খবর- দিলমা রুসেফ । নারী গেরিলা থেকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট

৫৬ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে ইতিহাস গড়েছেন দিলমা রুসেফ। ব্রাজিলের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এই লৌহমানবী। তাঁর দৃঢ়চেতা মনোভাবের জন্য দেশটির গণমাধ্যম তাঁকে ‘লৌহমানবী’ আখ্যা দিয়েছে।

নির্বাচনের প্রাথমিক ফল ঘোষণার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় দেশ থেকে দারিদ্র্য বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন রুসেফ। তিনি বলেছেন, ‘আমি আবারও আমার মূলনীতি পুনর্ব্যক্ত করছি। ব্রাজিলীয়রা ক্ষুধামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ঘুম নেই। দারিদ্র্য দূর করাই আমার লক্ষ্য। এ ব্যাপারে আমি সেসব লোকের সহযোগিতা চাই, যারা কিনা ব্রাজিলকে একদিন উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়।’
গত ৩ অক্টোবর ২০১০ প্রথম দফার নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে কোনো প্রার্থী প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। এ কারণে নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়। রোববার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান সুপিরিওর ইলেকটোরাল কোর্ট জানায়, ৯৯ শতাংশ ভোট গণনা প্রায় শেষ। এতে ক্ষমতাসীন দল ওয়ার্কার্স পার্টির রুসেফ পেয়েছেন ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট। আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির জোসে সেরা পেয়েছেন ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট।
ফল ঘোষণার পরপরই রুসেফের সমর্থকেরা রাস্তায় নেমে আসে। বিজয় উদ্যাপনের জন্য হাজার হাজার মানুষ দলের পতাকা ও রুসেফের ছবি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। এ নিয়ে টানা তিনবার ক্ষমতায় এল ওয়ার্কার্স পার্টি।
দিলমা রুসেফের এ বিজয়কে মূলত প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দা সিলভার বিজয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সাও পাওলো রাজ্যের বাসিন্দা ৪৩ বছরের বিদ্যুৎকর্মী দেনিলসন কুইনটিনো যেমনটা বলেছিলেন, ‘রাজনীতিতে অভিজ্ঞ নন রুসেফ। একমাত্র এ কারণেই তাঁকে আমরা কখনোই ভোট দিতাম না। কিন্তু আমরা জানি, তাঁর পেছনে একদল সুদক্ষ কর্মী রয়েছেন। ব্রাজিল আজকের যে শক্ত অবস্থানে পৌঁছেছে, তা কেবল লুলা সিলভা সরকারের কারণেই। আমাদের জন্য অন্য যেকোনো প্রেসিডেন্টের চেয়ে লুলা সিলভা-ই বেশি ভালো করেছেন।’
আগামী বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন রুসেফ। এমন একটি দেশের তিনি দায়িত্ব নিচ্ছেন, যেটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের তকমা ছেড়ে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ ব্রাজিল। ২০১৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকেরও আয়োজক রিও ডি জেনিরো। সম্প্রতি উপকূলীয় এলাকায় বিপুল পরিমাণ তেলের খনি আবিষ্কৃত হওয়ার খবর হুসেফের জন্য আরেকটি সুসংবাদ।
১৯৬৭ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে গেরিলা দলে যোগ দেন রুসেফ। অর্থনীতির ছাত্রী ছিলেন তিনি। স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে তিন বছর গেরিলা দলের হয়ে কাজ করেন। ১৯৭০ সালে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। টিরাডেনটিস নামক কারাগারে নিয়ে তাঁর ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। মুক্তি পান ১৯৭৩ সালে। এরপর চলে যান ব্রাজিলের দক্ষিণে স্বামী কার্লোস আরাউজোর কাছে। তাঁকেও বন্দী করেছিল সামরিক সরকার। এরই মধ্যে ক্রমশ দেশটির সেনাশাসন দুর্বল হতে থাকে। পড়াশোনা শেষ করে তিনিও রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮২ সালে স্বামীর হয়ে প্রচার চালান। কার্লোস ওই সময় কংগ্রেসের সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর রুসেফ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কাজ করেন। ২০০৩ সালে লুলা সিলভার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে তাঁকে দেওয়া হয় জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। ২০০৫ সালে মন্ত্রিপরিষদের প্রধান নির্বাচিত হন। চলতি বছরের আগ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
রুসেফ বলেন, মার্ক্সবাদ থেকে পুঁজিবাদের দিকে আসায় তাঁর রাজনৈতিক চিন্তা ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছে। অতীতের জন্য তিনি গর্ববোধ করেন। এএফপি, বিবিসি ও হিন্দুস্তান টাইমস।
=====================================
আলোচনা- 'সকল গৃহ হারালো যার' by তসলিমা নাসরিন  রাজনৈতিক আলোচনা- 'বিষয় কাশ্মীর-ইনসাফ ও স্বাধীনতা by অরুন্ধতী রায়  ইতিহাস- 'ক্রিস্টোফার কলম্বাসের ডায়েরি' by শাহাদুজ্জামান  বিজ্ঞান আলোচনা- নাসা আজীবনের জন্য মঙ্গলে মানুষ পাঠাবে  ফিচার- ‘বাইশ্যা নাচ' by মৃত্যুঞ্জয় রায়  আদিবাসী আলোচনা- 'বেদিয়া নাকি সাঁওতাল' by সালেক খোকন  আলোচনা- 'পর্যটন ও জীববৈচিত্র্য:প্রেক্ষাপট-বাংলাদেশ হেমায়েত উদ্দীন তালুকদার  খবর- নাগোয়া সম্মেলনে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ঐতিহাসিক চুক্তি  খবর- ছয় দশক পর দুই কোরিয়ার স্বজনদের পুনর্মিলন  গল্প- 'স্বপ্ন' by আলমগীর হোসেন ফারুক  রাজনৈতিক আলোচনা- 'কাশ্মীর কখনোই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়'- অরুন্ধতী রায়  স্বপ্নকথা- 'আত্মবিশ্বাসী মানুষই সফল হয়' by —বেনজির ভুট্টো  আবিষ্কার খবর- আমাজনে নতুন নতুন প্রজাতির সাপ ব্যাঙ মাছ  খবর- পরমাণু চুল্লিতে জ্বালানি ভরা শুরু করেছে ইরান  কিশোর ফিচার- 'আকাশছোয়াঁ টাওয়ার ‘বুর্জ খলিফা’ by জ়ে হুসাইন 


প্রথম আলো এর সৌজন্যে

এই খবর'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.