সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা সহ পাকিস্তানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন চীনের

পাকিস্তানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন আছে চীনের। পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা, জাতীয় অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়নের পথ অনুসরণ করা, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিষয়ে বৃহত্তর ভূমিকা পালন করার ক্ষেত্রে দেশটির প্রতি দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে চীন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ। রোববার সিল্ক রোড কালচার সেন্টারে ‘এস্থেটিক ব্রিজ’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনা রাষ্ট্রদূত জিয়াং জেইদং এই সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। চীনা ও ইসলামি সভ্যতার মধ্যে বিনিময় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একে অন্যের আলোয় জ্বলে উঠুক। পাকিস্তানই প্রথম কোনো মুসলিম দেশ, যা গণপ্রজাতন্ত্রী চীনকে স্বীকৃতি দেয়। আরো বলেন, পাকিস্তানকে ‘কারাকোরাম হাইওয়ে’ তৈরিতে সাহায্য করেছে চীন। যা বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য হিসেবে পরিচিত। ২০০৮ সালে ভয়াবহ ‘ওয়েনচুয়ান’ ভূমিকম্পের কবলে পড়ে চীন। ওই সময় চীনকে তাঁবু পাঠিয়ে সাহায্য করে পাকিস্তান। অনুষ্ঠানে ওই ঘটনা স্মরণ করেন জিয়াং জেইদং। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ ও ২০২২ সালের বন্যায় সবক্ষেত্রে বেশি চীনা সমর্থন পায় পাকিস্তান।

জিয়াং বলেন, এক সঙ্গে এগিয়ে চলার পথে দুই দেশের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব ক্রমাগত সুসংহত হয়েছে। তিনি  দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বকে পাহাড়ের চেয়ে সুউচ্চ, সাগরের চেয়ে গভীর ও মধুর থেকেও মিষ্টি বলে অভিহিত করেন। বলেন, বর্তমানে পাকিস্তান সরকার পুরোদমে সংস্কার ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কাজে মনোযোগ দিয়েছে। বলেন, দেশটিতে রপ্তানি ও বিনিয়োগ, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক রিজার্ভে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এছাড়া বার্ষিক ৩ শতাংশের বেশি জাতীয় প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। ১১ বছর ধরে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি), পাকিস্তানের উন্নয়নের ভিত্তি শক্তিশালীকরণ ও দেশটির মানুষের সার্বিক কল্যাণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। জিয়াং বলেন, ৮৫ বছর ধরে পাকিস্তানের ভ্রাতৃসুলভ মানুষ একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনের স্বপ্ন দেখে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান শুধু গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী প্রথম দেশই না, বরং যেকোনো সংকটে চীনের পাশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জাতিসংঘে চীনের বৈধ আসন পুনরুদ্ধারের বিষয়টি। ওই ঘটনাগুলো উল্লেখ করে জিয়াং বলেন, আমরা তাদের এ সমর্থনের বিষয়টি কখনো ভুলবো না। অনুরূপভাবে, পাকিস্তান যখন কোনো সংকটের সম্মুখীন হয়েছে - তখন দেশটির পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন। একটি উজ্জ্বল আগামীর জন্য আমরা হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাচ্ছি বলে মন্তব্য করেন জিয়াং। বলেন, গত বছর পাকিস্তানের বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমরা উচ্চস্তরের লেনদেনের একটি সম্পর্ক বজায় রেখেছি। জুনে চীন সফরে যান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। অক্টোবরে পাকিস্তান সফর করেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। ফেব্রুয়ারিতে চীন সফর করেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। জিয়াং বলেন, এ সকল সফর দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দিকেই ইঙ্গিত দেয়। সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের নেতাদের তত্ত্বাবধানে সিপিইসি এক নতুন দিগন্তে প্রবেশ করেছে। ভবিষ্যতে চীন-পাকিস্তানের মধ্যে আরো ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব তৈরি, দুই দেশের মধ্যে সর্বকালীন কৌশলগত সহযোগিতা ক্রমাগত সুসংহত করতে হাতে হাত ও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। 

mzamin

No comments

Powered by Blogger.