জিজিয়া কর আদায় করছে তালেবান!
অমন দীপ সিং। একজন শিখ পাকিস্তানি নাগরিক। পরিবারের নয়জন সদস্য নিয়ে পেশোয়ারের তিরাহ উপত্যকায় ভালোই দিন কাটাচ্ছিলেন। সংখ্যালঘু হলেও এত দিন খুব একটা সমস্যা হয়নি।
কিন্তু ২০০১ সালের পরই চিত্র পাল্টে যায়। মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানে হামলা চালানোর পর তালেবান ও আল-কায়েদার আদর্শে বিশ্বাসীরা সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানে পাড়ি জমায়। তারা পাকিস্তানে, বিশেষ করে আফগান সীমান্তবর্তী উপজাতি এলাকায় তাদের যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি ঘটায়। তারা নিজেদের আদর্শে অন্যকে চলতে শক্তি প্রয়োগ করে। তাদের দাপট, অত্যাচার এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে স্থানীয় লোকজন বাপ-দাদার ভিটামাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। অমন দীপও তাঁদের একজন। জীবিকার তাগিদে এসে আশ্রয় নেন পেশোয়ার শহরে। কিন্তু এখানেও সেই আতঙ্ক। অমন সিংয়ের ভাষায়, ‘আমরা সব সময়ই আতঙ্কের মধ্যে থাকি। জঙ্গিদের ভয়, লস্কর-ই-ইসলামের ভয়, অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভয়।’
অমন সিং বলছিলেন, ‘আমি একাই নই, প্রায় চার শ শিখ ও ৫৭টি হিন্দু পরিবার পাকিস্তানের বারা ও তিরাহ উপত্যকা ছেড়ে চলে এসেছে।’ পেশোয়ারের দাবগারি বাজারের কাছে শিখ মন্দির জোগা সিং গুরুদুয়ারা। গুরুদুয়ারার বাইরে একটি ভাঙা চেয়ারে বসে অমন সিং স্মৃতিচারণা করছিলেন। তালেবান জঙ্গিরা তাদের এলাকায় গিয়ে শিখ ও হিন্দুদের প্রতি চরম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে, ‘হয় পূর্বপুরুষদের ভিটামাটি ছাড়ো, নাহয় নিরাপত্তা জামানত হিসেবে ইসলামি কর (জিজিয়া কর) দাও।’ পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্যতম হলো শিখ ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী এ দুই সম্প্রদায়ের লোকজনকে তালেবান ও অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো ২০০১ সাল থেকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে।
সীমান্তবর্তী ওরাকজাই অঞ্চলে তালেবানরা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শিখদের কাছ থেকে কর আদায় করছে। তারা জোরপূর্বক শিখদের মালিকানাধীন দোকান ও বাড়ি দখল করে নিচ্ছে। একই তাণ্ডব চলছে উপজাতীয় এলাকা খাইবার অঞ্চলেও। ইসলামি চরমপন্থী গ্রুপ লস্কর-ই-ইসলামের প্রধান মঙ্গল বাঘ ঘোষণা করেছেন, জিজিয়া কর দেওয়ার শর্তে শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যেকোনো স্থানে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারবে। অমন সিং বলেন, ‘ওরাকজাই ও খাইবার অঞ্চলে জঙ্গিরা সংখ্যালঘুদের হয় ইসলামে দীক্ষিত হতে, নাহয় এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। তারা সেখানে একটি পাল্টা সরকার পরিচালনা করছে। শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ওরাকজাই, বারা ও তিরাহ উপত্যকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই আমরা সেখান থেকে চলে এসেছি। অন্তত এখানে (পেশোয়ারে) একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছি।’
৩৮ বছরের মুসলিম তরুণ গুলাব খান আফ্রিদি বলেন, ‘এসব অঞ্চলে মুসলিম-অমুসলিম কোনো নারীই তাঁদের পুরুষ আত্মীয় ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে পারেন না। সব বয়সের নারীদের বোরকা পড়তে হয়। পুরুষদের লম্বা দাড়ি রাখা ও মাথায় টুপি পরা বাধ্যতামূলক; অন্যথায় লস্কর-ই-ইসলাম মারপিট করে অথবা দুই শ থেকে পাঁচ শ রুপি পর্যন্ত জরিমানা করে।
পেশোয়ারের জেলা পরিষদের শিখ নেতা সরদার সাহিব সিং বলেন, ‘আমাদের সম্প্রদায় তো ভালোই আছে, কর দিয়েই বেঁচে যাই। কিন্তু মুলমানদের তো আরও বিপদ! তাদের তো লস্কর-ই-ইসলামের আস্তানা পাহারা দিতে হয়।’
