অপেক্ষা করছে আরও বিস্ফোরণ by গ্যারি লিউপ
৯/১১-এর
হামলার পর, তালেবান বাদে বিশ্বের সব সরকারই আল কায়েদার নিন্দা জানিয়েছিল।
কিন্তু আপনি কি লক্ষ্য করেছেন? জর্জ ডব্লিউ বুশ যখন ইরাকে বিনাশ চালালেন
এবং মধ্যপ্রাচ্যে সার্বিক তাদের অবস্থানের সার্বিক ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করলেন
তখন আল কায়েদার এমনটাই বিস্তার ঘটতে লাগলো যে, তাদেরকে তখন আর সন্ত্রাসী
স্কোয়াড বলার চেয়ে প্রকৃতপক্ষে গেরিলা যোদ্ধা বলাই ভালো। ন্যাটোর মিত্র
তুরস্ক ও তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরব সহ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে
তারা হয়তো সমর্থন পেয়েছে না হয় কৌশলগত উৎসাহ পেয়েছে। সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ
সরকারকে উৎখাতে বদ্ধপরিকর হয়ে একজোট হলো যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক। কিন্তু
সেখানকার পরিস্থিতি ভীষণ জটিল। সিরিয়ান আমি ফোর্সেস, কুর্দি যোদ্ধা, আল
কায়েদা সমর্থিত আল নুসরা ও আইএসআইএল (আইসিল)-এর মধ্যে বর্তমানে বিভক্ত হয়ে
পড়েছে সিরিয়া। ওয়াশিংটন ও আঙ্কারা উভয়েই বিভিন্ন কারণে আইসিলকে অপছন্দ করে।
এখন আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিলের মোকাবিলা করতে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে জোট করেছে।
আইসিলকে তাদের মর্যাদার জন্য বড় ধরনের এক আঘাত হিসেবে দেখে থাকে
যুক্তরাষ্ট্র। এতে প্রমাণ হয় যে, তাদের ইরাক যুদ্ধের লক্ষ্য পুরোপুরি
ব্যর্থ হয়েছে। ইরাককে মুক্ত করা থেকে অনেক দূরে ঠেলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
একই সঙ্গে এর পশ্চিমা প্রতিবেশীদেরকে ফেলে দিয়েছে ভয়াবহ দুর্ভোগে। এটা
ভীষণ এক বিব্রতকর অবস্থা। ইউটিউবে আইসিলের যেসব ডকুমেন্টারি দেয়া আছে সে
বিষয়ে তুরস্ক কমই উদ্বিগ্ন বা সচেতন এবং সম্ভবত তারা আইসিলের প্রতি
পক্ষপাতী সিরিয়ান কুর্দিস্থান প্রতিষ্ঠার জন্য অথবা আসাদের শাসন টিকে থাকুক
এমনটা চায় তারা। কিন্তু তাদের যে সুপারপাওয়ার মিত্র রয়েছে তাদের প্রতি
সহযোগিতা করতে তারা বাধ্য। এমনটা অনুভবও করে। আইসিল ও আসাদ সরকারের
বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর মিত্র হিসেবে সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদের মূল্যায়ন
করে থাকে ওয়াশিংটন। এই আসাদ সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক
ওবামা ‘বৈধতা হারানো’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তুরস্কে রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী
কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে। তুরস্কের আশঙ্কা সিরিয়া ও ইরাকের
কুর্দি বাহিনীর মিত্র তার দেশের এই বিচ্ছিন্নতাবাদী পিকেকে। আল নুসরার
সঙ্গে সঙ্গে তার ঘোর শত্রু আইসিলকে বিনাশ করে দিতে চায় ওয়াশিংটন। তুরস্ক
হয়তো খুব সঙ্গোপনে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে একটি মিত্র হিসেবে এবং তার
দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী সশস্ত্র বিরোধীদের বিরুদ্ধে আইসিসকে সমর্থন করে
থাকতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলোÑ কুর্দিদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ আল
