতভাবেই পাঠানকোটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত বিষয়।
পাক-ভারত শান্তি প্রক্রিয়ার ভাগ্যে এমনটিই ঘটে থাকে। আত্মস্বার্থ, শঠতা এবং একটি সাধারণ অনাস্থার বোধ সিদ্ধান্ত-প্রণয়নকারী শক্তির ব্যক্তিবর্গের মধ্যে পরিব্যাপ্ত। যখনই কিছু অগ্রগতির বিষয়ে আশা জেগেছে, তখনই আতংক আমাদের আচ্ছন্ন করেছে এবং পরিস্থিতি অচলাবস্থার চেয়েও বেশি খারাপ হয়েছে। একটি বৈরী পরিস্থিতিতে একমাত্র সাংস্কৃতিক বিনিময়, শিল্পীসুলভ আচরণ, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং নমনীয় (সফট) কূটনীতির অন্যান্য পন্থাই দু’দেশের মধ্যে মতভিন্নতা নিরসনে সহায়ক হতে পারে। পরিশেষে, আমরা সাধারণ নাগরিক ভিন্ন ভিন্ন ট্রেনের দুর্ভাগা যাত্রী হিসেবে ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে বিপদ থেকে উত্তরণের প্রত্যাশা করি, আমাদের গন্তব্য অভিন্ন- শান্তি।
পাকিস্তানের ডেইলি টাইমস পত্রিকা থেকে ভাষান্তরিত
সৈয়দ রশীদ মুনির : পাকিস্তানি কলাম লেখক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক
তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রটি পরিবর্তনশীল, যেখানে কয়েক বছরের অগ্রগতি কয়েক ঘণ্টায় অপূর্ণতায় পর্যবসিত হতে পারে। প্রতিটি পদক্ষেপ সঠিক পথে নেয়ার পরও আমরা উল্টো পথে বহু পদক্ষেপ পিছিয়ে যেতে পারি। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে অত্যন্ত ধীরগতির শান্তি প্রক্রিয়া- যা তার অনিশ্চয়তা ও ভঙ্গুরতার জন্য কুখ্যাত- সামনের দিনগুলোতে আরও একবার পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। এবং তা হবে এমনসব ঘটনার আলোকে, যেখানে শান্তিপ্রত্যাশীরা অসন্তোষ এবং যুদ্ধবাজরা উল্লাস প্রকাশ করছে।
এ মুহূর্তে উদ্বেগের কারণ হল ভারতীয় সীমান্তের ওপারে হামলা, যে জন্য রাষ্ট্রবহির্ভূত অনুঘটক ও জঙ্গিদের দায়ী করা হচ্ছে। এসব ঘটনার প্রকৃত সত্য খুঁজে বের করা কঠিন। তবে এখন পর্যন্ত যেসব রিপোর্টকে বিশ্বাস করতে হচ্ছে সেগুলো বলছে, পাক-ভারত সীমান্তের কাছে পাঠানকোটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঘাঁটির ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে জঙ্গি হামলাটি চালানো হয়েছে। হামলার ঘটনার পর এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বলছে, এ হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জৈশ-এ-মোহাম্মদ। এ দাবি যদি সত্য হয় তাহলে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কোনো শান্তির প্রত্যাশাকে নিশ্চিতভাবেই বিদায় জানাতে হবে।
পরিস্থিতির এমন হতাশাজনক মূল্যায়নের দুটি কারণ রয়েছে। যদি ওই হামলায় উল্লিখিত জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সত্য হয়, তাহলে ভারত সরকারের উদ্বেগের কারণটি হবে প্রথমত. পাকিস্তানের নিজ ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে জঙ্গিবাদী অবকাঠামো ভেঙে দিতে দেশটির রাষ্ট্রীয় সামর্থ্যরে প্রশ্নে। দ্বিতীয়ত. এবং সম্ভবত যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক তা হল, এ হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ইস্টাবলিশমেন্টের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনগুলোর সম্পর্কের বিষয়ে ভারত সরকারের অবিশ্বাস আরও বাড়াবে। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ইস্টাবলিশমেন্ট জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে কিছু বিষয়ে সহমত পোষণ করে বলে মনে করা হয়।
এ ধরনের পরিবেশে হামলার প্রকৃত উৎস ও উদ্দেশ্য খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো খুব বেশি উদ্যোগ নেবে না। পাশাপাশি আফগানিস্তানে ভারতীয় কনস্যুলেটে হামলার ঘটনাও দু’দেশের মধ্যে বিদ্বেষ ও বৈরিতা বৃদ্ধির আশংকা বাড়িয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় প্রতিরক্ষা স্থাপনায় হামলা পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর স্বার্থের একটি বড় চালিকাশক্তি- অতীতে বিভিন্ন যুদ্ধ এবং অন্য নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে যার প্রকাশ ঘটেছে। এ বাস্তবতায় সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংশ্লিষ্টতা ছিল না- পাকিস্তানি মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষে ভারতীয়দের এটা বোঝানো বেশ কঠিন হবে।
