মুরসিকে এক দিন সময় দিল বিরোধীরা
প্রেসিডেন্ট মুরসির কাটা চিহ্ন ছবিসংবলিত প্রচারপত্র তুলে ধরেছেন বিক্ষোভে অংশ নেওয়া পুলিশের এক সদস্য ছবি: এএফপি |
মিসরের
প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে পদত্যাগের জন্য গতকাল সোমবার এক দিনের সময়
বেঁধে দিয়েছে তাঁর বিরোধীরা। মুরসি স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার বিকেলের
মধ্যে পদত্যাগ না করলে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে তারা।
কায়রোর তাহরির স্কোয়ারে রোববার লাখো মুরসিবিরোধীর বিক্ষোভের পর রাতভর
রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা চলে। এতে ১৬ জন নিহত হয়। কায়রোয়
অবস্থিত ক্ষমতাসীন ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (এফজেপি) আদর্শিক সংগঠন
মুসলিম ব্রাদারহুডের সদর দপ্তরে গতকাল ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে।
মুরসিবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন তামারুদ মুভমেন্টের ওয়েসবসাইটে
গতকাল দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা মোহাম্মদ মুরসিকে পদত্যাগের জন্য
২ জুলাই মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। যাতে রাষ্ট্রের
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে
পারে। এই সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন শুরু করা
হবে।’ তামারুদের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিচার বিভাগকে ‘জনগণের
ইচ্ছার পক্ষে অবস্থান নিতে’ আহ্বান জানানো হয়েছে। এদিকে বেঁধে দেওয়া
সময়ের মধ্যে মুরসি পদত্যাগ না করলে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বিরোধী
দলের নেতা হামদিন সাবাহি। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে থাকা
সাবাহি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীকে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করতে হবে। কারণ, তারা সব
সময় জনগণের পাশেই থাকে। আর সবচেয়ে ভালো হয়, মুরসি যদি নিজের ইচ্ছাতে
পদত্যাগ করেন।’ তবে মুরসির মুখপাত্র এহাব ফাহবি সাংবাদিকদের বলেছেন,
‘সংলাপের মাধ্যমেই কেবল আমরা সমঝোতায় পৌঁছতে পারি। জাতীয় সংলাপের জন্য
প্রেসিডেন্টের দরজা খোলা আছে।’ কায়রোতে মুসলিম ব্রাদারহুডের সদর দপ্তরে
গতকাল সকালে কিছু তরুণ প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ভাঙচুরের পর অনেককে ওই কার্যালয়ের আসবাব, টেলিভিশন ও নথিপত্র নিয়ে যেতে
দেখা যায়। মিসরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কায়রোসহ দেশজুড়ে গত
রোববারের সহিংসতায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক ব্যক্তি।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা
১৭ এবং আহতের সংখ্যা ৭৮১। আরব বসন্তে প্রায় ৩০ বছর ক্ষমতায় থাকা শাসক
হোসনি মোবারকের পতনের পর মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে
সরকার গঠন করেন মুরসি। ক্ষমতা গ্রহণের ঠিক এক বছরের মাথায় তাঁকেও ব্যাপক
বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ইসলামপন্থী মুরসি
ক্ষমতায় গিয়ে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত সমস্যা সমাধানে পুরোপুরি ব্যর্থ
হয়েছেন। এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্স।
No comments