নুসরা যোদ্ধারা। অন্যভাবে বলা যায়, ন্যাটোর দু’মিত্রের মধ্যে কার্যকর
বিভাজন সৃষ্টি করতে পেরেছে আল কায়েদা। ২০০৩ সালে তুরস্ক সরকার পরিষ্কার করে
বলেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে তারা ইরাক আগ্রাসনের বিরোধী। ওই ইরাকও
সিরিয়ার মতো তুরস্কের সঙ্গে সীমান্ত ভাগাভাগি করেছে। সেখানে বসবাস রয়েছে
কুর্দিদের। যথার্থই আঙ্কারার আতঙ্ক হলো যুক্তরাষ্ট্র আগ্রাসন চালালে ওই
অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। তাতে ইরাকে, সিরিয়ায় ও তুরস্কের কুর্দি
বিচ্ছিন্নতাবাদীরা উৎসাহিত হয়ে উঠবে। তুরস্কের সীমান্ত ব্যবহার করে মার্কিন
বাহিনীকে আগ্রাসন চালানোর অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তুরস্কের
পার্লামেন্ট। এটা ওয়াশিংটনের জন্য আতঙ্কের বিষয়। এর ফলে যুদ্ধ পরিকল্পনা
নতুন করে সাজাতে বাধ্য হয়েছে পেন্টাগন। তারপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের
যুদ্ধপরিকল্পনায় পরিবর্তন এসেছে এতে হয়তো তুরস্কের ভেতরকার কেউ কেউ মনে মনে
সন্তুষ্ট হয়েছেন। সম্প্রতি সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আইসিল বাহিনীর বিরুদ্ধে
যৌথভাবে বোমা হামলা চালাতে ও কুর্দিদের টার্গেট করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র
একটি সেফ জোন বা সুরক্ষিত এলাকা তৈরির কথা বলেছে তখন তাতে তুরস্ক সম্মতি
দিয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সেনা কর্মকর্তা ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন
সম্প্রতি। এটা সম্মতি বা চুক্তির কোন অংশ ছিল না। তারা এ জন্য প্রতিবাদ
করেছেন। সম্প্রতি জর্ডানে মার্কিন বাহিনী সিরিয়ার ৫৩ বিদ্রোহীকে প্রশিক্ষণ
দিয়েছে। তাদেরকে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির আদলে অগ্রসর বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার
চেষ্টা ছিল। কিন্তু সবচেয়ে খারাপ কথা হলো, সে বিষয়টি আল নুসরার কাছে বলে
দিয়েছে তুরস্ক।
প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও আইসিলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিরিয়ার যোদ্ধাদের যোগাড় করতে বড় রকমের অসমর্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জানুয়ারিতে প্রকাশ্যে পেন্টাগন অনুমিত হিসাব দিয়ে বলেছে, এক বছরের মধ্যে তারা ফ্রি সিরিয়ান আর্মির জন্য পাঁচ হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিতে পারতো। তবে সে জন্য সদস্য যোগাড় করা কঠিন। শেষ পর্যন্ত তারা ওই ৫৩ জনকে প্রশিক্ষণ দিতে পেরেছে। কেউ কেউ বলতে পারেন যে, সিরিয়ার এসব যুবক তাদের দেশের শাসকগোষ্ঠী ও ধর্মীয় গোঁড়ামির প্রতি অনীহা দেখাতে পারেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র তাদের এ অঞ্চলের জন্য কি করেছে তা তারা ভাল করে জানে ও সে জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতে পারে।
ক্ষুদ্র বাহিনীটিকে এখন আটক করা হয়েছে। তারা এখন আল নুসরার কাছে বন্দি। সাধারণভাবে এই আল নুসরা হয়তো তাদের শিরñেদ করতে পারে। কিন্তু তুরস্কের অনুরোধে তা করা থেকে তারা দৃশ্যত বিরত রয়েছে। কি সুন্দর কথা!
ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদি বর্তমানে নির্বাসনে রয়েছেন। ২০১২ সালে আরব বসন্তের পর যে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দানা বেঁধে ওঠে তখন যুক্তরাষ্ট্র তার দীর্ঘদিনের মিত্র আলী সালেহকে নির্বাচনের দিকে ঠেলে দিলে সেই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হন আবদ রাব্বু। ইয়েমেনে সেই নির্বাসনে থাকা সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। সৌদি-ইয়েমেন সীমান্ত অঞ্চলে তাতে সন্তুষ্ট হয়েছে হুতি বিদ্রোহীরা। তারা শিয়া মতাবলম্বী মুসলিম। তারা নতুন ও দুর্বল প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এমনটা ঘটেছে, কারণÑ তিনি আল কায়েদার বিরুদ্ধে যথাযথ পন্থা অবলম্বন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
জানুয়ারিতে ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে নেয় হুতি বিদ্রোহীরা। তাদের সামনে যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছিল তা ছিল মামুলি। তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘেরাও করেছিলো। ফলে আবদ রাব্বু হাদি পদত্যাগ করেন এবং তারপর দেশত্যাগ করেন। ইয়েমেন থেকে যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নেয়, দূতাবাস খালি করে দেয় ফেব্রুয়ারিতে। ইত্যবসরে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের উপদেষ্টারা অবস্থান করতেন সেখানে আল কায়েদা গোপন সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করে। হাদির সময়কালে আল কায়েদার বিস্তার ঘটেছে। তাদের প্রতি ভীত ছিল হুতিরা। কারণ, তারা জানতো মুসলিম বিশ্বে আল কায়েদার হত্যাযজ্ঞের মিশন সম্পর্কে।
অন্যদিকে সৌদি আরবের নেতৃস্থানীয় লোকেরা শিয়াদের অবজ্ঞা ও তাদের প্রতি আতঙ্ক পোষণ করতো। ইয়েমেনের মতো সৌদি আরবেও তারা উল্লেখ করার মতো সংখ্যালঘু।
যৎসামান্য তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তারা অভিযোগ করেন যে, শিয়া হুতিরা ইরানের প্রতিনিধিত্ব করে। কাজেই সৌদি আরব মার্কিন সহযোগিতায় হুতি বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বোমাবর্ষণ করছে। বিমান হামলার বিষয়বস্তু নির্ণয় করতে সৌদি এয়ার ফোর্সকে সামরিক গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করছে পেন্টাগন। অর্থাৎ শিয়া বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র আর সৌদি আরবের অবস্থান একই। কিন্তু সৌদিরা ইয়েমেনে আল কায়েদা সংশ্লিষ্টদের অগ্রগতিকে উপেক্ষা করছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অতীতে এটাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সব থেকে বড় হুমকি বলে আখ্যায়িত করতো।
আল কায়েদার বিরুদ্ধে জর্জ ডব্লিউ বুশের যুদ্ধ সংগঠনটির বিশাল ব্যাপ্তির একটি সময়কাল সৃষ্টি করেছে। আর এ বিস্তারে কিছু সহযোগিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও। তোরাবোরায় বুশের বোমাবর্ষণের পর আল কায়েদাকে আফগানিস্তান থেকে হটিয়ে দিয়ে প্রধানত পাকিস্তানে সরিয়ে দেয়। যে সময়টায় আল কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়েছিল তখনকার আল কায়েদা বর্তমান আল কায়েদায় ছায়া সমতুল্য।
আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় স্থাপিত জোড়া প্রশিক্ষণ ক্যাম্প (প্রাথমিকভাবে সিআইএ’র সহযোগিতায়) আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রে সন্ত্রাসীদের সেল ২০০১ সাল নাগাদ লিবিয়া থেকে আফগানিস্তান পর্যন্ত এক জালে রূপান্তরিত হয়েছে (এসব স্থানে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকা তালেবানের বিরুদ্ধে এখন অবস্থান তৈরি করছে আইসিল)।
আফগানিস্তানের পরপরই ইরাকে যুদ্ধ চালান বুশ। ওই যুদ্ধ আল কায়েদাকে প্রতিহিংসা সহ ইরাকে টেনে নিয়ে আসে। ২০০৭ সালে ইরাকে বুশ সেনাসংখ্যা বৃদ্ধির পর আবু মুসাব আল-জারকাবি প্রতিষ্ঠিত আল কায়েদার গ্রুপটি (আল কায়েদা ইন মেসোপটেমিয়া) প্রাথমিকভাবে পরাজিত হয় এবং সিরিয়াতে পশ্চাদপসরণ করে। এ গ্রুপটিই রূপান্তরিত হয়ে আইসিল-এ রূপ নিয়েছে। সিরিয়ায় তাদের জনবল বৃদ্ধি পায়। এর পেছনে আংশিক কারণ হলো আসাদকে উৎখাতে মার্কিন প্রচেষ্টা। নিজেদেরকে ইসলামিক স্টেটে পুনর্গঠন করে দলটি এখন বৃটেনের সমান একটি ভূখ- নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা ট্যাক্স সংগ্রহ করে, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করে এবং তেলক্ষেত্রগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।
গত ডিসেম্বরে ব্রাসেলসের ন্যাটো সদর দপ্তরে বেশ ঘটা করে ৫৯টি দেশের কূটনীতিকরা আইসিলকে ‘পরাজিত’ করার জন্য একটি জোট গঠন করে (উল্লেখযোগ্য হলো যে দুটি দেশ আইসিলের আগ্রাসন প্রতিহত করতে সব থেকে বেশি কিছু করেছে। তাদেরকে এ জোটে রাখা হয় নি। তারা হলো সিরিয়া ও ইরান)। যাই হোক, সামরিকভাবে অংশগ্রহণ করেছে কিছুসংখ্যক দেশ। আর ইসলামিক স্টেটের বিস্তার অব্যাহত রয়েছে। ১৫ই মে আইসিল সিরিয়ান আর্মির কাছ থেকে প্রাচীন শহর পালমিরা দখল করে।
আইসিল বিরোধী ‘জোটে’র মধ্যকার দুর্বলতা আর বিভক্তি এতোটাই যে, ইসলামিক স্টেট যখন ২০০০ বছরের পুরনো বালশামিম মন্দির মাটিতে গুঁড়িয়ে দিলো, বিশ্ববাসীকে বাধ্য হয়ে তা দর্শকের মতো দেখতে হয়েছে। বুশের সমাপ্তিহীন যুদ্ধগুলোর এটা সব থেকে সাম্প্রতিক একটি ফলমাত্র।
যে শাসক গোষ্ঠীকে যুক্তরাষ্ট্র উৎখাত করতে চায় আর রাশিয়া রক্ষা করতে চায়Ñ তারা পালমিরার ধ্বংসাবশেষসহ যাবতীয় জাতীয় ঐতিহ্যকে সযতেœ লালন করে। তারা দামেস্কের ক্রিশ্চিয়ান এলাকাগুলোকে সম্মান করে। যেমন হাউজ অব সেইন্ট আনানিয়াস ও চ্যাপেল অব সেন্ট পল। ইসলামিক স্টেট ওই শহর দখল নিয়ে নিশ্চিতভাবে এগুলো ধ্বংস করে ফেলবে। তারপরও সিরিয়ায় শাসকগোষ্ঠী পরিবর্তনের স্বপ্ন লালন করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আইসিল-এর বিরোধী জোটে আসাদ বাহিনী ও ইরানকে অন্তর্ভুক্ত করতে রাশিয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বেসামরিক মানুষের গণহত্যা করার অভিযোগে আসাদের সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে আবার তাদের সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে বেসামরিক প্রাণহানির সংখ্যাও গণনা করতে অস্বীকৃতি জানায় তারা। যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই তাদের টার্গেটগুলোর ‘গণহত্যা’ সহিংসতা অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করে। সেটা ১৯৯৯ সালে কসোভোর সার্বিয়ান আর্মি হোক, ২০১১ সালের লিবিয়ান শাসকগোষ্ঠী হোক বা সাম্প্রতিক সময়ের সিরীয় শাসকগোষ্ঠী হোক না কেন।