আস্থা ও সহযোগিতার পথই একটি আপসরফায় পৌঁছানোর সম্ভাব্য উপায়। কিন্তু যখন অতীত বর্তমানকে তাড়া করে ফেরে, তখন পাকিস্তান ও ভারত তাদের দীর্ঘদিনের পুরনো সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবে, এমন সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। অতীতের বহু ঘটনার মতো সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোও পাক-ভারত শান্তি প্রক্রিয়াকে সিঁকেয় তুলে রাখবে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শুধু রাষ্ট্রীয় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের কারণে নয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশটির অক্ষমতার কারণেও যে বৈরিতার উপস্থিতি থেকে যাবে, তাতে শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়ার আশা অতি সামান্যই।
ফলে দু’দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের প্রকৃত উদ্যোগও ব্যর্থ হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে হামলা চালিয়েছে একটি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন- এ দাবির সত্যতা যদিওবা নিরূপণ করা যায় তবুও এ হামলা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে। শান্তি প্রক্রিয়া ব্যর্থতার কিনারে পৌঁছে গেছে এটিই এখন বাস্তবতা। পাঠানকোটে যারাই হামলা চালিয়ে থাকুক না কেন, তাদের পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে আলোচনাকে লাইনচ্যুত করার উদ্দেশ্যটি সফল হয়েছে। দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্প্রতি যে নমনীয়তা লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তার আর কোনো মূল্য নেই।
অবশ্যই শান্তি প্রক্রিয়ার ওপর আসা আঘাত এবং পারস্পরিক বৈরী মনোভাব উপেক্ষা করার খুবই ক্ষীণ একটি সুযোগ দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের রয়েছে। তবে ইতিহাসকে বিশ্বাস করলে প্রভাবশালীদের মনে এ ধরনের ইচ্ছা জাগ্রত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে পাকিস্তানের বেসামরিক-সামরিক ইস্টাবলিশমেন্টের মধ্যে যে মতভিন্নতা রয়েছে, মনে হয় আগামীতে তা আরও স্পষ্ট হবে।
একইভাবে এ হামলার পর পাকিস্তানের প্রতি নরেন্দ্র মোদির প্রতিশ্রুতির বিশ্বাসযোগ্যতা আরও ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এখন পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আইনসভা ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা তার সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের লড়াই একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ অবস্থায় যখন কোনো পরিকল্পিত উদ্যোগের লক্ষ্য হয় সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা, তখন একটি অবিশ্বস্ত প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ব্যর্থ হয়ে যাক- এটা নিশ্চিতভাবেই পাঠানকোটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত বিষয়।
পাক-ভারত শান্তি প্রক্রিয়ার ভাগ্যে এমনটিই ঘটে থাকে। আত্মস্বার্থ, শঠতা এবং একটি সাধারণ অনাস্থার বোধ সিদ্ধান্ত-প্রণয়নকারী শক্তির ব্যক্তিবর্গের মধ্যে পরিব্যাপ্ত। যখনই কিছু অগ্রগতির বিষয়ে আশা জেগেছে, তখনই আতংক আমাদের আচ্ছন্ন করেছে এবং পরিস্থিতি অচলাবস্থার চেয়েও বেশি খারাপ হয়েছে। একটি বৈরী পরিস্থিতিতে একমাত্র সাংস্কৃতিক বিনিময়, শিল্পীসুলভ আচরণ, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং নমনীয় (সফট) কূটনীতির অন্যান্য পন্থাই দু’দেশের মধ্যে মতভিন্নতা নিরসনে সহায়ক হতে পারে। পরিশেষে, আমরা সাধারণ নাগরিক ভিন্ন ভিন্ন ট্রেনের দুর্ভাগা যাত্রী হিসেবে ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে বিপদ থেকে উত্তরণের প্রত্যাশা করি, আমাদের গন্তব্য অভিন্ন- শান্তি।
পাকিস্তানের ডেইলি টাইমস পত্রিকা থেকে ভাষান্তরিত
সৈয়দ রশীদ মুনির : পাকিস্তানি কলাম লেখক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক
No comments