ইতালি, গ্রিস ও ফ্রান্সকেও লক্ষ্যবস্তু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র তার নজরদারির আওতায় আনতে ইতালি, গ্রিস ও ফ্রান্সকেও
লক্ষ্যবস্তু করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ প্রভাবশালী দৈনিক
গার্ডিয়ান-এর নতুন এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে। জার্মান
সাময়িকী ডের স্পিগেল মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক
কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেনের বরাত দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কার্যালয়ে
‘আড়ি পাতার’ খবর প্রকাশের দুই দিন পরই গার্ডিয়ান এ খবর ছাপল। ২০১০
সালের মার্কিন গোপন নথির বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে
ইতালি, গ্রিস ও ফ্রান্স এই তিন দেশের ৩৮টি দূতাবাস ও মিশনকে লক্ষ্যবস্তু
করেছিল মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)। এ জন্য ইলেকট্রনিক
যন্ত্রপাতি, তার ও বিশেষ ধরনের অ্যান্টেনা ব্যবহার করা হয়। একে ‘অসাধারণ
পরিসরে’ গুপ্তচরবৃত্তির কৌশল বলে আখ্যায়িত করেছে গার্ডিয়ান। ওই গোপন
নথিতে এই কৌশলের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপান, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও তুরস্কের মতো
বেশ কিছু বন্ধুরাষ্ট্রকেও লক্ষ্যবস্তু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৭ সালের
মার্কিন গোপন নথির বরাত দিয়ে বলা হয়, ওয়াশিংটনে ইইউর কার্যালয়ে ফ্যাক্স
মেশিনেও আড়ি পেতেছিল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নজরদারির খবরে ইউরোপীয় মহলে
ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ক্ষুব্ধ ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
লরাঁ ফ্যাবিয়াস গত রোববার বলেন, ‘এই অভিযোগ সত্যি হলে তা হবে একেবারেই
অগ্রহণযোগ্য বিষয়।’ ইউরোপীয় বিচারবিভাগীয় কমিশনার ভিভাইন রেডিং
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে
দীর্ঘপ্রতীক্ষিত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর আরও বিলম্বিত হতে
পারে।’ জার্মানির আগামী চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী ও গ্রিন পার্টির নেতা
জার্গেন ট্রিটিন গতকাল সোমবার বলেন, স্নোডেনের মতো ব্যক্তির ইউরোপে আশ্রয়
পাওয়া উচিত। কারণ তিনি তথ্য ফাঁস করে ইউরোপের মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে বড়
ধরনের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাফাই: মার্কিন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারির পক্ষে গতকাল সাফাই
গেয়েছেন। ইইউর কার্যালয় ও কম্পিউটার নেটওয়ার্কে নজরদারি প্রসঙ্গে তিনি
বলেন, ‘অন্য কোনো দেশের তথ্য খোঁজা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’ ব্রুনাইতে
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে
অংশ নিয়ে কেরি এ কথা বলেন। একই সম্মেলনে অংশ নিয়ে এ ব্যাপারে উদ্বেগ
প্রকাশ করেন ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টন। এদিকে
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ) বলেছে, ইইউর উদ্বেগের বিষয় নিয়ে
মার্কিন সরকার কূটনৈতিক চ্যানেলেই কথা বলবে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে কথা
বলবে সরকার। বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপি।
No comments