মূলত, গৃহযুদ্ধে নিহত হওয়া যে আনুমানিক ২ লাখ ২০ হাজার মানুষের হিসাব জাতিসংঘ দিয়েছে তার মধ্যে ১ লাখ ১৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার হলো সিরিয়ান আর্মি ও ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের সদস্য। বিদেশী সেনাসহ সরকারবিরোধী বাহিনীগুলোর ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সিরিয়ান শাসকগোষ্ঠীর বিদেশী সমর্থকদের মধ্যে প্রাণহানির সংখ্যা আনুমানিক ৩ হাজার। এসব বিদেশী গোষ্ঠীর মধ্যে যেমন রয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ মিলিশিয়া। অর্থাৎ, বেসামরিক প্রাণহানি সামগ্রিক প্রাণহানির ১৫ শতাংশেরও কম। আর আমরা যেমনটা জানি, বেসামরিক মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করতে আইসিল ও আল-নুসরার কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করে না। পালমিরা ধ্বংসাবশেষের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ৮২ বছরের পুরাতত্ত্ববিদকে শিরñেদ করে আইসিল। আর অন্যদের সতর্কবার্তা হিসেবে তার মৃতদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়। জর্জ ডব্লিউ বুশ ও তার অপরাধমূলক যুদ্ধগুলোর আরেকটি অবদান এটা।
মানবতার অমূল্য সব সম্পদ ধুলোয় মিশিয়ে দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে আরও সব বিস্ফোরণ। আর মনে হচ্ছে এটা প্রতিহত করতে কিছুই করা যাবে না। আমাদের ওপর এ পরিস্থিতি নিয়ে এসেছে যারা, তাদের ধিক্কার।
লেখক পরিচিতি: গ্যারি লিউপ টাফটস ইউনিভার্সিটিতে ইতিহাস বিষয়ের অধ্যাপক। একইসঙ্গে তিনি ধর্ম বিভাগে কর্মরত। তিনি একাধিক বইয়ের রচয়িতা। এগুলো হলো: সার্ভেন্টস, শপল্যান্ডস অ্যান্ড লেবারার্স ইন দ্য সিটিজ অব তোকুগাওয়া জাপান; মেল কালার্স: দ্য কন্সট্রাকশন অব হোমোসেক্সুয়ালিটি ইন তোকুগাওয়া জাপান এবং ইনটাররেসিয়াল ইনটিমেসি ইন জাপান: ওয়েস্টার্ন মেন অ্যান্ড জাপানিজ ওমেন, ১৫৪৩-১৯০০। এছাড়া তিনি হোপলেস: বারাক ওবামা অ্যান্ড দ্য পলিটিকস অব ইলিউশন বইয়ে অবদান রেখেছেন। লেখকের ই-মেইল: gleupp@tufts.edu
(নিউএজ পত্রিকায় ২৯শে আগস্ট প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও আইসিলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিরিয়ার যোদ্ধাদের যোগাড় করতে বড় রকমের অসমর্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জানুয়ারিতে প্রকাশ্যে পেন্টাগন অনুমিত হিসাব দিয়ে বলেছে, এক বছরের মধ্যে তারা ফ্রি সিরিয়ান আর্মির জন্য পাঁচ হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিতে পারতো। তবে সে জন্য সদস্য যোগাড় করা কঠিন। শেষ পর্যন্ত তারা ওই ৫৩ জনকে প্রশিক্ষণ দিতে পেরেছে। কেউ কেউ বলতে পারেন যে, সিরিয়ার এসব যুবক তাদের দেশের শাসকগোষ্ঠী ও ধর্মীয় গোঁড়ামির প্রতি অনীহা দেখাতে পারেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র তাদের এ অঞ্চলের জন্য কি করেছে তা তারা ভাল করে জানে ও সে জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতে পারে।
ক্ষুদ্র বাহিনীটিকে এখন আটক করা হয়েছে। তারা এখন আল নুসরার কাছে বন্দি। সাধারণভাবে এই আল নুসরা হয়তো তাদের শিরñেদ করতে পারে। কিন্তু তুরস্কের অনুরোধে তা করা থেকে তারা দৃশ্যত বিরত রয়েছে। কি সুন্দর কথা!
ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদি বর্তমানে নির্বাসনে রয়েছেন। ২০১২ সালে আরব বসন্তের পর যে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দানা বেঁধে ওঠে তখন যুক্তরাষ্ট্র তার দীর্ঘদিনের মিত্র আলী সালেহকে নির্বাচনের দিকে ঠেলে দিলে সেই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হন আবদ রাব্বু। ইয়েমেনে সেই নির্বাসনে থাকা সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। সৌদি-ইয়েমেন সীমান্ত অঞ্চলে তাতে সন্তুষ্ট হয়েছে হুতি বিদ্রোহীরা। তারা শিয়া মতাবলম্বী মুসলিম। তারা নতুন ও দুর্বল প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এমনটা ঘটেছে, কারণÑ তিনি আল কায়েদার বিরুদ্ধে যথাযথ পন্থা অবলম্বন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
জানুয়ারিতে ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে নেয় হুতি বিদ্রোহীরা। তাদের সামনে যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছিল তা ছিল মামুলি। তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘেরাও করেছিলো। ফলে আবদ রাব্বু হাদি পদত্যাগ করেন এবং তারপর দেশত্যাগ করেন। ইয়েমেন থেকে যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নেয়, দূতাবাস খালি করে দেয় ফেব্রুয়ারিতে। ইত্যবসরে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের উপদেষ্টারা অবস্থান করতেন সেখানে আল কায়েদা গোপন সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করে। হাদির সময়কালে আল কায়েদার বিস্তার ঘটেছে। তাদের প্রতি ভীত ছিল হুতিরা। কারণ, তারা জানতো মুসলিম বিশ্বে আল কায়েদার হত্যাযজ্ঞের মিশন সম্পর্কে।
অন্যদিকে সৌদি আরবের নেতৃস্থানীয় লোকেরা শিয়াদের অবজ্ঞা ও তাদের প্রতি আতঙ্ক পোষণ করতো। ইয়েমেনের মতো সৌদি আরবেও তারা উল্লেখ করার মতো সংখ্যালঘু।
যৎসামান্য তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তারা অভিযোগ করেন যে, শিয়া হুতিরা ইরানের প্রতিনিধিত্ব করে। কাজেই সৌদি আরব মার্কিন সহযোগিতায় হুতি বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বোমাবর্ষণ করছে। বিমান হামলার বিষয়বস্তু নির্ণয় করতে সৌদি এয়ার ফোর্সকে সামরিক গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করছে পেন্টাগন। অর্থাৎ শিয়া বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র আর সৌদি আরবের অবস্থান একই। কিন্তু সৌদিরা ইয়েমেনে আল কায়েদা সংশ্লিষ্টদের অগ্রগতিকে উপেক্ষা করছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অতীতে এটাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সব থেকে বড় হুমকি বলে আখ্যায়িত করতো।