কিন্তু ২০০১ সালের পরই চিত্র পাল্টে যায়। মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানে হামলা চালানোর পর তালেবান ও আল-কায়েদার আদর্শে বিশ্বাসীরা সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানে পাড়ি জমায়। তারা পাকিস্তানে, বিশেষ করে আফগান সীমান্তবর্তী উপজাতি এলাকায় তাদের যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি ঘটায়। তারা নিজেদের আদর্শে অন্যকে চলতে শক্তি প্রয়োগ করে। তাদের দাপট, অত্যাচার এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে স্থানীয় লোকজন বাপ-দাদার ভিটামাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। অমন দীপও তাঁদের একজন। জীবিকার তাগিদে এসে আশ্রয় নেন পেশোয়ার শহরে। কিন্তু এখানেও সেই আতঙ্ক। অমন সিংয়ের ভাষায়, ‘আমরা সব সময়ই আতঙ্কের মধ্যে থাকি। জঙ্গিদের ভয়, লস্কর-ই-ইসলামের ভয়, অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভয়।’
অমন সিং বলছিলেন, ‘আমি একাই নই, প্রায় চার শ শিখ ও ৫৭টি হিন্দু পরিবার পাকিস্তানের বারা ও তিরাহ উপত্যকা ছেড়ে চলে এসেছে।’ পেশোয়ারের দাবগারি বাজারের কাছে শিখ মন্দির জোগা সিং গুরুদুয়ারা। গুরুদুয়ারার বাইরে একটি ভাঙা চেয়ারে বসে অমন সিং স্মৃতিচারণা করছিলেন। তালেবান জঙ্গিরা তাদের এলাকায় গিয়ে শিখ ও হিন্দুদের প্রতি চরম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে, ‘হয় পূর্বপুরুষদের ভিটামাটি ছাড়ো, নাহয় নিরাপত্তা জামানত হিসেবে ইসলামি কর (জিজিয়া কর) দাও।’ পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্যতম হলো শিখ ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী এ দুই সম্প্রদায়ের লোকজনকে তালেবান ও অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো ২০০১ সাল থেকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে।
সীমান্তবর্তী ওরাকজাই অঞ্চলে তালেবানরা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শিখদের কাছ থেকে কর আদায় করছে। তারা জোরপূর্বক শিখদের মালিকানাধীন দোকান ও বাড়ি দখল করে নিচ্ছে। একই তাণ্ডব চলছে উপজাতীয় এলাকা খাইবার অঞ্চলেও। ইসলামি চরমপন্থী গ্রুপ লস্কর-ই-ইসলামের প্রধান মঙ্গল বাঘ ঘোষণা করেছেন, জিজিয়া কর দেওয়ার শর্তে শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যেকোনো স্থানে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারবে। অমন সিং বলেন, ‘ওরাকজাই ও খাইবার অঞ্চলে জঙ্গিরা সংখ্যালঘুদের হয় ইসলামে দীক্ষিত হতে, নাহয় এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। তারা সেখানে একটি পাল্টা সরকার পরিচালনা করছে। শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ওরাকজাই, বারা ও তিরাহ উপত্যকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই আমরা সেখান থেকে চলে এসেছি। অন্তত এখানে (পেশোয়ারে) একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছি।’
৩৮ বছরের মুসলিম তরুণ গুলাব খান আফ্রিদি বলেন, ‘এসব অঞ্চলে মুসলিম-অমুসলিম কোনো নারীই তাঁদের পুরুষ আত্মীয় ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে পারেন না। সব বয়সের নারীদের বোরকা পড়তে হয়। পুরুষদের লম্বা দাড়ি রাখা ও মাথায় টুপি পরা বাধ্যতামূলক; অন্যথায় লস্কর-ই-ইসলাম মারপিট করে অথবা দুই শ থেকে পাঁচ শ রুপি পর্যন্ত জরিমানা করে।
পেশোয়ারের জেলা পরিষদের শিখ নেতা সরদার সাহিব সিং বলেন, ‘আমাদের সম্প্রদায় তো ভালোই আছে, কর দিয়েই বেঁচে যাই। কিন্তু মুলমানদের তো আরও বিপদ! তাদের তো লস্কর-ই-ইসলামের আস্তানা পাহারা দিতে হয়।’
No comments