বিশ্বে ক্ষুধা অর্ধেক হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা হাতের নাগালে
বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও
আন্তর্জাতিক সহায়তা দিনে দিনে কমে আসার মধ্যেও জাতিসংঘ বলছে, সহস্রাব্দ
উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনের পথে বিরাট অগ্রগতি হয়েছে। এ
লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার্ত মানুষের
সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা। জাতিসংঘ তার অষ্টম সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রার
বিষয়ে গতকাল সোমবার একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে,
‘তেজোদীপ্ত প্রচেষ্টার কারণে ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ক্ষুধার্ত মানুষের
হার অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এখন দৃশ্যত হাতের নাগালে
রয়েছে।’ ১৩ বছর আগে বিশ্বনেতারা এমডিজি নির্ধারণ করেছিলেন। এর মধ্যে
অন্তর্ভুক্ত ছিল দারিদ্র্য কমানো, প্রাণঘাতী এইডস রোগের বিস্তার থামানো,
শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন, লিঙ্গ সমতা, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য এবং টেকসই
পরিবেশ নিশ্চিত করা। বিশ্বে অতি দরিদ্র মানুষের (যাদের দৈনিক আয় ১ দশমিক
২৫ ডলারের নিচে) সংখ্যা অর্ধেকে নামানোর এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ বছর হাতে
রেখে ২০১০ সালেই অর্জিত হয়েছে। প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতেও বড় ধরনের
অগ্রগতির ওপরে আলোকপাত করা হয়েছে। এর নিদর্শন হিসেবে এইচআইভি বা এইডসের
দৌরাত্ম্য হ্রাসের পাশাপাশি ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মায় মৃত্যু হার কমার কথা
উল্লেখ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের যে চূড়ান্ত সময়সীমা রয়েছে,
তা শেষ হতে বাকি আর মাত্র এক হাজার দিনেরও কম। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন
বলেন, ‘এখনো অগণিত নারী সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় মারা যাচ্ছেন, যেখানে
তাঁদের বাঁচানোর উপায় আমাদের হাতে রয়েছে। এ ছাড়া ২৫ কোটির বেশি মানুষ
এখনো উন্নতমানের স্যানিটেশন সুবিধা পাচ্ছে না।’ গতকালের প্রতিবেদনে উল্লেখ
করা হয়েছে, বিশ্বে অপুষ্টির শিকার মানুষের সংখ্যা ১৯৯০-৯২ মেয়াদের ২৩
দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ২০১০-১২ মেয়াদে ১৪ দশমিক ৯-এ দাঁড়িয়েছে। এত
কিছুর পরও ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে
নামিয়ে আনার জন্য এ পর্যন্ত হওয়া অগ্রগতিকে যথেষ্ট মনে করছে না জাতিসংঘ।
তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব যদি ক্ষুধা নির্মূল করতে যথার্থ পদক্ষেপ
নেয়, তবে ওই সময়ের মধ্যে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। এএফপি।
No comments