আল কায়েদার বিরুদ্ধে জর্জ ডব্লিউ বুশের যুদ্ধ সংগঠনটির বিশাল ব্যাপ্তির একটি সময়কাল সৃষ্টি করেছে। আর এ বিস্তারে কিছু সহযোগিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও। তোরাবোরায় বুশের বোমাবর্ষণের পর আল কায়েদাকে আফগানিস্তান থেকে হটিয়ে দিয়ে প্রধানত পাকিস্তানে সরিয়ে দেয়। যে সময়টায় আল কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়েছিল তখনকার আল কায়েদা বর্তমান আল কায়েদায় ছায়া সমতুল্য।
আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় স্থাপিত জোড়া প্রশিক্ষণ ক্যাম্প (প্রাথমিকভাবে সিআইএ’র সহযোগিতায়) আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রে সন্ত্রাসীদের সেল ২০০১ সাল নাগাদ লিবিয়া থেকে আফগানিস্তান পর্যন্ত এক জালে রূপান্তরিত হয়েছে (এসব স্থানে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকা তালেবানের বিরুদ্ধে এখন অবস্থান তৈরি করছে আইসিল)।
আফগানিস্তানের পরপরই ইরাকে যুদ্ধ চালান বুশ। ওই যুদ্ধ আল কায়েদাকে প্রতিহিংসা সহ ইরাকে টেনে নিয়ে আসে। ২০০৭ সালে ইরাকে বুশ সেনাসংখ্যা বৃদ্ধির পর আবু মুসাব আল-জারকাবি প্রতিষ্ঠিত আল কায়েদার গ্রুপটি (আল কায়েদা ইন মেসোপটেমিয়া) প্রাথমিকভাবে পরাজিত হয় এবং সিরিয়াতে পশ্চাদপসরণ করে। এ গ্রুপটিই রূপান্তরিত হয়ে আইসিল-এ রূপ নিয়েছে। সিরিয়ায় তাদের জনবল বৃদ্ধি পায়। এর পেছনে আংশিক কারণ হলো আসাদকে উৎখাতে মার্কিন প্রচেষ্টা। নিজেদেরকে ইসলামিক স্টেটে পুনর্গঠন করে দলটি এখন বৃটেনের সমান একটি ভূখ- নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা ট্যাক্স সংগ্রহ করে, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করে এবং তেলক্ষেত্রগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।
গত ডিসেম্বরে ব্রাসেলসের ন্যাটো সদর দপ্তরে বেশ ঘটা করে ৫৯টি দেশের কূটনীতিকরা আইসিলকে ‘পরাজিত’ করার জন্য একটি জোট গঠন করে (উল্লেখযোগ্য হলো যে দুটি দেশ আইসিলের আগ্রাসন প্রতিহত করতে সব থেকে বেশি কিছু করেছে। তাদেরকে এ জোটে রাখা হয় নি। তারা হলো সিরিয়া ও ইরান)। যাই হোক, সামরিকভাবে অংশগ্রহণ করেছে কিছুসংখ্যক দেশ। আর ইসলামিক স্টেটের বিস্তার অব্যাহত রয়েছে। ১৫ই মে আইসিল সিরিয়ান আর্মির কাছ থেকে প্রাচীন শহর পালমিরা দখল করে।
আইসিল বিরোধী ‘জোটে’র মধ্যকার দুর্বলতা আর বিভক্তি এতোটাই যে, ইসলামিক স্টেট যখন ২০০০ বছরের পুরনো বালশামিম মন্দির মাটিতে গুঁড়িয়ে দিলো, বিশ্ববাসীকে বাধ্য হয়ে তা দর্শকের মতো দেখতে হয়েছে। বুশের সমাপ্তিহীন যুদ্ধগুলোর এটা সব থেকে সাম্প্রতিক একটি ফলমাত্র।
যে শাসক গোষ্ঠীকে যুক্তরাষ্ট্র উৎখাত করতে চায় আর রাশিয়া রক্ষা করতে চায়Ñ তারা পালমিরার ধ্বংসাবশেষসহ যাবতীয় জাতীয় ঐতিহ্যকে সযতেœ লালন করে। তারা দামেস্কের ক্রিশ্চিয়ান এলাকাগুলোকে সম্মান করে। যেমন হাউজ অব সেইন্ট আনানিয়াস ও চ্যাপেল অব সেন্ট পল। ইসলামিক স্টেট ওই শহর দখল নিয়ে নিশ্চিতভাবে এগুলো ধ্বংস করে ফেলবে। তারপরও সিরিয়ায় শাসকগোষ্ঠী পরিবর্তনের স্বপ্ন লালন করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আইসিল-এর বিরোধী জোটে আসাদ বাহিনী ও ইরানকে অন্তর্ভুক্ত করতে রাশিয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বেসামরিক মানুষের গণহত্যা করার অভিযোগে আসাদের সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে আবার তাদের সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে বেসামরিক প্রাণহানির সংখ্যাও গণনা করতে অস্বীকৃতি জানায় তারা। যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই তাদের টার্গেটগুলোর ‘গণহত্যা’ সহিংসতা অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করে। সেটা ১৯৯৯ সালে কসোভোর সার্বিয়ান আর্মি হোক, ২০১১ সালের লিবিয়ান শাসকগোষ্ঠী হোক বা সাম্প্রতিক সময়ের সিরীয় শাসকগোষ্ঠী হোক না কেন।
মূলত, গৃহযুদ্ধে নিহত হওয়া যে আনুমানিক ২ লাখ ২০ হাজার মানুষের হিসাব জাতিসংঘ দিয়েছে তার মধ্যে ১ লাখ ১৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার হলো সিরিয়ান আর্মি ও ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের সদস্য। বিদেশী সেনাসহ সরকারবিরোধী বাহিনীগুলোর ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সিরিয়ান শাসকগোষ্ঠীর বিদেশী সমর্থকদের মধ্যে প্রাণহানির সংখ্যা আনুমানিক ৩ হাজার। এসব বিদেশী গোষ্ঠীর মধ্যে যেমন রয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ মিলিশিয়া। অর্থাৎ, বেসামরিক প্রাণহানি সামগ্রিক প্রাণহানির ১৫ শতাংশেরও কম। আর আমরা যেমনটা জানি, বেসামরিক মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করতে আইসিল ও আল-নুসরার কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করে না। পালমিরা ধ্বংসাবশেষের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ৮২ বছরের পুরাতত্ত্ববিদকে শিরñেদ করে আইসিল। আর অন্যদের সতর্কবার্তা হিসেবে তার মৃতদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়। জর্জ ডব্লিউ বুশ ও তার অপরাধমূলক যুদ্ধগুলোর আরেকটি অবদান এটা।
মানবতার অমূল্য সব সম্পদ ধুলোয় মিশিয়ে দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে আরও সব বিস্ফোরণ। আর মনে হচ্ছে এটা প্রতিহত করতে কিছুই করা যাবে না। আমাদের ওপর এ পরিস্থিতি নিয়ে এসেছে যারা, তাদের ধিক্কার।
লেখক পরিচিতি: গ্যারি লিউপ টাফটস ইউনিভার্সিটিতে ইতিহাস বিষয়ের অধ্যাপক। একইসঙ্গে তিনি ধর্ম বিভাগে কর্মরত। তিনি একাধিক বইয়ের রচয়িতা। এগুলো হলো: সার্ভেন্টস, শপল্যান্ডস অ্যান্ড লেবারার্স ইন দ্য সিটিজ অব তোকুগাওয়া জাপান; মেল কালার্স: দ্য কন্সট্রাকশন অব হোমোসেক্সুয়ালিটি ইন তোকুগাওয়া জাপান এবং ইনটাররেসিয়াল ইনটিমেসি ইন জাপান: ওয়েস্টার্ন মেন অ্যান্ড জাপানিজ ওমেন, ১৫৪৩-১৯০০। এছাড়া তিনি হোপলেস: বারাক ওবামা অ্যান্ড দ্য পলিটিকস অব ইলিউশন বইয়ে অবদান রেখেছেন। লেখকের ই-মেইল: gleupp@tufts.edu
(নিউএজ পত্রিকায় ২৯শে আগস্ট প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
No comments